চারধাম
প্রত্যেক হিন্দুর মনেই সুপ্ত বাসনা থাকে তীর্থ ভ্রমণের আর সেই তীর্থগুলির মধ্যে অন্যতম হল 'চারধাম' ভ্রমন।
পুরাণ মতে চারধাম যাত্রায় মুছে যায় সব পাপ | আর এই চারধাম যাত্রার কথা বলেন আদি শঙ্করাচার্য্য। এই চারধাম ছড়িয়ে আছে ভারতবর্ষের চার প্রান্তে | উত্তরে বদ্রীনাথ‚ দক্ষিণে রামেশ্বরম‚ পূর্বে পুরী এবং পশ্চিমে দ্বারকা |
বিংশ শতাব্দী থেকে চারধাম আবার পাল্টে যায় | নতুন চারধাম হয় গঙ্গোত্রী‚ যমুনোত্রী‚ কেদারনাথ এবং বদ্রীনাথ | অবশ্য আদি শঙ্করাচার্য চিহ্নিত চার ধাম কিন্তু প্রথম চারটি | চার যুগে সৃষ্টি হয়েছিল এই চার পুণ্যতীর্থ | একটি শৈব এবং তিনটি বৈষ্ণব তীর্থক্ষেত্র।
বদ্রীনাথ :- কথিত‚ সত্যযুগে এখানে তপস্যা করেছিলেন বিষ্ণুর অবতার নরনারায়ণ | তখন এ জায়গা ভরা ছিল বদরী ফলের গাছে | সংস্কৃত ভাষায় বদরী কথার অর্থ কুল জাতীয় ফল | সেই থেকে এর নাম হল বদ্রিকা বন | বদ্রিকা বনের যিনি নাথ বা রক্ষাকর্তা‚ তিনি বদ্রীনাথ | গাড়োয়াল হিমালয়ের বৈষ্ণব তীর্থক্ষেত্র বদ্রীনাথ হল প্রথম চারধাম |
রামেশ্বরম :- চার ধামের মধ্যে একমাত্র শৈব তীর্থ‚ সৃষ্টি হয়েছিল ত্রেতা যুগে | রামায়ণে বর্ণিত‚ মান্নার উপসাগরের মুখে‚ ভারতীয় উপমাহাদেশের ঠিক প্রান্তভাগে এখান থেকেই শুরু হয়েছিল রামসেতু নির্মাণের কাজ | এই তীর্থক্ষেত্রের সঙ্গে জড়িয়ে আছে বিষ্ণুর এক অবতার রামচন্দ্রের নাম | তবে এটি শৈব তীর্থ | কারণ রামচন্দ্রের অবতারে নারায়ণ স্বয়ং আরাধনা করেছিলেন মহাদেবের | বলা হয়‚ দ্বাদশ জ্যোতির্লিঙ্গের অন্যতম এই তীর্থে নাকি ব্রহ্মা বিষ্ণু মহেশ্বর একসঙ্গে অবস্থান করেন |
দ্বারকা:- দ্বাপরযুগে সৃষ্ট এই ধাম হল ভগবান শ্রীকৃষ্ণের রাজধানী। জরাসন্ধের আক্রমণ হতে রক্ষা পেতে শ্রীকৃষ্ণ মথুরা ত্যাগ করে দ্বারকায় রাজধানী স্থাপন করেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন