শুক্রবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

করম ও জাওয়া পরব

                                      করম
                                   করম পূজা হল ভূঁইয়্যা, মাহাতো, হো, মহুলি, করবা, মুন্ডা প্রভৃতি উপজাতির এক অন্যতম পর্ব।  ভাদ্র মাসের পার্শ্ব একাদশীতে ‘করম’ দেবতার পূজা পালিত হয়। এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। সমগ্র জঙ্গলমহল,মানভূম, ছোটনাগপুর এবং উড়িষ্যারও কোন কোন অঞ্চলে অর্থাৎ আদিবাসী অধ্যুষিত অঞ্চলেই এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয় ।  করম(কদম) গাছের ডাল, যা কিনা করম দেবতার প্রতীক, তাকেই পুজো করা হয়ে থাকে।  আদিবাসী যুবকেরা জঙ্গলে গিয়ে ফুল ও ফল সংগ্রহ করে। করম রাজা’ কে মাটিতে পুঁতে জল দিয়ে , বাতি জ্বালিয়ে, দুধ- ঘি দিয়ে পুজো করা হয়। পরের দিন করম ঠাকুরকে ফুল দিয়ে পুজো করে চাল এবং দই প্রসাদ হিসেবে দেওয়া হয়। প্রসাদ দেওয়ার নির্দিষ্ট নিয়মটি হল লাল ঝুড়িতে গম রেখে শসা ও হলুদ দেওয়া হয়। পুজোতে যারা উপোস করে থাকে পুজো শেষে তারা এগুলো খায়। আবার অনেকসময় একটি করম গাছকে ঘিরেও চলে পূজার প্রস্তুতি, নৃত্য-গীত। আদিবাসীদের জীবনের  সমস্ত কিছুকে ঘিরেই আছে নৃত্য ও গীত। তাই স্বাভাবিক ভাবেই করম পূজাও পালন করা হয় নৃত্য ও সঙ্গীতের মাধ্যমে।
করম পূজার সঙ্গেই জড়িয়ে আছে আরো একটি আদিবাসী পরব ‘জাওয়া’।   একই সময়ে অনুষ্ঠিত হয় এই পরবটিও। এটি একেবারেই প্রজজন দেবীর পূজা। পালন করেন অবিবাহিতা মহিলারা বা কুমারী মেয়েরা।  তবে, কোন কোন স্থানে বিবাহিতা মহিলারাও সেখানে উপস্থিত হয়ে নির্দেশ দিয়ে থাকেন, যদিও পুজোর  অধিকারী কুমারী মেয়েরাই। জাওয়া পরবের কয়েকদিন আগে থেকে একটি বেতের টুকরি বা চুবড়ীতে বালি ভরে তার মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া হয় শস্যের বীজ। নির্দিষ্ট সময়ে এবং পরিমাণে ওই বালিতে জল সিঞ্চন করা হয়। কয়েকদিনের মধ্যেই চুবড়িটি ভরে ওঠে শস্য অঙ্কুরে। যার চুবড়ি যত বেশি শস্য অঙ্কুরে ভর্তি হয়, তার উর্বরতা তত বেশি মনে করা হয়। আদিমকালে যখন পৃথিবীতে মানুষ কম ছিল, তখন মানুষের দেবতার কাছে একটাই প্রার্থনা ছিল—সন্তানসন্ততির জন্ম হোক, শূন্য পৃথিবী পূর্ণ হোক। আদিমকাল থেকে চলে আসা এই প্রার্থনা আজও ততটাই মূল্যবান আদিবাসীদের কাছে, পিতামাতার কাছে। এই উৎসবটি তাই উর্বরতার দেবী বা প্রজনন দেবীর পূজা ।এরপর প্রতি সন্ধ্যায় কুমারী মেয়েরা সবাই মিলে ডালাটির চারপাশে ধরে গান গাইতে গাইতে উঠোনে নিয়ে গিয়ে পরস্পর হাত ধরাধরি করে নৃত্য পরিবেশন করে থাকে
ঈদ করম ল’জকাল্য ভাই আল্য লিতে ল
আস্য ভাই বস্য পিড়ায় বেউনী দলাই দিব।
                                 বিভিন্ন সূত্র হতে জানা যায় করম ঠাকুর সিং  ছিলেন মেবারের কাছে এক প্রদেশের রাজা। পার্শ্ববর্তী  শিরোহির রাজা  করম ঠাকুর কে বাংলাদেশ জয়ে সাহায্যের জন্য যুদ্ধে আমন্ত্রণ করেন। করম ঠাকুর সেই আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে সৈন্য-সামন্ত সহকারে যোগ দেন যুদ্ধে। কিন্তু জঙ্গলমহলের এই ঘন জঙ্গলে তাঁরা পথ হারান। কিছুতেই সেই বন জঙ্গলের দেশ থেকে আর ফিরে যেতে পারেন না। অনাহারে, অভাবে, কাতরতায় দিন কাটতে থাকে। বহুদিন পর বেঁচে থাকার জন্য তাঁরা চাষবাসের কাজ শুরু করেন। এর পর  সেইসব  রাজা, সৈন্য-সামন্তদের বংশধরেরা চাষী রূপেই জঙ্গলমহলে অবস্থান করতে থাকেন।  করম পূজার কিছু কিছু গানে  তাই মিশে আছে ধার, ইন্দোর, শিরোহি স্থানের নাম। ছৌ আর ঝুমুরের তালে তালে চলে নাচ-গান। আজ সেই রাজা করম সিং এর কাহিনিটি ধীরে ধীরে আদিবাসীদের উৎসব হিসাবেই মান্যতা পেয়েছে।
 এই পূজার পিছনের কাহিনীটি জেনে নেওয়া যাক :-
এক গ্রামে ছিল সাত ভাই। সাত ভাইয়ের সাত বৌ। তারা ছিল চাষী, চাষবাস করে  তাদের দিন কাটত।  সাতভাই ক্ষেতে কাজ করতে এলে তাদের বৌরা দুপুরে মাথায় করে বয়ে নিয়ে আসত দুপুরের খাবার। সাতভাইয়ের খাওয়া হয়ে গেলে তারা আবার ফিরে যেত নিজেদের বাড়িতে।  এমনি একদিন সাত ভাইয়ের বৌ দুপুরবেলায়  দেখা দিলনিয়ে এসেছে খাবার। কিন্তু সাত ভাই তা না খেয়ে নিজের কাজে ব্যস্ত হয়ে রইল। সময় যায়, সাতভাইয়ের আর খাবার সময় হয় না। সাত বৌ শেষে সেই খাবার মাথায় করে ফিরিয়ে নিয়ে গেল।  পরের দিন দুপুরে খাবার আর আসে না। দুপুর গেল, বিকেল হল, সন্ধ্যার সময় সাত ভাই ঘরে ফিরে এল। খিদে, তেষ্টায় তারা তখন কাতর। বাড়িতে এসে দ্যাখে, সেই সাত ভাইয়ের সাত বৌ বাড়ির উঠোনে এক করম গাছের নিচে নৃত্য-গীতে ব্যস্ত হয়ে আছে। তাদের আনন্দ দেখে সাত ভাই রাগে দুঃখে ভেঙ্গে ফেলল গাছ, তিরস্কার করল সাত বৌকে। তারপর থেকেই তাদের আর মনে আনন্দ নেই, ঘরে ভাত কাপড়ের অভাব দেখা দিল।, শেষে তাদের পারিবারিক অবস্থার হল অবনতি। তারা গরীব হয়ে গেল।অনেক দুঃখে এর প্রতিকার খুঁজতে লাগল সাত ভাই। এক ব্রাহ্মণ উপায় বললেন, করম পূজার। করম দেবতা শক্তি, যৌবন ও সমৃদ্ধির প্রতীক। তাঁর পূজা করলে সাত ভাই আবার তাদের কর্মক্ষমতা ফিরে পাবে,আবার চাষের জমিতে ফসল ফলবে, আবার সংসারে আগের অবস্থা ফিরে আসবে। কিন্তু রাজি হল না সাত ভাই।অনেক দুঃখ কষ্টের পর শেষে আর থাকতে না পেরে আয়োজন করল করম পূজার। কিন্তু করম গাছ তো তারা ভেঙ্গে ফেলেছে। ব্রাহ্মণ আবার উপায় বললেন। যে কোন জায়গা থেকে ভেঙ্গে নিয়ে আসতে হবে করম গাছের ডাল, বন থেকে সংগ্রহ করতে হবে ফুল, ফল। আর তাই দিয়ে পুজো দিতে হবে করম দেবতার। সাতভাই আর সাত বৌ মিলে পুজো দিল। ধীরে ধীরে আবার আগের অবস্থা তারা ফিরে পেল।
গোটা উত্সবের সময় জুড়ে ধামসা, মাদলের সঙ্গে নাচ গান আর আকণ্ঠ হাড়িয়া পান চলে।

সোমবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

বিশ্বকর্মা




দেবশিল্পী বিশ্বকর্মা হলেন যন্ত্র ও শিল্পের দেবতা। পুরাণ মতে বিশ্বকর্মা  হলেন  বিশ্বের সকল কর্মের সম্পাদক।  বিশ্বকর্মা চতুর্ভুজ ও গজারূঢ়।বিষ্ণুপুরাণের মতে প্রভাসের ঔরসে বৃহস্পতির ভগিনীর গর্ভে বিশ্বকর্মার জন্ম হয়।  ইনি সর্বমেধ-যজ্ঞে নিজেকে নিজের কাছে বলি দেন। 

শুক্ল যজুর্বেদের অধ্যায় ১ মন্ত্র ৪ এ বলা হয়েছে - 

সা বিশ্বায়ুঃ, সা বিশ্বকর্মা, সা বিশ্বধায়াঃ।
ইন্দস্য ত্বা ভাগং সোমেনা-তনচ্মি।
বিষ্ণো হব্যং রক্ষ।

অর্থাৎ তিনি বিশ্যবায়ু অর্থাৎ জগতের প্রাণ বা সামান্যার্থে দীর্ঘায়ু, তিনি শিল্পবিদ্যার জনক এবং  সমগ্র ক্রিয়াকাণ্ড সম্পাদক, সর্ববিদ্যার প্রকাশক ও বিশ্বধারক।

ইনি একাধারে বিষ্ণু ও ইন্দ্রের সাথে সম্পৃক্ত।


                            তিনি শিল্পসমূহের প্রকাশক, অলঙ্কার শিল্পের স্রষ্টা, দেবতাদের গমনাগমনের জন্য বিমান নির্মাতা ইত্যাদি। অর্থাৎ শিল্পবিদ্যায় তাঁর একচ্ছত্র অধিকার। তাই যাঁরা শিল্পকর্মে পারদর্শিতা লাভ করতে চান, তাঁরা বিশ্বকর্মার অনুগ্রহ কামনা করেন। এঁর চক্ষু, মুখমণ্ডল, বাহু  ও পা সর্বদিক বিদ্যমান। বাহু ও পায়ের সাহায্যে তিনি স্বর্গ ও মর্ত্য নির্মাণ করেন। তিনি শিল্পসমূহের প্রকাশক ও অলঙ্কারের স্রষ্টা, দেবতাদের বিমান-নির্মাতা। এঁর কৃপায় মানুষ শিল্পপকলায় পারদর্শিতা লাভ করে। 
                                  রাবণের অপূর্ব শোভা ও সম্পদবিশিষ্ট লঙ্কা নগরীর নির্মান করেক স্বয়ং  বিশ্বকর্মা । তিনি উপবেদ, স্থাপত্যবেদ ও চতুঃষষ্টিকলারও প্রকাশক। দেবশিল্পিরূপে তিনি দেবপুরী, দেবাস্ত্র ইত্যাদিরও নির্মাতা।তিনি ইন্দ্র ,  যম ও বরুণের রাজসভারা নির্মাণ করেন।জনশ্রুতি আছে যে, পুরীর প্রসিদ্ধ জগন্নাথমূর্তিও বিশ্বকর্মা নির্মাণ করেন।

বিশ্বকর্মা রামের সেতু বন্ধনের জন্য নলকে সৃষ্টি করেন। পুরাণ অনুসারে তিনি ত্বষ্টার শক্তি আত্মীভূত করেন বলে তাকে ত্বষ্টা ও বলা হয়। বিশ্বকর্মার কন্যার নাম সংজ্ঞা । তিনি এই কন্যাকে সুর্যের সাথে বিবাহ দেন। সংজ্ঞা সুর্যের প্রখর তাপ সহ্য করতে না পারায়, ইনি সুর্যকে শানচক্রে স্থাপন করে তাঁর উজ্জ্বলতার এক অষ্টমাংশ কেটে ফেলেন। এই কর্তিত অংশের  দ্বারা তিনি  বিষ্ণুর সুদর্শনচক্র, শিবের ত্রিশূল, কুবেরের  অস্ত্র, কার্তিকেয়ের শক্তি ও অন্যান্য দেবতাদের অস্ত্রশস্ত্রাদি নির্মাণ করেন।
    বিশ্বকর্মার প্রনাম মন্ত্র :-
                  দংশপালঃ মহাবীরঃ সুচিত্রঃ কর্মকারকঃ।                        বিশ্বকৃৎ বিশ্বধৃকতঞ্চ বাসনামানো দণ্ডধৃক।।
                  ওঁ বিশ্বকর্মণে নমঃ।
                      
                       হভাদ্রমাসের সংক্রান্তিতে কলকারখানায় বেশ আড়ম্বরের সঙ্গে বিশ্বকর্মার পূজা অনুষ্ঠিত হয়।এইদিনে সমস্ত যানবাহন ও যন্ত্রাদি বিশ্বকর্মা রুপে পুজিত হয়। দুপুরে মাংস-ভাত খেয়ে বিকালে ঘুড়ি ওড়ায় আপামর বাঙালি। 

  প্রনাম মন্ত্র 
                    দেবশিল্পী মহাভাগ দেবানাং কার্য্যসাধক।  
                     বিশ্বকর্মা নমস্তুভ্যং  সর্বাভীষ্টপ্রদায়ক।।

বিশ্বকর্মার পুষ্পাঞ্জলি মন্ত্র —

ফুলচন্দন দূর্বা তুলসী পাতা বেলপাতা হাতে করে নিয়ে করজোরে নিচের মন্ত্রগুলি পাঠ করবেন।

দেবশিল্পীন্ মহাভাগ দেবানাং কার্যসাধকঃ। পূজাং গৃহাণ বিধিবৎ কল্যাণং কুরু মে সদা৷৷

প্রনাম করে বিশ্বকর্মার চরণে বা ঘটে বিশ্বকর্মার পুষ্পাঞ্জলি দিবেন, তারপর আবার ফুলচন্দন দূর্বা তুলসী পাতা বেলপাতা হাতে করে নিয়ে হাতজোড় করে দ্বিতীয় মন্ত্রটি পাঠ করবেন।

আয়ুৰ্যশঃ বলং দেহি শিল্পে দেহি শুভাং মতি। ধনং দেহি যশো দেহি বিশ্বকৰ্ম্মণ প্রসীদ মে৷৷

আবার প্রনাম করে বিশ্বকর্মার চরণে বা ঘটে পুষ্পাঞ্জলি দিবেন, তারপর আবার ফুলচন্দন দূর্বা তুলসী পাতা বেলপাতা হাতে করে নিয়ে হাতজোড় করে তৃতীয় মন্ত্রটি পাঠ করবেন।

শিল্পাচার্য্যং নমস্তুভ্যং নানালঙ্কার ভূষিতম্। মম বিঘ্নবিনাশায় কল্যাণং কুরু মে সদা ৷৷

এইভাবে বিশ্বকর্মার চরণে বা ঘটে তিনবার পুষ্পাঞ্জলি অর্পণ করবেন এবং তারপর ভগবান বিশ্বকর্মার প্রনাম মন্ত্র পাঠ পূর্বক প্রণাম করবেন।


বিশ্বকর্মার ব্রতকথা :-
কাশী শহরে একজন সুত ছিলেন। তিনি রথের সাহায্যে মানুষকে এক জায়গা হতে অন্য জায়গায় নিয়ে যেতেন। ফলে তাকে এক দেশ হতে অন্য দেশের ভ্রমন করতে হতো। সংসার চালিনোর জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হতো তাকে। কিন্তু এই কঠোর পরিশ্রম করা সত্ত্বেও তাঁর এবং পরিবারে দারিদ্রতা যেন কাটতেই চাইত না। মাসের পর মাস পরিশ্রম করেও দিনের আহার ছাড়া অতিরিক্ত ধন সম্পত্তি সঞ্চয় হত না।

অন্যদিকে তার ঘর ছিল শূন্য। এত বছরের বৈবাহিক জীবনে সন্তানসুখ প্রাপ্তি ঘটেনথা তাদের। ফলে তার ও তার স্ত্রীর মনে সুখ ছিল না মোটেও। আর এই সন্তান প্রাপ্তির আশাতে দুজনে বিভিন্ন তীর্থস্থানে তীর্থস্থানে গিয়ে মানত উপবাস করতেন। কিন্তু তাতেও কোনও লাভ হয়নি। 

একদিন এভাবেই এক তীর্থে এক সাধুর সাথে দেখা হয়। সেই সাধু তাদের ভাদ্রমাসের সংক্রান্তি পালন করার কথা বলেন। বলেন সেদিনে দেবশিল্পী বিশ্বকর্মার পূজো করার কথা। তিনি বলেন, এর মাধ্যমে সন্তান প্রাপ্তির সঙ্গে সঙ্গে আর্থিক সমস্যাও দূরীভূত হবে। বাবা বিশ্বকর্মার কৃপায় সন্তান প্রাপ্তি তো হবেই সাথে ধন সম্পদ ও শ্রী বৃদ্ধি পাবে। 

এরপর সেই সুত স্বামী স্ত্রী দুজনায় মিলিতভাবে খুব ধুমধাম সহকারে ভাদ্র সংক্রান্তের দিন বাবা বিশ্বকর্মার পূজা করলেন। অল্প দিনের মধ্যেই তাদের সংসারের সমস্ত দারিদ্রতা দূর হলো। রথ চালানোর সঙ্গে সঙ্গে নিজের একটি কারখানাও খুললেন রথচালক। এবং যথাসময়ে তাদের সংসারে একটি সুন্দর ফুটফুটে পুত্র সন্তান এল। 

এরপর থেকেই যন্ত্র যানবাহন পেশার সঙ্গে যুক্ত মানুষেরা তাদের ব্যবসা এবং কর্মস্থলে বিশ্বকর্মা দেবের কৃপাপ্রাপ্তির আশাতে নিয়মিত প্রত্যেক বছর বিশ্বকর্মা পূজার আয়োজন করেন। এইভাবে বিশ্বকর্মা পূজার প্রচলন হয়।




রবিবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

Bhadu - ভাদু

ভাদু

ভাদু গান  ( ক্লিক করুন )
           
                                                                          ভাদু  হল fertility cult বা উর্বরতার প্রতীক রুপে পালিত একটি  লোক উৎসব। বহুকাল আগে থেকেই রাঢ়বঙ্গের পুরুলিয়া, বীরভূম, বাঁকুড়া প্রভৃতি অঞ্চলে সমগ্র ভাদ্র মাস জুড়ে এ উৎসব পালিত হয়ে আসছে।
মানভূমের গড় পঞ্চকোট এর কাশীপুর রাজ্যের রাজকন্যা ভাদু বা ভদ্রেশ্বরীর  কাহিনী থেকে ভাদু উৎসবের উদ্ভব। বিবাহের রাত্রে বরের ডাকাতের হাতে মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় রাজকন্যা ভাদু আত্মহত্যা করেন। এই শোকাবহ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রাজকন্যার স্মৃতিকে অমর করে রাখার উদ্দেশ্যেই ভাদু উৎসব পালন প্রচলিত হয়।
লোককথা মতে, পুরুলিয়ার কাশিপুর অঞ্চলের পঞ্চকোট রাজপরিবারের মহারাজ নীলমণি সিং দেও।  তার কন্যা ভদ্রাবতী ভাদু। তাদের পাশের গ্রামের অঞ্জনকুমার নামে এক যুবকের সাথে গড়ে উঠল ভাদুর প্রেমের সম্পর্ক। দুজনে দুজনকে চোখে হারায়। ভদ্রাবতী গান গায় , অঞ্জনকুমার সেই গানের সুরে বাঁশি বাজায়। রাজা তার কন্যাকে উচ্চ বংশীয় কোন পাত্রের সাথে বিয়ে দিতে অঞ্জনকুমারকে বন্দী করে  করে রাখলেন । মনের দুঃখে ভাদু তার দুই সখিকে নিয়ে সারা রাজ্যে গান গেয়ে ঘুরে বেড়াতে লাগলেন। সারাদিন সারারাত গান গেয়ে খুঁজে বেড়ায় তার প্রাণাধিক অঞ্জনকুমারকে। যদি তার গান শুনে একবার সে ছুটে আসে। কিন্তু হায়! অঞ্জনকুমার আর আসে না। রাজা নিরুপায় হয়ে যখন অঞ্জনকুমারকে মুক্তি দিলেন তখন ভদ্রাবতী আর নেই। শুধু রাজ্যের মানুষের  মনে সে রয়ে গেছে ভাদু হয়ে। আর তার গান লোকমুখে হয়ে গেছে ভাদু-গান।
                                             অন্য মতে রাজা নীলমণি সিং দেও-এর তৃতীয়া কন্যা ছিলেন ভদ্রাবতী। বিয়ে করতে আসার পথে ভদ্রাবতীর হবু স্বামী ও বরযাত্রীরা ডাকাত দলের কবলে পড়ে ও নিহত হয়। লগ্নভ্রষ্টা হওয়ার ভয়ে পুকুরে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন রাজকুমারী ভদ্রাবতী।
                                                  আবার বীরভূমের প্রচলিত লোক গাথা হল ভদ্রাবতী হেতমপুরের রাজকন্যা। বর্ধমানের রাজপুত্রের সাথে তার বিয়ে ঠিক হয়। বিয়ে করতে আসার পথে ইলামবাজারের কাছে অবস্থিত চৌপারির শালবনে ডাকাতের আক্রমণে রাজপুত্রের মৃত্যু হলে ভদ্রাবতী রাজপুত্রের চিতার আগুনে প্রাণ বিসর্জন দেন।
                                                  কাহিনী যাই হোক, ভদ্রাবতীকে মানুষের মনে চিরস্মরনীয় করে রাখার জন্য রাজা নীলমণি সিং দেও তাঁর রাজ্যে ভাদু পুজা ও ভাদু-গানের প্রচলন করেন।ভাদু উৎসবে পূজারীরা ভদ্রেশ্বরীর একটি মূর্তি তৈরি করে এবং সারা মাস ধরে তার সম্মুখে নৃত্যগীত পরিবেশন করে। ভদ্রেশ্বরী কখনও কন্যা আবার কখনও জননীরূপেও পূজিত হন। পূর্বে ভাদুর কোন মূর্তি ছিল না। একটি পাত্রে ফুল বা গোবর রেখে তার উপর ধান ছড়িয়ে ভাদুর রূপ কল্পনা করা হত। পরবর্তী কালে ধীরে ধীরে মূর্তির প্রচলন ঘটে। সাধারণত ভাদু মুর্তি, হাঁস বা ময়ূর বা পদ্মের উপর উপবিষ্টা। গায়ের বর্ণ হলুদ। আবার কোথাও কোথাও হালকা গোলাপী বর্ণও হয়ে থাকে। মাথায় মুকুট, হাতে পদ্মফুল, গলায় পদ্মফুলের মালা ও হাতের তালুতে আলপনা থাকে। কখনও মূর্তির কোলে কৃষ্ণ মূর্তিও থাকে। ‘ভাদু ভাসান’ পর্ব অত্যন্ত বিষাদময়। ভাদ্র-সংক্রান্তিতে উপাসকরা মূর্তিসহ নদীর তীরে সমবেত হয়ে মূর্তি বিসর্জন দেয়।

                                                   পঞ্চকোটের  ধ্রুবেশ্বর লাল, প্রকৃতীশ্বর লাল ও রাজেন্দ্র নারায়ণ সিং দেও 'দরবারী ভাদু' নামক ঘরানার সৃষ্টিকর্তা।পেশাদার নারীশিল্পী এবং সাধারণ সঙ্গীতশিল্পী উভয়েই গান পরিবেশনে অংশগ্রহণ করে। এ উৎসবে সমগ্র এলাকাবাসী স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ করে এবং পুরো অঞ্চল জুড়ে মেলা,  লোকসংস্কৃতি বিষয়ক অনুষ্ঠানমালা ইত্যাদির আয়োজন করা হয়। এই বিবাহ-প্রধান গান ভাদু উৎসবের মূল আকর্ষণ; এর কারণ হলো কুমারী ভাদুর স্মৃতি রোমন্থন করা। তবে মানুষের মুখে মুখে ফেরা ভাদু-গান, লোকসঙ্গীত হিসাবেই বেশী জনপ্রিয়তা পেয়েছে।গৃহনারীদের দৈনন্দিন জীবনের কাহিনী এই গান গুলির প্রাধান উপজীব্য। এছাড়া চার লাইনের ছড়া বা চুটকি জাতীয় ভাদু গানগুলিতে সমাজ জীবনের বিভিন্ন অসঙ্গতীর চিত্র সরস ভঙ্গীতে প্রকাশ করা হয়।

মঙ্গলবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

নব পত্রিকা




কলা, কচু ,হলুদ ,জয়ন্তী ,মান ,বেল,ডালিম ,অশোক ,ধান - -  এই নয়টি গাছকে একত্রে বলা হয় নবপত্রিকা।  দুর্গাপূজাতে এই নবপত্রিকা  একটি অপরিহার্য্য অংশ   । 
শাস্ত্রে বলা হয়েছে 
"……… রম্ভা ,কাচ্চ, হরিদ্রা , জয়ন্তী , বিল্বদাড়িমৌ ।
অশোকা, মানকশ্বৈব, ধানাঞ্চ, নবপত্রিকা ।।"
 


অর্থাৎ কলা, কচু, হরিদ্রা, জয়ন্তী, বেল, ডালিম, অশোক, মান ও ধান এরা নবপত্রিকা । এই সকল বৃক্ষের মধ্যে মাতৃ শক্তির অবস্থান চিন্তা করা হয় ।
রম্ভাধিষ্ঠাত্রী ব্রহ্মাণী, কচ্বাধিষ্ঠাত্রী কালিকা, হরিদ্রাধিষ্ঠাত্রী উমা, জয়ন্ত্যাধিষ্ঠাত্রী কার্তিকী, বিল্বাধিষ্ঠাত্রী শিবা,
দাড়িম্বাধিষ্ঠাত্রী রক্তদন্তিকা, অশোকাধিষ্ঠাত্রী শোকরহিতা, মানাধিষ্ঠাত্রী চামুণ্ডা ও ধান্যাধিষ্ঠাত্রী লক্ষ্মী
কলার অধিষ্ঠাত্রি ব্রাহ্মনী, কচুর কালীকা, হরিদ্রার দুর্গা, জয়ন্তীর কার্ত্তিকী, বেলের শিবা, ডালিমের রক্তদন্তিকা, অশোকের দেবী শোকরহিতা (চামুন্ডা) , ধানের লক্ষ্মী ।
      এই  বৃক্ষগুলি আমাদের প্রয়োজনীয় ও  বিশেষ গুণসম্পন্ন   যা আমাদের মানব দেহের জন্যেও উপকারি। 
কলাঃ
এটি আমাদের একটি পরিচিত ফল। কলার বৈজ্ঞানিক নাম Musa Paradisiaca L. কলার ব্যাপক পুষ্টি গুণের জন্যে একে ফ্রুট অব ওয়ায়িজ বা জ্ঞানের ফল বলা হয়। কলাতে প্রায় সকল প্রকার ভিটামিন অর্থাৎ এ, বি, সি, ডি এবং ম্যাগনেশিয়াম, পটাসিয়াম, সুক্রোজ, ফ্রুকটোজ ও গ্লুকোজ ইত্যাদি অতি প্রয়োজনীয় উপাদান রয়েছে যেগুলো মানব দেহের জন্যে প্রচুর দরকারি ।
কচুঃ
কচুর বৈজ্ঞানিক নাম Colocasia Esculenta(L) Schott . কচু শাঁকে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন এ। এছাড়া রয়েছে প্রোটিন, শর্করা, স্নেহ, ভিটামিন বি-১(থায়ামিন) বি-২(রিবোফ্লাবিন) সি ক্যালসিয়াম , লৌহ ইত্যাদি গুরুত্ত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান ।
হরিদ্রাঃ
হলুদ কে সংস্কৃতে হরিদ্রা বলা হয়। এর বৈজ্ঞানিক নাম Curcuma Longa L. এটি সাধারণত মশলা এবং রূপ চর্চাতে ব্যাবহৃত হয় । হলুদে প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন, খনিজ লবণ, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম, লোহা ইত্যাদি আছে। তাছাড়া হলুদ ক্যান্সার প্রতিরোধি এবং মানব দেহে টিউমারের বৃদ্ধি রোধ করে ।
জয়ন্তীঃ
এই গাছটির সংস্কৃত নাম জয়ন্তীকা ও বিজ্ঞানসম্মত নাম Sesbania sesban ।
গাছটি জমির নাইট্রোজেন আবদ্ধিকরনে সাহায্য করে জমি উর্বর করে ।
বেলঃ
সংস্কৃতে বেলকে  শ্রীফল বলা হয়। বেলের বৈজ্ঞানিক নাম Aegle marmelos correa । বেল গাছ শিব ঠাকুরের প্রিয়। বেলে রয়েছে শর্করা, ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম, লৌহ, ক্যারোটিন, স্নেহ, থায়ামিন,রিবোফ্লাবিন, নায়াসিন, অ্যাসকোরিক আ্যাসিড, টার্টারিক আ্যাসিড, ইত্যাদি উপাদান । বেল কোষ্ঠ্যকাঠিন্য সমস্যায় খুব কার্যকর । এ ছাড়া অজীর্ন, পেটের গোলমাল ইত্যাদিতে খুবই উপকারি ।
দাড়িম্ব (ডালিম)ঃ এটি আমাদের পরিচিত ফল । বৈজ্ঞানিক নাম Punica granatum Linn । আমরা সবাই জানি রোগীদের পথ্য হিসাবে এটি বহুল ব্যাবহৃত। এটি রক্ত বর্ধক এবং মহিলাদের ব্রেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে ।
অশোকঃ
এটি মাঝারি আকারের চির সবুজ গাছ। এর বৈজ্ঞানিক নাম Saraca indica । এই গাছ ভেষজ গুণ সম্পন্ন । আন্ত্রিক রোগ, উদারাময়, ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি ও স্ত্রীরোগ চিকিৎসায় এটি ব্যাবহৃত হয় ।
মানঃ
এটিও আমাদের পরিচিত । বৈজ্ঞানিক নাম Alocasia indica (Roxb)Schott । এটি রক্ত দুষ্টিনাশক।অশ্বরোগে উপকারি, সেই সাথে কোষ্ঠবদ্ধ রোগে কার্যকর । বাত ব্যাথা নিরাময়ে এটি ফলপ্রদ ।
ধানঃ
ধানের বৈজ্ঞানিক নাম Oryza sativaOryza glaberrima ।ধান Graminae/Poaceae গোত্রের উদ্ভিদ।  ধানের কথা বিস্তারিত নাই বা বলি, কারণ এ সম্পর্কে সবাই আমরা কম বেশি জানি ।
মহাসপ্তমীর দিন সকালে নিকটস্থ নদী বা কোনও জলাশয়ে  নিয়ে যাওয়া হয়। পুরোহিত নিজেই কাঁধে করে নবপত্রিকা নিয়ে যান। তাঁর পিছন পিছন ঢাকীরা ঢাক বাজাতে বাজাতে এবং মহিলারা শঙ্খ ও উলুধ্বনি করতে করতে যান।  স্নান করানোর পর নবপত্রিকাকে নতুন শাড়ি পরিয়ে দেবীর ডান দিকে  স্থাপন করা হয়। নবপত্রিকা প্রবেশের পূর্বে পত্রিকার সম্মুখে দেবী চামুণ্ডার আবাহন ও পুজো করা হয়। পত্রিকাস্থ অপর কোনো দেবীকে পৃথকভাবে পুজো করা হয় না। নবপত্রিকা প্রবেশের পর দর্পণে দেবীকে স্নান করানো হয়। এরপর বাকি দিনগুলিতে নবপত্রিকা অন্যান্য দেবদেবীদের সঙ্গেই পূজিত হন। 
অনেকে বলেন নবপত্রিকা নাকি গণেশের বউ । যা কি না একটি ভ্রান্তিমূলক কথা । পৌরানিক কাহিনীতে আমরা গণেশের স্ত্রীর নাম পাই ঋদ্ধি এবং সিদ্ধি । আসলে নবপত্রিকা কে ঘোমটা দিয়ে নতুন বধূর মত করে সাজানো হয়, যার ফলে অনেক জায়গায় নবপত্রিকা কে কলাবৌ নামে ডাকা হয় এবং দুর্গা পূজার চালচিত্রে তার অবস্থান হল মাতৃভক্ত গণেশের পাশে । সম্ভবত এই কারণে সমাজে ভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে ।উপরের বর্ণনায় আমরা স্পষ্টই দেখেছি নবপত্রিকা অধিষ্ঠাত্রী দেবীরা যেমন ধানে লক্ষী, হলুদে দুর্গা এরা সবাই মায়ের অংশ , তাই নবপত্রিকা গণেশের মা, তথা প্রকৃতি স্বরূপিণী মা দুর্গা । নিঃসন্দেহে আমাদের এই মহাপাপজনক ভ্রান্ত ধারণা থেকে উত্তোরন প্রয়োজন ।

বুধবার, ২২ আগস্ট, ২০১৮

অ্যান্ড্রোয়েডের সাত সতেরো

HISTORY OF ANDROID
                              অ্যান্ড্রয়েড নামটি আজ একটি বহুল প্রচলিত না।  কম বেশি সবাই এখন অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ব্যবহার করছেন। তবে  অনেকেই আছেন যারা অ্যান্ড্রয়েড সম্পর্কে বিশদ কিছু জানেন না। আসুন এ সম্পর্কে সংক্ষেপে কিছু আলোচনা করি।


অ্যান্ড্রয়েড এর প্রতিষ্ঠাতা হলেন অ্যান্ড রুবি ।তিনি ছিলেন গুগল এর একজন ডেভলপার  । তিনি গুগল এ থাকা অবস্থায় এই জনপ্রিয় মোবাইল অপারেটিং সিস্টেমটি (OS ) আবষ্কিার করেন ।
অ্যান্ড্রয়েড আসলে লিনাক্স কার্নেল ভিত্তিক একটি অপারেটিং সিস্টেম ।অ্যান্ড্রয়েড প্রাথমিকভাবে টিভি  ইন্টারফেস , ঘড়ি ,স্মার্টফোনের এবং ট্যাবলেট কম্পিউটার হিসেবে touchscreen মোবাইল ডিভাইস ডিজাইন করা হয় । এই ডিভাইসে একটি ভার্চুয়াল কীবোর্ড ব্যবহার করা হয় ।প্রাথমিকভাবে touchscreen ইনপুট এর জন্য ডিজাইন করা হচ্ছে সত্ত্বেও এটি গেম কনসোল, ডিজিটাল ক্যামেরা , বিভিন্ন ধরনের সেন্সর যোগ করা হয় এর পর অন্যান্য
ইলেকট্রনিক্স ব্যবহার করা হয়েছে ।

 অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম অ্যান্ড্রয়েড এর সোর্স কোড [ ওপেন সোর্স ] লাইসেন্সের অধীনে গুগল দ্বারা
প্রকাশ করা হয় ।
জুলাই ২০১৩ তে গুগল প্লে স্ট্ররে এক মিলিয়ন অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ্লিকেশন প্রকাশিত হয়
এবং তখন অ্যাপ্লিকেশন ডাউনলোড ছিল ৫৩৮ মিলিয়ন । তারপর ধীরে ধীরে
বাজারে অ্যান্ড্রয়েড এর চাহিদা বাড়তে থাকে । ২০১৪ সালে অ্যান্ড্রয়েড সব
থেকে বৃহত্তম অপারেটিং সিস্টেম এর জায়গা দখল করে ।

name
Version numberLinux kernel versionl Initial release dateAPI level
(No codename)1.0 ? sep. 23,20081
Petit Four1.12.6.X February 9, 20092
Cupcake1.5 2.6.27 April 27, 2009 3
Donut1.6 2.6.29 September 15, 20094
Eclair2.0 – 2.12.6.29October 26, 2009 5-7
Froyo2.2 – 2.2.32.6.32May 20, 20108
Gingerbread2.3 – 2.3.72.6.35 December 6, 2010 9-10
Honeycomb3.0-3.2.6 2.6.36 February 22, 2011 11-13
Ice Cream Sandwich4.0-4.0.43.0.1 October 18, 2011 14-15
Jelly bean4.1-4.3.1 3.0.31 to 3.4.39 July 9, 201216-18
kitkat4.4-4.4.4 3.10October 31, 201319-20
Lollipop 5.0-5.1.13.16.1November 12, 2014 21-22
Marshmallow6.0-6.0.13.18.10 October 5, 2015 23
Nougat 7.0-7.1.24.4.1 August 22, 201624-25
Oreo8.0-8.1 4.10 August 21, 201726-27
Pie9.04.4.107, 4.9.84, and 4.14.42 August 6, 2018 28