About us

সোমবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

কুশোৎপাটিনী অমাবস্যা

                      কুশোৎপাটিনী অমাবস্যা

ভাদ্রমাসের কৃষ্ণপক্ষের অমাবস্যাকে কুশোৎপাটিনী বা কুশগ্রহণী অমাবস্যা বলে। এই অমাবস্যাকে পিঠোরা অমাবস্যাও বলে কারণ এদিন পিতৃগণ পৃথিবীর উদ্দেশ্যে পিতৃলোক হতে বের হন। তবে এই অমাবস্যা কখনোই কৌশিকী বা কৌষিকী অমাবস্যা নয়। যদিও কুশ সম্বন্ধীয় বলে কৌশিকী শব্দটা কিছুটা কাছাকাছি।

এই দিনে ব্রাহ্মণগণ কুশ সম্বৎসরের পুজোর জন্য কুশ তোলেন। এই দিনে কুশ তুললে তা বারো বৎসর পর্যন্ত বাসি হয় না। অন্যথায় অমাবস্যায় তোলা কুশ একমাস এবং বাকি দিনে তোলা কুশ একদিন পর বাসি হয়ে যায়।
শাস্ত্রানুসারে কুশের অগ্রভাগে শিব, মধ্যে বিষ্ণু ও মূলে ব্রহ্মার নিবাস। তাই কুশ পিতৃকার্য হতে বিবাহাদি সব কাজে ব্যবহৃত হয়।

তিথিতত্ত্বমে  মরীচি বচনে আছে - 

মাসে নভস্যামাবস্যা তস্যাং দর্ভচয়ো মতঃ।
অযাতযামাস্তে দর্ভা বিনিযোজ্যাঃ পুনঃ পুনঃ।।

তাৎপর্য, সৌর ভাদ্রমাসের অমাবস্যাতে কুশ কেটে সঞ্চয় করে রাখবে। সেই সকল কুশ বাসি হয়না। সেগুলিকে বারেবার ব্যবহার করা যায়। 

এসময় শিবার্চনার বিধি আছে। লিঙ্গপুরণ অনুসারে সূর্য যখন সিংহরাশিতে অবস্থান করেন সেই কৃষ্ণপক্ষীয় চতুর্দশী সেই তিথিতে যে শিবার্চ্চন করবে, তাকে কখনো নরকে পতিত হতে হয়না৷

সিংহরাশি গতে ভানৌ কৃষ্ণা যা চ চতুর্দ্দশী৷
মামর্চ্চয়ন্তি তত্রন্তি নরকং ন ব্রজন্তি তে৷৷


মৎস্যপুরাণ অনুসারে ভগবান বিষ্ণু যখন বরাহ অবতার ধারন করেন তখন তার শরীরের রোম পৃথিবীর উপর ঝরে পড়লে তা থেকে কুশের উৎপত্তি হয়।
কুশ দশ প্রকার।

কুশাঃ কাশা যবা দূর্বা উশীরাচ্ছ সকুন্দকাঃ।
গোধূমা ব্রাহ্ময়ো মৌঞ্জা দশ দর্ভ সবল্বজাঃ।।

কুশ উত্তোলনের জন্য প্রাতঃকালই শ্রেষ্ঠ। এই অমাবস্যার দিন উত্তরমুখে বসে নিম্নের মন্ত্র পড়ে কুশ উত্তোলন করতে হবে।

বিরিঞ্চিনা সহোৎপন্ন পরমেষ্ঠিন্নিসর্গজ।
নুদ সর্বাণি পাপানি দর্ভ স্বস্তিকরো ভব।।

বা ' ॐ হুং ফট্ স্বাহা' ( ব্রাহ্মণপক্ষে ) 

তবে লক্ষ্য রাখতে হবে যেন কুশের অগ্রভাগ ছেঁড়া না হয়। এবং কুশকে কোনও চাকু বা ছুরি দিয়ে কাটা যাবে না, হাত দিয়ে মূলসহ উৎপাটন করতে হবে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন