রথযাত্রা
( দেখুন - সূচিপত্র )
রথযাত্রা হল বাংলা তথা সারা ভারতের অন্যতম প্রধান উৎসব। আর এই রথযাত্রাকে কেন্দ্র করে মানুষের কৌতুহলের শেষ নেই। রথযাত্রা কি ও কেন আসুন জেনে নিই। মানুষের শরীরটাই যেন একটা রথ । আমরা দেখি, কঠোপনিষদে সেই রথের এক অপূর্ব বর্ণনা । আমাদের শরীর-রূপ রথখানি বিজয়পথে অবিরাম ছুটে চলেছে । মানবদেহের ইন্দ্রিয়গুলি হচ্ছে এই রথের ধাবমান ঘোড়া । আমাদের বুদ্ধি-রূপ সারথি, জন-রূপ লাগাম জুড়ে দিয়ে ইন্দ্রিয়-রূপ ধাবমান ঘোড়াগুলির গতিকে সবলে নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছে । আর সেই রথের অধিপতি হচ্ছে আত্মা, যা কিনা অচঞ্চল শান্ত মূর্তিতে রথোপরি বিরাজিত, রথের গতিবেগ তাঁকে আদৌ স্পর্শ করছে না । অনেক পন্ডিত মনে করেন শ্রীশ্রীজগন্নাথকে নিয়ে এই রথযাত্রা উৎসব ওই চিরন্তন আধ্যাত্মিক আদর্শকেই সর্বজনের কাছে পৌঁছে দেওয়ার এক লৌকিক আয়োজন । জনসমষ্টি নিয়েই জগৎ এবং সেই জনগণের অধিনায়ক হচ্ছে প্রভু জগন্নাথ । জগন্নাথ স্বামী “অঙ্গুষ্ঠ মাত্রঃ পুরুষঃ ” রূপে সকলের মধ্যে রয়েছেন । অনন্তকালের এই বিশ্বাস পোষণ করেই ভক্তরা মনি করেন, তাঁকে জানলে ও বুঝলে আর পুনর্জন্ম হয় না ।
শাস্ত্রগ্রন্থ ও কিংবদন্তী অনুসারে বলা হয়ে বলা হয়, কৃষ্ণের মৃত্যুর পর দ্বারকার সমুদ্রীতীরে মৃতদেহ পোড়াবার সময় প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে সত্কার কার্য অসমাপ্ত থেকে যায়। ওই অর্ধদগ্ধ দেহাংশ সমুদ্রের জলে ভাসতে ভাসতে পশ্চিম উপকূল থেকে পূর্ব উপকূলে কলিঙ্গ রাজ্যে এসে পৌঁছয়। ওই অঞ্চলে বসবাসকারী এক দল শবর তাদের নেতা বিশ্বাবসুর নেতৃত্বে গভীর জঙ্গলে মন্দির নির্মাণ করে ওই দেহাংশকে ‘নীলমাধব’ দেবতাজ্ঞানে পুজো করতে আরম্ভ করে। নীলমাধবের খ্যাতি শুনে প্রাচীন অবন্তী নগরীর বিষ্ণুভক্ত রাজা ইন্দ্রদ্যুম্ন তা হস্তগত করতে গিয়ে ব্যর্থ হলেন। বিশ্বাবসুর কাছে পরাজিত ইন্দ্রদ্যুম্ন তখন বিষ্ণুর প্রার্থনা আরম্ভ করেন।
ইন্দ্রদ্যুম্নর প্রার্থনায় সন্তুষ্ট হয়ে বিষ্ণু তাঁকে নির্দেশ দেন যে পুরীর সমুদ্রতীরে এক নিমকাষ্ঠ খণ্ড ভেসে আসবে তা থেকে যোগ্য কারিগর দিয়ে বিগ্রহ তৈরি করে পুজো করতে হবে। যথা সময়ে পুরীর সমুদ্রতীরে চক্রতীর্থ অঞ্চলে একটি বড়ো নিমকাঠের গুঁড়ি ভেসে আসে। তা দিয়ে বিশ্বকর্মা ভাস্করের ছদ্মবেশে দেবতার বিগ্রহ তৈরি আরম্ভ করেন। বিশ্বকর্মা মূর্তি তৈরির আগে রাজাকে শর্ত দেন যে, মূর্তি তৈরির জন্য একুশ দিন সময় দিতে হবে এবং মূর্তির নির্মাণকাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত কেউ ওই ঘরে প্রবেশ করতে পারবে না।
বিশ্বকর্মা সময় চাইলেও নির্মাণকার্যে দেরি দেখে রাজা ইন্দ্রদ্যুম্ন ও রানি গুণ্ডিচা অধৈর্য হয়ে পনের দিনের মাথায় দরজা খুলে ফেললে মূর্তি অসম্পূর্ণ রেখেই বিশ্বকর্মা অন্তর্হিত হন। তখন বিষ্ণুর নির্দেশে ইন্দ্রদ্যুম্ন ওই অর্ধসমাপ্ত জগন্নাথ, সুভদ্রা ও বলরামের বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা করেন।
জগন্নাথ মন্দির দর্শন সেড়ে “মার্কণ্ডেয় পুষ্করিণী” পুরান গুলি বিশেষত স্কন্দপুরাণে লেখা আছে ভগবান হরির নির্দেশে মার্কণ্ড মুনি এই পুষ্করিণী খনন করেছিলেন , এখানে অনেক ঘাট, শিব মন্দির অষ্ট মাতৃকা মন্দির আছে । এবার দর্শনীয় স্থান ইন্দ্রদুম্ন্য সরোবর । মহারাজ ইন্দ্রদুম্ন্য অশ্বমেধ যজ্ঞ করার সময় ব্রাহ্মণ দের যে গাভী দান করেছিলেন সেই গাভীগুলির ক্ষুরের আঘাতে এই পুষ্করিণী সৃষ্টি হয় ও গোমূত্র, জলে পুষ্করিণী ভরাট হয় । এই জলের দ্বারা মহাপ্রভু তাঁর পার্ষদ সহিত গুণ্ডিচা মন্দির মার্জন করতেন । এরপর “মহাদধি সমুদ্র” । পুরাণ মতে মা লক্ষ্মীর আবির্ভাব সমুদ্র মন্থন থেকে হয়েছিলো। বলা হয় এইস্থানে মা লক্ষ্মী প্রকট হয়েছিলেন । জগন্নাথের স্ত্রী লক্ষ্মী দেবীর আবির্ভাব এইস্থানে হওয়ায় ওড়িশা বাসী হাস্যচ্ছলে এইস্থান কে জগন্নাথের শ্বশুর গৃহ বলেন । এই স্থানেই মহাপ্রভু পরম ভক্ত হরিদাস ঠাকুরকে সমাধিস্থ করেন বালি দিয়ে ।
এরপর “নরেন্দ্র পুষ্করিণী” । এটিকে জগন্নাথ দেবের পিসির বাড়ী বলা হয় । পিসি হলেন কুন্তী । মহাভারতে কিছু স্থানে দেখা যায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ কুন্তীদেবীকে ‘পিসি’ সম্বোধন করতেন । এখানে জগন্নাথ দেব এসে মালপোয়া সেবা নেন। এখানেই প্রভুর চন্দনযাত্রা হয় । তারপর আছে “শ্বেতগঙ্গা” বলা হয় এখানে মা গঙ্গা অবস্থান করেন। এখানে স্নানে গঙ্গা স্নানের ফল পাওয়া যায় । এখানে ভগবান মৎস্য ও মা গঙ্গার মন্দির আছে । এরপর স্বর্গদ্বার সমুদ্র তট । অপরূপ সৌন্দর্য মণ্ডিত সমুদ্র তট । সমুদ্র চরে বসে আপনার মন কোনো এক মধুমাখা কল্পনা লোকে চলে যাবে, হোটেলের বেলকোণি থেকে এই সমুদ্র তরঙ্গ দেখতে দেখতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় যেনো কেটে যায়, বিরক্ত আসে না ।
পুরীর রথযাত্রার এই তথ্যগুলি কি জানেন?
( দেখুন - সূচিপত্র )
রথযাত্রা হল বাংলা তথা সারা ভারতের অন্যতম প্রধান উৎসব। আর এই রথযাত্রাকে কেন্দ্র করে মানুষের কৌতুহলের শেষ নেই। রথযাত্রা কি ও কেন আসুন জেনে নিই। মানুষের শরীরটাই যেন একটা রথ । আমরা দেখি, কঠোপনিষদে সেই রথের এক অপূর্ব বর্ণনা । আমাদের শরীর-রূপ রথখানি বিজয়পথে অবিরাম ছুটে চলেছে । মানবদেহের ইন্দ্রিয়গুলি হচ্ছে এই রথের ধাবমান ঘোড়া । আমাদের বুদ্ধি-রূপ সারথি, জন-রূপ লাগাম জুড়ে দিয়ে ইন্দ্রিয়-রূপ ধাবমান ঘোড়াগুলির গতিকে সবলে নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছে । আর সেই রথের অধিপতি হচ্ছে আত্মা, যা কিনা অচঞ্চল শান্ত মূর্তিতে রথোপরি বিরাজিত, রথের গতিবেগ তাঁকে আদৌ স্পর্শ করছে না । অনেক পন্ডিত মনে করেন শ্রীশ্রীজগন্নাথকে নিয়ে এই রথযাত্রা উৎসব ওই চিরন্তন আধ্যাত্মিক আদর্শকেই সর্বজনের কাছে পৌঁছে দেওয়ার এক লৌকিক আয়োজন । জনসমষ্টি নিয়েই জগৎ এবং সেই জনগণের অধিনায়ক হচ্ছে প্রভু জগন্নাথ । জগন্নাথ স্বামী “অঙ্গুষ্ঠ মাত্রঃ পুরুষঃ ” রূপে সকলের মধ্যে রয়েছেন । অনন্তকালের এই বিশ্বাস পোষণ করেই ভক্তরা মনি করেন, তাঁকে জানলে ও বুঝলে আর পুনর্জন্ম হয় না ।
শাস্ত্রগ্রন্থ ও কিংবদন্তী অনুসারে বলা হয়ে বলা হয়, কৃষ্ণের মৃত্যুর পর দ্বারকার সমুদ্রীতীরে মৃতদেহ পোড়াবার সময় প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে সত্কার কার্য অসমাপ্ত থেকে যায়। ওই অর্ধদগ্ধ দেহাংশ সমুদ্রের জলে ভাসতে ভাসতে পশ্চিম উপকূল থেকে পূর্ব উপকূলে কলিঙ্গ রাজ্যে এসে পৌঁছয়। ওই অঞ্চলে বসবাসকারী এক দল শবর তাদের নেতা বিশ্বাবসুর নেতৃত্বে গভীর জঙ্গলে মন্দির নির্মাণ করে ওই দেহাংশকে ‘নীলমাধব’ দেবতাজ্ঞানে পুজো করতে আরম্ভ করে। নীলমাধবের খ্যাতি শুনে প্রাচীন অবন্তী নগরীর বিষ্ণুভক্ত রাজা ইন্দ্রদ্যুম্ন তা হস্তগত করতে গিয়ে ব্যর্থ হলেন। বিশ্বাবসুর কাছে পরাজিত ইন্দ্রদ্যুম্ন তখন বিষ্ণুর প্রার্থনা আরম্ভ করেন।
জগন্নাথ মন্দির দর্শন সেড়ে “মার্কণ্ডেয় পুষ্করিণী” পুরান গুলি বিশেষত স্কন্দপুরাণে লেখা আছে ভগবান হরির নির্দেশে মার্কণ্ড মুনি এই পুষ্করিণী খনন করেছিলেন , এখানে অনেক ঘাট, শিব মন্দির অষ্ট মাতৃকা মন্দির আছে । এবার দর্শনীয় স্থান ইন্দ্রদুম্ন্য সরোবর । মহারাজ ইন্দ্রদুম্ন্য অশ্বমেধ যজ্ঞ করার সময় ব্রাহ্মণ দের যে গাভী দান করেছিলেন সেই গাভীগুলির ক্ষুরের আঘাতে এই পুষ্করিণী সৃষ্টি হয় ও গোমূত্র, জলে পুষ্করিণী ভরাট হয় । এই জলের দ্বারা মহাপ্রভু তাঁর পার্ষদ সহিত গুণ্ডিচা মন্দির মার্জন করতেন । এরপর “মহাদধি সমুদ্র” । পুরাণ মতে মা লক্ষ্মীর আবির্ভাব সমুদ্র মন্থন থেকে হয়েছিলো। বলা হয় এইস্থানে মা লক্ষ্মী প্রকট হয়েছিলেন । জগন্নাথের স্ত্রী লক্ষ্মী দেবীর আবির্ভাব এইস্থানে হওয়ায় ওড়িশা বাসী হাস্যচ্ছলে এইস্থান কে জগন্নাথের শ্বশুর গৃহ বলেন । এই স্থানেই মহাপ্রভু পরম ভক্ত হরিদাস ঠাকুরকে সমাধিস্থ করেন বালি দিয়ে ।
এরপর “নরেন্দ্র পুষ্করিণী” । এটিকে জগন্নাথ দেবের পিসির বাড়ী বলা হয় । পিসি হলেন কুন্তী । মহাভারতে কিছু স্থানে দেখা যায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ কুন্তীদেবীকে ‘পিসি’ সম্বোধন করতেন । এখানে জগন্নাথ দেব এসে মালপোয়া সেবা নেন। এখানেই প্রভুর চন্দনযাত্রা হয় । তারপর আছে “শ্বেতগঙ্গা” বলা হয় এখানে মা গঙ্গা অবস্থান করেন। এখানে স্নানে গঙ্গা স্নানের ফল পাওয়া যায় । এখানে ভগবান মৎস্য ও মা গঙ্গার মন্দির আছে । এরপর স্বর্গদ্বার সমুদ্র তট । অপরূপ সৌন্দর্য মণ্ডিত সমুদ্র তট । সমুদ্র চরে বসে আপনার মন কোনো এক মধুমাখা কল্পনা লোকে চলে যাবে, হোটেলের বেলকোণি থেকে এই সমুদ্র তরঙ্গ দেখতে দেখতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় যেনো কেটে যায়, বিরক্ত আসে না ।
পুরীর রথযাত্রার এই তথ্যগুলি কি জানেন?
পুরীর রথযাত্রার এই তথ্যগুলি আজ রথযাত্রা ৷ আজকের দিনে রথে চড়ে সুভদ্রা ও বলরামকে সঙ্গে নিয়ে মাসির বাড়ি রওনা দেবেন জগন্নাথ ৷ জগন্নাথদেবের এই রথযাত্রা ঘিরে সাজো সাজো রব গোটা দেশে ৷ পুরী থেকে কলকাতা, হুগলি থেকে আমেদাবাদ জুড়ে পালিত হচ্ছে।
* জগন্নাথ প্রতিবছর নব রথে উঠে। নব মানে নতুন আবার নব মানে নববিধা ভক্তি। মানে ভক্তির রথে জগন্নাথ উঠে। ভক্তি দিয়ে গড়া রথ।
* গুণ্ডিচা মন্দিরে যান জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা- মন্দির থেকে গুণ্ডিচা মন্দিরের দূরত্ব প্রায় ২ কিমি- প্রতি বছরই নতুন করে প্রতিটি রথ তৈরি হয় ।
* জগন্নাথের রথের নাম নন্দীঘোষ বা কপিধ্বজ । এই রথের ১৬টি চাকা। রথের রঙ পীত। ষোল চাকা মানে দশ ইন্দ্রিয় আর ছয় রিপূ । যা থাকে ভগবানের নীচে। রথে জগন্নাথের সঙ্গী হন মদনমোহন- নন্দীঘোষের উচ্চতা ৪৫ ফুট, ১৬ চাকা- ৮৩২ কাঠের টুকরো দিয়ে গড়া হয় রথ- লাল ও হলুদ কাপড়ে সাজানো হয়- নন্দীঘোষের সারথির নাম দারুকা- রথের মাথায় থাকা পতাকার নাম ত্রৈলোক্যমোহিনী- এই রথে ৪ ঘোড়া থাকে- জগন্নাথের রথের রশির নাম ‘শঙ্খচূড়া নাগুনি’- জগন্নাথের রথে সওয়ার হন আরও ৯ দেবতা- এঁদের মধ্যে আছেন গোবর্ধন, কৃষ্ণ, নরসিংহ, রাম, নারায়ণ, হনুমান, রুদ্র- জগন্নাথের রথে একজন রক্ষীও থাকেন- এই রক্ষীর নাম গারুদা।
*রথের দড়ি - বাসুকি। সেজন্যে বলা হয়, রথের দড়ি ধরলে পুণ্য হয়। মূলত, বাসুকির কৃপা লাভ হয়।
*পুরীর রথের ৪২ টি চাকা। (বলদেবের রথের ১৪ টি, জগন্নাথের রথের ১৬ টি, সুভদ্রাদেবীর ১২ টি)।
*পুরীর রথ চলার সময় রাস্তায় চাকার তিনটি দাগ পড়ে - তা হল গঙ্গা, যমুনা, সরস্বতী। যারা বার্ধক্যজনিত কারণে বা অন্যান্য কারণে রথের দড়ি ধরতে পারেন না, তারা যদি চাকার এই তিনটি দাগের ধুলি গ্রহণ করেন, বা এই ত্রিদাগে গড়াগড়ি দেন, তাহলে গঙ্গা-যমুনা-সরস্বতীতে অবগাহনের ফল লাভ করেন।
* বলভদ্রের রথের নাম হল তালধ্বজ বা হলধ্বজ। ১৪টি চাকা আছে। ১৪টি চাকা মানে ১৪টি ভুবন। বলভদ্র হল গুরুতত্ত্ব। গুরুতত্ত্বের অধীন ১৪টি ভূবন।
*দেবতাদের দ্বারা প্রদত্ত সুভদ্রা দেবীর রথের নাম ‘দর্পদলন’ বা 'পদ্মধ্বজ'। রথের উচ্চতা ৩১ হাত। এই রথে ১২ টি চাকা আছে। এর অর্থ ভজনের সময় বার মাস। প্রতিদিন ভক্তিঙ্গ যাজন করতে হবে।
* সম্পূর্ণ রথ শুধুমাত্র কাঠের তৈরি, ফলে রথ চলার সময় কাঠের কড়কড় শব্দ হয়, এটিকে বলা হয় বেদ।
* ২০৬ টি কাঠ দিয়ে জগন্নাথের রথ হয়। ঠিক আমাদের দেহেও ২০৬ টি হাড়।
* রথ যখন চলে প্রথমে থাকে বলদেবের রথ। কারণ বলদেব দাদা। আবার জগত গুরুতত্ত্ব। তিনিই তো নিত্যানন্দ ।সবার জীবনে আগে গুরুকৃপা আসতে হবে।
তারপর চলে সুভদ্রার রথ। সুভদ্রা হল ভক্তি তত্ত্ব। গুরুকৃপার পর আসে ভক্তিমহারাণী। কারণ ভক্তির ঠিকানা শ্রীগুরুপদে। “শ্রীগুরুচরণপদ্ম কেবল ভকতিসদ্ম। বন্দো মুই সাবধান মতে।” গুরুদেব হল ভগবানের করুনার মুর্তি।
তারপর যায় জগন্নাথের রথ।
প্রথমে গুরুদেব, তারপর ভক্তি, তারপর ভগবান জগন্নাথ।
রথের দর্শনে শ্রী চৈতন্যমহাপ্রভু নৃত্য করছেন। অপলক নয়নে দর্শন করছেন জগন্নাথ। রথ চলতে চলতে মাঝে মাঝে থেমে যায়।
এর কারন রাধা ভাবে বিভোর মহাপ্রভুকে ভাল করে দেখার জন্য রথ একটু থামে আবার চলে। অনেক ভক্তের মাঝে মহাপ্রভুকে না দেখে জগন্নাথ থেমে যায়। রথ অপ্রকৃতি কারন তা প্রভু জগন্নাথের ইচ্ছা শক্তিতে রথ চলে।
আজও রথে অচল জগন্নাথকে দেখে রাধা ভাবে বিভোর মহাপ্রভু আনন্দে নেচে নেচে যায়।
*রথের দড়ি - বাসুকি। সেজন্যে বলা হয়, রথের দড়ি ধরলে পুণ্য হয়। মূলত, বাসুকির কৃপা লাভ হয়।
*পুরীর রথের ৪২ টি চাকা। (বলদেবের রথের ১৪ টি, জগন্নাথের রথের ১৬ টি, সুভদ্রাদেবীর ১২ টি)।
*পুরীর রথ চলার সময় রাস্তায় চাকার তিনটি দাগ পড়ে - তা হল গঙ্গা, যমুনা, সরস্বতী। যারা বার্ধক্যজনিত কারণে বা অন্যান্য কারণে রথের দড়ি ধরতে পারেন না, তারা যদি চাকার এই তিনটি দাগের ধুলি গ্রহণ করেন, বা এই ত্রিদাগে গড়াগড়ি দেন, তাহলে গঙ্গা-যমুনা-সরস্বতীতে অবগাহনের ফল লাভ করেন।
* বলভদ্রের রথের নাম হল তালধ্বজ বা হলধ্বজ। ১৪টি চাকা আছে। ১৪টি চাকা মানে ১৪টি ভুবন। বলভদ্র হল গুরুতত্ত্ব। গুরুতত্ত্বের অধীন ১৪টি ভূবন।
*দেবতাদের দ্বারা প্রদত্ত সুভদ্রা দেবীর রথের নাম ‘দর্পদলন’ বা 'পদ্মধ্বজ'। রথের উচ্চতা ৩১ হাত। এই রথে ১২ টি চাকা আছে। এর অর্থ ভজনের সময় বার মাস। প্রতিদিন ভক্তিঙ্গ যাজন করতে হবে।
* সম্পূর্ণ রথ শুধুমাত্র কাঠের তৈরি, ফলে রথ চলার সময় কাঠের কড়কড় শব্দ হয়, এটিকে বলা হয় বেদ।
* ২০৬ টি কাঠ দিয়ে জগন্নাথের রথ হয়। ঠিক আমাদের দেহেও ২০৬ টি হাড়।
* রথ যখন চলে প্রথমে থাকে বলদেবের রথ। কারণ বলদেব দাদা। আবার জগত গুরুতত্ত্ব। তিনিই তো নিত্যানন্দ ।সবার জীবনে আগে গুরুকৃপা আসতে হবে।
তারপর চলে সুভদ্রার রথ। সুভদ্রা হল ভক্তি তত্ত্ব। গুরুকৃপার পর আসে ভক্তিমহারাণী। কারণ ভক্তির ঠিকানা শ্রীগুরুপদে। “শ্রীগুরুচরণপদ্ম কেবল ভকতিসদ্ম। বন্দো মুই সাবধান মতে।” গুরুদেব হল ভগবানের করুনার মুর্তি।
তারপর যায় জগন্নাথের রথ।
প্রথমে গুরুদেব, তারপর ভক্তি, তারপর ভগবান জগন্নাথ।
রথের দর্শনে শ্রী চৈতন্যমহাপ্রভু নৃত্য করছেন। অপলক নয়নে দর্শন করছেন জগন্নাথ। রথ চলতে চলতে মাঝে মাঝে থেমে যায়।
এর কারন রাধা ভাবে বিভোর মহাপ্রভুকে ভাল করে দেখার জন্য রথ একটু থামে আবার চলে। অনেক ভক্তের মাঝে মহাপ্রভুকে না দেখে জগন্নাথ থেমে যায়। রথ অপ্রকৃতি কারন তা প্রভু জগন্নাথের ইচ্ছা শক্তিতে রথ চলে।
আজও রথে অচল জগন্নাথকে দেখে রাধা ভাবে বিভোর মহাপ্রভু আনন্দে নেচে নেচে যায়।
*পুরীর রথের ৪২ টি চাকা। (বলদেবের রথের ১৪ টি, জগন্নাথের রথের ১৬ টি, সুভদ্রাদেবীর ১২ টি)।
*পুরীর রথ চলার সময় রাস্তায় চাকার তিনটি দাগ পড়ে - তা হল গঙ্গা, যমুনা, সরস্বতী। যারা বার্ধক্যজনিত কারণে বা অন্যান্য কারণে রথের দড়ি ধরতে পারেন না, তারা যদি চাকার এই তিনটি দাগের ধুলি গ্রহণ করেন, বা এই ত্রিদাগে গড়াগড়ি দেন, তাহলে গঙ্গা-যমুনা-সরস্বতীতে অবগাহনের ফল লাভ করেন।
* বলভদ্রের রথের নাম হল তালধ্বজ বা হলধ্বজ। ১৪টি চাকা আছে। ১৪টি চাকা মানে ১৪টি ভুবন। বলভদ্র হল গুরুতত্ত্ব। গুরুতত্ত্বের অধীন ১৪টি ভূবন।
*দেবতাদের দ্বারা প্রদত্ত সুভদ্রা দেবীর রথের নাম ‘দর্পদলন’ বা 'পদ্মধ্বজ'। রথের উচ্চতা ৩১ হাত। এই রথে ১২ টি চাকা আছে। এর অর্থ ভজনের সময় বার মাস। প্রতিদিন ভক্তিঙ্গ যাজন করতে হবে।
* সম্পূর্ণ রথ শুধুমাত্র কাঠের তৈরি, ফলে রথ চলার সময় কাঠের কড়কড় শব্দ হয়, এটিকে বলা হয় বেদ।
* ২০৬ টি কাঠ দিয়ে জগন্নাথের রথ হয়। ঠিক আমাদের দেহেও ২০৬ টি হাড়।
* রথ যখন চলে প্রথমে থাকে বলদেবের রথ। কারণ বলদেব দাদা। আবার জগত গুরুতত্ত্ব। তিনিই তো নিত্যানন্দ ।সবার জীবনে আগে গুরুকৃপা আসতে হবে।
তারপর চলে সুভদ্রার রথ। সুভদ্রা হল ভক্তি তত্ত্ব। গুরুকৃপার পর আসে ভক্তিমহারাণী। কারণ ভক্তির ঠিকানা শ্রীগুরুপদে। “শ্রীগুরুচরণপদ্ম কেবল ভকতিসদ্ম। বন্দো মুই সাবধান মতে।” গুরুদেব হল ভগবানের করুনার মুর্তি।
তারপর যায় জগন্নাথের রথ।
প্রথমে গুরুদেব, তারপর ভক্তি, তারপর ভগবান জগন্নাথ।
রথের দর্শনে শ্রী চৈতন্যমহাপ্রভু নৃত্য করছেন। অপলক নয়নে দর্শন করছেন জগন্নাথ। রথ চলতে চলতে মাঝে মাঝে থেমে যায়।
এর কারন রাধা ভাবে বিভোর মহাপ্রভুকে ভাল করে দেখার জন্য রথ একটু থামে আবার চলে। অনেক ভক্তের মাঝে মহাপ্রভুকে না দেখে জগন্নাথ থেমে যায়। রথ অপ্রকৃতি কারন তা প্রভু জগন্নাথের ইচ্ছা শক্তিতে রথ চলে।
আজও রথে অচল জগন্নাথকে দেখে রাধা ভাবে বিভোর মহাপ্রভু আনন্দে নেচে নেচে যায়।
জগন্নাথদেবের রথযাত্রা পালন করলে কি হয়?
শ্রীমদ্ভাগবতে আছে ,যে ব্যক্তি রথে চড়ে জগন্নাথদেবকে বিশ্বব্রহ্মান্ড দর্শন করাবেন অথবা রথস্থ শ্রী ভগবানের রূপ দর্শন করাবেন ভগবান তাদের প্রতি অশেষ কৃপা বর্ষণ করেন।বৃহন্নারদীয় পুরাণে আছে,ভগবান নারায়ন লক্ষ্মী দেবীকে বলেছেন, " পুরুষোত্তম ক্ষেত্র নামক ধামে আমার কেশব-মূর্তি বিরাজমান । মানুষ যদি কেবল সেই শ্রীবিগৃহ দর্শন করে তবে অনায়াসে আমার ধামে আমার কাছে ফিরে আসতে পারেন। "
রথযাত্রার দিন ভগবান জগন্নাথ বলরাম ও সুভদ্রাকে দেওয়া ছাপ্পান্ন ভোগ:-
১) উকখুড়া অর্থাৎ মুড়ি, ২) নাড়িয়া কোড়া অর্থাৎ নারকেল নাড়ু, ৩) খুয়া অর্থাৎ খোয়া ক্ষীর, ৪) দই, ৫) পাচিলা কাঁদালি অর্থাৎ টুকরো টুকরো কলা, ৬) কণিকা অর্থাৎ সুগন্ধী ভাত, ৭) টাটা খিঁচুড়ি অর্থাৎ শুকনো খিঁচুড়ি, ৮) মেন্ধা মুন্ডিয়া অর্থাৎ বিশেষ ধরণের কেক, ৯) বড়া কান্তি অর্থাৎ বড় কেক, ১০) মাথা পুলি অর্থাৎ পুলি পিঠে, ১১) হামসা কেলি অর্থাৎ মিষ্টি কেক, ১২) ঝিলি অর্থাৎ এক ধরণের প্যান কেক, ১৩) এন্ডুরি অর্থাৎ নারকেল দিয়ে তৈরি কেক, ১৪) আদাপচেদি অর্থাৎ আদা দিয়ে তৈরি চাটনি, ১৫) শাক ভাজা, ১৬) মরীচ লাড্ডু অর্থাৎ লঙ্কার লাড্ডু, ১৭) করলা ভাজা, ১৮) ছোট্ট পিঠে, ১৯) বারা অর্থাৎ দুধ তৈরি মিষ্টি, ২০) আরিশা অর্থাৎ ভাত দিয়ে তৈরি মিষ্টি, ২১) বুন্দিয়া অর্থাৎ বোঁদে, ২২) পানা, ২৩)খিড়ি অর্থাৎ দুধভাত, ২৪)কাদামবা অর্থাৎ বিশেষ মিষ্টি ২৫) পাত মনোহার মিষ্টি ২৬) তাকুয়া মিষ্টি, ২৭) ভাগ পিঠে, ২৮) গোটাই অর্থাৎ নিমকি, ২৯) দলমা অর্থাৎ ভাত ও সবজি, ৩০) কাকারা মিষ্টি ৷ ৩১) লুনি খুরুমা অর্থাৎ নোনতা বিস্কুট, ৩২) আমালু অর্থাৎ মিষ্টি লুচি, ৩৩) বিড়ি পিঠে, ৩৪) চাড়াই নাডা মিষ্টি, ৩৫) খাস্তা পুরি, ৩৬) কাদালি বারা, ৩৭) মাধু রুচী অর্থাৎ মিষ্টি চাটনি, ৩৮) সানা আরিশা অর্থাৎ রাইস কেক, ৩৯) পদ্ম পিঠে, ৪০) পিঠে, ৪১) কানজি অর্থাৎ চাল দিয়ে বিশেষ মিষ্টি. ৪২) ডাল, ৪৩) বড় আরিশা, ৪৪) ত্রিপুরি, ৪৫) সাকারা অর্থাৎ সুগার ক্যান্ডি, ৪৬) সুজি ক্ষীর, ৪৭) মুগা সিজা, ৪৮) মনোহরা মিষ্টি, ৪৯) মাগাজা লাড্ডু, ৫০)পাখাল অর্থাৎ পান্তা ভাত, ৫১) অন্ন, ৫২) ঘি ভাত, ৫৩)দাহি পাখাল অর্থাৎ দই ভাত, ৫৪)সাগা নাড়িয়া অর্থাৎ নারকেলের দুধ দিয়ে মাখা ভাত, ৫৫) মাহুর অর্থাৎ লাবরা, ৫৬) বিসার অর্থাৎ সব্জি।