বুধবার, ২৩ মে, ২০১৮

More chanda

    

আরো কিছু ছন্দ ঃ


ব্যাকরণ ও ছন্দ - -  , , , , , , 
আর একটি শাখার উদগম হয়েছে সংস্কৃত ছন্দকে বাংলায় ভেঙে নিয়ে।
শার্দূলবিক্রীড়িত: 
ধিন ধিন ধিন/তা তা ধিন তা ধিন/তা তা তা ধিন/ধিন ধিন তা ধিন/ধিন তা ধিন


নিস্তার নাই;- /বাজে ভীম শানাই/; ভুসি-উষর,/দাঁড়কাক-ধূসর/ দু;সময়
অন্ধের হাত/ থাকে হাতড়াতেই/ সারাটা রাত,/ সাঁতড়াতেই/ বিশ্বময়!
(সুব্রত অগাস্টিন গোমেজ)

বসন্ততিলক: 
ধিন ধিন/তা ধিন তা তা/তা ধিন তা তা/ধিন তা ধিন ধিন

সুন্দর!   / তোমার কোরে/ বসত করে/ দিগ্বসন প্রেম!
ছিঁড়বই / প্রখর নখে/তোমার চুড়ি/দার চীনাংশুক।
কাম নয়, / কেবল আঁধি-/উধাও আঁধা/রের গোপন হেম-
মৃত্যুর  /ভিতর টানে/ আমায় ভূখা/ মৃত্যুভুক্‌ সুখ!
(সুব্রত অগাস্টিন গোমেজ)
তোটক: 

তাতা ধিনতাতাধিন /তাতা ধিনতাতাধিন

প্রিয় আজকে আমার /শুধু ভাঙছে দুয়ার
ধু ধু উড়ছে পরাগ/কালো পাগলা ঝড়ে

বুকে বর্শা–সমেত/ ছোটে মত্ত শুয়ার,

তত শুক্র উছল,/যত রক্ত ঝরে!

                                          (সুব্রত অগাস্টিন গোমেজ)

*শেষ ‘ধিন’ এর জায়গায় ‘তা’ হতে পারে; সংস্কৃত ছন্দে এই স্বাধীনতাটুকু আছে।


মন্দাক্রান্তা: 
ধিন ধিন ধিন ধিন/ তা তা তা তা তা ধিন/ ধিন তা ধিন ধিন/ তা ধিন ধিন

প্রহর্ষিণী: 
ধিন ধিন ধিন/তা তা তা তা ধিন/তা ধিন তা/ ধিন ধিন
‘ঈশ্বর নাই /সরোষে ঘোষেন/অসীমকুমার দাস
সর্বক্ষণ।/তথাপি গোপন/ আনন্দ-উদ্ভাস
তার মজ্জায়/ রিলে ক’রে যায়/অতন্দ্র সঞ্জয়:
প্রত্য্‌ক প্রাণ/ ফেটে ফোটে গান,/ যাবজ্জীবেৎ- ‘জয়’!
(সুব্রত অগাস্টিন গোমেজ)
মালিনীঃ 
তা তা তা তা তা তা/ ধিন ধিন/ ধিন তা ধিন ধিন/ তা ধিন ধিন


মত্তময়ূর: 
ধিন ধিন ধিন ধিন/ ধিন তা তা ধিন ধিন/ তা তা ধিন ধিন
অস্থির, উন্মাদ/  ছুটছে ভীষণ বেগ/তমসার ট্রেন
নিঃসাড় নিউরন/   বাজতেছে কর্কশ/ খ্যাপা সাইরেন।
চণ্ডাল এক ক্রোধ/  দ্বন্দ্ব-বিবাদ চায়/ফোঁসে টাইগ্রিস
রক্তের স্রোতটায়/   এক যে নাগিন তার/ ঢেলে দেয় বিষ।

রুক্মবতীঃ 
ধিন তা তা/ ধিন ধিন ধিন/ তা তা ধিন/ ধিন
কাঁপছে নদীর জল

দুলছিল নৌকা
বস্তুত নিশ্চল

নৌকাবোঝাই ফুল,
একপাশে মশলা;
আর ছিল চুপচাপ ভারবাহী গর্দভ

ব্রহ্মমূর্ধাঃ 
তা তা তা তা তা তা/ ধিন তা ধিন/ ধিন তা ধিন/ ধিন তা ধিন
যদিও বাতাসে/ খাচ্ছে পাক/আজ সবার/ নিন্দাবাদ,
যেহেতু ধরেছি/ হাত তোমার/দিই স্লোগান:/জিন্দাবাদ।
কেন থরো থরো/ প্রাণ আমার/যার বোঝার/ সেই বুঝুক,
যেহেতু সকলে/ খায় না মদ _/তৃষ্ণা যার/ সেই খুঁজুক।

মোটকঃ 
ধিন তা / তা ধিন /তা তা
ফাল্গু/নী ফুল /তুমি-
চোখ বোজো হরতালে,
ফের হয়ে যাও কলি,
বোম-বারুদের ত্রাসে।
মাতৃ-যোনির মুখে-
বাচ্চা আটক থাকে!-
হয় না বাহির ভয়ে;
যায় যদি আজ পুড়ে!

দ্রুতবিলম্বিত:
 তাতাতা/ধিনতাতা/ধিনতাতা/ধিনতাধিন
না বুঝে /আজ আমি /কার টানে/ ঘরছাড়া
সে কথা /মুখ ফুটে/ বলব না /কাউকে আর।
যে মেয়ে/ অভ্যাসে /বুক ভেঙে/ খুশ ছিল
কেন যে/ মুখ তুলে/ ডাক দিলো/ – “বাও খেয়া!”
( পীযূষ কান্তি বন্দ্যোপাধ্যায়)

বিজোহা/ স্বগ্রিণীঃ 
ধিন তা ধিন/ ধিন তা ধিন

দুলকি চাল /আশ্বিনের
ঢিমতেতাল/ বনবাদাড়,
বনমোরগ/ দিচ্ছে ডাক
মসজিদের/গম্বুজে
বিদ্যাধর:
 ধিন ধিন ধিন/ ধিন ধিন ধিন
বন প্রান্তেই/ সেই বৃদ্ধের /
ঘর সংসার, /তার দরজায়-/
এক রাইফেল, /দুই বন্দুক,
তিন আস্তিন,/ চার চামড়ার-
পাঁচ বস্তায় /ছয় সন্ধ্যায়
দুই হিম-চোখ /আজ ঠাঁই নেয়
শিখরিণী মালিনী মন্দাক্রান্তা শার্দূলবিক্রীড়িত প্রভৃতি বড়ো বড়ো গম্ভীরচালের ছন্দ গুরুলঘুস্বরের যথানির্দিষ্ট বিন্যাসে অসমান মাত্রাভাগের ছন্দ। বাংলায় আমরা বিষমমাত্রামূলক ছন্দ কিছু কিছু চালিয়েছি, কিন্তু বিষমমাত্রার ঘনঘন পুনরাবৃত্তির দ্বারা তারও একটা সম্মিতি রক্ষা হয়।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন