রাজা ভোজ ও কাঠুরে :-
রাজা ভোজ ও অন্যান্য গল্প - - - ১,২ ,৩ , , , ,
রাজা ভোজ ভারতবর্ষের প্রসিদ্ধ রাজা, যার নাম যেকোন লোকের মুখে মুখে ফেরে । লোক কথায় কথায় বলে "কোথায় রাজা ভোজ আর কোথায় গঙ্গুতেলি" বা "ভোজবাজী পেয়েছিস ?" ।
রাজা ভোজ ভারতবর্ষের প্রসিদ্ধ রাজা, যার নাম যেকোন লোকের মুখে মুখে ফেরে । লোক কথায় কথায় বলে "কোথায় রাজা ভোজ আর কোথায় গঙ্গুতেলি" বা "ভোজবাজী পেয়েছিস ?" ।
রাজা ভোজ ছিলেন 'ধার' নগরীর রাজা । তিনি তার রাজ্যে ভাষা-শিল্প-সংস্কৃতির পৃষ্ঠপোষন করেন - - যা সর্বজনবিদীত । বিদ্বান ও গুনীদের সমাদোর করতে তিনি খুবই ভালোবাসতেন । তার শাসনে তার রাজ্যে সংস্কৃত ভাষার উৎকর্ষতা চরমে ওঠে । সাধারণ লোকেরাও সংস্কৃত ভাষায় কথা বলতে ।
একবার রাজা ভোজ বেরিয়েছেন ভ্রমণে । রাস্তায় দেখলেন এক কাঠুরে মাথায় কাঠের বোঝা নিয়ে আসছে । মাথায় কাঠের বোঝা বেশি দেখে রাজা ভোজ কাঠুরেকে শুধালেন - - "ভারো বাধতি ? " অর্থাৎ কাঠের বোঝা কি কাঠুরেকে কষ্ট দিচ্ছে ?
কাঠুরে জবাব দিল - - "ভারো ন বাধতে রাজন যথা বাধতে বাধতি " অর্থাৎ "হে রাজন ! মাথার উপর বোঝা আমাকে যতনা কষ্ট দিচ্ছে তার চেয়েও বেশি কষ্ট পাচ্ছি আপনার মুখে 'বাধতি' শুনে।
রাজা ভোজ সংস্কৃতে পন্ডিত ছিলেন । তার দ্বারা এমন ভূল হওয়া সম্ভব নয় । বাস্তবতা হল রাজা ভোজ তার নাগরিকদের সংস্কৃত ভাষায় কতটা জ্ঞান তা জানতে ইচ্ছুক ছিলেন । এজন্যই তিনি জেনেবুঝে 'বাধতে' শব্দকে 'বাধতি' বলেছেন ।
নিজের রাজ্যের সামান্য কাঠুরের মুখে সংস্কৃত ধাতুর শুদ্ধ প্রয়োগ শুনে রাজা ভোজ খুব আনন্দিত হন ও কাঠুরেকে পুরস্কৃত করেন ।
সংস্কৃত ভাষায় কিছু ক্রিয়াপদ আত্মনেপদী ও কিছু ক্রিয়াপদ পরস্মৈপদী হয় । কিছু ক্রিয়াপদ উভয়পদী হয় । অর্থাৎ আত্মনেপদী ও পরস্মৈপদী দুটিই প্রযুক্ত হয় । এইখানে সংস্কৃত বাক্যে আত্মনেপদী হবে ও 'বাধতি' ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন