রবিবার, ২৮ অক্টোবর, ২০১৮

হিন্দু পঞ্চাঙ্গ কি ও কেন?

        হিন্দু পঞ্চাঙ্গ
             
               
পঞ্চাঙ্গ কথার অর্থ হল 'পঞ্চ-অঙ্গ'  অর্থাৎ পাঁচটি অঙ্গের সমাহার। এই পাঁচটি অঙ্গ হল   :- নক্ষত্র, তিথি, বার, যোগ ও করণ।
নক্ষত্র :-
               নক্ষত্র হল কোন বিশেষ মুহূর্তে চন্দ্র যে নক্ষত্রে থাকে ।  আবার জন্ম সময়ে চন্দ্র যে নক্ষত্রে থাকে তাকে জন্মনক্ষত্র বলে। নক্ষত্র 27 টি। আর অভিজিৎ কে ধরলে নক্ষত্র 28 টি।
এরা হল :- ১) অশ্বিনী, ২) ভরণী, ৩) কৃত্তিকা, ৪) রোহিণী, ৫) মৃগশিরা, ৬) আর্দ্রা, ৭) পুনর্বসু, ৮) পুষ্যা, ৯) অশ্লেষা, ১০) মঘা, ১১) পূর্ব-ফাল্গুনী, ১২) উত্তর-ফাল্গুনী, ১৩) হস্তা, ১৪) চিত্রা, ১৫) স্বাতী, ১৬) বিশাখা, ১৭) অনুরাধা, ১৮) জ্যেষ্ঠা, ১৯) মূলা, ২০) পূর্বাষাঢ়া, ২১) উত্তরাষাঢ়া, ২২) শ্রবণা, ২৩) ধনিষ্ঠা, ২৪) শতভিষা, ২৫) পূর্ব-ভাদ্রপদ, ২৬) উত্তর-ভাদ্রপদ ও ২৭) রেবতী।
নক্ষত্র বের করার পদ্ধতি :- প্রথমে জন্মসময়ে চন্দ্রের অবস্থান বের করে তার ভোগাংশ লিখে রাখতে হবে। ধরা যাক ঐসময় চন্দ্র নবম রাশিতে আছে ও তার ভোগাংশ  6o 5' । এখন একে মিনিটে পরিবর্তন করে পাই  16,565"। এবার একে 800 দিয়ে ভাগ করে পাই   20.70625 । এর মানে দাঁড়ায় কুড়িটি নক্ষত্র পেরিয়ে একুশতম নক্ষত্র চলছে। এখন একুশতম নক্ষত্র হল উত্তর-আষাঢ়া। দশমিকের আগের সংখ্যা হল পেরিয়ে যাওয়া নক্ষত্র। এইভাবে নক্ষত্র নির্ণয় করতে হবে।
বার
                            এক সূর্য্যোদয় হতে পরবর্তী সূর্য্যোদয় পর্যন্ত সময়কালকে বার বলা হয়। বার মোট সাতটি। বারগুলি হল :- রবিবার, সোমবার, মঙ্গলবার, বুধবার, বৃহস্পতিবার, শুক্রবার, শনিবার।
তিথি
                                            তিথি হলো সূর্য্য ও চন্দ্রের মধ্যের কৌণিক দশা। মোটামুটি 12o  নিয়ে একটি তিথি হয়। চন্দ্র ও পৃথিবীর গতির কারণে চন্দ্রের কলা যত বৃদ্ধি পায় তত তা সূর্য্য হতে দূরে সরে যায়। যখন সূর্য্য হতে চন্দ্র দূরে সরে যায় তখন চন্দ্রের কলা বৃদ্ধি পায়, একে শুক্লপক্ষ বলে।  আর চন্দ্র যত সূর্যের কাছে আসে তত চন্দ্রের কলা হ্রাস পায়, একে কৃষ্ণপক্ষ বলে। তিথি বের করার নিয়মটি হল :-
তিথি = ( চন্দ্রের ভোগাংশ - সূর্যের ভোগাংশ )/12
                                   এখন উপরের ফর্মুলায় যেটা দরকার সেটা হল তিথির চন্দ্র ও সূর্যের ভোগাংশ। চন্দ্র ও সূর্যের ভোগাংশ কিভাবে নির্ণয় করব তা আলোচনা করছি।  উপরের ফর্মুলায় প্রাপ্ত সংখ্যাটি তিথি। যদি তিথি 1—15 হয় তবে কৃষ্ণপক্ষ আর 16 এর বেশি হলে শুক্লপক্ষ। মনে করা যাক আমরা পেলাম 17, এর অর্থ এটি শুক্লপক্ষের দ্বাদশী । জ্ঞাতার্থে জানাই উত্তরভারতে কৃষ্ণপক্ষ হতে মাসের শুরু হয়।
যোগ
                        যোগ গণনা করা হয় চন্দ্র ও সূর্যের অবস্থান গণনা করে।
এরা হল :-  ১) বিকুম্ভ, ২) প্রীতি, ৩) আয়ুষ্মান, ৪) সৌভাগ্য, ৫) শোভন, ৬) অতিগ-, ৭) সুকর্মা, ৮) ধৃতি, ৯) শূল, ১০) গ-, ১১) বৃদ্ধি, ১২) ধ্রুব, ১৩) ব্যাঘাত, ১৪) হর্ষণ, ১৫) বজ্র, ১৬) অসৃক, ১৭) ব্যতীপাত, ১৮) বরীয়ান্, ১৯) পরিঘ, ২০) শিব, ২১) সাধ্য, ২২) সিদ্ধ, ২৩) শুভ, ২৪) শুক্র, ২৫) ব্রহ্ম, ২৬) ইন্দ্র ও ২৭) বৈধৃতি।
যোগ 27 রকমের। তিথি বের করার নিয়মটি হল :-
যোগ = ( চন্দ্রের ভোগাংশ +সূর্যের ভোগাংশ )/13o20'
        = ( চন্দ্রের ভোগাংশ +সূর্যের ভোগাংশ )/800
(এই 13o20' কে মিনিটে করলে 800 মিনিট হয়।)
করণ
                                                              করণ হল তিথির অর্ধেক। অর্থাৎ একটা তিথিতে দুটো করণ।মাসে মোট করণ 11 টি।  এগুলি হল :-
বব, বালব, কৌলব,তৌতিল, গর, বণিজ, বিষ্টি, শকুণি, চতুষ্পাদ, নাগ এবং কিস্তুঘ্ন। 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন