tarpan লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
tarpan লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

বুধবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২০

পিতৃগণ ও তর্পণ

                         পিতৃপক্ষ
সূর্য কন্যারাশিতে প্রবেশ করলেই শুরু হয় সৌর আশ্বিন মাস। এই সৌর আশ্বিনের প্রথম পক্ষ অর্থাৎ প্রতিপদ হতে অমাবস্যা হলো পিতৃপক্ষ। 

                            তর্পণ 
তর্পণ শব্দের ব্যুৎপত্তি হল তৃপ্+অনট। এই তৃপ্ ধাতুর অর্থ হল তৃপ্তি দেওয়া। দেবতা, ঋষি ও পিতৃগণের তৃপ্তির জন্য এই তর্পণ। 
এসময় পিতৃগণ নেমে আসেন তাদের বংশধরদের দেয় তিলোদকে তৃপ্ত হওয়ার জন্য। 
এই পিতৃতর্পণ সৌর আশ্বিনের এই পক্ষেই কেন করা হয় তা নিয়ে একটি গল্প আছে। গল্প অনুসারে দানবীর কর্ণ স্বর্গে গিয়ে এক অভিনব সমস্যার সম্মুখীন হন। তাকে খাদ্য পানীয় কিছুই দেওয়া হচ্ছিল না। দেওয়া হচ্ছিল সোনাদানা ও মণিমুক্তো। এ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে যম (মতান্তরে ইন্দ্র ) বলেন যে যেহেতু মর্তে তিনি সোনাদানা মণিমুক্তোই দান করেছেন পিতৃগণকে জল বা খাবার কিছুই উৎসর্গ করেননি তাই এই অবস্থা । 
উত্তরের কর্ণ বলেন যে তিনি নিজের পরিচয় জেনেছেন মৃত্যুর আগের রাতে। পিতৃতর্পণের সূযোগটাই তার ছিল না, তাই কিভাবে তর্পণ করবেন। 
বিষয়টার গুরুত্ব বুঝে যম তাকে পনেরো দিন সময় দেন। সেই সময়ে কর্ণ পৃথিবীতে এসে পিতৃতর্পণ করেন। আর ঐ সময়টা ছিল এই সৌর আশ্বিন। সেই থেকে পিতৃপক্ষ ও তর্পণের প্রথা শুরু হয়। 

তর্পণ পদ্ধতি :-
কেবলমাত্র পিতৃহীন  ব্যক্তি  এবং বিধবা পিতৃতর্পণের অধিকারী। কুমারী বা সধবা মহিলার সেই অধিকার নেই।
 
 পিতৃপক্ষে প্রতিদিন বা মহালয়ার প্রান্তে এই তর্পণ আবশ্যক। অপরদিকে প্রতিদিন প্রাতঃসন্ধ্যার সময় তর্পণ করা যায়। 

তর্পণকারী প্রথমে অবগাহন স্নান করে ভিজেকাপড়ে জলাশয়ে  নাভীপ্রমান জলে দাঁড়িয়ে, গঙ্গামাটির তিলক ধারণ ও শিখাবন্ধন করবেন। 
এরপর বামহাতে কুশি ধরে তার সাহায্যে কোষা থেকে একটু জল গোকর্ণাকৃতি ডান হাতের (হাতের সব আঙ্গুল যোগ করে বুড়ো আঙ্গুল বাদে অন্য সব আঙ্গুল একটু তুলতে হবে যাতে একটু জল ধরে) ব্রাহ্মতীর্থে (অঙ্গুষ্ঠ মূলে জল নিয়ে) তিন বার পান করুন এবং তারপর হস্ত অঙ্গুষ্ঠ দ্বারা দুই বার মুখ মার্জনা করুন, তর্জনী মধ্যমা অনামিকাগ্র দ্বারা মুখ স্পর্শ করুন, অঙ্গুষ্ঠ তর্জনী দ্বারা নাসিকা দ্বয় স্পর্শ করুন,  অঙ্গুষ্ঠ অনামিকাগ্র দ্বারা নেত্র ও কর্ণ দ্বয় স্পর্শ করুন, অঙ্গুষ্ঠ কনিষ্ঠা দ্বারা নাভি স্পর্শ করে তারপর হাত ধুয়ে নিবেন। 

তারপর আবার নিম্নলিখিতভাবে অঙ্গ মার্জন বা স্পর্শ করুন  করতল দ্বারা হৃদয় স্পর্শ করবেন, অঙ্গুলীগুলি একত্র করে মস্তক স্পর্শ করবেন এবং
 অঙ্গুলী অগ্রভাগ দ্বারা নিজের দুই বাহুমূল স্পর্শ করে আবার  হাত ধুয়ে নিন এবং বিষ্ণুর প্রসন্ন মুখ স্মরণ করে করজোড় করে পাঠ করবেন।
 (দ্বিজাতি সংস্কারহীন মানব, ওঁ পরিবর্তে নমঃ বলবেন আর দেবশর্মা স্থলে দাস বা দাসী বলবেন।)

 জোড়হাত করে ওঁ বিষ্ণুঃ বা ওঁ বিষ্ণোঃ তিনবার  বলুন।
এবার বিষ্ণুস্মরণ করে দেহ ও মন পবিত্র  হবার পর বিষ্ণুর প্রসন্ন মুখ স্মরণ করে জোড় হাত করে পাঠ করুন.......

ঔঁ শঙ্খচক্র ধরং বিষ্ণুং দ্বিভুজং পীতবাসসম্।
প্রারম্ভে কৰ্মণাং বিপ্রঃ পুণ্ডরীক্ষং স্মরেদ্ধরিম্।।

ঔঁ তদবিষ্ণোঃ পরমং পদং সদা পশ্যন্তি সুরয়ঃ। দিবীব চক্ষুরাততম্।

ঔঁ অপবিত্রঃ পবিত্রো বা সর্বাবস্থাং গতোপিবা।
যঃ স্মরেৎ পুন্ডরীকাক্ষং সবাহ্যাভ্যন্তরঃ শুচিঃ।।

এরপর নিম্নলিখিত মন্ত্রে বামহস্তে অনামিকাতে কুশের অঙ্গুরীধারণ করতে হবে  নিম্ন মন্ত্রে  - 

অস্য বটুধারণ মন্ত্রস্য মহাবামদেব ঋযিৰ্বিরাড় গায়ত্রীচ্ছন্দো বটু দেবতা গ্রহণে বিনিয়োগ।
ওঁ ত্বং ব্রহ্মা, ত্বঞ্চ বিষ্ণুশ্চ, ত্বং রুদ্রং প্রজাপতিঃ।।
ত্বমেব ভগবন্দেব বটুদেব নমোহস্তুতে।।
ওঁ শ্রীং হ্রীং ক্লীং বিবস্রং বং বটুকায় নমঃ।।

এরপর ডানহাতের অনামিকাতে কুশাঙ্গুরীয় ধারণঃ-

ওঁ বিরিঞ্চিনা সহোৎপন্নঃ পরমেষ্ঠিনিসর্গজঃ।
নুদঃ সৰ্বাণি পাপানি দর্ভ স্বস্তিকরো ভব।।

 এবার জোড় হাত করে সাক্ষীসুত্র পাঠ করতে হবে - 
ঔঁ সূর্যঃ সোমো যমঃ কালো মহাভূতানি পঞ্চ বৈঃ।
এতে শুভাশুভসেহ কর্মণো নবসাক্ষিণঃ।।

গায়ত্রী জপ ও সমর্পণ অনন্তর অন্তত ১০ বার গায়ত্রী এবং / অথবা দীক্ষামন্ত্র জপ করুন। 
ডান হাতে একটু জল নিয়ে নিম্নলিখিত মন্ত্রে সেই জল ভূমিতে ফেলে দিন।

ঔঁ গুহ্যাতি গুহ্যগোপৃত্রী ত্বং গৃহাণাস্মকৃতং জপং।
সিদ্ধির্ভবতু মে দেবি ত্বৎপ্রসাদান্মহেশ্বরী।।

জোড় হাতে কোষার জলে তীর্থ আবাহনঃ-

ঔঁ কুরুক্ষেত্রং গয়া গঙ্গা প্রভাসপুষ্করাণি চ।
তির্থান্যেতানি পুণ্যানি তর্পণকালে ভবহি।।

 প্রথমে করবেন, দেব তর্পণঃ-

প্রয়োগ – উপবীতী (পৈতা স্বাভাবিক – বাঁ কাঁধে), পুর্বমুখ, দৈবতীর্থে শুদ্ধ জলে তর্পণ (তিল দিবেন না), অন্বার (বাঁ হাতে ডানহাত ধরে) তর্পণ বা জলদান, কোষাতে বিল্বপত্র, জল, যব ও ফুল নিয়ে - 
নিম্নলিখিত মন্ত্রে প্রত্যেককে ১ বার করে তর্পণ করুন।
১। ঔঁ ব্রহ্মা তৃপ্যতু।। যার অর্থ- ব্রহ্মা তৃপ্ত হোন।
২। ঔঁ বিষ্ণুস্তৃপ্যতু।। যার অর্থ-বিষ্ণু তৃপ্ত হোন।
৩। ঔঁ রুদ্ৰস্তৃপ্যতু।।  যার অর্থ-রুদ্র তৃপ্ত হোন।
৪। ঔঁ প্রজাপতিস্তৃপ্যতু।। যার অর্থ-প্রজাপতি তৃপ্ত হোন।
৫।ঔঁ দেবা যক্ষাস্তথা নাগা গন্ধৰ্বাষ্পরসোহসুরাঃ।
রাঃ সর্পাঃ সুপর্ণাশ্চ তরবো জিহ্মগাঃ খগাঃ।
বিদ্যাধরা জলাধারাস্তথৈবাকাশগামিনঃ।
নিরাহারাশ্চ যে জীবাঃ পাপে ধর্মেরতাশ্চ যে।
তেষামাপ্যায়নায়ৈতদ্দীয়তে সলিলং ময়া।।

 এবার মনুষ্য তর্পণ - 

নিবীতী (পৈতে গলায় মালার মত), পশ্চিমমুখ, অন্বারব্ধ (বাঁ হাতে ডানহাত ধরে), কায়তীর্থে (ডান হাতের কনিষ্ঠার মূল) শুদ্ধ জলে (তিল দিবেন না) অঞ্জলি দান করবেন।

তর্পণ-নিম্নলিখিত মন্ত্রে ২ বার করে তর্পণ করুন

ঔঁ সনকশ্চ সনশ্চ তৃতীয়শ্চ সনাতনঃ।
কপিলশ্চাসুরিশ্চৈব বোঢ়ঃ পঞ্চশিখস্থথা।।
সৰ্ব্বেতে তৃপ্তিমায়ান্তু মদ্দত্তেনাম্বুনা সদা।।

 এবার ঋষি তর্পণ-
উপবীতী (পৈতা স্বাভাবিক, বাঁ কাঁধে), পুর্বমুখ, দৈবতীর্থদ্বারা শুদ্ধ জলে (তিল দিবেন না) তর্পণ, অম্বারব্ধ (বাঁ হাতে ডানহাত ধরে)।
তর্পণঃ- নিম্নলিখিত মন্ত্রে ১ বার করে তর্পণ করুন।

১। ঔঁ মরীচিস্তৃপ্যতু।  যার অর্থ-মরীচি তৃপ্ত হোন।
২। ঔঁ অত্রিস্তৃপ্যতু।  যার অর্থ-অত্রি তৃপ্ত হোন।
৩। ঔঁ অঙ্গিরাস্তৃপ্যতু।  যার অর্থ-অঙ্গিরা তৃপ্ত হোন।
৪। ঔঁ পুলস্ত্যস্তৃপ্যতু। যার অর্থ- পুলস্ত্য তৃপ্ত হোন।
৫। ঔঁ পুলহস্তৃপ্যতু।  যার অর্থ- পুলহ তৃপ্ত হোন।
৬। ঔঁ ক্রতুস্তৃপ্যতু।  যার অর্থ-ক্রতু তৃপ্ত হোন।
৭। ঔঁ প্রচেতাস্তৃপ্যতু।  যার অর্থ-প্রচেতা তৃপ্ত হোন।
৮। ঔঁ বশিষ্ঠস্তৃপ্যতু।  যার অর্থ-বশিষ্ঠ তৃপ্ত হোন।
৯। ঔঁ ভৃগুস্তৃপ্যতু।  যার অর্থ-ভৃগু তৃপ্ত হোন।
১০। ঔঁ নারদস্তৃপ্যতু।  যার অর্থ-নারদ তৃপ্ত হোন।

এরপর দিব্যপিতৃতর্পণ-
প্রাচিনাবীতী, দক্ষিণমুখ, সতিল জল পিতৃতীর্থে প্রদান করবেন।
তর্পণঃ- নিম্নলিখিত মন্ত্রে ১ বার করে তর্পণ করুন।

১/ওঁ অগ্নিষ্বাত্তাঃ পিতরস্তৃপ্যনতামেতৎ সতিলোদকং তেভ্যঃ / স্বধা।
২/সৌম্যাঃ পিতরস্তৃপ্যনতামেতৎ সতিলোদকং তেভ্যঃ / স্বধা।
৩/ হবিষ্মন্তঃ পিতরস্তৃপ্যনতামেতৎ সতিলোদকং তেভ্যঃ / স্বধা।
৪/উষ্মপাঃ পিতরস্তৃপ্যনতামেতৎ সতিলোদকং তেভ্যঃ / স্বধা।
৫/সুকালিনঃ পিতরস্তৃপ্যনতামেতৎ সতিলোদকং তেভ্যঃ / স্বধা।
৬/বর্হিষদঃ পিতরস্তৃপ্যনতামেতৎ সতিলোদকং তেভ্যঃ / স্বধা।
৭/আজপ্যাঃ পিতরস্তৃপ্যনতামেতৎ সতিলোদকং তেভ্যঃ / স্বধা।

 এবার যম তর্পণ - 
  প্রাচিনাবীতী, দক্ষিণমুখ, সতিল জল পিতৃতীর্থে প্রদান
তর্পণঃ- নিম্নলিখিত মন্ত্রে ৩ বার করে তর্পণ করুন।

ঔঁ যমায় ধর্মরাজায় মৃত্যবে চান্তকায় চ।
বৈবস্বতায় কালায় সৰ্ব্বভূতক্ষয়ায় চ।
ঔঁড়ম্বরায় দধূণায় নীলায় পরমেষ্ঠিনে।
বৃকোদরায় চিত্রায় চিত্রগুপ্তায় বৈ নমঃ।

এরপর ভীষ্মতর্পণ - 
প্রাচিনাবীতী, দক্ষিণমুখ, সতিল জল পিতৃতীর্থে প্রদান করবেন।
তর্পণঃ- নিম্নলিখিত মন্ত্রে  ১ বার তর্পণ করুন।

ওঁ বৈয়াঘ্রপদ্যগোত্রায় সাঙ্কৃত্যপ্রবরায় চ্।
অপুত্রায় দদাম্যেতৎ সলিলং ভীষ্মবর্মণে।।
এরপর জোড়হাতে প্রার্থনা - 

ওঁ ভীষ্মঃ শান্তনবো বীরঃ সত্যবাদী জিতেন্দ্রিয়ঃ।
আভিরদ্ভিরবাপ্নোতু পিত্রপৌত্রাচিতাং ক্রিয়াং।।

এবার পিতৃগণের আবাহন - 
জোড় হাত করে ভক্তিভরে সমস্ত মনপ্রাণ দিয়ে পিতৃমাতৃপুরুষ বা মাতাদের আবাহন করুনঃ–

ঔঁ আগচ্ছন্তু মে পিতর ইমং গৃহ্নপোহঞ্জলিম।

এবার পিতৃতর্পণ - 
চিন্তা করুন আপনার পিতৃপুরুষ এবং অন্যান্যরা এসেছেন এবং তাদের উপস্থিতি অনুভব করুন।

পিতৃতর্পণ প্রয়োগঃ- প্রাচিনাবীতী, দক্ষিণ মুখ, সতিল জল পিতৃতীর্থে প্রদান তর্পণ-অনন্তর নিম্নোক্ত মন্ত্রে তর্পণ করুন। 
প্রত্যেক বার মন্ত্র বলতে হবে।

১/পিতা ৩ বার.....
 ওঁ বিষ্ণুরোম....... গোত্র পিতঃ......... দেবশর্ম্মন্ তৰ্পয়ামি/ তৃপ্যস্ব, এতৎ সতিলোকং তস্মৈ স্বধা নমঃ।

২/পিতামহ ৩ বার.... …
 ওঁ বিষ্ণুরোম....... গোত্র পিতা মহং ...... দেবশর্ম্মন্ তৰ্পয়ামি/ তৃপ্যস্ব, এতৎ সতিলোকং তস্মৈ স্বধা নমঃ।

৩/প্রপিতামহ ৩ বার......
 ওঁ বিষ্ণুরোম....... গোত্র প্রপিতা মহং ...... দেবশর্ম্মন্ তৰ্পয়ামি/ তৃপ্যস্ব, এতৎ সতিলোকং তস্মৈ স্বধা নমঃ।

৪/মাতামহ ৩ বার........
 ওঁ বিষ্ণুরোম....... গোত্র মাতা মহং ...... দেবশর্ম্মন্ তৰ্পয়ামি/ তৃপ্যস্ব, এতৎ সতিলোকং তস্মৈ স্বধা নমঃ।
 
৫/প্রমাতামহ ৩ বার......
 ওঁ বিষ্ণুরোম....... গোত্র প্রমাতামহং ...... দেবশর্ম্মন্ তৰ্পয়ামি/ তৃপ্যস্ব, এতৎ সতিলোকং তস্মৈ স্বধা নমঃ।

৬/বৃদ্ধ প্রমাতামহ ৩ বার........
 ওঁ বিষ্ণুরোম....... গোত্র বৃদ্ধ প্রমাতামহং ...... দেবশর্ম্মন্ তৰ্পয়ামি/ তৃপ্যস্ব, এতৎ সতিলোকং তস্মৈ স্বধা নমঃ।

৭/মাতা ৩ বার.......
 ওঁ বিষ্ণুরোম....... গোত্রে মাতঃ  ...... দেবী তৰ্পয়ামি/ তৃপ্যস্ব, এতৎ সতিলোকং তস্যৈ স্বধা নমঃ।

৮/পিতামহী ৩ বার........ 
ওঁ বিষ্ণুরোম....... গোত্রে পিতামহী ...... দেবী তৰ্পয়ামি/ তৃপ্যস্ব, এতৎ সতিলোকং তস্যৈ স্বধা নমঃ।

৯/প্রপিতামহী ৩ বার.......
ওঁ বিষ্ণুরোম....... গোত্রে প্রপিতামহী ...... দেবী তৰ্পয়ামি/ তৃপ্যস্ব, এতৎ সতিলোকং তস্যৈ স্বধা নমঃ।

এরপরে নিম্নলিখিতদের ১ বার করে তৰ্পণ করুন। একাধিক পিতৃব্য, মাতুল ইত্যাদি পরিজন যদি মৃত থাকে তবে প্রত্যেককে আলাদা ভাবে একবার তর্পণ করুন।

মাতামহী ১ বার - 
 ওঁ বিষ্ণুরোম....... গোত্রে মাতামহী  ...... দেবী তৰ্পয়ামি/ তৃপ্যস্ব, এতৎ সতিলোকং তস্যৈ স্বধা নমঃ।

প্রমাতামহী ১ বার...... 
 ওঁ বিষ্ণুরোম....... গোত্রে প্রমাতামহী  ...... দেবী তৰ্পয়ামি/ তৃপ্যস্ব, এতৎ সতিলোকং তস্যৈ স্বধা নমঃ।

 বৃদ্ধপ্রমাতামহী ১ বার.....
 ওঁ বিষ্ণুরোম....... গোত্রে বৃদ্ধপ্রমাতামহী  ...... দেবী তৰ্পয়ামি/ তৃপ্যস্ব, এতৎ সতিলোকং তস্যৈ স্বধা নমঃ।

ভ্রাতুস্পুত্র ১ বার......
ওঁ বিষ্ণুরোম....... গোত্র ভাতুস্পুত্রঃ......... দেবশর্ম্মন্ তৰ্পয়ামি/ তৃপ্যস্ব, এতৎ সতিলোকং তস্মৈ স্বধা নমঃ।

পিতৃব্য ১ বার......... 
ওঁ বিষ্ণুরোম....... গোত্র প্রথমপিতৃব্যং......... দেবশর্ম্মন্ তৰ্পয়ামি/ তৃপ্যস্ব, এতৎ সতিলোকং তস্মৈ স্বধা নমঃ।
ওঁ বিষ্ণুরোম....... গোত্র পিতৃব্যঃ......... দেবশর্ম্মন্ তৰ্পয়ামি/ তৃপ্যস্ব, এতৎ সতিলোকং তস্মৈ স্বধা নমঃ।

মাতুল ১ বার...... 
ওঁ বিষ্ণুরোম....... গোত্র মাতুলঃ......... দেবশর্ম্মন্ তৰ্পয়ামি/ তৃপ্যস্ব, এতৎ সতিলোকং তস্মৈ স্বধা নমঃ।

পিতৃম্বসা ১ বার.......
 ওঁ বিষ্ণুরোম....... গোত্রে পিতৃম্বসাঃ  ...... দেবী তৰ্পয়ামি/ তৃপ্যস্ব, এতৎ সতিলোকং তস্যৈ স্বধা নমঃ।

ভগিনী ১ বার......
 ওঁ বিষ্ণুরোম....... গোত্রে ভগিনী  ...... দেবী/ কুমারী তৰ্পয়ামি/ তৃপ্যস্ব, এতৎ সতিলোকং তস্যৈ স্বধা নমঃ।

স্ত্রীর পিতামহ ও পিতামহী ১ বার.......
ওঁ বিষ্ণুরোম....... গোত্রে পত্নাঃ পিতামহং ......... দেবশর্ম্মন্ তৰ্পয়ামি/ তৃপ্যস্ব, এতৎ সতিলোকং তস্মৈ স্বধা নমঃ।
ওঁবিষ্ণুরোম....... গোত্রা পত্নাঃ পিতামহীং ......... দেবী তৰ্পয়ামি/ তৃপ্যস্ব, এতৎ সতিলোকং তস্যৈ স্বধা নমঃ।

স্ত্রীর মাতামহ ও মাতামহী ১বার করে......
ওঁ বিষ্ণুরোম....... গোত্রে পত্নাঃ মাতামহং ......... দেবশর্ম্মন্ তৰ্পয়ামি/ তৃপ্যস্ব, এতৎ সতিলোকং তস্মৈ স্বধা নমঃ।
ওঁবিষ্ণুরোম....... গোত্রা পত্নাঃ মাতামহীং ......... দেবী তৰ্পয়ামি/ তৃপ্যস্ব, এতৎ সতিলোকং তস্যৈ স্বধা নমঃ।

স্ত্রীর মাতুল ১ বার
ওঁ বিষ্ণুরোম....... গোত্রে পত্নাঃ মাতুলং ......... দেবশর্ম্মন্ তৰ্পয়ামি/ তৃপ্যস্ব, এতৎ সতিলোকং তস্মৈ স্বধা নমঃ।

এবার অগ্নিদগ্ধে মৃতদের জন্য......

প্রয়োগঃ- প্রাচিনাবীতী, দক্ষিণমুখ, পিতৃতীর্থ তর্পণ সতিল জলে নিম্নোক্ত মন্ত্রে ১ বার তর্পণ করুন।

ওঁ অগ্নিদগ্ধাশ্চ যে জীবা যেহপ্যদগ্ধাঃ কুলে মম।
ভূমৌ দত্তেন তৃপ্যন্তু তৃপ্তা যান্তু পরাং গতিম্।।
অর্থাৎঃ-
যারা আমার কুলে জন্মে বা যে কোন প্রাণী অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত হয়েছেন, তারা আমার ভূমিতে দেওয়া জলে তৃপ্ত হোন এবং মুক্ত হয়ে পরম গতি প্রাপ্ত হোন।

 এবার মৃত বন্ধুবান্ধবদের জন্য ১ বার....

প্রয়োগঃ- প্রাচিনাবীতী, দক্ষিণমুখ, পিতৃতীর্থ। 
সতিল জলে নিম্নোক্ত মন্ত্রে ১ বার তর্পণ করুন।

ওঁ যেহবান্ধবা বান্ধবা বা যেহন্যজন্মনি বান্ধবাঃ।
তে তৃপ্তিমখিলাং যান্তু যে চাম্মত্তোয়কাক্ষিণঃ।।
অর্থাৎঃ-
যারা বন্ধু নয় বা যারা বন্ধু অথবা যারা জন্মান্তরে বন্ধু ছিল এবং যারা আমার কাছে জলের প্রত্যাশা করে, তারা সম্পূর্ণ তৃপ্তি লাভ করুন।

এবার বস্ত্রনীপিড়োদক দ্বারা তর্পন করবেন.....

অর্থাৎ, তর্পনকারী তার পরিহিত ভিজে কাপড়টি নিংড়ে মাটিতে সেই নিংড়ানো জল ফেলবেন.....
প্রয়োগঃ- জলাশয় থেকে স্থলে উঠে প্রাচিনাবীতী, দক্ষিণমুখ, পিতৃতীর্থ দ্বারা সেই নিংড়ানো  সতিল জল ফেলবেন । 
সতিল জলে নিম্নোক্ত মন্ত্রে ১ বার তর্পণ করুন।

ওঁ যে চাস্মাকং কুলে জাতা অপুত্রাগোত্রিণো মৃতাঃ।
তে তৃপ্যন্তু ময়া দত্তং বস্ত্রনীপিড়োদকং। 
অর্থাৎঃ-
যারা আমাদের বংশে জন্মগ্রহন করে পুত্রহীন ও বংশহীন ভাবে মারা গেছেন, তারা এই বস্ত্রনীপিড়োদক দ্বারা তৃপ্ত হোন। 

উপরোক্ত বিধি অনুসারে তর্পণে যদি অসমর্থ হোন তখন রামতর্পণ করতে পারেন..... 
রামতর্পণ (আব্রহ্মলোক বা সমস্ত লোক) 
প্রয়োগঃ-প্রাচিনাবীতী, দক্ষিণমুখ, পিতৃতীর্থ তর্পণ সতিল জলে নিম্নোক্ত মন্ত্রে ৩ বার তর্পণ করুন।

ঔঁ আব্রহ্ম ভুবনাল্লোকা দেবর্ষিপিতৃমানবাঃ।
তৃপ্যন্তু পিতরঃ সৰ্ব্বে মাতৃমাতামহাদয়ঃ।।
অতীতকুলকোটীনাং সপ্তদ্বীপনিবাসিনা
ময়া দত্তেন তোয়েন তৃপ্যন্তু ভুবনত্রয়।
অর্থাঃ- 
ভু:লোক থেকে ব্রহ্মলোক অবধি যাবতীয় লোকে  অবস্থিত দেবগণ, ঋষিগণ, পিতৃগণ, মনুষ্যগণ, পিতৃকুল ও মাতৃকুল প্রভৃতি সকলে তৃপ্ত হোন।  
আমার পূর্ব পুৰ্ব্ব বহু কোটি জন্মের কুলের সবাই ও সপ্তদ্বীপনিবাসী সকল প্রাণী, ত্রিভুবন আমার দেওয়া এই রামতর্পণের জলে তৃপ্ত হোক। 

এতেও অপারগ হলে কেবলমাত্র লক্ষণ তর্পণ প্রশস্ত.... 
প্রয়োগঃ-প্রাচিনাবীতী, দক্ষিণমুখ, পিতৃতীর্থ তর্পণ সতিল জলে নিম্নোক্ত মন্ত্রে ৩ বার তর্পণ করুন।

আব্রহ্মস্তম্বপর্য্যন্তং জগৎ তৃপ্যতু।।

অর্থাৎ, ব্রহ্মা থেকে শুরু করে তৃণপর্যন্ত সকলেই তৃপ্ত হোন।

 এবার অছিদ্রাবরণ কর্ম সম্পাদিত করতে হবে.... 

ঔঁ অদ্য কৃত্যৈতৎ তর্পণকৰ্ম অচ্ছিদ্রম্ অন্তু।
ঔঁ অদ্য ইত্যাদি কৃতঃ অস্মিন্ তর্পণকৰ্ম্মাণ
যদ যদ বৈগুণ্যং জাতং তৎ দোষ প্রশমনায় ঔঁ বিষ্ণুস্মরণং করিষ্যে।।

অর্থাৎঃ- আজকের এই তর্পণকৰ্ম দোষমুক্ত হোক। আজকের এই তর্পণকৰ্ম্মে যে যে দোষ বা ত্রুটি হয়েছে, তার নিবারণের জন্য আমি শ্রীবিষ্ণু স্মরণ করব।

ঔঁ তদৃবিষ্ণোঃ পরমং পদং সদা পশ্যন্তি সুরয়ঃ। দিবীব চক্ষুরাততং।

অর্থাৎঃ- সেই বিষ্ণু পরম আশ্রয় এবং জ্ঞানীরা ওনাকে সৰ্ব্বদা দর্শন করেন।

ঔঁ বিষ্ণুঃ – এই মন্ত্র দশবার পাঠ করুন।

জোড় হাত করে পাঠ করুন

ঔঁ অজ্ঞানা যদি বা মোহাৎ প্রচ্যবেতাধ্বরেষু
যৎ স্মরণাদেব তদ্বিষ্ণোঃ সম্পূর্ণং স্যাদিতি শ্রুতিঃ।।

অর্থাৎঃ- অজ্ঞানে বা ভুলে রুটি হয়ে থাকলে, বিষ্ণুস্মরণদ্বারা দোষমুক্ত হয়ে তাহা সম্পূর্ণ হয় এটিই  শ্রুতিতে  বলা হয়েছে ।

এবার বিষ্ণু সমর্পণ দক্ষিণ হাতে এক গণ্ডুষ জল নিয়ে পাঠ করুনঃ- 

ঔঁ প্রিয়তাং পুন্ডরীকাক্ষঃ সৰ্ব্বযজ্ঞেশ্বরো হরিঃ।
তস্মিংস্তুষ্টে জগতুষ্টং প্রীণিতে প্রীণিতং জগৎ।।
ময়া যদিদং তর্পণকৰ্মকৃতং তৎ সৰ্ব্বং ভগবদৃবিষ্ণুচরণে সমর্পিতম্।।ওঁ বিষ্ণুঃ। ওঁ বিষ্ণুঃ। ওঁ বিষ্ণুঃ।
অর্থাৎঃ– 
সমস্ত যজ্ঞের ঈশ্বর পুন্ডরীকাক্ষঃ শ্রীহরি বা বিষ্ণুর তৃপ্তি হোক।
ওনার সন্তুষ্টিতে জগৎ সন্তুষ্ট হয়,ওনার প্রীতিতে জগৎ প্রীত হয়।
 আমার এই সমস্ত তর্পণকৰ্ম্ম ভগবান শ্রীবিষ্ণু চরণে সমর্পণ করলাম।
বিষ্ণুর উদ্দেশ্যে হাতের জল ত্যাগ করুন। 
চিন্তা করুন বিষ্ণুর উদ্দেশ্যে সমস্ত ফলত্যাগ করলেন ও তিনি সানন্দে সমস্ত কৰ্ম্মফল গ্রহণ করলেন।

এবার পিতৃস্তুতি ও পিতৃপ্রণাম করবেন......
জোড়হাতে পুর্বমুখে সুর্যের দিকে তাকিয়ে বলবেন....

পিতা স্বর্গঃ পিতা ধর্ম্মঃ পিতা হি পরমং তপঃ।
পিতরি প্রীতিমাপন্নে প্রীয়ন্তে সর্ব্বদেবতাঃ।।

ওঁ পিতৃন্নমস্যে দিবি যে চ্ মুর্ত্তাঃ স্বধাভুজঃ কাম্যফলা ভিসন্ধৌ।
প্রদানশক্তাঃ সকলেপ্সিতানাং বিমুক্তিদা যেহনভিসংহিতেষু।।


                        পিতৃস্তোত্রম্
রুচিরুবাচঃ-
অর্চিতানাম মূর্তানাং পিতৃণাং দীপ্ততেজসাম্।
নমস্যামি সদা তেষাং ধ্যানিনাং দিব্যচক্ষুষাম্।। ১
ইন্দ্রদীনাং চ নেতারো দক্ষমারীচয়োস্তথা।
সপ্তর্ষিণাং তথান্যেষাং তান্ নমস্যামি কামদান্।। ২
মন্বাদীনাং মুনীন্দ্রাণাং সূর্যাচন্দ্রূসোস্তযথা।
তান্ নমস্যাহং সর্বান পিতৃনপ্সুদধাবপি।। ৩
নক্ষত্রাণাং গ্রহণাং চ বাচ্ব্যগ্ন্যোর্নভসস্তথা।
দ্যাবাপৃথিব্যোশ্চ তথা নমস্যামি কৃতাঞ্জলি।। ৪
দেবর্ষিণাং জনিতৃশ্চ সর্বলোকনমস্কৃতান্।
অক্ষচ্চস্য সদাদাতৃন নমস্যেঘহং কৃতাঞ্জলিঃ।। ৫
প্রজাতেঃ কশ্যপায় সোমায় বরুণায় চ।
যোগেশ্বরেভ্যশ্চ সদা নমস্যামি কৃতাঞ্জলি।। ৬
নমো গণেভ্যঃ সপ্তভ্যস্তথা লোকেষু সপ্তেসু।
স্বয়ম্ভূবে নমস্যামি ব্রহ্মণে যোগক্ষুষে।। ৭
সোমাধারান্ পিতৃগণানয়োমূর্তি ধরাংস্তথা।
নমস্যামি তথা সোমং পিতরং জগতামহম্।। ৮
অগ্নিরুপাংস্তথৈবান্যাম্ নমস্যামি পিতৃনহম্।
অগ্নিষোমময়ং বিশ্বং য়ত এতদশেষতঃ।। ৯
য়ে  তু তেজসি য়ে চৈতে সোমসূর্যাগ্নিমূর্তয়ঃ ।
জগত্স্বরুপিণশ্চৈবতথা ব্রহ্মস্বরুপিণঃ
তেভ্যোঘখিলেভ্যো যোগিভ্যঃ পিতৃভ্যো য়তমানসঃ।
নমো নমো নমস্তে মে প্রসীদন্তু স্বধাভুজঃ।। ১০