শনিবার, ৭ জুলাই, ২০১৮

Dwadas Jyotirlinga


সৃষ্টির দেবতা ব্রহ্মা | স্থিতির অধীশ্বর বিষ্ণু | শিবপুরাণে কথিত‚ একদিন দুজনের মধ্যে শুরু হল বিবাদ | কে বড় ? ব্রহ্মা বলেন‚ তিনি বড় | বিষ্ণু বলেন‚ না তিনি বেশি মহৎ | সমাধান চাওয়া হল মহেশ্বরের কাছে |
মহাদেব তখন জ্যোতি বা আলোর স্তম্ভ দিয়ে এঁফোর ওফোঁড় করে দিলেন স্বর্গ‚ পৃথিবী‚ নরক‚ তিন লোক | ব্রহ্মা‚ বিষ্ণু দুজনকে তিনি বললেন‚ এই স্তম্ভের শেষ খুঁজে বের করতে | এই আলোর স্তম্ভই হল জ্যোতির্লিঙ্গ | যা নাকি আলো এবং সৃষ্টির প্রতীক |
এদিকে জ্যোতির্লিঙ্গের শেষ খুঁজতে গিয়ে নাজেহাল ব্রহ্মা-বিষ্ণু | মিথ্যে করে শিবকে ব্রহ্মা বললেন‚ তিনি খুঁজে পেয়েছেন | অন্যদিকে‚ বিষ্ণু হার স্বীকার করে নিলেন | ব্রহ্মার ছলনা বুঝতে পেরে শিব তাঁকে অভিশাপ দিলেন‚ কোনও উৎসবে তিনি পূজিত হবেন না | আর বিষ্ণু পেলেন আশীর্বাদ | যতদিন পৃথিবী থাকবে‚ ততদিন তিনি পূজিত হবেন |
যে সমস্ত শিবলিঙ্গ স্বয়ম্ভু--অর্থাত্‍ নিজেই স্বয়ং শিবলিঙ্গরূপে অধিষ্ঠিত হয়েছেন, এইরূপে সারা ভারতবর্ষে ১২টি জ্যোতির্লিঙ্গ আছে, সেই সব শিবলিঙ্গকে বলা হয় জ্যোতির্লিঙ্গ।
             বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা করে দেখেছেন যে জ্যোতির্লিঙ্গ হতে তেজস্ক্রিয় বিকিরণ বের হচ্ছে । আআ  জ্যোতির্লিঙ্গের আকারও নিউক্লিয়ার রিয়েক্টারের মতো। রিয়েক্টার ঠান্ডা রাখতে যেমন সবসময় জলের দরকার হয় তেমনি শিবলিঙ্গেও জল ঢালা হয়।
          








দ্বাদশ জ্যোতির্লিঙ্গ স্তোত্রম্




সৌরাষ্ট্রদেশে বিশদেঽতিরম্যে জ্যোতির্মযং চন্দ্রকলাবতংসম্ |

ভক্তিপ্রদানায কৃপাবতীর্ণং তং সোমনাথং শরণং প্রপদ্যে || ১||

শ্রীশৈলশৃঙ্গে বিবুধাতিসঙ্গে তুলাদ্রিতুঙ্গেঽপি মুদা বসন্তম্ |

তমর্জুনং মল্লিকপূর্বমেকং নমামি সংসারসমুদ্রসেতুম্ || ২||

অবন্তিকাযাং বিহিতাবতারং মুক্তিপ্রদানায চ সজ্জনানাম্ |

অকালমৃত্যোঃ পরিরক্ষণার্থং বন্দে মহাকালমহাসুরেশম্ || ৩||
কাবেরিকানর্মদযোঃ পবিত্রে সমাগমে সজ্জনতারণায |
সদৈবমান্ধাতৃপুরে বসন্তমোঙ্কারমীশং শিবমেকমীডে || ৪||
পূর্বোত্তরে প্রজ্বলিকানিধানে সদা বসন্তং গিরিজাসমেতম্ |
সুরাসুরারাধিতপাদপদ্মং শ্রীবৈদ্যনাথং তমহং নমামি || ৫||
যাম্যে সদঙ্গে নগরেঽতিরম্যে বিভূষিতাঙ্গং বিবিধৈশ্চ ভোগৈঃ |
সদ্ভক্তিমুক্তিপ্রদমীশমেকং শ্রীনাগনাথং শরণং প্রপদ্যে || ৬||
মহাদ্রিপার্শ্বে চ তটে রমন্তং সম্পূজ্যমানং সততং মুনীন্দ্রৈঃ |
সুরাসুরৈর্যক্ষ মহোরগাঢ্যৈঃ কেদারমীশং শিবমেকমীডে || ৭||
সহ্যাদ্রিশীর্ষে বিমলে বসন্তং গোদাবরিতীরপবিত্রদেশে |
যদ্ধর্শনাত্পাতকমাশু নাশং প্রযাতি তং ত্র্যম্বকমীশমীডে || ৮||
সুতাম্রপর্ণীজলরাশিযোগে নিবধ্য সেতুং বিশিখৈরসংখ্যৈঃ |
শ্রীরামচন্দ্রেণ সমর্পিতং তং রামেশ্বরাখ্যং নিযতং নমামি || ৯||
যং ডাকিনিশাকিনিকাসমাজে নিষেব্যমাণং পিশিতাশনৈশ্চ |
সদৈব ভীমাদিপদপ্রসিদ্দং তং শঙ্করং ভক্তহিতং নমামি || ১০||
সানন্দমানন্দবনে বসন্তমানন্দকন্দং হতপাপবৃন্দম্ |
বারাণসীনাথমনাথনাথং শ্রীবিশ্বনাথং শরণং প্রপদ্যে || ১১||
ইলাপুরে রম্যবিশালকেঽস্মিন্ সমুল্লসন্তং চ জগদ্বরেণ্যম্ |
বন্দে মহোদারতরস্বভাবং ঘৃষ্ণেশ্বরাখ্যং শরণম্ প্রপদ্যে || ১২||
জ্যোতির্মযদ্বাদশলিঙ্গকানাং শিবাত্মনাং প্রোক্তমিদং ক্রমেণ |
স্তোত্রং পঠিত্বা মনুজোঽতিভক্ত্যা ফলং তদালোক্য নিজং ভজেচ্চ ||
  || ইতি দ্বাদশ জ্যোতির্লিঙ্গস্তোত্রং সংপূর্ণম্ ||
১. শ্রী সোমনাথ--- সোমনাথের মন্দির অতি প্রাচীন। সোমনাথের প্রাচীন মন্দির ধ্বংস হওয়ায় নতুন মন্দির তৈরি হয়েছে। গুজরাটের এই মন্দিরের কাছেই পুরশুরামের মন্দির, শঙ্করাচার্যের মন্দির, সারদা মঠ, সূর্ষ মন্দির, সরস্বতী, হিরণ্য ও কপিলা নদীর সঙ্গম প্রভাস তীর্থ, শ্রীকৃষ্ণের অন্তর্ধানের স্থান, গীতা ভবন প্রভৃতি। ভেরাবল থেকে সোমনাথের দুরত্ব মাত্র ৫কিমি। ভেরাবল থেকে বাসেও সোমনাথ যেতে পারেন।
সোম মানে চন্দ্র | তার দেবতা হিসেবে শিব পূজিত হন গুজরাতের এই মন্দিরে | পুরাণে বলে‚ দক্ষের অভিশাপে চন্দ্র নিষ্প্রভ হয়ে পড়ে | তখন এই তীর্থে শিবের উপাসনায় আবার হারানো প্রভা ফিরে পান চন্দ্রদেব | 
২. শ্রীমল্লিকার্জুন--- অন্ধ্রপ্রদেশের তুর্ণুল জেলায় শ্রীশৈলম নামক স্থানে পাহাড় দিয়ে ঘেরা বিখ্যাত শিবক্ষেত্র। এখানকার ঋষভ পাহাড়ে শিব-পার্বতী আসেন বাহন বৃষের প্রায়শ্চিত্তে সন্তুষ্ট হয়ে | পরে শিব এখানে জ্যোতির্লিঙ্গ হয়ে আবির্ভূত হন | কৃষ্ণা নদীর দক্ষিণ পাড়ে দেবাদিদেব মহাদেব‚ মল্লিকার্জুন নামে উপাস্য | 

হায়দরাবাদ থেকে ২৩০ কিমি বাসে যেতে হয়। বেঙ্গালুরু, চেন্নাই, তিরুপতি প্রভৃতি স্থান থেকেও বাসে যাওয়া যায়। অদূরে কৃষ্ণা নদী প্রবাহিত। শিব এখানে জলবেষ্টিত। কৃষ্ণা নদীকে বাঁধ দেওয়ার ফলে নদীর জলধারার দৃশ্য অতি মনোরম। মহাশিবরাত্রিতে বহু পুর্ণাথীদের সমাগম হয়।
৩. শ্রীমহাকাল--- মধ্যপ্রদেশের উজ্জয়িনীতে শিপ্রা নদীর তীরে মহাকালের মন্দির। এখানে মাটির নীচে আছে মূল মন্দির, আর তার ওপরে আছেন ওংকারেশ্বর শিব।কথিত আছে, শ্রীরামচন্দ্র সব তীর্থের জল এনে পিতার পিন্ড দান করেছিলেন এই মহাকালে।

৪. ওঁকারেশ্বর---মধ্যপ্রদেশের ইন্দোর-মৌ-খান্ডোয়া রেলে ওঁকারেশ্বর রোডে পৌঁছে ৯কিমি দূরে পাবেন ওঁকারেশেবর মন্দির। ইন্দোর থেকে দুরত্ব বাসে ৭৭ কিমি পথ। তিন চার ঘন্টা পথ। নর্মদা নদীর মধ্যে দ্বীপ বিশেষ। এই স্থানেই আদি শঙ্করাচার্য-দীক্ষাগ্রহণ এবং সিদ্ধিলাভ করেন। দ্বীপের বিপরীত দিকে ওঁকারেশ্বর মন্দির অবস্থিত।

৫. শ্রীকেদারনাথ-- পঞ্চকেদারের মধ্যমনি ৩৫৮৪ মিটার উঁচু হিমালয়ের পাদদেশে নৈসর্গিক শোভার মাঝে বিরাজমান এই কেদারনাথ মন্দির। উত্তরপ্রদেশের গাড়োয়াল জেলায় অবস্থিত কেদারনাথ পর্বতের পাদদেশে এই মন্দির অবস্থিত। 
ভগবান নর নারায়ণ মাটি দিয়ে মূর্তি গড়েন শিবের | আরাধনায় তুষ্ট হয়ে তাঁকে দর্শন দেন মহাদেব | 
পাশাপাশি প্রচলিত‚ কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের পাপ স্খালন করার জন্য হিমালয়ে শিবের আরাধনায় ব্রতী হন পঞ্চপাণ্ডব | কিন্তু শিব তখন পালিয়ে বেড়ান | অবশেষে মধ্যম পাণ্ডব ভীম জাপটে ধরেন মহিষরূপী মহাদেবকে |
 তারপর থেকে তিনি‚ জ্যোতির্লিঙ্গ রূপে অধিষ্ঠিত হন কেদারে | এবং তিনি এখানে কেদারনাথ |
ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ফলে কেদারনাথ মন্দিরে যাওয়ার পথ আপাতত বন্ধ রয়েছে।

৬. শ্রীভীমাশঙ্কর-- ভীম নদীর তীরে মহারাষ্ট্রে পশ্চিমঘাট পর্বতমালার উপরে অবস্থিত এক প্রসিদ্ধ তীর্থক্ষেত্র। ঔরঙ্গাবাদ থেকে ২৩০ কিমি , পুনে থেকে ১২৩ কিমি। শিখ গুরু গোবিন্দ সিংহের স্মৃতিবিজরিত নানডেড থেকে ১০৯ কিমি। বাসেও যাওয়া যায়, আবার হায়দরাবাদ থেকে রেলে পারালি গিয়ে মন্দিরে যাওয়া যায়। ভীমাশঙ্করজী এখানে কালো পাথরের ছোট শিবলিঙ্গরূপে বিজারিত। এখানে শিবরাত্রিতে জমকালো উত্‍সব হয়। এই দেবস্থানের প্রাকৃতিক দৃশ্য অতি মনোরম।

৭. শ্রীবিশ্বেস্বর--- কাশীর বিশ্বনাথ মন্দিরে স্থাপিত শিব মূর্তি। বাদশা আকবরের আমলে মূল মন্দিরটির সংস্কার করেন তাঁর রাজস্ব মন্ত্রী টোডরমল।১৮৮৬ সালে ইন্দোর মহারাণী অহল্যাবাঈ পাঞ্জাবকেশরী রমজিত্‍ সিংহ মন্দিরের শিখরগুলি তামার উপর সোনা দিয়ে মুড়ে দেন।

৮. শ্রীবৈজনাথ-- মহারাষ্ট্রের প্যারলে বৈজনাথ মন্দিরটি অবস্থিত। ঔরঙ্গাবাদ থেকে ১৩০ কিমি দুরে বাসে যেতে হয়। বাস স্টেশনের নিচুতে কয়েকধাপ নেমে প্রায় ৮০৪ বছরের প্রাচীন শ্রী বৈজনাথ শিবের মন্দির। প্রবাদ আছে, পাণ্ডবরা মন্দিরটি তৈরি করেছিলেন।

৯. শ্রীনাগেশ্বর--গুজরাটের দ্বারকা থেকে ওখার পথে প্রায় ১৭কিমি গিয়ে দ্বাদশ জ্যোতির্লিঙ্গের অন্যতম মন্দির নাগেশ্বর মাহাদেব মন্দির।

১০. শ্রীত্র্যম্বকেশর--- মহারাষ্ট্রের নাসিক রেল স্টেশন থেকে ৫০ কিমি দুরে ত্র্যম্বকেশর মন্দির অবস্থিত। মন্দিরে ব্রহ্মা-বিষ্ণু-শিবের সমন্বয়ে শিব মূর্তি। মুম্বই থেকে পঞ্চবটী এক্সপ্রেসে নাসিক যাওয়া যায়। নাসিক রোড রেল স্টেশন থেকে মাত্র ৫০ কিমি দুরে অবস্থিত। এখানে ১২ বছর পর পর পূর্ণকুম্ভ অনুষ্ঠিত হয়।

১১. শ্রীরামেশ্বরম--- চার ধামের এক ধাম। দক্ষিণ পূর্ব ভারতের শেষ প্রান্তে এক প্রণালীতে অবস্থিত। শ্রীরামেশ্বরম। সীতাদেবীর গড়া শিবমূর্তি এবং শ্রীরামচন্দ্র কর্ত্তৃক প্রতিষ্ঠিত হয়েছে শ্রীরামেশ্বরম।ধনুষ্কোটি থেকে প্রায় ২০ কিমি দুরে ভারত মহাসাগর ও বঙ্গোপসাগরের মিলন স্থলে অবস্থিত।

১২. শ্রীঘৃষ্নেস্বর---
ঔরঙ্গাবাদ শহর থেকে ২৮ কিমি দুরে অবস্থিত মহারাষ্ট্রের বিখ্যাত ইলোরা গুহা থেকে ১ কিমি। দুরে শ্রীঘৃষ্নে শ্বর শিব মন্দির অ

শনিবার, ২৩ জুন, ২০১৮

Mohamudgar - - By Acharya Shankar

শঙ্করাচার্য্য-কৃত মোহমুদগর-


মুঢ় জহীহি ধনাগমতৃষ্ণাম কুরু তনুবুদ্ধে মনসি বিতৃষ্ণাম্‌।
যল্লভতে নিজকর্ম্মোপাত্তম্‌ বিত্তং তেন বিনোদয় চিত্তম্‌॥১॥
অর্থ- হে মূঢ় জন কেবলমাত্র অর্থ উপার্জনের তৃষ্ণা পরিত্যাগ কর। এই ধরনের চিন্তা তোমার মনকে কেবলমাত্র জাগতিক করে দেবে সুতারং মনে এর জন্য বিতৃষ্ণা সৃষ্টি কর। তোমার উত্তম কর্ম্মের দ্বারা উপার্জিত যে অর্থ তোমাকে স্বচ্ছল রাখে তার দ্বারাই তোমার মনকে খুশী রাখো।
কা তব কান্তা কস্তে পুত্রঃ সংসারোহয়মতীববিচিত্রঃ।
কস্য ত্বং বা কুতঃ আয়াতঃ তত্ত্বং চিন্তয় তদিদং ভাতঃ॥২॥
অর্থ- কে তোমার স্ত্রী? কেই বা তোমার সন্তান? এই সংসার হল অতীব বিচিত্র। তুমি কার? তুমি কোথা থেকে এসেছ? তত্ত্ব সহকারে এই বিষয়ে চিন্তা করে দেখ।
মা কুরু ধনজনযৌবনগর্বম্‌ হরতি নিমেষাৎ কালঃ সর্ব্বম্‌।
মায়াময়মিদমখিলং হিত্বা ব্রহ্মপদং প্রবিশাশু বিদিত্বা॥৩॥
অর্থ- ধন, জন ও যৌবনের গর্ব না করাই ভাল কারন সময় এই সকলকে নিমেষে গ্রাস করে ফেলে। এই অখিল জগতকে মায়াময় জেনে সেই পরম ব্রহ্ম পরমপুরুষের চরণে আশ্রয় গ্রহন করাই তোমার পক্ষে ভালো।
নলিনীদলগতজলমতিতরলং তদ্বজ্জীবনমতিশয়চপলং।
ক্ষণমিহ সজ্জনসঙ্গতিরেকা ভবতি ভবার্ণবতরণে নৌকা॥৪॥
অর্থ- পদ্মপাত্রার উপর জলবিন্দু যে রকম অস্থির প্রানীর মধ্যে প্রাণও সেই রকম অস্থির। তাই এই ক্ষণজীবনে যদি ক্ষণকালের জন্যও সাধুসঙ্গ করে থাকো তাহলে এই ভব সাগরে হতে সেই সাধু সঙ্গ নৌকা হয়ে তোমাকে পার করে দেবে।
যাবজ্জনমং তাবন্মরনণং তাবজ্জননীজঠরে শয়নং।
ইহ সংসারে স্ফূটতরদোষঃ কথমিহ মানব তব সন্তোষঃ॥৫॥
অর্থ- প্রাক প্রসব অবস্থা, জন্ম, মৃত্যু এগুলি ক্রমাগত, এই সংসারের এই ক্ষণ ভঙ্গুর রূপ তুমি স্পষ্ট ভাবে দেখতে পাও। তাহলে হে মানুষ তুমি কিসে সন্তুষ্ট থাকো?
দিনযামিন্যৌ সায়ম্প্রাতঃ শিশিরবসন্তৌ পুনরায়াতঃ।
কালঃ ক্রীড়তি গচ্ছত্যায়ুঃ তদপি ন মুঞ্চত্যাশাবায়ুঃ॥৭॥
অর্থ- দিন-রাত্রি, সন্ধ্যা-সকাল, শীত-বসন্ত কতবার আসে কতবার চলে যায়, সময়ের এই খেলা দেখতে দেখতে আয়ু শেষ হয়ে যায় কিন্তু তবুও এই বায়ুর মত অফুরন্ত আশা মানুষের আর ফুরায় না।
অঙ্গং গলিতং পলিতং মুণ্ডম্‌ দন্ত-বিহীনং জাতং তুণ্ডম্‌।
করধৃতকম্পিতশোভিতদণ্ডম্‌ তদপি ন মুঞ্চত্যাশাভাণ্ডম্‌॥৭॥
অর্থ- অঙ্গ সকল কুঁচকে গিয়ে এমন হয় যেন গলে গলে পড়ছে, মাথা থেকে সব চুল উঠে যায়, দাঁত পড়ে গিয়ে মুখ বিবর চুপসে যায়, ঠুকরে ঠুকরে হাঁটে, হাতে ধরে থাকা লাঠিটাও যখন থর থর করে কাঁপতে থাকে তখনো মানুষ এই আশা নামক ফাঁকা মাটির হাঁড়িটা ছাড়তে চায় না।
সুরবরমন্দিরতরুতলবাসঃ শয্যাভূতলমজিনং বাসঃ।
সর্ব্বপরিগ্রহভোগত্যাগঃ কস্য সুখং ন করোতি বিরাগঃ॥৮॥
অর্থ- সেই দেবতাদের মন্দির স্বরূপ তরুতলে যদি বাস করা হয়, পৃথিবীর ভূপৃষ্ঠ কে শয্যা করা হয় এবং অজিন বসন যদি পরিধান করা হয় এবং সংসারের সকল ভোগে ত্যাগে আগ্রহ না রেখে সব কিছু পরিত্যাগ করে দেওয়ার এই বৈরাগ্যভাব কাকে না খুশি করে।
শত্রৌ মিত্রে পুত্রে বন্ধৌ মাকুরু যত্নং বিগ্রহসন্ধৌ।
ভব সমচিত্তঃ সর্ব্বত্র ত্বং বাঞ্ছস্যচিরাদ্‌ যদি বিষ্ণুত্বং॥৯॥
অর্থ- শত্রু-মিত্র পুত্র-বন্ধু বান্ধব আদি যা কিছু সম্পর্ক আছে এদের সাথে এবং ঝগড়া সন্ধি ইত্যাদি বিষয়ে বিশেষ যত্ন করার কোন দরকার নেই। ভগবান চারিপাশে ব্যাপ্ত আছেন এই কথাটি মনে রেখে সকলের প্রতি সমান যত্ন নেওয়ার চেষ্টা সব সময়েই করা উচিত।
অষ্টকুলাচলসপ্তসমুদ্রাঃ ব্রহ্মাপুরন্দরদিনকররুদ্রাঃ।
ন ত্বং নাহং নায়ং লোকঃ তদপি কিমর্থং ক্রিয়তে শোকঃ॥১০॥
অর্থ- এই মহাদেশ সসাগরা জগৎ সংসার ব্রহ্মা (সৃষ্টি কর্তা), ইন্দ্র (ভোগ কর্তা), সূর্য্য (পালন কর্তা), রুদ্র (সংহার কর্তা) কতৃক পরিচালিত হয়। তুমি-আমি এই লোক সমূহে ক্ষণ ভঙ্গুর পদার্থ মাত্র। তাহলে কিসের জন্য তুমি দুখঃ শোকে জর্জরিত হয়ে থাকো!
ত্বয়ি ময়ি চান্যত্রৈকোবিষ্ণুঃ ব্যর্থং কুপ্যসি ময্যসহিষ্ণুঃ।
সর্ব্বং পশ্য আত্মনাত্মানং সর্ব্বতোৎসৃজ ভেদজ্ঞানম্‌॥১১॥
অর্থ- তুমি আমি আর কেউ নই আমরা সেই এক সর্ব্বঘটে পরিব্যাপ্ত ব্যাপ্তময় বিষ্ণু এর জন্য ব্যর্থই আমার প্রতি অসিহষ্ণুতা বশত রাগ করে থাকো। চেয়ে দেখ চারিদিকে যা কিছু দেখতে পাচ্ছ সব তোমারই আত্মারই অংশ, আত্মার আত্মীয়। সুতারং যত্ন সহকারে মন থেকে এই ভেদজ্ঞান দূর করে দাও।
বালস্তাবৎ ক্রীড়াসক্ত-স্তরুণস্তাবৎ তরুনীরক্তঃ।
বৃদ্ধস্তাবচ্চিন্তামগ্নঃ পরমে ব্রহ্মণি কোহপি ন লগ্নঃ॥১২॥
অর্থ- বালকেরা যেরকম খেলার প্রতি আসক্ত, তরুনরা যেরকম তরুনীদের প্রতি আসক্ত, বৃদ্ধেরা যে রকম বিষয় চিন্তার প্রতি আসক্ত থাকে, পরম ব্রহ্মেকে জানার জন্য সেই রকম আকুল করা আসক্তি দেখ কারো মধ্যে দেখা যাচ্ছে না।
অর্থমনর্থং ভাবয় নিত্যং নাস্তি ততঃ সুখলেশঃ সত্যং।
পুত্রাদপি ধনভাজাং ভীতিঃ সর্ব্বত্রৈষা কথিতা নীতিঃ॥১৩॥
অর্থ- অনর্থকারী অর্থ চিন্তায় সব সময়ে ডুবে আছো কিন্তু জেনে রাখো তাতে লেশ মাত্র সত্যিকারের সুখ নেই। হে ধনী, সংসারের লোকেরা এমনকী নিজের সন্তানরাও তোমাকে যে শ্রদ্ধা ভক্তি প্রদর্শন করে তা তোমার ধন প্রাপ্ত করার জন্য। সব সময় এমনি হয়ে থাকে নীতিকথাতে তাই বলা আছে।
যাবদ্বিত্তোপার্জ্জনশক্তঃ তাবন্নিজপরিবারো রক্তঃ।
তদনু চ জরয়া জর্জ্জরদেহে বার্ত্তাং কোহপি ন পৃচ্ছতি গেহে॥১৪॥
অর্থ- যতদিন তুমি অর্থ উপার্জন করতে পারবে ততদিন তোমার পরিবারের সকলে তোমার খুব অনুরক্ত থাকবে। তুমি যা বলবে তাই হবে, তোমার কথায় সবাই ওঠা বসা করবে। তারপরে যখন সময়ের চক্রে জরা ব্যাধি ইত্যাদি এসে তোমার দেহে বাসা বাধবে, নড়বড়ে হয়ে তুমি বিছানায় শুয়ে থাকবে, তোমার বাড়িতেই তোমারই পরিবারের কেউ আর তোমার কথা জিজ্ঞেস করবে না, তোমার সাথে কথা বলবে না, তোমার সঞ্চিত অর্থের দ্বারা কোন সেবাদাসী নিয়োজিত হয়ে তোমার সামনে বসে খবরের কাগজ পড়বে।
কামং ক্রোধং লোভং মোহং ত্যক্ত্বাত্মানং পশ্যতি কোহহং।
আত্মজ্ঞানবিহিনা মূঢ়া স্তে পচ্যন্তে নরকে নিগূঢ়াঃ॥১৫॥
অর্থ- কাম, ক্রোধ, লোভ ও মোহ চেষ্টা করে পরিত্যাগ কর। নিজের আত্মাকে জানার চেষ্টা কর, তুমি কে? এই আত্মজ্ঞান না হলে তুমি মূর্খই রয়ে যাবে। এই জীবন-মৃত্যু ময় সংসারে জন্ম জন্মান্তর ধরে পচতে হবে।
ষোড়শপজ্ঝটিকাভিরশেষঃ শিষ্যানাং কথিতোহভ্যুপদেশঃ।
যেষাং নৈব করোতি বিবেকং তেষাং কঃ কুরুতে মতিরেকং॥১৬॥
অর্থ- এই ঝাড়া ষোলটি পদের দ্বারা শিষ্যদের সবাইকে আমি উপদেশ প্রদান করলাম। কিন্তু এতেও যার বিবেক জাগ্রত হয় না তার সেই এক পরব্রহ্মে মতি কিভাবে হবে?





ন তাতো ন মাতা ন বন্ধুর্ন দাতা ন পুত্রো ন পুত্ৰী ন ভৃত্যো ন ভর্তা।
ন জায়া ন বিদ্যা ন বৃত্তির্মমৈব গতিস্ত্বং গতিস্ত্বং ত্বমেকা ভবানী ॥
অর্থ- আমার পিতা নাই, মাতা নাই, বন্ধু নাই, পৌত্র নাই, পুত্র নাই, কন্যা নাই, ভৃত্য নাই, প্রভু নাই, স্ত্রী নাই, বিদ্যা নাই, জীবিকা নাই; হে ভবানি তুমিই আমার গতি, একমাত্র তুমিই গতি।
ভবাদ্ধিপারে মহাদুঃখভিরৌ পপাত প্রকামী প্রলোভী প্ৰমত্তঃ।
সংসার-পাশ-প্রবন্ধঃ সদাহং গতিস্ত্বং গতিস্ত্বং ত্বমেকা ভবানী ॥
অর্থ- অপার সংসারসাগরে আমি সর্বদাই মহাদুঃখে ভীত ; আমি বাসনাগ্রস্ত , লোভযুক্ত, বুদ্ধিশূন্য এবং কুৎসিত সংসারবন্ধনে আবদ্ধ হইয়া তোমার শরণাগত হইয়াছি ; হে ভবানি -তুমিই আমার গতি, একমাত্র তুমিই গতি।
ন জানামি দানং ন চ ধ্যানযোগম্‌ ন জানামি তস্ত্ৰং ন চ স্তোত্রমন্ত্ৰম।
ন জানামি পুজাং ন চ ন্যাসযোগম গতিস্ত্বং গতিস্ত্বং ত্বমেকা ভবানী ॥
অর্থ- আমি দান ও ধ্যানযোগ জানি না; তন্ত্র, মন্ত্র, স্ত্রোত্র এবং পূজা জানি না, সন্ন্যাসযোগও জানি না; হে ভবানি – তুমিই আমার গতি, একমাত্র তুমিই গতি।
ন জানামি পুণ্যং ন জানামি তীর্থম্ ন জানামি মুক্তিং লয়ং বা কদাচিৎ।
ন জানামি ভক্তিং ব্রতং বাপি মাতর্গতিস্ত্বং গতিস্ত্বং ত্বমেক ভবানী ॥
অর্থ- মা, আমি কখনও পুণ্য জানি না, তীর্থ জানি না, মুক্তি জানি না, চিত্তবৃত্তি নিরোধ জানি না অথবা ব্রতও জানি না; হে ভবানি –তুমিই আমার গতি, একমাত্র তুমিই গতি।
কুকৰ্ম্মী কুসঙ্গী কুবুদ্ধিঃ কুদাসঃ কুলাচারহীনঃ কদাচারলীনঃ ।
কুদৃষ্টি কুবাক্যপ্রবন্ধঃ সদাহম্ গতিস্ত্বং গতিস্ত্বং ত্বমেকা ভবানী ॥
অর্থ- আমি সর্বদাই কুকর্মে রত, কুসঙ্গে মগ্ন, কুবুদ্ধিপূর্ণ, কুজনের দাস, কুলহীন, আচারহীন, কদাচারশীল, কুৎসিত বিষয়ে অভিনিবিষ্ট এবং কুবাক্যে তৎপর; হে ভবানি – তুমিই আমার গতি, একমাত্র তুমিই গতি।
প্রজেশং রমেশং মহেশং সুরেশম্‌ দীনেশং নিশীথেশ্বরং বা কদাচিৎ।
ন জানামি চান্যৎ সদাহং শরণ্যে গতিস্ত্বং গতিস্ত্বং ত্বমেকা ভবানী ॥
অর্থ- হে শরণ্যে, আমি প্রজাপতি , বিষ্ণু, শিব, ইন্দ্র, সূর্য বা বিশ্বনাথকে অথবা দেবগণমধ্যে অপর কাহাকেও কখনও জানি না, হে ভবানি-তুমিই আমার গতি, একমাত্র তুমিই গতি।
বিবাদে বিষাদে প্রমাদে প্রবাসে জলে চানলে পৰ্ব্বতে শক্রমধ্যে।
অরণ্যে শরণ্যে সদা মাং প্রপাহি গতিস্ত্বং গতিস্ত্বং ত্বমেকা ভবানী ॥
অর্থ- হে শরণ্যে, আমাকে বিবাদে, বিষাদে , প্রমোদে, প্রবাসে, জলে, অনলে, পর্বতে, শত্রুমধ্যে বা অরণ্যে সর্বদা রক্ষা কর ; হে ভবানি –তুমিই আমার গতি, একমাত্র তুমিই গতি।
অনাথো দরিদ্রো জরারোগযুক্তো মহাক্ষীণদীনঃ সদা জাড্যবক্ত্রঃ।
বিপত্তৌ প্রবিষ্টঃ প্রনষ্টঃ সদাহম গতিস্ত্বং গতিস্ত্বং ত্বমেক ভবানী ॥
অর্থ- আমি সদাই অনাথ, দরিদ্র, জীর্ণ, রোগগ্রস্ত , অতি ক্ষীণ, দীন, বাক্যে অপারগ, সর্বদা বিপদে মগ্ন এবং সর্বপ্রকারে বিনষ্ট হইয়াছি- হে ভবানি-তুমিই আমার গতি, একমাত্র তুমিই গতি।
এ আর এক স্তর! কেহ পিতা নয়, কেহ মাতা নয়, কেহ বন্ধু নয়, কেহ পুত্র নয়, কেহ পুত্রী নয়,-একমাত্র জগদম্বাই সকলের সারভূত! এখানে মায়ার বন্ধন ছিন্ন হয়েছে। মরীচিকা দূরে সরে গেছে। তবে এখানেও তিনি আমি-জননী আর তনয়-এটুকু যেন ভেদ-ভাব রয়েছে!
জগত গুরু শঙ্করাচার্য্যকৃত।

বুধবার, ২০ জুন, ২০১৮

Jamai sasthi

অরণ্য ষষ্ঠী বা জামাইষষ্ঠী




 জামাইষষ্ঠীর আরেক নাম অরণ্য ষষ্ঠী। আসুন জানি সেই কথা।  
এক বুড়ির  ছোটবৌটির খুব মিথ্যে বলার অভ্যাস ছিল । নিজে চুরি করে খায় আর রোজ রোজ একটি পোষা কালোবিড়ালির নামে দোষ দেয়। 
কালোবিড়ালি মা'ষষ্ঠীর বাহন। সে গিয়ে নালিশ করলে মা ষষ্ঠী ছোটবৌ'কে শাস্তি দেবার কথা ভাবেন। 

ছোটবৌ ফুটফুটে পুত্র সন্তান প্রসব করে আর কালোবিড়ালি সেই সন্তান মুখে করে নিয়ে রেখে আসে বনে জঙ্গলে। এইভাবে একে একে ছোটবৌ গোটা সাতবার গর্ভ ধারণ করে পুত্র সন্তানের জন্ম দেয় আর সব কটি পুত্র কালোবিড়ালির খপ্পরে পড়ে । এবার ছোটবৌ কন্যা সন্তানের জন্ম দেয়। কিন্তু সেই প্রসবটি হল সকলের অলক্ষ্যে, জঙ্গলের মধ্যে। কিন্তু তবুও কালোবিড়ালির চোখ এড়ালোনা।  সে যথারীতি মুখে করে রেখে এল কন্যাশিশুটিকে। 

তখন ছোটবৌ আর না পেরে মা ষষ্ঠীকে ডাকতে লাগল। তিনি এদিকে আগের সেই সাতটি পুত্র ও আর এক কন্যাকে লালন করতে শুরু করেছেন। ছোটবৌকে শিক্ষা দেবার জন্য তাকে বললেন 
" তুমি অন্যের নামে মিথ্যে অপবাদ দিয়েছিলে বলে ঐ কালোবিড়ালি রাগ করে তোমার সবকটি সন্তানকে আমার কাছে রেখে গেছে। তুমি তার পায়ে ধরে ক্ষমা চাও তবে সকলকে ফিরে পাবে"

ছোটবৌ কালোবিড়ালিকে আদর করে ডেকে এনে তাকে মাছ-দুধ খাইয়ে তুষ্ট করলে আর ক্ষমা চেয়ে বললে তার সন্তানদের ফিরিয়ে দিতে। কালোবিড়ালি বললে
" জৈষ্ঠ্যমাসের শুক্লপক্ষে ষষ্ঠীর পুজো করো। তোমার সন্তানরা সকলে সুস্থ থাকবে আর মা ষষ্ঠী সকলকে ফিরিয়ে দেবেন।"
>

তদ্দিনে ছোটবৌয়ের সাতছেলে-সাতবৌ আর কন্যা সহ একটি জামাই নিয়ে ভরভরন্ত সংসার। মা ষষ্ঠীর অরণ্যের ঘেরাটোপে ছেলেপুলে গুলি বেঁচেবর্তে ছিল বলে অরণ্যষষ্ঠী নাম এর। আর ছেলে-বৌ-মেয়ে-জামাই সকলের মঙ্গল কামনা করেই এই ষষ্ঠী।
প্রাচীনকালে জামাই ষষ্ঠী বাঙালি সমাজে উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে দিতো প্রতিটি বাঙালির ঘরে-ঘরে।
তবে মানসিকতার পরিবর্তন, পারিপার্শিক ও সামাজিকতার কারণে এ অবস্থাটা এখন ততটা নেই। শুধু মুষ্টিমেয় শাশুড়ি মায়েরা জামাই ষষ্ঠী উৎসবটি ধরে রেখেছে কোন মতে। যার আবহ এখনো গ্রামীণ জীবনে খুঁজে পাওয়া যায়। বছরে অন্তত একবার এই দিনটির জন্য জামাই যেমন অপেক্ষা করে, তেমনি শাশুড়ি জামাইকে সংবর্ধনা জানানোর জন্য দিন গোণে।
জামাই নতুন হোক বা পুরাতন হোক তাতে কিছু যায় আসে না। শাশুড়ির কাছে সে সমান আদর পাবে এটাই বাস্তবতা। শাশুড়ি যতদিন বেঁচে থাকেন জামাই ষষ্ঠীর দিন শাশুড়ির কাছ থেকে জামাই নতুন কাপড়-চোপড়, আদর-আপ্যায়ন, পারিতোষিক ও সংবর্ধনা পাবে।

শনিবার, ১৬ জুন, ২০১৮

Home


সূচিপত্র
বৈশাখ  - 
জৈষ্ঠ্য
আষাঢ় 
শ্রাবণ 
ভাদ্র 
আশ্বিন
কার্তিক
অগ্রাহয়ন
পৌষ 
মাঘ 
ফাল্গুন 
চৈত্র 
অন্যান্য ব্রত
ধর্মীয় প্রবন্ধ 
আপেল কি সত্যিই পড়েছিল?  * কালী রহস্যম *বাঙালি ব্রাহ্মণ *মলমাস  *বেদে সালোকসংশ্লেষের স্বপক্ষে প্রমাণ *পিতৃগণ ও পিতৃতর্পণ *কৈলাস পর্বত * হিন্দু পঞ্চাঙ্গ কি ও কেন * গান্ধারীর শতপুত্রের নাম * চন্দ্রবংশ * সূর্য বংশ *  মা তারার ইতিহাস * চার ধাম * একান্ন সতীপীঠ * রথযাত্রা * দ্বাদশ জ্যোতির্লিঙ্গ *অষ্টলক্ষ্মী * সরস্বতী মহাভাগে * বিল্ববৃক্ষ * মৃতের দোষ ও পুষ্কর


স্তোত্রম্ ও পাঁচালি
অয়ি গিরি নন্দিনী  *দারিদ্র্য দহনকারী শিবাষ্টকম * অর্জুন কৃত দুর্গাস্তোত্রম * নর্দমাষ্টকম * সূর্য কবচম * শ্রী শ্রী লক্ষ্মী দেবীর ব্রত কথা *  সুব্রত কর্তৃক শিবস্তুতি * উমর-বিন-হাসনাইন কৃত শিবস্তুতি * গুরু বন্দনা - গুরুদেব দয়া কর দীনজনে * শ্রী দুর্গা ধ্যান * দেব দেবীর ধ্যান * শ্রীকৃষ্ণের অষ্টোত্তর শতনাম * শঙ্করাচার্য্য কৃত মোহমুদ্গর * তুলসীদাসজী বিরচিত রুদ্রাষ্টকম (হিন্দি ) * প্রাতঃ স্মরণম্ * দক্ষিণ কালীকা স্তোত্রম * সরস্বতী স্তোত্রম্ *পিতৃস্তোত্রম * জগদ্ধাত্রী স্তোত্রম্ * জগদ্ধাত্রী পঞ্চকম বাংলা অনুবাদ সহ * কালীকা স্তোত্রম্ ( উত্তরতন্ত্র ) *সপ্তশ্লোকী দুর্গা * গণেশ ভূজঙ্গ স্তোত্রম * সূর্যাষ্টকম

সংস্কৃত সাহিত্য ও ধর্মগ্রন্থ 

স্মরণীয় ব্যক্তিত্ব 
অন্যান্য 
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য 

বৃহস্পতিবার, ১৪ জুন, ২০১৮

Bish sankranti / eriberi

বিষ সংক্রান্তি বা এড়িবেড়ি

বাংলা জৈষ্ঠ্য মাসের শেষ দিনটি হল জৈষ্ঠ্য সংক্রান্তি বা বিষ সংক্রান্তি বা এড়িবেড়ি ।
এদিনে সর্পের দেবী  মা মনসার পূজা ও তার উদ্দেশ্যে নিয়ম পালন করা হয়। নিরামিষ, তেতো ও কষা দ্রব্য খাওয়া হয়।
সকালে ঘুম থেকে উঠেই দাঁত মেজে, স্নান করা হয়। এরপর একটি পাত্রে মুসুর ডাল, নিম পাতা, কেলেকাঁকড়া (এক জাতীয় কষা ফল ) রাখা হয়। সকালে স্নানের পর সকলে ওগুলি সামান্য খেয়ে তারপর অন্য কিছু খায়।
দুপুরে ভাতের সাথে কেলেকাঁকড়ার (এক জাতীয় কষা ফল ) ভাজা, করলা নিম পাতার মতো তেঁতো সব্জির ভাজা, মুসুরের ডাল, মুসুরডালের বড়ার বিভিন্ন পদ, সজনে শাক ইত্যাদি পদ রান্না করা হয়। এদিনে আমিষ দ্রব্য, পেঁয়াজ, রসুন, রাঁধলে পিচ্ছিল হয় এমন সব্জি ( যেমন :- ঢ্যাঁড়স ) খাওয়া নিষিদ্ধ।
এই পালনের একটা বৈজ্ঞানিক যুক্তি আছে। আষাঢ় মাস হতে শুরু হয় বর্ষাকাল। বর্ষায় বিভিন্ন চর্মরোগ হয়। আর এই চর্মরোগ হতে বাঁচতে তেঁতো ও কষা সব্জি খাবার নিয়ম আয়ুর্বেদে আছে। তাছাড়াও নিম-কেলেকাঁকড়ার মতো গাছের থেকে বিষ প্রভাবও কাটে। যদিও সাপে কামড়ালে ওঝা না ডেকে  বা মুষ্ঠিযোগ না করে অতি সত্তর হাসপাতালে যান
1885 সালের 13ই জুন ( ৩২শে জৈষ্ঠ্য, ১২৯২ ) অর্থাৎ এই বিষ সংক্রান্তি দিনেই শ্রী ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের গলার অসুখের সূত্রপাত হয়।
ভালো লাগলে শেয়ার করুন