শুক্রবার, ২৩ আগস্ট, ২০১৯

জন্মাষ্টমী



                          জন্মাষ্টমী

             ভগবান বিষ্ণুর অষ্টম অবতার ( জয়দেব অনুসারে ) ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মদিন জন্মাষ্টমী হিসাবে পালিত হয়। একে কৃষ্ণাষ্টমী, গোকুলাষ্টমী, অষ্টমী রোহিণী, শ্রীকৃষ্ণজয়ন্তী ইত্যাদি নামেও ডাকা হয় । হিন্দু পঞ্জিকা মতে, সৌর ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে যখন রোহিণী নক্ষত্রে জন্মাষ্টমী পালিত হয়।
শ্রীকৃষ্ণের অষ্টোত্তর শতনাম ( পড়তে ক্লিক করুন)
শ্রীকৃষ্ণের বংশাবলী
ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ক্ষত্রিয়ের যাদববংশে  ( বর্তমানে অবলুপ্ত ) গার্গ্য গোত্রে জন্মগ্রহণকরেন। তার পিতা ছিলেন বাসুদেব ও মাতা দেবকি।
         দ্বাপর এর শেষে অত্যাচারী রাজা কংসের প্রাদূর্ভাব ঘটে। কংস তার বোন দেবকীর সাথে যাদববংশেরই বসুদেবের সাথে বিবাহ দেন। বিবাহের পর দৈববাণী হয় যে বাসুদেব ও দেবকীর অষ্টম গর্ভের সন্তান কংসকে বধ করবেন। কংস তখন বাসুদেব ও দেবকীকে কারারুদ্ধ করেন। কারাগারেই দেবকীর  সন্তানদের একে একে হত্যা করেন কংস। সপ্তম  গর্ভের  সন্তানকে রোহিনীর গর্ভে স্থানান্তরিত করা হয়। জন্মনেন বলরাম। আর অষ্টম গর্ভে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্ম হয়।
         সে রাত্রে নারায়ণী মায়ায় কারাপ্রহরীরা সবাই অচেতন হয়ে যান, খুলে যায় কারাগৃহের তালা। বাসুদেব সদ্যোজাত কৃষ্ণকে নিয়ে চলে আসেন ব্রজে নন্দগৃহে। সেখানে শ্রীকৃষ্ণকে যশোদার কাছে রেখে নন্দ-যশোদার কণ্যারূপী মহামায়াকে নিয়ে আসেন মথুরায়। এই দিনটিই জন্মাষ্টমী নামে খ্যাত। পরের দিন ব্রজে শ্রীকৃষ্ণের আগমনে যে উৎসব হয় তা নন্দোৎসব নামে খ্যাত।
বাল্যাবস্থায় পুতনা, অকাসুর,বকাসুর, অঘাসুর প্রমুখ অসুরকে বধ করেন। গোচারণকালে কালিদহে বসবাসকারী দুষ্ট কালীয়নাগকে দমন করেন।
রাধা চরিত্রটির উল্লেখ কোনও প্রামাণ্য গ্রন্থে পাওয়া যায় না তাই রাধা নিয়ে সংশয় আছে। অন্যদিকে এগারো বছর কয়েক মাস বয়সে বৃন্দাবন ত্যাগ করেন। তাই এত অল্প বয়সে কৃষ্ণ রাধার প্রেমও সংশয়ের জন্ম দেয়।

         মাত্র বারো বছর  বয়সে কংসের আদেশে অক্রূর বৃন্দাবনে আসেন ধনুর্যজ্ঞে শ্রীকৃষ্ণকে আমন্ত্রণ জানাতে। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অক্রূরের সাথে  মথুরায় গমন করেন। সেখানে কংস ও চাণুরকে বধ করে কুব্জাকে রাণী করে মথুরার রাজা হন। পরে শূরসেন মথুরার রাজা হন ও ভগবান শ্রীকৃষ্ণ সন্দীপন মুনির কাছ যান শিক্ষালাভের জন্য।
তার প্রধান মহিষী তিনজন। রুক্মিনী, সত্যভামা ও জাম্ববতী। প্রদ্যুম্ন, শাম্ব সহ একাধিক পুত্র ও চারুমতি কণ্যা ছিল।

জরাসন্ধের আক্রমণের ভয়ে তিনি মথুরা ত্যাগ করে দ্বারকায় রাজ্যের সূচনা করেন। যুদ্ধে তিনি অর্জুনের রথের সারথি হন। এসময় অর্জুনকে দেওয়া তার উপদেশ শ্রীমদ্ভাগবত গীতা নামে খ্যাত।
গান্ধারীর শাপে ও শ্রীকৃষ্ণের পুত্রগণের অরাজকতায় যদুবংশ ধ্বংস হয়। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ জরা ব্যাধের তীরে দেহত্যাগ করেন।
অর্জুন শ্রীকৃষ্ণের পার্থিব দেহকে উদ্ধার করেন ও রামেশ্বরমে অগ্নিকার্য্য সম্পন্ন করেন। ণাভিটিকে সমুদ্রের জলে বিসর্জিত করেন। এরপর শ্রীকৃষ্ণের নাতি বজ্রণাভকে নিয়ে যান হস্তিনাপুরে। হস্তিনাপুরের রাজা হন বজ্রণাভ। বর্তমানে মথুরায় শ্রীকৃষ্ণের জন্মমন্দিরটি প্রথম নির্মাণ করান রাজা বজ্রণাভ। 

শনিবার, ১৩ জুলাই, ২০১৯

বিপদতারিণী পূজা ও ব্রতকথা


       বিপদতারিণী পূজা ব্রতকথা 
বাংলার বারো মাসে তেরো পার্বন। আর এইসব পালাপার্বনের মধ্যে জড়িয়ে আছে নিজের ও পরিবারের আপনজনদের বিপদ আপদ হতে মুক্তির প্রার্থনা। এই বিপদ থেকে যিনি উদ্ধার করেন তিনিই বিপদতারিণী। আষাঢ় মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া হতে দশমী পর্যন্ত বিপদতারিণী পূজার বিধান আছে। তবে রথযাত্রার পরের শনি ও মঙ্গলবার এই দুইদিন বিপদতারিণীর পূজা হয়। 
পূজার পদ্ধতি :-
ন্ত্রে এই দেবী বিপদতারিণীর  উল্লেখ রয়েছে। ‘বিপত্তারিণী কথামৃতম’ বা ‘তারিণ্যুপনিষদ’ নামে এক তন্ত্রগ্রন্থের হদিশ পাওয়া যায়, যার রচয়িতা জনৈক জনার্দন ঠাকুর যিনি  নিজেকে রামরাম ঠাকুরের বংশধর বলে বর্ণনা করেছেন। এই গ্রন্থ মতে - - 'জনার্দনঠাকুরের মা হরিপ্রিয়া দেবী বিপদতারিণীর কৃপা লাভ করেছিলেন।' এ ছাড়াও ‘বিপত্তারিণীতন্ত্রম’ নামে আরও একটি পুথির খোঁজ পাওয়া যায়। কিন্তু এই গ্রন্থগুলি ঠিক কোন সময়ে রচিত, তা জানা যায় না।
মার্কণ্ডেয় পুরাণ অনুসারে এই পুজোয় ১৩টি ফল, ১৩টি ফুল, ১৩টি পান সুপারি ও ১৩টি নৈবেদ্যের কথা বলা হয়।  অনেক অঞ্চলে বিপত্তারিণী পূজা চারদিন ধরে চলে।  মেয়েরা দণ্ডী কাটে। 
বিপত্তারিণী পূজা উপলক্ষে সাধারণত মেয়েরা উপবাস করে। তবে ছেলেদেরকেও এই ব্রতে উপবাস করতে দেখা যায়।  পূ অনুসারে হাতে “তাগা” (এক গুচ্ছ পবিত্র লাল সুতো ও দূর্বাঘাস) বাঁধে।
বিপদতারিণী ব্রতকথা:-
কোনও একসময়ে বিদর্ভ নগরীতে ( মতান্তরে বাঁকুড়ার মল্লভূমে) রাজত্ব করতেন এক প্রবল পরাক্রান্তশীল রাজা । তাঁর পাটরানির ছিলেন খুবই ভক্তিমতী। পাটরাণীর এক মুচি সই ছিল।  রাণী তাকে প্রায়সময়ই নানারকম উপহার দিতেন। একদিন মুচিণী সইয়েরও ইচ্ছা হল রাণীকে কিছু দেওয়ার।
 সেইসময় গোমাংস ভক্ষণ করত। সইয়ের মুখে গোমাংসের কথা রাণী শুনেছিল। তাই রাণী  মুচিণী সইকে বলল—" সই তোমরা যে গোমাংস রান্না কর তা দেখার আমার খুব ইচ্ছা। তুমি আমাকে একদিন দেখাতে পারবে ?"
      মুচিণী সই কাপড় ঢাকা দিয়ে  সেই মাংস রাজবাড়িতে নিয়ে গেল।  এদিকে রাজার প্রহরী এই ঘটনা জানতে পেরে রাজাকে খবর দিল। উত্তেজিত রাজা শাণিত তরবারি নিয়ে এসে রানিকে বললেন,    " এই পাত্র যদি কোনওরূপ নিষিদ্ধ মাংস থাকে তাহলে তোমাকে হত্যা করব…। খোলো   পাত্র!"
রানিমা ছিলেন দেবী বিপদতারিণী পূজারি। তিনি তখন কাতর কন্ঠে দেবীকে ডাকতে শুরু করলেন। "রক্ষা কর মা বিপদতারিণী…।আমার জীবন রক্ষা কর!" 
পাত্র খোলা হল। কিন্তু একি! রাজা কি দেখলেন? পাত্রের মধ্যে সাজানো সদ্য ১৩টি ফুল। রানি সেই ফুলেই দেবী বিপদতারিণী পুজো করলেন ভক্তি ভরে! 

বৃহস্পতিবার, ৬ জুন, ২০১৯

মেঘদূতম্ / উত্তরমেঘ


বিদ্যুত্বন্তং ললিতবনিতাঃ সেন্দ্রচাপং সচিত্রাঃ
সঙ্গীতায প্রহতমুরজাঃ স্নিগ্ধগম্ভীরঘোষম্ .
অন্তস্তোযং মণিমযভুবস্তুঙ্গমভ্রংলিহাগ্রাঃ
প্রাসাদাস্ত্বাং তুলযিতুমলং যত্র তৈস্তৈর্বিশেষৈঃ .. ৬৪..
হস্তে লীলাকমলমলকে বালকুন্দানুবিদ্ধং
নীতা লোধ্রপ্রসবরজসা পাণ্ডুতামাননে শ্রীঃ .
চূডাপাশে নবকুরবকং চারু কর্ণে শিরীষং
সীমন্তে চ ত্বদুপগমজং যত্র নীপং বধূনাম্ .. ৬৫..
আনন্দোত্থং নযনসলিলং যত্র নান্যৈর্নিমিত্তৈঃ
নান্যস্তাপঃ কুসুমশরজাদিষ্টসংযোগসাধ্যাত্ .
নাপ্যন্যস্মাত্প্রণযকলহাদ্বিপ্রযোগপপত্তিঃ
বিত্তেশানাং ন চ খলু বযো যৌবনাদন্যদস্তি .. ৬৬..
যস্যাং যক্ষাঃ সিতমণিমযান্যেত্য হর্ম্যস্থলানি
জ্যোতিশ্ছাযাকুসুমরচিতান্যুত্তমস্ত্রীসহাযাঃ .
আসেবন্তে মধু রতিফলং কল্পবৃক্ষপ্রসূতং
ত্বদ্গম্ভীরধ্বনিষু শনকৈঃ পুষ্করেষ্বাহতেষু .. ৬৭..
মন্দাকিন্যাঃ সলিলশিশিরৈঃ সেব্যমানা মরুদ্ভিঃ
মন্দারাণামনুতটরুহাং ছাযযা বারিতোষ্ণাঃ .
অন্বেষ্টব্যৈঃ কনকসিকতমুষ্টিনিক্ষেপগূঢৈঃ
সংক্রীডন্তে মণিভিরমরপ্রার্থিতা যত্র কন্যাঃ .. ৬৮..
নীবীবন্ধোচ্ছ্বসিতশিথিলং যত্র বিম্বাধরাণাং
ক্ষৌমং রাগাদনিভৃতকরেষ্বাক্ষিপত্সু প্রিযেষু .
অর্চিষ্টুঙ্গানভিমুখমপি প্রাপ্য রত্নপ্রদীপান্
হ্রীমূঢানাং ভবতি বিফলপ্রেরণচ্চূর্ণমুষ্টিঃ .. ৬৯..
নেত্রা নীতাঃ সততগতিনা যদ্বিমানাগ্রভূমীঃ
আলেখ্যানাং নবজলকণৈর্দোষমুত্পাদ্য সদ্যঃ .
শঙ্কাস্পৃষ্টা ইব জলমুচস্ত্বাদৃশা জালমার্গৈঃ
ধূমোদ্গারানুকৃতিনিপুণা জর্জরা নিষ্পতন্তি .. ৭০..
যত্র স্ত্রীণাং প্রিযতমভুজালিঙ্গনোচ্ছ্বাসিতানাং
অঙ্গগ্লানিং সুরতজনিতাং তন্তুজালাবলম্বাঃ .
ত্বত্সংরোধাপগমবিশদৈশ্চন্দ্রপাদৈর্নিশীথে
ব্যালুম্পন্তি স্ফুটজললবস্যন্দিনশ্চন্দ্রকান্তাঃ .. ৭১..
অক্ষয্যান্তর্ভবননিধযঃ প্রত্যহং রক্তকণ্ঠৈঃ
উদ্গাযদ্ভির্ধনপতিযশঃ কিংনরৈর্যত্র সার্ধম্ .
বৈভ্রাজাখ্যং বিবুধবনিতাবারমুখ্যাসহাযা
বদ্ধালাপা বহিরুপবনং কামিনো নির্বিশন্তি .. ৭২..
গত্যুত্কম্পাদলকপতিতৈর্যত্র মন্দারপুষ্পৈঃ
পত্রচ্ছেদৈঃ কনককমলৈঃ কর্ণবিভ্রংশিভিশ্চ .
মুক্তাজালৈঃ স্তনপরিসরশ্ছিন্নসূত্রৈশ্চ হারৈঃ
নৈশো মার্গঃ সবিতুরুদযে সূচ্যতে কামিনীনাম্ .. ৭৩..
মত্বা দেবং ধনপতিসখং যত্র সাক্ষাদ্ বসন্তং
প্রাযশ্চাপং ন বহতি ভযান্ মন্মথঃ ষট্পদজ্যম্ .
সভ্রূভঙ্গপ্রহিতনযনৈঃ কামিলক্ষ্যেষ্বমোঘৈঃ
তস্যারম্ভশ্চতুরবনিতাবিভ্রমৈরেব সিদ্ধঃ .. ৭৪..
বাসশ্চিত্রং মধু নযনযোর্বিভ্রমাদেশদক্ষং
পুষ্পোভ্দেদং সহ কিসলযৈর্ভূষণানাং বিকল্পান্ .
লাক্ষারাগং চরণকমলন্যাসযোগ্যং চ যস্যাম্
একঃ সূতে সকলমবলামণ্ডনং কল্পবৃক্ষঃ .. ৭৫..
তত্রাগারং ধনপতিগৃহানুত্তরেণাস্মদীযং
দূরাল্লক্ষ্যং সুরপতিধনুশ্চারুণা তোরণেন .
যস্যোপান্তে কৃতকতনযঃ কান্তয বর্ধিতো মে
হস্তপ্রাপ্যস্তবকনমিতো বালমন্দারবৃক্ষঃ .. ৭৬..
বাপী চাস্মিন্ মরকতশিলাবদ্ধসোপানমার্গা
হৈমৈশ্ছন্না বিকচকমলৈঃ স্নিগ্ধবৈদূর্যনালৈঃ .
যস্যাস্তোযে কৃতবসতযো মানসং সংনিকৃষ্টং
ন ধ্যাস্যন্তি ব্যপগতশুচস্ত্বামপি প্রেক্ষ্য হংসাঃ .. ৭৭..
তস্যাস্তীরে রচিতশিখরঃ পেশলৈরিন্দ্রনীলৈঃ
ক্রীডাশৈলঃ কনককদলীবেষ্টনপ্রেক্ষণীযঃ .
মদ্গেহিন্যাঃ প্রিয ইতি সখে চেতসা কাতরেণ
প্রেক্ষ্যোপান্তস্ফুরিততডিতং ত্বাং তমেব স্মরামি .. ৭৮..
রক্তাশোকশঃ চলকিসলযঃ কেসরশ্চাত্র কান্তঃ
প্রত্যাসন্নৌ কুরবকবৃতের্মাধবীমণ্ডপস্য .
একঃ সখ্যাস্তব সহ মযা বামপাদাভিলাষী
কাঙ্ক্ষত্যন্যো বদনমদিরাং দোহদচ্ছদ্মনাস্যাঃ .. ৭৯..
তন্মধ্যে চ স্ফটিকফলকা কাঞ্চনী বাসযষ্টিঃ
মূলে বদ্ধা মণিভিরনতিপ্রৌঢবংশপ্রকাশৈঃ .
তালৈঃ শিঞ্জাবলযসুভগৈর্নর্তিতঃ কান্তযা মে
যামধ্যাস্তে দিবসবিগমে নীলকণ্ঠঃ সুহৃদ্ বঃ .. ৮০..
এভিঃ সাধো হৃদযনিহিতৈর্লক্ষণৈর্লক্ষযেথা
দ্বারোপান্তে লিখিতবপুষৌ শঙ্খপদ্মৌ চ দৃষ্ট্বা .
ক্ষামচ্ছাযং ভবনমধুনা মদ্বিযোগেন নূনং
সূর্যাপাযে ন খলু কমলং পুষ্যতি স্বামভিখ্যাম্ .. ৮১..
গত্বা সদ্যঃ কলভতনুতাং শীঘ্রসংপাতহেতোঃ
ক্রীডাশৈলে প্রথমকথিতে রম্যসাণৌ নিষণ্ণঃ .
অর্হস্যন্তর্ভবনপতিতাং কর্তুমল্পাল্পভাসং
খদ্যোতালীবিলসিতনিভাং বিদ্যুদুন্মেষদৃষ্টিম্ .. ৮২..
তন্বী শ্যামা শিখরদশনা পক্ববিম্বাধরোষ্ঠী
মধ্যে ক্ষামা চকিতহরিণীপ্রেক্ষণা নিম্ননাভিঃ .
শ্রোণীভারাদলসগমনা স্তোকনম্রা স্তনাভ্যাং
যা তত্র স্যাদ্ যুবতিবিষযে সৃষ্টিরাদ্যেব ধাতুঃ .. ৮৩..
তাং জানীথাঃ পরিমিতকথাং জীবিতং মে দ্বিতীযং
দূরীভূতে মযি সহচরে চক্রবাকীমিবৈকাম্ .
গাঢোত্কণ্ঠা গুরুষু দিবসেষ্বেষু গচ্ছত্সু বালাং
জাতাং মন্যে শিশিরমথিতাং পদ্মিনীং বান্যরূপাম্ .. ৮৪..
নূনং তস্যাঃ প্রবলরুদিতোচ্ছূননেত্রং প্রিযাযা
নিঃষ্বাসানামশিশিরতযা ভিন্নবর্ণাধরোষ্ঠম্ .
হস্তন্যস্তং মুখমসকলব্যক্তি লম্বালকত্বাদ্
ইন্দোর্দৈন্যং ত্বদনুসরণক্লিষ্টকান্তের্বিভর্তি .. ৮৫..
আলোকে তে নিপততি পুরা সা বলিব্যাকুলা বা
মত্সাদৃশ্যং বিরহতনু বা ভাবগম্যং লিখন্তী .
পৃচ্ছন্তী বা মধুরবচনাং শারিকাং পঞ্জরস্থাং
কচ্চিত্ ভর্তুঃ স্মরসি রসিকে ত্বং হি তস্য প্রিযেতি .. ৮৬..
উত্সঙ্গে বা মলিনবসনে সোম্য নিক্ষিপ্য বীণাং
মদ্গোত্রাঙ্কং বিরচিতপদং গেযমুদ্গাতুকামা .
তন্ত্রীমার্দ্রাং নযনসলিলৈঃ সারযিত্বা কথং চিদ্
ভূযো ভূযঃ স্বযমপি কৃতাং মূর্ছনাং বিস্মরন্তী .. ৮৭..
শেষান্ মাসান্ বিরহদিবসপ্রস্থাপিতস্যাবধের্বা
বিন্যস্যন্তী ভুবি গণনযা দেহলীদত্তপুষ্পৈঃ .
(সংযোগং)মত্সঙ্গং বা হৃদযনিহিতারম্ভমাস্বাদযন্তী
প্রাযেণৈতে রমণবিরহেষ্বঙ্গনানাং বিনোদাঃ .. ৮৮..
সব্যাপারামহনি ন তথা পীডযেন্মদ্বিযোগঃ
শঙ্কে রাত্রৌ গুরুতরশুচং নির্বিনোদাং সখীং তে .
মত্সংদেশৈঃ সুখযিতুমলং পশ্য সাধ্বীং নিশীথে
তামুন্নিদ্রামবনিশযনাং সৌধবাতাযনস্থঃ .. ৮৯..
আধিক্ষামাং বিরহশযনে সংনিষণ্ণৈকপার্শ্বাং
প্রাচীমূলে তনুমিব কলামাত্রশেষাং হিমাংশোঃ .
নীতা রাত্রিঃ ক্ষণ ইব মযা সার্ধমিচ্ছারতৈর্যা
তামেবোষ্ণৈর্বিরহমহতীমশ্রুভির্যাপযন্তীম্ .. ৯০..
পাদানিন্দোরমৃতশিশিরান্ জালমার্গপ্রবিষ্টান্
পূর্বপ্রীত্যা গতমভিমুখং সংনিবৃত্তং তথৈব .
চক্ষুঃ খেদাত্ সলিলগুরুভিঃ পক্ষ্মভিশ্ছাদযন্তীং
সাভ্রেঽহ্নীব স্থলকমলিনীং ন প্রবুদ্ধাং ন সুপ্তাম্ .. ৯১..
নিঃশ্বাসেনাধরকিসলযক্লেশিনা বিক্ষিপন্তীং
শুদ্ধস্নানাত্ পরুষমলকং নূনমাগণ্ডলম্বম্ .
মত্সংভোগঃ কথমুপনযেত্ স্বপ্নজোঽপীতি নিদ্রাম্
আকাঙ্ক্ষন্তীং নযনসলিলোত্পীডরুদ্ধাবকাশাম্ .. ৯২..
আদ্যে বদ্ধা বিরহদিবসে যা শিখা দাম হিত্বা
শাপস্যান্তে বিগলিতশুচা তাং মযোদ্বেষ্টনীযাম্ .
স্পর্শদ্বিষ্টামযমিতনখেনাসকৃত্ সারযন্তীং
গণ্ডাভোগাত্ কঠিনবিষমামেকবেণীং করেণ .. ৯৩..
সা সংন্যস্তাভরণমবলা পেশলং ধারযন্তী
শয্যোত্সঙ্গে নিহিতমসকৃদ্ দুঃখদুঃখেন গাত্রম্ .
ত্বামপ্যস্রং নবজলমযং মোচযিষ্যত্যবশ্যং
প্রাযঃ সর্বো ভবতি করুণাবৃত্তিরার্দ্রান্তরাত্মা .. ৯৪..
জানে সখ্যাস্তব মযি মনঃ সংভ্র্তস্নেহমস্মাদ্
ইত্থংভূতাং প্রথমবিরহে তামহং তর্কযামি .
বাচালং মাং ন খলু সুভগংমন্যভাবঃ করোতি
প্রত্যক্ষং তে নিখিলমচিরাদ্ ভ্রাতরুক্তং মযা যত্ .. ৯৫..
রুদ্ধাপাঙ্গপ্রসরমলকৈরঞ্জনস্নেহশূন্যং
প্রত্যাদেশাদপি চ মধুনো বিষ্মৃতভ্রূবিলাসম্ .
ত্বয্যাসন্নে নযনমুপরিস্পন্দি শঙ্কে মৃগাক্ষ্যা
মীনক্ষোভাচ্চলকুবলযশ্রীতুলামেষ্যতীতি .. ৯৬..
বামশ্চাস্যাঃ কররুহপদৈর্মুচ্যমানো মদীযৈঃ
মুক্তাজালং চিরপরিচিতং ত্যাজিতো দৈবগত্যা .
সংভোগান্তে মম সমুচিতো হস্তসংবাহনানাং
যাস্যত্যূরুঃ সরসকদলীস্তম্ভগৌরশ্চলত্বম্ .. ৯৭..
তস্মিন্ কালে জলদ যদি সা লব্ধনিদ্রাসুখা স্যাদ্
অন্বাস্যৈনাং স্তনিতবিমুখো যামমাত্রং সহস্ব .
মা ভূদস্যাঃ প্রণযিনি মযি স্বপ্নলব্ধে কথং চিত্
সদ্যঃ কণ্ঠচ্যুতভুজলতাগ্রন্থি গাঢোপগূঢম্ .. ৯৮..
তামুত্থাপ্য স্বজলকণিকাশীতলেনানিলেন
প্রত্যাশ্বস্তাং সমমভিনবৈর্জালকৈর্মালতীনাম্ .
বিদ্যুদ্গর্ভঃ স্তিমিতনযনাং ত্বত্সনাথে গবাক্ষে
বক্তুং ধীরস্তনিতবচনৈর্মানিনীং প্রক্রমেথাঃ .. ৯৯..
ভর্তুর্মিত্রং প্রিযমবিধবে বিদ্ধি মামম্বুবাহং
তত্সংদেশৈহৃদযনিহিতৈরাগতং ত্বত্সমীপম্ .
যো বৃন্দানি ত্বরযতি পথি শ্রাম্যতাং প্রোষিতানাং
মন্দ্রস্নিগ্ধৈর্ধ্বনিভিরবলাবেণিমোক্ষোত্সুকানি .. ১০০..
ইত্যাখ্যাতে পবনতনযং মৈথিলীবোন্মুখী সা
ত্বামুত্কণ্ঠোচ্ছ্বসিতহৃদযা বীক্ষ্য সংভব্য চৈব .
শ্রোষ্যত্যস্মাত্ পরমবহিতা সৌম্য সীমন্তিনীনাং
কান্তোদন্তঃ সুহৃদুপনতঃ সঙ্গমাত্কিংচিদূনঃ .. ১০১..
তামাযুষ্মন্ মম চ বচনাদাত্মনঃ চোপকর্তুং
ব্রূযাদেবং তব সহচরো রামগির্যাশ্রমস্থঃ .
অব্যাপন্নঃ কুশলমবলে পৃচ্ছতি ত্বাং বিযুক্তঃ
পূর্বাভাষ্যং সুলভবিপদাং প্রাণিনামেতদেব .. ১০২..
অঙ্গেনাঙ্গং প্রতনু তনুনা গাঢতপ্তেন তপ্তং
সাস্রেণাশ্রুদ্রুতমবিরতোত্কণ্ঠমুত্কণ্ঠিতেন .
উষ্ণোচ্ছ্বাসং সমধিকতরোচ্ছ্বাসিনা দূরবর্তী
সঙ্কল্পৈস্তৈর্বিশতি বিধিনা বৈরিণা রুদ্ধমার্গঃ .. ১০৩..
শব্দাখ্যেযং যদপি কিল তে যঃ সখীনাং পুরস্তাত্
কর্ণে লোলঃ কথযিতুমভূদাননস্পর্শলোভাত্ .
সোঽতিক্রান্তঃ শ্রবণবিষযং লোচনাভ্যামদৃষ্টঃ
ত্বামুত্কণ্ঠাবিরচিতপদং মন্মুখেনেদমাহ .. ১০৪..
শ্যামাস্বঙ্গং চকিতহরিণীপ্রেক্ষণে দৃষ্টিপাতং
বক্ত্রচ্ছাযাং শশিনি শিখিনাং বর্হভারেষু কেশান্ .
উত্পশ্যামি প্রতনুষু নদীবীচিষু ভ্রূবিলাসান্
হন্তৈকস্মিন্ক্বচিদপি ন তে চণ্দি সাদ্র্শ্যমস্তি .. ১০৫..
ত্বামালিখ্য প্রণযকুপিতা ধাতুরাগৈঃ শিলাযাং
আত্মানং তে চরণপতিতং যাবদিচ্ছামি কর্তুম্ .
অস্রৈস্তাবন্ মুহুরুপচিতৈর্দৃষ্টিরালুপ্যতে মে
ক্রূরস্তস্মিন্নপি ন সহতে সঙ্গমং নৌ কৃতান্তঃ .. ১০৬..
মামাকাশপ্রণিহিতভুজং নির্দযাশ্লেষহেতোঃ
লব্ধাযাস্তে কথমপি মযা স্বপ্নসংদর্শনেষু .
পশ্যন্তীনাং ন খলু বহুশো ন স্থলীদেবতানাং
মুক্তাস্থূলাস্তরুকিসলযেষ্বশ্রুলেশাঃ পতন্তি .. ১০৭..
ধারাসিক্তস্থলসুরভিণস্ত্বন্মুখস্যাস্য বালে
দূরীভূতং প্রতনুমপি মাং পঞ্চবাণঃ ক্ষিণোতি .
ধর্মান্তেঽস্মিন্বিগণয কথং বাসরাণি ব্রজেযুঃ
দিক্সংসক্তপ্রবিততঘনব্যস্তসূর্যাতপানি .. ১০৮..
ভিত্ত্বা সদ্যঃ কিসলযপুটান্ দেবদারুদ্রুমাণাং
যে তত্ক্ষীরস্রুতিসুরভযো দক্ষিণেন প্রবৃত্তাঃ .
আলিঙ্গ্যন্তে গুণবতি মযা তে তুষারাদ্রিবাতাঃ
পূর্বস্পৃষ্টং যদি কিল ভবেদঙ্গমেভিস্তবেতি .. ১০৯..
সংক্ষিপ্যেত ক্ষণ ইব কথং দীর্ঘযামা ত্রিযামা
সর্বাবস্থাস্বহরপি কথং মন্দমন্দাতপং স্যাত্ .
ইত্থং চেতশ্চটুলনযনে দুর্লভপ্রার্থনং মে
গাঢোষ্মাভিঃ কৃতমশরণং ত্বদ্বিযোগব্যথাভিঃ .. ১১০..
নন্বাত্মানং বহু বিগণযন্নাত্মনৈবাবলম্বে
তত্ কল্যাণি ত্বমপি নিতরাং মা গমঃ কাতরত্বম্ .
কস্যাত্যন্তং সুখমুপনতং দুঃখমেকান্ততো বা
নীচৈর্গচ্ছত্যুপরি চ দশা চক্রনেমিক্রমেণ .. ১১১..
শাপান্তো মে ভুজগশযনাদুত্থিতে শার্ঙ্গপাণৌ
শেষান্মাসান্ গময চতুরো লোচনে মীলযিত্বা .
পশ্চাদাবাং বিরহগুণিতং তং তমাত্মাভিলাষং
নির্বেক্ষ্যাবঃ পরিণতশরচ্চন্দ্রিকাসু ক্ষপাসু .. ১১২..
ভূযশ্চাহ ত্বমপি শযনে কণ্ঠলগ্না পুরা মে
নিদ্রাং গত্বা কিমপি রুদতী সস্বনং বিপ্রবুদ্ধা .
সান্তর্হাসং কথিতমসকৃত্ পৃচ্ছতশ্চ ত্বযা মে
দ্র্ষ্টঃ স্বপ্নে কিতব রমযন্ কামপি ত্বং মযেতি .. ১১৩..
এতস্মান্ মাং কুশলিনমভিজ্ঞানদানাদ্ বিদিত্বা
মা কৌলীনাচ্চকিতনযনে ময্যবিশ্বাসিনী ভূঃ .
স্নেহানাহুঃ কিমপি বিরহে ধ্বংসিনস্তে ত্বভোগাদ্
ইষ্টে বস্তুন্যুপচিতরসাঃ প্রেমরাশীভবন্তি .. ১১৪..
আশ্বাস্যৈবং প্রথমবিরহোদগ্রশোকাং সখীং তে
শৈলাদাশু ত্রিনযন্বৃষোত্খাতকূটান্নিবৃত্তঃ .
সাভিজ্ঞানপ্রহিতকুশলৈস্তদ্বচোভির্মমাপি
প্রাতঃ কুন্দপ্রসবশিথিলং জীবিতং ধারযেথাঃ .. ১১৫..
কচ্চিত্ সোম্য ব্যবসিতমিদং বন্ধুকৃত্যং ত্বযা মে
প্রত্যাদেশান্ন খলু ভবতো ধীরতাং কল্পযামি .
নিঃশব্দোঽপি প্রদিশসি জলং যাচিতশ্চাতকেভ্যঃ
প্রত্যুক্তং হি প্রণযিষু সতামীপ্সিতার্থক্রিযৈব .. ১১৬..
এতত্ কৃত্বা প্রিযমনুচিতপ্রার্থনাবর্ত্মনো মে
সৌহর্দাদ্ বা বিধুর ইতি বা ময্যনুক্রোশবুদ্ধ্যা .
ইষ্টান্ দেশান্ বিচর প্রাবৃষা সংভৃতশ্রীঃ
মা ভূদেবং ক্ষণমপি চ তে বিদ্যুতা বিপ্রযোগঃ .. ১১৭..
অধ্বক্লান্তং প্রতিমুখগতং সানুমানাম্রকূটঃ
তুঙ্গেন ত্বাং জলদ শিরসা বক্ষ্যতি শ্লাঘমানঃ .
আসারেণ ত্বমপি শমযেস্তস্য নৈদাঘমগ্নিং
সদ্ভাবার্দ্রঃ ফলতি ন চিরেণোপকারো মহত্সু .. ?..
অম্ভোবিন্দুগ্রহণচতুরাংশ্চাতকান্ বীক্ষমাণাঃ
শ্রেণীভূতাঃ পরিগণনযা নির্দিশন্তো বলাকাঃ .
ত্বামাসাদ্য স্তনিতসমযে মানযিষ্যন্তি সিদ্ধাঃ
সোত্কম্পানি প্রিযসহচরীসংভ্রমালিঙ্গিতানি .. ?..
হারাংস্তারাংস্তরলগুটিকান্ কোটিশঃ শঙ্খশুক্তীঃ
শষ্পশ্যামান্ মরকতমণীনুন্মযূখপ্ররোহান্ .
দৃষ্ট্বা যস্যাং বিপণিরচিতান্ বিদ্রুমাণাং চ ভঙ্গান্
সংলক্ষ্যন্তে সলিলনিধযস্তোযমাত্রাবশেষাঃ .. ?..
প্রদ্যোতস্য প্রিযদুহিতরং বত্সরাজোঽত্র জহ্রে
হৈমং তালদ্রুমবনমভূদত্র তস্যৈব রাজ্ঞঃ .
অত্রোদ্ভ্রান্তঃ কিল নলগিরিঃ স্তম্ভমুত্পাট্য দর্পাদ্
ইত্যাগন্তূন্ রমযতি জনো যত্র বন্ধূনভিজ্ঞাঃ .. ?..
পত্ত্রশ্যামা দিনকরহযস্পর্ধিনো যত্র বাহাঃ
শৈলোদগ্রাস্ত্বমিব করিণো বৃষ্টিমন্তঃ প্রভেদাত্ .
যোধাগ্রণ্যঃ প্রতিদশমুখং সংযুগে তস্থিবাংসঃ
প্রত্যাদিষ্টাভরণরুচযশ্চন্দ্রহাসব্রণাঙ্কৈঃ .. ?..
যত্রোন্মত্তভ্রমরমুখরাঃ পাদপা নিত্যপুষ্পা
হংসশ্রেণীরচিতরশনা নিত্যপদ্মা নলিন্যঃ .
কেকোত্কণ্ঠা ভবনশিখিনো নিত্যভাস্বত্কলাপা
নিত্যজ্যোত্স্নাঃ প্রতিহততমোবৃত্তিরম্যাঃ প্রদোষাঃ .. ?..
অক্ষয্যান্তর্ভবননিধযঃ প্রত্যহং রক্তকণ্ঠৈঃ
উদ্গাযদ্ভির্ধনপতিযশঃ কিংনরৈর্যত্র সার্ধম্ .
বৈভ্রাজাখ্যং বিবুধবনিতাবারমুখ্যাসহাযা
বদ্ধালাপা বহিরুপবনং কামিনো নির্বিশন্তি .. ?..
বাসশ্চিত্রং মধু নযনযোর্বিভ্রমাদেশদক্ষং
পুষ্পোদ্ভেদং সহ কিসলযৈর্ভূষণানং বিকল্পম্ .
লাক্ষারাগং চরণকমলন্যাসযোগ্যং চ যস্যাং
একঃ সূতে সকলমবলামণ্ডনং কল্পবৃক্ষঃ .. ?..
স্নিগ্ধাঃ সখ্যঃ ক্ষণমপি দিবা তাং ন মোক্ষ্যন্তি তন্বীং
একপ্রখ্যা ভবতি হি জগত্যঙ্গনানাং প্রবৃত্তিঃ .
স ত্বং রাত্রৌ জলদ শযনাসন্নবাতাযানস্থঃ
কান্তাং সুপ্তে সতি পরিজনে বীতনিদ্রামুপেযাঃ .. ?..
অন্বেষ্টব্যামবনিশযনে সন্নিকীর্ণৈকপার্শ্বাং
তত্পর্যন্তপ্রগলিতলবৈশ্ছিন্নঃআরৈরিবাস্রৈঃ .
ভূযো ভূযঃ কঠিনবিষমাং সারযন্তীং কপোলাদ্
আমোক্তব্যামযমিতনখেনৈকবেণীং করেণ .. ?..
ধারাসিক্তস্থলসুরভিণস্ত্বন্মুখস্যাস্য বালে
দূরীভূতং প্রতনুমপি মাং পঞ্চবাণঃ ক্ষিণোতি .
ঘর্মান্তেঽস্মিন্ বিগণয কথং বাসরাণি ব্রজেযুঃ
দিক্সংসক্তপ্রবিততঘনব্যস্তসূর্যাতপানি .. ?..
ইত্যাখ্যাতে সুরপতিসখঃ শৈলকুল্যাপুরীষু
স্থিত্বা স্থিত্বা ধনপতিপুরীং বাসরৈঃ কৈশ্চিদাপ .
মত্বাগারং কনকরুচিরং লক্ষণৈঃ পূর্বমুক্তৈঃ
তস্যোত্সঙ্গে ক্ষিতিতলগতাং তাং চ দীনাং দদর্শ .. ?..
তস্মাদদ্রের্নিগদিতুমথো শীঘ্রমেত্যালকাযাং
যক্ষাগারং বিগলিতনিভং দিষ্টচিহ্নৈর্বিদিত্বা .
যত্ সংদিষ্টং প্রণযমধুরং গুহ্যকেন প্রযত্নাত্
তদ্গেহিন্যাঃ সকলমবদত্ কামরূপী পযোদঃ .. ?..
তত্সংদেশং জলধরবরো দিব্যবাচাঽঽচচক্ষে
প্রাণাংস্তস্যা জনহিতরতো রক্ষিতুং যক্ষবধ্বাঃ .
প্রাপ্যোদন্তং প্রমুদিতমনাঃ সাপি তস্থৌ স্বভর্তুঃ
কেষাং ন স্যাদবিতথফলা প্রার্থনা হ্যুত্তমেষু .. ?..
শ্রুত্বা বার্ত্তাং জলদকথিতাং তাং ধনেশোঽপি সদ্যঃ
শাপস্যান্তং সদযহৃদযঃ সংবিধাযাস্তকোপঃ .
সংযোজ্যৈতৌ বিগলিতশুচৌ দংপতী হৃষ্টচিত্তৌ
ভোগানিষ্টানবিরতসুখং ভোজযামাস শশ্বত্ .. ?..
ইত্থংভূতং সুরচিতপদং মেঘদূতাভিধানং
কামক্রীডাবিরহিতজনে বিপ্রযোগে বিনোদঃ .
মেঘস্যাস্মিন্নতিনিপুণতা বুদ্ধিভাবঃ কবীনাং
নত্বার্যাযাশ্চরণকমলং কালিদাসশ্চকার .. ?..

মেঘদূতম্ / পূর্বমেঘ

মেঘদূত


.. মেঘদূত ( কালিদাস) ..
Meghaduuta
Kalidasa’s Cloud Messenger
Puurvamegha
কশ্চিত্ কান্তাবিরহগুরুণা স্বাধিকারাত্প্রমত্তঃ
শাপেনাস্তঙ্গমিতমহিমা বর্ষভোগ্যেণ ভর্তুঃ .
যক্ষশ্চক্রে জনকতনযাস্নানপুণ্যোদকেষু
স্নিগ্ধচ্ছাযাতরুষু বসতিং রামগির্যাশ্রমেষু .. ১..
তস্মিন্নদ্রৌ কতিচিদবলাবিপ্রযুক্তঃ স কামী
নীত্বা মাসান্ কনকবলযভ্রংশরিক্তপ্রকোষ্ঠঃ .
আষাঢস্য প্র(শ)থমদিবসে মেঘমাশ্লিষ্টসানুং
বপ্রক্রীডাপরিণতগজপ্রেক্ষণীযং দদর্শ .. ২..
তস্য স্থিত্বা কথমপি পুরঃ কৌতুকাধানহেতোঃ
অন্তর্বাষ্পশ্চিরমনুচরো রাজরাজস্য দধ্যৌ .
মেঘালোকে ভবতি সুখিনোঽপ্যন্যথাবৃত্তি চেতঃ
কণ্ঠাশ্লেষপ্রণযিনি জনে কিং পুনর্দূরসংস্থে .. ৩..
প্রত্যাসন্নে নভসি দযিতাজীবিতালম্বনার্থী
জীমূতেন স্বকুশলমযীং হরযিষ্যন্ প্রবৃত্তিম্ .
স প্রত্যগ্রৈঃ কুটজকুসুমৈঃ কল্পিতার্ঘায তস্মৈ
প্রীতঃ প্রীতিপ্রমুখবচনং স্বাগতং ব্যাজহার .. ৪..
ধূমজ্যোতিঃ সলিলমরুতাং সংনিপাতঃ ক্ব মেঘঃ
সংদেশার্থাঃ ক্ব পটুকরণৈঃ প্রাণিভিঃ প্রাপণীযাঃ .
ইত্যৌত্সুক্যাদপরিগণযন্ গুহ্যকস্তং যযাচে
কামার্তা হি প্রকৃতিকৃপণাশ্চেতনাচেতনেষু .. ৫..
জাতং বংশে ভুবনবিদিতে পুষ্করাবর্তকানাং
জানামি ত্বাং প্রকৃতিপুরুষং কামরূপং মঘোনঃ .
তেনার্থিত্বং ত্বযি বিধিবশাদ্দূরবন্ধুর্গতোঽহং
যাচ্ঞা মোঘা বরমধিগুণে নাধমে লব্ধকামা .. ৬..
সংতপ্তানাং ত্বমসি শরণং তত্ পযোদ প্রিযাযাঃ
সংদেশং মে হর ধনপতিক্রোধবিশ্লেষিতস্য .
গন্তব্যা তে বসতিরলকা নাম যক্ষেশ্বরাণাং
বাহ্যোদ্যানস্থিতহরশিরশ্চন্দ্রিকাধৌতহর্ম্যা ৭..
ত্বামারূঢং পবনপদবীমুদ্গৃহীতালকান্তাঃ
প্রেক্ষিষ্যন্তে পথিকবনিতাঃ প্রত্যযাদাশ্বসন্ত্যঃ .
কঃ সংনদ্ধে বিরহবিধুরাং ত্বয্যুপেক্ষেত জাযাং
ন স্যাদন্যোঽপ্যহমিব জনো যঃ পরাধীনবৃত্তিঃ .. ৮..
মন্দং মন্দং নুদতি পবনশ্চানুকূলো যথা ত্বাং
বামশ্চাযং নদতি মধুরং চাতকস্তে সগন্ধঃ .
গর্ভাধানক্ষণপরিচযান্নূনমাবদ্ধমালাঃ
সেবিষ্যন্তে নযনসুভগং খে ভবন্তং বলাকাঃ .. ৯..
তাং চাবশ্যং দিবসগণনাতত্পরামেকপত্নীং
অব্যাপন্নামবিহতগতির্দ্রক্ষ্যসি ভ্রাতৃজাযাম্ .
আশাবন্ধঃ কুসুমসদৃশং প্রাযশো হ্যঙ্গনানাং
সদ্যঃপাতি প্রণযি হৃদযং বিপ্রযোগে রুণদ্ধি .. ১০..
কর্তুং যচ্চ প্রভবতি মহীমুচ্ছিলিন্ধ্রামবন্ধ্যাং
তচ্ছ্রুত্ব অ তে শ্রবণসুভগং গর্জিতং মানসোত্কাঃ .
আ কৈলাসাদ্বিসকিসলযচ্ছেদপাথেযবন্তঃ
সংপত্স্যন্তে নভসি ভবতো রাজহংসাঃ সহাযাঃ .. ১১..
আপৃচ্ছস্ব প্রিযসখমমুং তুঙ্গমালিঙ্গ্য শৈলং
বন্দ্যৈঃ পুংসাং রঘুপতিপদৈরঙ্কিতং মেখলাসু .
কালে কালে ভবতি ভবতো যস্য সংযোগমেত্য
স্নেহব্যক্তিশ্চিরবিরহজং মুঞ্চতো বাষ্পমুষ্ণম্ .. ১২..
মার্গং তাবচ্ছৃণু কথযতস্ত্বত্প্রযাণানুরূপং
সংদেশং মে তদনু জলদ শ্রোষ্যসি শ্রোত্রপেযম্ .
খিন্নঃ খিন্নঃ শিখরিষু পদং ন্যস্য গন্তাসি যত্র
ক্ষীনঃ ক্ষীণঃ পরিলঘু পযঃ স্রোতসং চোপভুজ্য .. ১৩..
অদ্রেঃ শৃঙ্গং হরতি পবনঃ কিং স্বিদিত্যুন্মুখীভির্
দ্র্ষ্টোত্সাহচ্চকিতচকিতং মুগ্ধসিদ্ধাঙ্গনাভিঃ .
স্থানাদস্মাত্ সরসনিচুলাদুত্পতোদঙ্মুখঃ খং
দিঙ্নাগানাং পথি পরিহরন্ স্থূলহস্তাবলেপান্ .. ১৪..
রত্নচ্ছাযাব্যতিকর ইব প্রেক্ষ্যমেতত্ পুরস্তাদ্
বল্মীকাগ্রাত্ প্রভবতি ধনুষ্খণ্ডমাখণ্ডলস্য .
যেন শ্যামং বপুরতিতরাং কান্তিমাপত্স্যতে তে
বর্হেণেব স্ফুরিতরুচিনা গোপবেশস্য বিষ্ণোঃ .. ১৫..
ত্বয্যাযত্তং কৃষিফলমিতি ভ্রূবিলাসানভিজ্ঞৈঃ
প্রীতিস্নিগ্ধৈর্জনপদবধূলোচনৈঃ পীযমানঃ .
সদ্যঃসীরোত্কষণসুরভি ক্ষেত্রমারুহ্য মালং
কিংচিত্পশ্চাদ্ব্রজ লঘুগতির্ভূয এবোত্তরেণ .. ১৬..
ত্বামাসারপ্রশমিতবনোপপ্লবং সাধু মূর্ধ্না
বক্ষ্যত্যধ্বশ্রমপরিগতং সানুমানাম্রকূটঃ .
ন ক্ষুদ্রোঽপি প্রথমসুকৃতাপেক্ষযা সংশ্রযায
প্রাপ্তে মিত্রে ভবতি বিমুখঃ কিং পুনর্যস্তথোচ্চৈঃ .. ১৭..
ছন্নোপান্তঃ পরিণতফলদ্যোতিভিঃ কাননাম্রৈঃ
ত্বয্যারূঢে শিখরমচলঃ স্নিগ্ধবেণীসবর্ণে .
নূনং যাস্যত্যমরমিথুনপ্রেক্ষণীযমবস্থাং
মধ্যে শ্যামঃ স্তন ইব ভুবঃ শেষবিস্তারপাণ্ডুঃ .. ১৮..
স্থিত্বা তস্মিন্ বনচরবধূভুক্তকুঞ্জে মুহূর্তং
তোযোত্সর্গদ্রুততরগতিস্তত্পরং বর্ত্ম তীর্ণঃ .
রেবাং দ্রক্ষ্যস্যুপলবিষমে বিন্ধ্যপাদে বিশীর্ণাং
ভক্তিচ্ছেদৈরিব বিরচিতাং ভূতিমঙ্গে গজস্য .. ১৯..
তস্যাস্তিক্তৈর্বনগজমদৈর্বাসিতং বান্তবৃষ্টিঃ
জম্বূকুঞ্জপ্রতিহতরযং তোযমাদায গচ্ছেঃ .
অন্তঃসারং ঘন তুলযিতুং নানিলঃ শক্ষ্যতি ত্বাং
রিক্তঃ সর্বো ভবতি হি লঘুঃ পূর্ণতা গৌরবায .. ২০..
নীপং দৃষ্ট্বা হরিতকপিশং কেষরৈরর্ধরূঢৈঃ
আবির্ভূতপ্রথমমুকুলাঃ কন্দলীশ্চানুকচ্ছম্ .
জগ্ধ্বারণ্যেষ্বধিকসুরভিং গন্ধমাঘ্রায চোর্ব্যাঃ
সারঙ্গাস্তে জললবমুচঃ সূচযিষ্যন্তি মার্গম্ .. ২১..
উত্পশ্যামি দ্রুতমপি সখে মত্প্রিযার্থং যিযাসোঃ
কালক্ষেপং ককুভসুরভৌ পর্বতে পর্বতে তে .
শুক্লাপাঙ্গৈঃ সজলনযনৈঃ স্বাগতীকৃত্য কেকাঃ
প্রত্যুদ্যাতঃ কথমপি ভবান্ গন্তুমাশু ব্যবস্যেত্ .. ২২..
পাণ্ডুচ্ছাযোপবনবৃতযঃ কেতকৈঃ সূচিভিন্নৈঃ
নীডারম্ভৈর্গৃহবলিভুজামাকুলগ্রামচৈত্যাঃ .
ত্বয্যাসন্নে পরিণতফলশ্যামজম্বূবনান্তাঃ
সংপত্স্যন্তে কতিপযদিনস্থাযিহংসা দশার্ণাঃ .. ২৩..
তেষং দিক্ষু প্রথিতবিদিশালক্ষণাং রাজধানীং
গত্বা সদ্যঃ ফলমবিকলং কামুকত্বস্য লব্ধা .
তীরোপান্তস্তনিতসুভগং পাস্যসি স্বাদু যস্মাত্
সভ্রূভঙ্গং মুখমিব পযো বেত্রবত্যাশ্চলোর্মি .. ২৪..
নীচৈরাখ্যং গিরিমধিবসেস্তত্র বিশ্রামহেতোঃ
ত্বত্সংপর্কাত্ পুলকিতমিব প্রৌঢপুষ্পৈঃ কদম্বৈঃ .
যঃ পণ্যস্ত্রীরতিপরিমলোদ্গারিভির্নাগরাণাং
উদ্দামানি প্রথযতি শিলাবেশ্মভির্যৌবনানি .. ২৫..
বিশ্রান্তঃ সন্ ব্রজ বননদীতীরজাতানি সিঞ্চন্ন
উদ্যানানাং নবজলকণৈর্যূথিকাজালকানি .
গণ্ডস্বেদাপনযনরুজাক্লান্তকর্ণোত্পলানাং
ছাযাদানাত্ ক্ষণপরিচিতঃ পুষ্পলাবীমুখানাম্ .. ২৬..
বক্রঃ পন্থা যদপি ভবতঃ প্রস্থিতস্যোত্তরাশাং
সৌধোত্সঙ্গপ্রণযবিমুখো মা স্ম ভূরুজ্জযিন্যাঃ .
বিদ্যুদ্দামস্ফুরিতচকিতৈস্তত্র পৌরাঙ্গনানাং
লোলাপাঙ্গৈর্যদি ন রমসে লোচনৈর্বঞ্চিতোঽসি .. ২৭..
বীচিক্ষোভস্তনিতবিহগশ্রেণিকাঞ্চীগুণাযাঃ
সংসর্পন্ত্যাঃ স্খলিতসুভগং দর্শিতাবর্তনাভেঃ .
নির্বিন্ধ্যাযাঃ পথি ভব রসাভ্যন্তরঃ সন্নিপত্য
স্ত্রীণামাদ্যং প্রণযবচনং বিভ্রমো হি প্রিযেষু .. ২৮..
বেণীভূতপ্রতনুসলিলাসাবতীতস্য সিন্ধুঃ
পাণ্ডুচ্ছাযা তটরুহতরুভ্রংশিভির্জীর্ণপর্ণৈঃ .
সৌভাগ্যং তে সুভগ বিরহাবস্থযা ব্যঞ্জযন্তী
কার্শ্যং যেন ত্যজতি বিধিনা স ত্বযৈবোপপাদ্যঃ .. ২৯..
প্রাপ্যাবন্তীনুদযনকথাকোবিদগ্রামবৃদ্ধান্
পূর্বোদ্দিষ্টামনুসর পুরীং শ্রীবিশালাং বিশালাম্ .
স্বল্পীভূতে সুচরিতফলে স্বর্গিণাং গাং গতানাং
শেষৈঃ পুণ্যৈর্হৃতমিব দিবঃ কান্তিমত্ খণ্ডমেকম্ .. ৩০..
দীর্ঘীকুর্বন্ পটু মদকলং কূজিতং সারসানাং
প্রত্যূষেষু স্ফুটিতকমলামোদমৈত্রীকষাযঃ .
যত্র স্ত্রীণাং হরতি সুরতগ্লানিমঙ্গানুকূলঃ
শিপ্রাবাতঃ প্রিযতম ইব প্রার্থনাচাটুকারঃ .. ৩১..
জালোদ্গীর্ণৈরুপচিতবপুঃ কেশসংস্কারধূপৈঃ
বন্ধুপ্রীত্যা ভবনশিখিভির্দত্তনৃত্ত্যোপহারঃ .
হর্ম্যেষ্বস্যাঃ কুসুমসুরভিষ্বধ্বখেদং নযেথা
লক্ষ্মীং পশ্যংল্ললিতবনিতাপাদরাগাঙ্কিতেষু .. ৩২..
(নীত্বা রাত্রিং ললিতবনিতাপাদরাগাঙ্কিতেষু .. ৩২..)
ভর্তুঃ কণ্ঠচ্ছবিরিতি গণৈঃ সাদরং বীক্ষ্যমাণঃ
পুণ্যং যাযাস্ত্রিভুবনগুরোর্ধাম চণ্ডীশ্বরস্য .
ধূতোদ্যানং কুবলযরজোগন্ধিভির্গন্ধবত্যাঃ
তোযক্রীডানিরতযুবতিস্নানতিক্তৈর্মরুদ্ভিঃ .. ৩৩..
অপ্যন্যস্মিঞ্ জলধর মহাকালমাসাদ্য কালে
স্থাতব্যং তে নযনবিষযং যাবদত্যেতি ভানুঃ .
কুর্বন্ সংধ্যাবলিপটহতাং শূলিনঃ শ্লাঘনীযাং
আমন্দ্রাণাং ফলমবিকলং লপ্স্যসে গর্জিতানাম্ .. ৩৪..
পাদন্যাসৈঃ ক্বণিতরশনাস্তত্র লীলাবধূতৈ
রত্নচ্ছাযাখচিতবলিভিশ্চামরৈঃ ক্লান্তহস্তাঃ .
বেশ্যাস্ত্বত্তো নখপদসুখান্ প্রাপ্য বর্ষাগ্রবিন্দূন্
আমোক্ষ্যন্তে ত্বযি মধুকরশ্রেণিদীর্ঘান্ কটাক্ষান্ .. ৩৫..
পশ্চাদুচ্চৈর্ভুজতরুবনং মণ্ডলেনাভিলীনঃ
সাংধ্যং তেজঃ প্রতিনবজপাপুষ্পরক্তং দধানঃ .
নৃত্যারম্ভে হর পশুপতেরার্দ্রনাগাজিনেচ্ছাং
শান্তোদ্বেগস্তিমিতনযনং দৃষ্টভক্তির্ভবান্যা .. ৩৬..
গচ্ছন্তীনাং রমণবসতিং যোষিতাং তত্র নক্তং
রুদ্ধালোকে নরপতিপথে সূচিভেদ্যৈস্তমোভিঃ .
সৌদামিন্যা কনকনিকষস্নিগ্ধযা দর্শযোর্বীং
তোযোত্সর্গস্তনিতমুখরো মা স্ম ভূর্বিক্লবাস্তাঃ .. ৩৭..
তাং কস্যাং চিদ্ ভবনবলভৌ সুপ্তপারাবতাযাং
নীত্বা রাত্রিং চিরবিলসনাত্ খিন্নবিদ্যুত্কলত্রঃ .
দৃষ্টে সূর্যে পুনরপি ভবান্ বাহযেদধ্বশেষং
মন্দাযন্তে ন খলু সুঃঋদামভ্যুপেতার্থকৃত্যাঃ .. ৩৮..
তস্মিন্ কালে নযনসলিলং যোষিতাং খণ্ডিতানাং
শান্তিং নেযং প্রণযিভিরতো বর্ত্ম ভানোস্ত্যজাশু .
প্রালেযাস্রং কমলবদনাত্ সোঽপি হর্তুং নলিন্যাঃ
প্রত্যাবৃত্তস্ত্বযি কররুধি স্যাদনল্পাভ্যসূযঃ .. ৩৯..
গম্ভীরাযাঃ পযসি সরিতশ্চেতসীব প্রসন্নে
ছাযাত্মাপি প্রকৃতিসুভগো লপ্স্যতে তে প্রবেশম্ .
তস্মাত্ তস্যাঃ কুমুদবিশদান্যর্হসি ত্বং ন ধৈর্যান্
মোঘীকর্তুং চটুলশফরোদ্বর্তনপ্রেক্ষিতানি .. ৪০..
তস্যাঃ কিং চিত্ করধৃতমিব প্রাপ্তবানীরশাখং
নীত্বা নীলং সলিলবসনং মুক্তরোধোনিতম্বম্ .
প্রস্থানং তে কথমপি সখে লম্বমানস্য ভাবি
জ্ঞাতাস্বাদো বিবৃতজঘনাং কো বিহাতুং সমর্থঃ .. ৪১..
ত্বন্নিষ্যন্দোচ্ছ্বসিতবসুধাগন্ধসংপর্করম্যঃ
স্রোতোরন্ধ্রধ্বনিতসুভগং দন্তিভিঃ পীযমানঃ .
নীচৈর্বাস্যত্যুপজিগমিষোর্দেবপূর্বং গিরিং তে
শীতো বাযুঃ পরিণমযিতা কাননোদুম্বরাণাম্ .. ৪২..
তত্র স্কন্দং নিযতবসতিং পুষ্পমেঘীকৃতাত্মা
পুষ্পাসারৈঃ স্নপযতু ভবান্ ব্যোমগঙ্গাজলার্দ্রৈঃ .
রক্ষাহেতোর্নবশশিভৃতা বাসবীনাং চমূনাং
অত্যাদিত্যং হুতবহমুখে সংভ্র্তং তদ্ ধি তেজঃ .. ৪৩..
জ্যোতির্লেখাবলযি গলিতং যস্য বর্হং ভবানী
পুত্রপ্রেম্ণা কুবলযপদপ্রাপি কর্ণে করোতি .
ধৌতাপাঙ্গং হরশশিরুচা পাবকেস্তং মযূরং
পশ্চাদদ্রিগ্রহণগুরুভির্গর্জিতৈর্নর্তযেথাঃ .. ৪৪..
আরাধ্যৈনং শরবণভবং দেবমুল্লঙ্ঘিতাধ্বা
সিদ্ধদ্বন্দ্বৈর্জলকণভযাদ্বীণিভির্মুক্তমার্গঃ .
ব্যালম্বেথাঃ সুরভিতনযালম্ভজাং মানযিষ্যন্
স্রোতোমূর্ত্যা ভুবি পরিণতাং রন্তিদেবস্য কীর্তিম্ .. ৪৫..
ত্বয্যাদাতুং জলমবনতে শার্ঙ্গিণো বর্ণচৌরে
তস্যাঃ সিন্ধোঃ পৃথুমপি তনুং দূরভাবাত্ প্রবাহম্ .
প্রেক্ষিষ্যন্তে গগনগতযো নূনমাবর্জ্য দৃষ্টীঃ
একং মুক্তাগুণমিব ভুবঃ স্থূলমধ্যেন্দ্রনীলম্ .. ৪৬..
তামুত্তীর্য ব্রজ পরিচিতভ্রূলতাবিভ্রমাণাং
পক্ষ্মোত্ক্ষেপাদুপরিবিলসত্কৃষ্ণশরপ্রভাণাম্ .
কুন্দক্ষেপানুগমধুকরশ্রীমুষামাত্মবিম্বং
পাত্রীকুর্বন্ দশপুরবধূনেত্রকৌতূহলানাম্ .. ৪৭..
ব্রহ্মাবর্তং জনপদমধশ্ছাযযা গাহমানঃ
ক্ষেত্রং ক্ষত্রপ্রধনপিশুনং কৌরবং তদ্ ভজেথাঃ .
রাজন্যানাং শিতশরশতৈর্যত্র গাণ্ডীবধন্বা
ধারাপাতৈস্ত্বমিব কমলান্যভ্যবর্ষন্মুখানি .. ৪৮..
হিত্বা হালামভিমতরসাং রেবতীলোচনাঙ্কাং
বন্ধুপ্রীত্যা সমরবিমুখো লাঙ্গলী যাঃ সিষেবে .
কৃত্বা তাসামভিগমমপাং সৌম্য সারস্বতীনাং
অন্তঃশুদ্ধস্ত্বমপি ভবিতা বর্ণমাত্রেণ কৃষ্ণঃ .. ৪৯..
তস্মাদ্ গচ্ছেরনুকনখলং শৈলরাজাবতীর্ণাং
জহ্নোঃ কন্যাং সগরতনযস্বর্গসোপানপঙ্ক্তিম্ .
গৌরীবক্ত্রভ্রুকুটিরচনাং যা বিহস্যেব ফেনৈঃ
শংভোঃ কেশগ্রহণমকরোদিন্দুলগ্নোর্মিহস্তা .. ৫০..
তস্যাঃ পাতুং সুরগজ ইব ব্যোম্নি পূর্বার্ধলম্বী
ত্বং চেদচ্ছস্ফটিকবিশদং তর্কযেস্তির্যগম্ভঃ .
সংসর্পন্ত্যা সপদি ভবতঃ স্রোতসি ছাযযাসৌ
স্যাদস্থানোপগতযমুনাসঙ্গমেবাভিরামা .. ৫১..
আসীনানাং সুরভিতশিলং নাভিগন্ধৈর্মৃগাণাং
তস্যা এব প্রভবমচলং প্রাপ্য গৌরং তুষারৈঃ .
বক্ষ্যস্যধ্বশ্রমবিনযনে তস্য শৃঙ্গে নিষণ্ণঃ
শোভাং শুভ্রত্রিনযনবৃষোত্খাতপঙ্কোপমেযাম্ .. ৫২..
তং চেদ্ বাযৌ সরতি সরলস্কন্ধসঙ্ঘট্টজন্মা
বাধেতোল্কাক্ষপিতচমরীবালভারো দবাগ্নিঃ .
অর্হস্যেনং শমযিতুমলং বারিধারাসহস্রৈঃ
আপন্নার্তিপ্রশমনফলাঃ সংপদো হ্যুত্তমানাম্ .. ৫৩..
(যে ত্বাং মুক্তধ্বনিমসহনাঃ কাযভঙ্গায তস্মিন্
দর্পোত্সেকাদুপরি শরভা লঙ্ঘযিষ্যন্ত্যলঙ্ঘ্যম্ .)
যে সংরম্ভোত্পতনরভসাঃ স্বাঙ্গভঙ্গায তস্মিন্
মুক্তাধ্বান সপদি শরভা লঙ্ঘযেযুর্ভবন্তম্ .
তান্ কুর্বীথাস্তুমুলকরকাবৃষ্টিহাসাবকীর্ণান্
কে বা ন স্যুঃ পরিভবপদং নিষ্ফলারম্ভযত্নাঃ .. ৫৪..
তত্র ব্যক্তং দৃষদি চরণন্যাসমর্ধেন্দুমৌলেঃ
শশ্বত্ সিদ্ধৈরুপহৃতবলিং ভক্তিনম্রঃ পরীযাঃ .
যস্মিন্ দৃষ্টে করণবিগমাদূর্ধ্বমুদ্ধূতপাপাঃ
সংকল্পন্তে স্থিরগণপদপ্রাপ্তযে শ্রদ্দধানাঃ .. ৫৫..
শব্দাযন্তে মধুরমনিলৈঃ কীচকাঃ পূর্যমাণাঃ
সংসক্তাভিস্ত্রিপুরবিজযো গীযতে কিংনরীভিঃ .
নির্হ্রাদী তে মুরজ ইব চেত্ কন্দরেষু ধ্বনিঃ স্যাত্
সঙ্গীতার্থো ননু পশুপতেস্তত্র ভাবী সমগ্রঃ .. ৫৬..
প্রালেযাদ্রেরুপতটমতিক্রম্য তাংস্তান্ বিশেষান্
হংসদ্বারং ভৃগুপতিযশোবর্ত্ম যত্ ক্রৌঞ্চরন্ধ্রম্ .
তেনোদীচীং দিশমনুসরেস্তির্যগাযামশোভী
শ্যামঃ পাদো বলিনিযমনাভ্যুদ্যতস্যেব বিষ্ণোঃ .. ৫৭..
গত্বা চোর্ধ্বং দশমুখভুজোচ্ছ্বাসিতপ্রস্থসংধেঃ
কৈলাসস্য ত্রিদশবনিতাদর্পণস্যাতিথিঃ স্যাঃ .
শৃঙ্গোচ্ছ্রাযৈঃ কুমুদবিশদৈর্যো বিতত্য স্থিতঃ খং
রাশীভূতঃ প্রতিদিনমিব ত্র্যম্বকস্যাট্টহাসঃ .. ৫৮..
উত্পশ্যামি ত্বযি তটগতে স্নিগ্ধভিন্নাঞ্জনাভে
সদ্যঃকৃত্তদ্বিরদদশনচ্ছেদগৌরস্য তস্য .
শোভামদ্রেঃ স্তিমিতনযনপ্রেক্ষণীযাং ভবিত্রীং
অংসন্যস্তে সতি হলভৃতো মেচকে বাসসীব .. ৫৯..
হিত্বা তস্মিন্ভুজগবলযং শংভুনা দত্তহস্তা
ক্রীডাশৈলে যদি চ বিচরেত্ পাদচারেণ গৌরী .
ভঙ্গীভক্ত্যা বিরচিতবপুঃ স্তম্ভিতান্তর্জলৌঘঃ
সোপানত্বং কুরু মণিতটারোহণায়াগ্রয়ায়ী  । ৬০। 
তত্রাবশ্যং বলয়কুলিশোদ্ধট্টনোগ্দীর্ণতোয়ং
নেষ্যন্তি ত্বাং সুরযুবতয়ো যন্ত্রধারাগৃহত্বম্ .
তাভ্যো মোক্ষস্তব যদি সখে ঘর্মলব্ধস্য ন স্যাত্
ক্রীডালোলাঃ শ্রবণপরুষৈর্গর্জিতৈর্ভায়য়েস্তাঃ । ৬১।
হেমাম্ভোজপ্রসবি সলিলং মানসস্যাদদানঃ
কুর্বন্ কামাত্ ক্ষণমুখপটপ্রীতিমৈরাবতস্য .
ধুন্বন্কল্পদ্রুমকিসলয়ান্যংশুকানীব বাতৈঃ
নানাচেষ্টৈর্জলদ ললিতৈর্নির্বিশেস্তং নগেন্দ্রম্  । ৬২। 
(ধুন্বন্ বাতৈঃ সজলপৃষতৈঃ কল্পবৃক্ষাংশুকানি
চ্ছায়াভিন্নঃ স্ফটিকবিশদং নির্বিশেঃ পর্বতং তম্  । ৬২। 
তষ্যোত্সঙ্গে প্রণয়িন ইব স্রস্তগঙ্গাদুকূলাং
ন ত্বং দৃষ্ট্বা ন পুনরলকাং জ্ঞাস্যসে কামচারিন্ .
য়া বঃ কালে বহতি সলিলোদ্গারমুচ্চৈর্বিমানা
মুক্তাজালগ্রথিতমলকং কামিনীবাভ্রবৃন্দম্ । ৬৩। 

শুক্রবার, ১৭ মে, ২০১৯

Dharmapuja

ধর্মপুজো
                                       
                            ধর্মরাজ পুজো বা ধরম পুজা বুদ্ধপূর্ণীমার তিথিতে অনুষ্ঠিত হয়।  ধর্মঠাকুর সাধারণত গ্রামের শেষে একটা বটগাছের ( ক্ষেত্রবিশেষে অন্য কোন গাছের তলায় ) একটি সিঁদুর-মাখানো নির্দিষ্ট আকারবিহীন প্রস্তরখণ্ডে ধর্মঠাকুরের পূজা করা হয়। প্রধানত বাউড়ি, বাগদি, হাড়ি, ডোম ইত্যাদি বর্ণের মানুষেরা ধর্মঠাকুরের পূজা করে থাকে।ধর্মঠাকুর বিভিন্ন চর্মরোগ বিশেষ করে কুষ্ঠব্যাধি নিরাময় করেন, ভক্তকে সন্তানের বরদান করেন বলে মনে করা হয়।
আকার :-
ধর্মঠাকুর হলেন  নিরঞ্জন অর্থাৎ শূন্যতার প্রতীক ।  সূর্যের  মতো তিনিও সাদা এবং তার বাহন ঘোড়ায় টানা রথ বা ঘোড়া । এজন্য রাঢ়বঙ্গের বিভিন্ন অঞ্চলে ধর্মঠাকুরের পূজার সময় মাটির ঘোড়া  দেওয়ার প্রথাও প্রচলিত আছে। ধর্মঠাকুরের বাহন সাদা ঘোড়া এবং সাদা ফুল তাঁর প্রিয়। তাঁর আসল প্রতীক পাদুকা বা খড়ম।
আসলে  ধর্মঠাকুর  হলেন  বুদ্ধ, সূর্য, শিব এবং বিষ্ণুর মিলিত দেবতা । অধ্যাপক শ্রীসুকুমার সেন ধর্মঠাকুর কে মিশ্রিত দেবতা হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী তাঁর ” ডিসকভারী অফ লিভিং বুদ্ধিজম অফ বেংগল” নিবন্ধে ধর্মঠাকুরকে বৌদ্ধ দেবতা আখ্যায়িত করেছেন।  “তারকেশ্বরের শিবতত্ত্ব”  পুঁথিতে আছেঃ

” বহু দেব বহু মঠ না হয় কথন।
 নীচ জাতি গৃহে দেখ ধর্ম সনাতন
বৌদ্ধধর্ম বৌদ্ধ চর্চা করিতে নির্মুল।
এতাদৃশ অনুষ্ঠান করে সাধুকুল “
অর্থাৎ বৌদ্ধধর্ম নির্মূল করে তার স্থলে ধর্মঠাকুরের উদ্ভব হয়।
ধর্মঠাকুরের মূর্তি বা প্রতীক বিভিন্ন প্রকারের হয়ে থাকে–যেমন
১। ঘট,  শিলা, মুণ্ডমূর্তী, পোড়ামাটির ঘোড়া, ঘটপ্রতীক
২। রাজবেশধারী মূর্তি।
৩। পৌরাণিক দেবতার অনুরুপ
৪। মহাদেবের অনুরূপ (জটা ও ত্রিশুল ছাড়া )
৫। সাধারণ শিলাখন্ড প্রতীক যা ধর্মশীলা নামে পরিচিত
৬। ধ্যানী বুদ্ধের মতো।


পুজা :-
বহু জায়গায় ধর্মঠাকুরের নিত্যপুজা অনুষ্ঠিত হয়। সাধারণত তিন প্রকারে অনুষ্ঠিত হয়: নিত্য, বারমতি এবং বাৎসরিক। এই নিত্যপুজা সাধারণত অনারম্বড় হয়।
বুদ্ধপূর্ণীমার দিন   পূজায়  পাঁঠা, হাঁস ও পায়রা এমনকি শূকর বলি দেওয়ার রীতি আছে।
পূজায় যারা ব্রতধারন করে বেত হাতে সন্নাসীবেশ ধারন করে তাদের ভক্ত বলে। ভক্তরা  প্রচুর পরিমানে মাদক সেবন করে, জ্বলন্ত অঙ্গারের উপর নৃত্য করে ও সারা শরীরে বানবিদ্ধ করে। ধর্মঠাকুরের পূজায় কোন জাতিভেদ নেই তাই বহুস্থানে তাঁর পূজায়  হাঁড়ি, ডোম, বাগ্দী প্রভৃতি জাতির লোক পৌরহিত্য করে । তবে বর্তমানে ধীরে ধীরে সেই স্থান ব্রাহ্মণ পুরোহিতরা দখল করছেন। পূজার সময় অনেক ভক্তের ভর হয়। মনে করা হয় যে ধর্মঠাকুর তার শরীরে অবস্থান করে আদেশ দান করেন। পূজা শেষে পুরোহিত বিগ্রহের উপর ফুল রাখেন, ঢাক ঢোল বেজে উঠে, বিগ্রহ থেকে ফুল সহজে পড়ে গেলে মঙ্গল মনে করা হয়। একে ফুলপড়া বলে।
অনেকে অভীষ্ট কামনায় মন্দিরের গাছে ঢিল ও মাটির ঘোড়া ঝুলিয়ে দেন। এই পূজায় পদ্ম ফুলের বিশেষ প্রয়োজন হয়।
ধর্মমঙ্গল:-
                                         ধর্মঠাকুরের পূজার প্রাধান্য কাল পঞ্চদশ শতাব্দী থেকে অষ্টাদশ শতক পর্যন্ত। এই সময়কালে বহু ধর্মমঙ্গলের কবিদের রচনা পাওয়া গিয়েছে, মুদ্রিতও হয়েছে। মনে করা হয় রামাই পন্ডিত ছিলেন ধর্মঠাকুরের এর প্রথম পুরোহিত ও প্রচারক । রামাই পন্ডিতের 'শূণ্যপুরাণ' ধর্মমঙ্গলের আদিরুপ। রামাই পন্ডিতের কাল সম্পর্কে মতভেদ আছে। তিনি আনুমানিক  ১০০০ খ্রীষ্টাব্দে  হতে  ১৫০০ খ্রীষ্টাব্দের মধ্যে বিদ্যমান ছিলেন।
কিন্তু ধর্মমঙ্গল ধারার  প্রথম কবি হলেন ময়ূরভট্ট। তাঁর রচিত 'হাকন্দপূরান' বেশ খ্যাতি অর্জন করেছিল । এরপর আসে পরবর্তী কবি খেলারাম চক্রবর্তীর ধর্মমঙ্গল। এছাড়াও শ্যাম পণ্ডিত, ধর্মদাস , সীতারাম দাস, রামদাস আদক, মাণিকরাম গাঙ্গুলি ও যদুনাথ পণ্ডিত উল্লেখযোগ্য।

মঙ্গলবার, ৭ মে, ২০১৯

Akshay tritiya

                      অক্ষয় তৃতীয়া

অক্ষয় তৃতীয়া হল চান্দ্র বৈশাখ মাসের শুক্লপক্ষের তৃতীয়া তিথি। অক্ষয় তৃতীয়া বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ তিথি। অক্ষয় শব্দের অর্থ হল যা ক্ষয়প্রাপ্ত হয় না। বৈদিক বিশ্বাসানুসারে এই পবিত্র তিথিতে কোন শুভকার্য সম্পন্ন হলে তা অনন্তকাল অক্ষয় হয়ে থাকে।
যদি ভালো কাজ করা হয় তার জন্যে আমাদের লাভ হয় অক্ষয় পূণ্য। আর যদি খারাপ কাজ করা হয় তবে লাভ হয় অক্ষয় পাপ। তাই এদিন খুব সাবধানে প্রতিটি কাজ করা উচিত। খেয়াল রাখতে হয় ভুলেও যেন কোনো খারাপ কাজ না হয়ে যায়। কখনো যেন কটু কথা না বেরোয় মুখ থেকে। কোনো কারণে যেন কারো ক্ষতি না করে ফেলি বা কারো মনে আঘাত দিয়ে না ফেলি। তাই এদিন যথাসম্ভব মৌন জরুরী। আর এদিন পূজা,জপ,ধ্যান,দান,অপরের মনে আনন্দ দেয়ার মত কাজ করা উচিত। যেহেতু এই তৃতীয়ার সব কাজ অক্ষয় থাকে তাই প্রতিটি পদক্ষেপ ফেলতে হয় সতর্কভাবে।
এবারের অক্ষয়তৃতীয়া সবার ভালো কাটুক – এই কামনায় করি।
এদিন যে,সকল তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা ঘটেছিল।
১) এদিনই বিষ্ণুর ষষ্ঠ অবতার পরশুরাম জন্ম নেন পৃথিবীতে।
২) এদিনই রাজা ভগীরথ গঙ্গা দেবীকে মর্ত্যে নিয়ে এসেছিলেন।
৩) এদিনই গণপতি গনেশ বেদব্যাসের মুখনিঃসৃত বাণী শুনে মহাভারত রচনা শুরু করেন।
৪) এদিনই দেবী অন্নপূর্ণার আবির্ভাব ঘটে।
৫) এদিনই সত্যযুগ শেষ হয়ে ত্রেতাযুগের সূচনা হয়।
৬) এদিনই কুবেরের তপস্যায় তুষ্ট হয়ে মহাদেব তাঁকে অতুল ঐশ্বর্য প্রদান করেন। এদিনই কুবেরের লক্ষ্মী লাভ হয়েছিল বলে এদিন বৈভব-লক্ষ্মীর পূজা করা হয়।
৭) এদিনই ভক্তরাজ সুদামা শ্রী কৃষ্ণের সাথে দ্বারকায় গিয়ে দেখা করেন এবং তাঁর থেকে সামান্য চালভাজা নিয়ে শ্রী কৃষ্ণ তাঁর সকল দুঃখ মোচন করেন।
৮) এদিনই দুঃশাসন দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণ করতে যান এবং ভগবান তার সখীকে রক্ষা করেন শ্রীকৃষ্ণ।
শরনাগতের পরিত্রাতা রূপে এদিন শ্রী কৃষ্ণা দ্রৌপদীকে রক্ষা করেন।
৯) এদিন থেকেই পুরীধামে জগন্নাথদেবের রথযাত্রা উপলক্ষ্যে রথ নির্মাণ শুরু হয়।
১০) কেদার বদরী গঙ্গোত্রী যমুনত্রীর যে মন্দির ছয়মাস বন্ধ থাকে এইদিনেই তার দ্বার উদঘাটন হয়। দ্বার খুললেই দেখা যায় সেই অক্ষয়দীপ যা ছয়মাস আগে জ্বালিয়ে আসা হয়েছিল।
১১) এদিনই সত্যযুগের শেষ হয়ে প্রতি কল্পে ত্রেতা যুগ শুরু হয়।
অক্ষয় তৃতীয়া সম্পর্কে একটি পুরানিক গল্প দেয়া হল :
ধর্মরাজ যুধিষ্ঠির একবার মহামুনি শতানিককে অক্ষয় তৃতীয়া তিথির মাহাত্ম্য কীর্তন করতে বললেন ।
শতানিক বললেন পুরাকালে খুব ক্রোধসর্বস্ব , নিষ্ঠুর এক ব্রাহ্মণ ছিলেন । ধর্মকর্মে তার বিন্দুমাত্র আগ্রহ ছিল,না । একদিন এক দরিদ্র ক্ষুধার্ত ব্রাহ্মণ তার নিকট অন্ন এবং জল ভিক্ষা চাইলেন । রণচন্ডী হয়ে ব্রাহ্মণ কর্কশ স্বরে তাঁর দুয়ার থেকে ভিখারীকে দূর দূর করে তাড়িয়ে দিলেন আর বললেন যে অন্যত্র ভিক্ষার চেষ্টা করতে ।
ক্ষুধা-পিপাসায় কাতর ভিখারী চলে যেতে উদ্যত হল ।
ব্রাহ্মণ পত্নী সুশীলা অতিথির অবমাননা দেখতে না পেরে দ্রুত স্বামীর নিকট উপস্থিত হয়ে ভরদুপুরে অতিথি সত্কার না হলে সংসারের অমঙ্গল হবে এবং গৃহের ধন সমৃদ্ধি লোপ পাবে … একথা জানালেন ।
স্বামীর দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে ভিখারীকে তিনি ডাক দিলেন এবং ভিখারীর অন্যত্র যাবার প্রয়োজন নেই সে কথা জানালেন । সুশীলা ত্রস্তপদে তার জন্য অন্নজল আনবার ব্যবস্থা করলেন । কিছুপরেই তিনি অতিথি ভিক্ষুকের সামনে সুশীতল জল এবং অন্ন-ব্যঞ্জন নিয়ে হাজির হলেন । ভিখারী বামুন অতীব সন্তুষ্ট হলেন এবং সে যাত্রায় সুশীলাকে আশীর্বাদ করে সেই অন্নজল দানকে অক্ষয় দান বলে অভিহিত করে চলে গেলেন ।
বহুবছর পর সেই উগ্রচন্ড ব্রাহ্মণের অন্তিমকাল উপস্থিত হল । যমদূতেরা এসে তার শিয়রে হাজির । ব্রাহ্মণের দেহপিঞ্জর ছেড়ে তার প্রাণবায়ু বের হ’ল বলে । তার শেষের সেই ভয়ঙ্কর সময় উপস্থিত । ক্ষুধা ও তৃষ্ণায় তার কন্ঠ ও তালু শুকিয়ে গেল । তার ওপর যমদূতেদের কঠোর অত্যাচার । ব্রাহ্মণ তাদের কাছে দুফোঁটা জল চাইল এবং তাকে সে যাত্রায় উদ্ধার করতে বলল ।
যমদূতেরা তখন একহাত নিল ব্রাহ্মণের ওপর ।
তারা বলল ” মনে নেই ? তুমি তোমার গৃহ থেকে অতিথি ভিখারীকে নির্জ্জলা বিদেয় করেছিলে ?”
বলতে বলতে তারা ব্রাহ্মণকে টানতে টানতে ধর্মরাজের কাছে নিয়ে গেল ।
ধর্মরাজ ব্রাহ্মণের দিকে তাকিয়ে বললেন ” এঁকে কেন আমার কাছে এনেছ্? ইনি মহা পুণ্যবান ব্যক্তি ।বৈশাখমাসের শুক্লা তৃতীয়া তিথিতে এনার পত্নী তৃষ্ণার্ত অতিথিকে অন্নজল দান করেছেন । এই দানঅক্ষয় দান ।
সেই পুণ্যে ইনি পুণ্যাত্মা । আর সেই পুণ্যফলে এনার নরক গমন হবেনা । ব্রাহ্মণকে তোমরা জল দাও । শীঘ্রই ইনি স্বর্গে গমন করবেন !👏

রবিবার, ২৪ মার্চ, ২০১৯

Choitra sankranti / charak puja

    চৈত্র সংক্রান্তি বা চড়ক

             বাংলা পঞ্জিকা অনুসারে চৈত্র মাসের শেষ দিন অর্থাৎ চৈত্র সংক্রান্তিতে পালিত হয় চড়ক উৎসব । জনশ্রতি অনুসারে ১৪৮৫ খ্রিষ্টাব্দে সুন্দরানন্দ ঠাকুর নামের এক রাজা এই পূজা প্রথম শুরু করেন।
রীতিনীতি :-

‘‘চৈত্র মাস্যথ মাঘেবা যোহর্চ্চয়েৎ শঙ্করব্রতী।
করোতি নর্ত্তনং ভক্ত্যা বেত্রবানি দিবাশিনম্।।
 মাসং বাপ্যর্দ্ধমাসং বা দশ সপ্তদিনানি বা।
 দিনমানং যুগং সোহপি শিবলোক মহীয়তে।।’’ ( ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ, প্রকৃতি খণ্ড  )
                      অর্থাৎ, চৈত্রমাসে বা  মাঘ মাসে একমাস বা পনেরো দিন বা দশ দিন বা সাত দিন অথবা এক  দিন হাতে বেতের লাঠি নিয়ে শিবব্রতী হয়ে নৃত্যাদি করলে সেই ব্যক্তি  শিবলোক প্রাপ্ত হয়।
পূজোর আগের দিন চড়ক গাছটিকে ধুয়ে-মুছে পরিষ্কার করা হয়। এতে জলভরা একটি পাত্রে শিবের প্রতীক শিবলিঙ্গ বা সিঁদুরমথিত শিবের পাটা বা বুড়ো শিব কে রাখা হয়।
গাজন উৎসবের তিনটি অংশ— সন্ন্যাস, নীলব্রত এবং চড়ক।  চৈত্র সংক্রান্তির সাত দিন বা তিন দিন আগে থেকে কঠোর নিয়ম পালন করা হয় যাকে সন্ন্যাস পালন করা হয় বলে। গেরুয়া বা সাদা বস্ত্র ধারণ করে হবিষ্যি গ্রহণ করা আবশ্যিক।
সন্ন্যাস নেওয়া / চড়ক ঘোরা:- 
পূজোর উৎসবে বহু প্রকারের দৈহিক যন্ত্রণা ধর্মের অঙ্গ বলে বিবেচিত হয়। চড়কগাছে ভক্ত্যা বা সন্ন্যাসীকে লোহার হুড়কা দিয়ে চাকার সঙ্গে বেঁধে দ্রুতবেগে ঘোরানো হয়। যারা শরীরে বড়শি বিঁধিয়ে শূন্যে ঘোরেন তাদের ‘হাজরা’  বলা হয়। তার পিঠে, হাতে, পায়ে, জিহ্বায় এবং শরীরের অন্যান্য অঙ্গে বাণ শলাকা বিদ্ধ করা হয়। কখনো কখনো জ্বলন্ত লোহার শলাকা তার গায়ে ফুঁড়ে দেয়া হয়। ১৮৬৩ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ সরকার আইন করে এ নিয়ম বন্ধ করলেও কিছু কিছু স্থানে এখনো দেখা যায়।
ফুল-খেলা :— লম্বা গর্ত। এক ফুট গভীর, সাত-আট লম্বা গর্তে জ্বলন্ত কাঠকয়লার আংরা বিছিয়ে দেওয়া হয়। এবং তার ওপর দিয়ে ভক্ত সন্ন্যাসীরা হেঁটে যান। বীরভূম জেলার মল্লারপুরের মল্লেশ্বর শিব মন্দিরের ফুল খেলা বিখ্যাত।
হাকুণ্ড: — জ্বলন্ত অঙ্গারের ওপর হাঁটা, কুমিরের পূজা, বাণফোঁড়া , কাঁটা আর ছুঁড়ির ওপর লাফানো,  শিবের বিয়ে, অগ্নিনৃত্য, চড়কগাছে দোলা এবং দানো-বারনো বা হাজরা পূজা করা ইত্যাদি হল চড়ক পুজোর বিশেষ রীতিনীতি। লম্বা সার দিয়ে সন্ন্যাসীরা বসে। তাদের জিভে ফোঁড়া লম্বা শলাকা। রক্ত-লালা ঝরছে। প্রত্যেক জনের সামনে গর্তে জ্বলন্ত কাঠকয়লার আগুন। তার সামনে হাঁড়ির মধ্যে জাগ-পিদিম, সামনে পিছনে এয়োস্ত্রী। সন্ন্যাসীর কোলে ওই অবস্থায় শিশুপুত্র বসে।

শুক্রবার, ১৫ মার্চ, ২০১৯

Ghetu puja / Ghantakarna puja

                               ঘেঁটু


ঘেঁটু বা  ঘন্টাকর্ণ হলেন  চর্ম রোগের দেবতা।  ফাল্গুন মাসের শেষ দিনে এই পূজা হয়। ঘেঁটু  ঠাকুর হলেন সূর্য ও ধর্মঠাকুরের লৌকিক রূপ।
আবার জৈন মতে ইনি ৫২ বীরের অন্যতম। পূর্বে বাংলায় জৈনধর্মের প্রতিপত্তি ছিল  । সম্ভবত  ব্রাহ্মণ্যধর্মের পুনঃপ্রতিষ্ঠার সাথে সাথে ইনি কৌলিন্য হারান ।
কারণ, সূর্য ও ধর্মঠাকুর দুজনই কুষ্ঠ ও নানারকম চর্মরোগ থেকে মুক্তি দেন। চর্মদেবতা ঘেঁটুর নাম ও আচরণে মত  মূর্তিটিও অদ্ভুত। আধভাঙা ব্যবহৃত মাটির হাড়ি উল্টো করে রাখা হয়, এটি আসন। এর ওপরে একদলা গোবর দিয়ে করা হয় ঘাঁটু দেবতার মুখ। চোখ তৈরি করা হয় দুটি কড়ি দিয়ে। কপালের অংশে দেয়া হয় সিঁদুরের তিলক। হাড়ির ওপরে রাখা হয় দুর্বা ঘাস ও ভাঁট ( ঘেঁটু ) ফুল। কোনো কোনো এলাকায় ঘাঁটুর পোশাক হিসেবে হাড়িতে জড়িয়ে দেয়া হয় হলুদ ছাপানো কাপড়। আর ভাঙাহাড়ির ভেতর জ্বালানো হয় মোমবাতি।
ঘেঁটু ঠাকুরের গল্প :-
ঘেঁটু দেবকুমার থাকা অবস্থায় বড়সড়  অপরাধ করে বসেন। এর জন্য বিষ্ণু তাকে অভিশাপ দেন। এই অভিশাপের ফলে তাকে  জন্ম নিতে হয় পিশাচ কুলে। রাগে ফুলে থাকতেন। কোনোভাবেই যেন বিষ্ণু নাম কানে না আসে সেজন্য দুই কানে ঘণ্টা ঝুলিয়ে রাখার কারণে নাম হয় ঘণ্টাকর্ণ। কোনো মন্দিরে ঘেঁটু ঠাকুরের  পূজা হয় না। পূজা হয় জলাশয়ের  পাশে রাস্তার মোড়ে।
ভাঁট বা ঘেঁটু  ফুল :-
এর বৈজ্ঞানিক নাম: Clerodendrum infortunatum L. ।  এই গাছের রস তিতো। দীর্ঘমেয়াদী  জ্বর, গেটেবাত,  আমাশয় ও পেট ব্যথায় ভাঁটের কচি ডগার রস কয়েক দিন সকালে খেলে রোগ ভালো হয়ে যায়। ভাঁটপাতার রস কৃমিনাশক। এর পাতা অ্যাজমা, টিউমার, সাপের কামড় ও চর্ম রোগে ব্যবহার হয়। মূলের নির্যাস দাঁতের ক্ষয়রোগ, পেটব্যথা, ও হিস্টিরিয়ার উপশম করে। যে কোনো চর্মরোগে ভাঁটপাতার রস ৩-৪ দিন লাগালে আশ্চর্যজনক ফল পাওয়া যায়। উকুন হলে ভাঁট পাতার রস লাগিয়ে ১ ঘণ্টা পর ধুয়ে ফেলবেন। উকুন থাকবে না। ম্যালেরিয়াতেও এর ব্যবহার দেখা যায়।
রীতিনীতি :-
এই দিনে গ্রাম বাংলার ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা কলার পাতা দিয়ে পালকি তৈরী করে পালকির ভিতরে প্রদীপ জালিয়ে এবং পালকিটিকে ঘেঁটু ফুল দিয়ে সাজিয়ে ঘেঁটু ঠাকুরের পুজো করেন।

ঘেঁটু গান :-
ছেলে মেয়েরা ঘেঁটু গান গেয়ে পাড়ায় পাড়ায় চাল ডাল টাকা আদায় করে বেড়ায়।
১।।  শোন শোন সর্বজন ঘাঁটুর জন্ম বিবরণ।
পিশাচ কুলে জন্মিলেন শাস্ত্রে লিখন।
বিষ্ণুনাম কোনমতে করবে না শ্রবণ
তাই দুই কানে দুই ঘন্টা করেছে বন্ধন।
২।।  ঘেঁটু যায় ঘেঁটু যায় গৃহস্থের বাড়ি
এক কাঠা চাল দাও কুমড়োর বড়ি
যে দেবে থালা থালা তার হবে কোঠা-বালা
যে দেবে মুঠো মুঠো তার হবে হাত ঠুটো
যে দেবে এক পলা তেল তার হবে সোনার দেল।
৩।।  আলোর মালা চাল-ডাল দাও
নয় খোসপচড়া লও।
যে দেবে ধামা ধামা
তারে ঘাঁটু দেবে জরির জামা
যে দেবে শুধু বকুনি।
ঘাঁটু দেবে তাকে খোস-চুলকানি।

মঙ্গলবার, ১২ মার্চ, ২০১৯

Holi / Dol jatra / Basanta panchami

        দোলযাত্রা বা হোলি

হোলি বা দোলযাত্রা হল হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন ও শিখ ধর্মের একটি অন্যতম প্রধান উৎসব। এটি একাধারে রঙের উৎসব ও প্রেমের উৎসব প্রধানত ফাল্গুন মাসের পূর্ণিমা তিথিতে হোলি বা দোলযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। নারদ পুরাণ, ভবিষ্য পুরাণ ও ‘জৈমিনি মীমাংসা’য় রঙের উৎসবের বিবরণ পাওয়া যায়। হর্ষবর্ধনের নাটক ‘রত্মাবলী’তে ও সপ্তম  শতাব্দীর এক শিলালিপিতে রাজা হর্ষবর্ধন কর্তৃক ‘হোলিকোৎসব’ পালনের উল্লেখ পাওয়া যায়।
হোলির প্রথম সন্ধ্যাকে বলে ছোট হোলি। এদিন হোলিকা দহন বা মেড়াপোড়া অনুষ্ঠিত হয়। পরের দিনকে বলা হয় ফাগুয়া, ধুলেন্দি বা রঙ্গোলি হোলি।
হোলিকে নেপালি ও হিন্দিতে  होली (হোলি ) , মারাঠিতে होळी,পাঞ্জাবীতে  ਹੋਲੀ, কানাড়ায়   ಹೋಳಿ, তেলেগুতে   హోళి, অসমীয়া ভাষায়  ফাকুৱা ও  দ’ল যাত্ৰা , ওড়িয়ায়  ଦୋଳଯାତ୍ରା (দোলযাত্রা ), আর বাংলাভাষার দোলযাত্রা বলে।
হোলি উৎসবের সূচনা :-
১।।   উত্তর ভারতে হোলি উৎসবটি বাংলার দোলযাত্রার পরদিন পালিত হয়। হোলি নামটা এসেছে  দৈত্যরাজ হিরণ্যকশিপুর বোন হোলিকার নাম থেকে । হোলিকা ছিলেন মহর্ষি কশ্যপ ও তাঁর পত্নী দিতির পুত্র হিরণ্যকশিপুর বোন ।  হিরণ্যকশিপু ছিলেন অপরাজেয়। তাই সে নিজেকে ভগবান হিসেবে ঘোষণা করেন । আরো ঘোষণা করেন যে তাই কোনও দেবতাকে  নয়, পুজো তাকেই করতে হবে। কিন্তু হিরণ্যকশিপুর পুত্র প্রহ্লাদ ছিলেন বিষ্ণুর ভক্ত। সে তার বাবার আদেশ মানতে রাজি নয়। হিরণ্যকশিপু ক্ষিপ্ত হয়ে উঠল। নানা ভাবে ছেলেকে শাস্তি দেওয়ার চেষ্টা করল, কিন্তু ফল হল না। শেষে প্রহ্লাদকে ভুলিয়ে জ্বলন্ত চিতায় বসল হোলিকা। হোলিকার  ছিল  অগ্নিনিরোধক শাল । নিজে গায়ে দিল সেই অগ্নি-নিরোধক শাল। কিন্তু আগুন জ্বলে উঠতেই সেই শাল উড়ে গিয়ে প্রহ্লাদকে ঢেকে ফেলল। অগ্নিদগ্ধ হল হোলিকা।  ওই আগুন হল অশুভের বিরুদ্ধে শুভের জয়ের প্রতীক।একে আমরা প্রতীকীভাবে প্রকাশ করি চাঁচর পোড়ানোর মধ্য দিয়ে। আমরা বলি চাঁচর বা মেড়াপোড়া। ওড়িশায় একই বলে মেন্টপোড়াই। হোলিকা দগ্ধ হওয়ার পরের দিন পালিত হয় হোলি।
২।।  শৈব মতানুসারে এদিনে ভগবান শিব মদনকে দগ্ধ করেন তাই এই দিনটি কামপঞ্চমী বা বসন্তপঞ্চমী হিসাবে পালন করা হয়।মহাদেবের ধ্যানভঙ্গ করতে মদন পুষ্পধনুতে শরসন্ধান করে দেবাদিদেবকে বিদ্ধ করলেন। মহাদেবের ধ্যানভঙ্গ হল বটে কিন্তু রুষ্ট শঙ্করের তৃতীয় নয়নের আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেলেন মদনদেব। মদনের স্ত্রী রতি শিবের পায়ের উপর পড়ে স্বামীর প্রাণভিক্ষা চাইলেন। তাতে মহাদেবের হৃদয় একটু নরম হল। দেহ আর ফিরে পেলেন না মদন। তিনি রয়ে গেলেন অনঙ্গ হয়ে। এটিকে স্মরণ করেই দক্ষিণ ভারতে হোলির সময় ‘কামদহনম’ বা ‘কামাহন’ উৎসব পালিত হয়।
৩।।   দ্বাপরযুগে বসন্তপূর্ণিমার এই দিনে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ কেশি নামক অসুরকে ( মতান্তরে অরিষ্টাসুরকে  ) বধ করেন। অত্যাচারী এই অসুরকে বধ করার পর সকলে আনন্দে রঙের উৎসব পালন করে।
৪।।  বৈষ্ণবমত অনুসারে  ফাল্গুনীপূর্ণিমার দিন বৃন্দাবনে শ্রীকৃষ্ণ  রাধিকা ও অন্যান্য গোপীগণের সাথে আবির বা গুলাল নিয়ে রং খেলায় মেতেছিলেন। সেই ঘটনা থেকেই দোল খেলার উৎপত্তি হয়।
৫।।  স্কন্দপুরাণের একটি অধ্যায়ে দোলযাত্রার কথা বলা হয়েছে। যুধিষ্ঠির দোলযাত্রার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শ্রীকৃষ্ণ তাঁকে বলেন, সত্যযুগে রঘু নামে এক ধার্মিক ও গুণবান রাজা ছিলেন। তাঁর রাজ্যে দুর্ভিক্ষ, ব্যাধি, মহামারী বা অকালমৃত্যু বলে কিছু ছিল না। কিন্তু একবার ঢুনঢা নামে এক রাক্ষসীর প্রভাবে রাজ্যে নানা অমঙ্গল সূচিত হয়। নানা রোগে ভুগে ভুগে মানুষের মৃত্যু হতে থাকে। প্রজারা বিপদ দেখে রাজার শরণাপন্ন হলেন। রাজা সব কথা শুনে ডেকে পাঠালেন প্রধান পুরোহিতকে। পুরোহিত এসে গণনা করে রাজাকে বললেন, পুরাকালে মালিনীর কন্যা ঢুনঢা কঠোর তপস্যা করে শিবকে তুষ্ট করেন। শিব তাঁকে বর প্রার্থনা করতে বললে ঢুনঢা অমরত্ব বর প্রার্থনা করে। শিব তাঁকে বরদান করে বলেন, স্বর্গ, মর্ত্য, পাতালে তাঁকে কেউ বধ করতে পারবে না। শুধু ঋতু পরিবর্তনের সময় উন্মাদগ্রস্ত ব্যক্তি বা বালকগণের কাছ থেকে তাঁকে দূরে থাকতে হবে। পুরোহিতের কাছ থেকে মৃত্যুর পন্থা জানতে পেরে রাজ্যের বালকরা সবাই একত্রিত হয়ে শুকনো কাঠ জ্বালিয়ে রাক্ষসী ঢুনঢাকে পুড়িয়ে মারে। হোলিকা, পুতনা, ঢুনঢা এরা সবাই অশুভের প্রতীক। একদিকে যেমন শীতের অবসানে বসন্তের আগমন হয়। তেমনই ফেলে আসা শীতের ঝরাপাতা, শুকনো আবর্জনাকে পুড়িয়ে ফেলে নতুন রংয়ে নিজেদের মনকে রাঙিয়ে তোলার উৎসব দোল।
৬।।  শুধু হোলিকা নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে পুতনা রাক্ষসীর কাহিনিও। কৃষ্ণকে হত্যা করার জন্য পুতনা রাক্ষসীকে পাঠিয়েছিল রাজা কংস। পুতনার বুকের বিষদুধ পান করে যাতে মৃত্যু হয় কৃষ্ণের। কিন্তু কৃষ্ণের মরণ কামড়ে মৃত্যু হল পুতনার। এরপর গোপবালকেরা সেই রাক্ষসীর প্রতিকৃতি আগুনে পুড়িয়ে উৎসব পালন করে। এখানেও তো আমরা দেখি সেই দুষ্টের দমনের স্মরক।

৭।।    এই দোলপূর্ণিমা তিথিতেই চৈতন্য মহাপ্রভুর জন্মনিয়েছিলেন বলে একে গৌরপূর্ণিমা বলা হয়।শ্রীচৈতন্য বৃন্দাবনের হোরিখেলার অনুকরণে বাংলাতেও দোলযাত্রার সূচনা করেছিলেন। তিনি ভগবান শ্রীকৃষ্ণের চরণে আবির ও রং দেওয়ার মাধ্যমে নিজের মনের শুভ রংটি দেবতার কাছে সমর্পণ করার তত্ত্বকে তুলে ধরেন । সেই রংই মনের শুদ্ধ ভক্তির প্রতীক হয়ে যায়।
৮।।  শিখ গুরু গোবিন্দ সিং তিনদিনের হোলা মহল্লা পালন শুরু করেন।
৯।। রাজা রণজিৎ সিং রাধাকৃষ্ণের পটচিত্র সামনে রেখে হোলি পালন করতেন।
১০।। এই উৎসবে ফাগুনের রঙিন আনন্দের ঘোর লাগে মানুষের দেহে ও মনে।
ধর্ম ও পুরাণের জীবন থেকে রংয়ের উৎসব নেমে এল ইতিহাসের সরণি বেয়ে আমাদের আজকের জীবনে। ইতিহাসের পাতাতেও হোলিখেলার বহু কাহিনি পাই। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিখ্যাত কবিতা ‘হোরিখেলা’র উল্লেখ করা যেতে পারে। পাঠান বীর কেসর খাঁকে হোরি খেলতে আমন্ত্রণ জানালেন ভুনাগ রানি। দোলকে কেন্দ্র করে সে এক রাজনৈতিক লড়াই। প্রতিশোধের রংয়ে রাঙা হল মাটি।
ইতিহাসে প্রথম হোলির উল্লেখ পাই আমরা বাণভট্টের রত্নাবলী নাটকে। সপ্তম শতকে হর্ষবর্ধনের সময় লেখা এই নাটকে হোলি উৎসবের বর্ণনা পাওয়া যায়। একাদশ শতাব্দীতে পর্যটক আলবেরুণী এসেছিলেন ভারত ভ্রমণে। তাঁর লেখায় হোলির বর্ণনা পাওয়া যায়। ‘আইনি আকবরী’তে বলা হয়েছে তখন কেবল শূদ্ররাই হোলি খেলত। অবশ্য সেই অর্থে সম্প্রদায়গত বিভেদ বলে একসময় কিছু ছিল না। তখন সব উৎসবে এদেশে সবাই মিলেমিশে একাত্ম হয়ে যেতেন। তখন মুসলমানরাও রং-আবির খেলায় যোগ দিতেন। সেই রং পৌঁছে গিয়েছিল রাজদরবারেও। আবির-গুলাল উড়ত প্রাসাদের বাগানে, অলিন্দে। দোল নিয়ে লেখা হতো কবিতা আর বসত গানের আসর। মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলম তাঁর দরবারে হোলি খেলতেন। ফাগের সঙ্গে ছড়ানো হত গোলাপ জল। হোলি নিয়ে নিজেও বেশ কয়েকটি দিওয়ান বা কবিতা ও গান লিখেছিলেন। সেই গান তিনি দরবারে বসে শুনতেন। হোলির দিন বসত কাওয়ালির আসর। আর প্রাসাদের ভিতরে তাঁর বালক পুত্র সুলেমান শুকোহ কৃষ্ণ সেজে অন্যদের সঙ্গে হোলি খেলত। সেই সময়কার লেখা বইতে তার উল্লেখ পাওয়া যায়। বিভিন্ন বইতে পাওয়া যায় আওধের রাজাদের হোলি খেলারও প্রসঙ্গ। আওধের রাজদরবারে হোলি খেলা নিয়ে লিখে গিয়েছেন উর্দু কবি মির তাকি মির। হোলি খেলার সময় রাধাকৃষ্ণ সাজিয়ে শোভাযাত্রা বের করা হতো। এছাড়া বাংলার নবাব সিরাজদ্দৌল্লা আবির খেলতে ভালোবাসতেন বলে শোনা যায়।
শান্তিনিকেতনে দোলযাত্রা :-
শান্তিনিকেতনে প্রভাতফেরীর মাধ্যমে দোলউৎসব আরম্ভ হয়। 'ওরে গৃহবাসী খোল দ্বার খোল লাগলো যে দোল..' গানের মাধ্যমে প্রভাতফেরী হয়। একে  বসন্তোৎসবও বলা হয়। রবিন্দ্রসঙ্গীত ও রবিন্দ্রনৃত্যের মাধ্যমে দোলউৎসব পালনের রীতি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সময়কাল থেকেই চলে আসছে। রবি ঠাকুর ১৯২৫ সালে এই উৎসবের উদ্বোধন করেন।  এখনো সেই ধারা অব্যাহত রয়েছে।
রীতিনীতি :-
দোলের পূর্বদিন খড়, কাঠ, বাঁশ ইত্যাদি জ্বালিয়ে এক বিশেষ বহ্ন্যুৎসবের আয়োজন করা হয়।শুকনো গাছের ডাল, কাঠ ইত্যাদি দাহ্যবস্তু অনেক আগে থেকে সংগ্রহ করে সু-উচ্চ একতা স্তুপ করে তাতে অগ্নি সংযোগ করে ‘হোলিকা দহন’ হয় ।
দোলযাত্রার দিন সকালে তাই ভগবান শ্রীরাম ও সীতা বা রাধা ও কৃষ্ণের বিগ্রহ আবির ও গুলালে রাঙিয়ে   কীর্তনগান সহকারে শোভাযাত্রায় বের করা হয়। এরপর ভক্তেরা আবির ও গুলাল নিয়ে পরস্পর রং খেলেন।
ভারতের বেশিরভাগ অঞ্চলে সিদ্ধি ও ভাঙের সরবত বা লাড্ডু খেয়ে লোকেরা হোলিতে মাতে।
ভারতীয় উপমহাদেশ ছাড়াও আমেরিকা, রাশিয়া, ফিজি, কানাডা, মরিশাস, ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা প্রভৃতি দেশে ইস্কন প্রভৃতি হিন্দু সংগঠনের উদ্যোগে বিপুল সংখ্যক মানুষ হোলি পালন করেন।