সোমবার, ১০ অক্টোবর, ২০২২

দুর্গাপুজো ও নবরাত্রি

              সেদিন দুর্গাপুজো নিয়ে কথা হচ্ছিল। আমাদের বৃদ্ধ তান্ত্রিক বগলাচরণ ভট্টাচার্য্য মশাই চায়ের কাপে দীর্ঘ চুমুক দিয়ে বললেন, "দুর্গাপুজো নিয়ে বলতে গেলে অনেক কিছুই বলতে হয়। তবে স্বল্প পরিসরে তো সব বলা সম্ভব নয়। তবু যেটুকু বলি শোনো। 
                  হিন্দু ধর্মের প্রধান পাঁচটি সম্প্রদায়ের অন্যতম হল শাক্ত সম্প্রদায়।  সৌর আশ্বিনের শুক্লা প্রতিপদ হতে শুরু করে মোট নয়দিন ধরে চলে দেবী মহামায়া আদ্যাশক্তির আরাধনা। দশমীর দিন দেবী সপরিবারে চলে যান কৈলাশে। আবার শুরু হয় একবছরের অপেক্ষা। 
এই নয়দিনে দেবীর নয়টি রূপের পুজো হয়। যাদের নবদুর্গা বলে। আর নয়দিনের এই ব্রতকে নবরাত্রি বলে। দেবীর নয়টি রূপ হল-

প্রথমং শৈলপুত্রী চ দ্বিতীয়ং ব্রহ্মচারিণী |
তৃতীয়ং চন্দ্রঘণ্টেতি কূষ্মাণ্ডেতি চতুর্থকম || ৩ ||

পঞ্চমং স্কন্দমাতেতি ষষ্ঠং কাত্যায়নীতি চ |
সপ্তমং কালরাত্রীতি মহাগৌরীতি চাষ্টমম || ৪ ||

নবমং সিদ্ধিদাত্রী চ নবদুর্গাঃ প্রকীর্তিতাঃ |
উক্তান্যেতানি নামানি ব্রহ্মণৈব মহাত্মনা || ৫ ||

                        যদিও আমাদের দুর্গাপুজো শুরু হয় ষষ্ঠীর বোধনের মাধ্যমে কিন্তু ভারতবর্ষের বাকি অংশে প্রতিপদ হতেই পুজো শুরু হয়। 

প্রতিপদ - শৈলপুত্রী
নবরাত্রির প্রথম দিন দেবী  শৈলপুত্রী ( পর্বতের কন্যা)। হিমালয় ও মেনকার ঘরে জন্ম নেন দেবীশৈলপুত্রী। প্রণাম মন্ত্রে তাই বলা হয়েছে - 
'.. শৈলপুত্রীং প্রপদ্যে, পুনর্ভুং ময়োতুম্।
 কন্যাং শিখলিনি পাশহন্তাং যুবতীং কুমারীণীম্।।’
শৈলপুত্রী সূর্যগ্রহকে নিয়ন্ত্রণ করেন। গাওয়া ঘি দিয়ে তার পুজো করা হয়। শৈলপুত্রী মেষ ও বৃশ্চিক রাশিকে  নিয়ন্ত্রণ করেন। তিনি ভক্তদের আরোগ্য প্রদান করেন । 

ধ্যান :-
বন্দে বাঞ্ছিতলাভায় চন্দ্রার্ধকৃতশেখরাম্ ।
বৃষারূঢাং শূলধরাং শৈলপুত্রীং য়শস্বিনীম্ ॥
পূর্ণেন্দুনিভাঙ্গৌরীং মূলাধারস্থিতাং প্রথমদুর্গাং ত্রিনেত্রাম্ ।
পটাম্বরপরিধানাং রত্নকিরীটাং নানালঙ্কারভূষিতাম্ ॥
প্রফুল্লবদনাং পল্লবাধরাং কান্তকপোলাং তুঙ্গকুচাম্ ।
কমনীয়াং লাবণ্যস্নেহমুখীং ক্ষীণমধ্যাং নিতম্বনীম্ ॥

স্তোত্রম্ -
প্রথমদুর্গা ত্বং হি ভবসাগরতারিণী ।
ধন ঐশ্বর্যদায়িনী শৈলপুত্রী প্রণমাম্যহম্ ॥
ত্রিলোকজননী ত্বং হি পরমানন্দপ্রদায়িনী ।
সৌভাগ্যারোগ্যদায়নী শৈলপুত্রী প্রণমাম্যহম্ ॥
চরাচরেশ্বরী ত্বং হি মহামোহবিনাশিনী ।
ভুক্তিমুক্তিদায়নী শৈলপুত্রী প্রণমাম্যহম্ ॥

কবচম্ -
ওঙ্কারঃ মে শিরঃ পাতু মূলাধারনিবাসিনী ।
হ্রীঙ্কারঃ পাতু ললাটে বীজরূপা মহেশ্বরী ॥
শ্রীকারঃ পাতু বদনে লজ্জারূপা মহেশ্বরী ।
হূঙ্কারঃ পাতু হৃদয়ে তারিণী শক্তিঃ স্বধৃতা ॥
ফট্কারঃ পাতু সর্বাঙ্গে সর্বসিদ্ধিফলপ্রদা ।

দ্বিতীয়া - ব্রহ্মচারিণী
হিমালয়ের কন্যা শিবকে পতি হিসেবে পাওয়ার জন্য শুধুমাত্র বায়ুসেবন করে দীর্ঘ তপস্যা করেন। এসময় একটা পাতাও আহার করতেন না বলে তাকে অপর্ণা বলা হয়। এই সময় দেবী তপস্যার্থে ব্রহ্মচারিণী রূপ ধারণ করেন। তার তপস্যারয় কাতর হয়ে তার মা বলেন- 'উ মা !' অর্থাৎ আর না। 
দেবী জ্ঞানদা, তিনি ভক্তকে  ব্রহ্মপ্রাপ্তি করান। ব্রহ্মচারিণী রাহুগ্রহকে নিয়ন্ত্রণ করেন। তাকে    চিনি ভোগ দেওয়া হয় । ব্রহ্মচারিণী তুলা রাশিকে  নিয়ন্ত্রণ করেন ও  দীর্ঘায়ু দেন। 

দধানা  করপদ্মাভ্যামক্ষমালাকমণ্ডলূ ।
দেবী প্রসীদতু ময়ি ব্রহ্মচারিণ্যনুত্তমা ॥

ধ্যানং -
বন্দে বাঞ্ছিতলাভায় চন্দ্রার্ধকৃতশেখরাম্ ।
জপমালাকমণ্ডলুধরাং ব্রহ্মচারিণীং শুভাম্ ।
গৌরবর্ণাং স্বাধিষ্ঠানস্থিতাং দ্বিতীয়দুর্গাং ত্রিনেত্রাম্ ।
ধবলবর্ণাং ব্রহ্মরূপাং পুষ্পালঙ্কারভূষিতাম্ ।
পদ্মবদনাং পল্লবাধরাং কান্তঙ্কপোলাং পীনপয়োধরাম্ ।
কমনীয়াং লাবণ্যাং স্মেরমুখীং নিম্ননাভিং নিতম্বনীম্ ॥

স্তোত্রং -
তপশ্চারিণী ত্বং হি তাপত্রয়নিবারিণী ।
ব্রহ্মরূপধরাং ব্রহ্মচারিণীং প্রণমাম্যহম্ ॥
নবচক্রভেদিনী ত্বং হি নব ঐশ্বর্যপ্রদায়িনী ।
ধনদাং সুখদাং ব্রহ্মচারিণীং প্রণমাম্যহম্ ॥
শঙ্করপ্রিয়া ত্বং হি ভুক্তি-মুক্তিদায়িনী ।
শান্তিদাং মানদাং ব্রহ্মচারিণীং প্রণমাম্যহম্ ।।

কবচম্ -
ত্রিপুরা মে হৃদয়ং পাতু ললাটং পাতু শঙ্করভামিনী
অর্পণা সদা পাতু নেত্রৌ অধরৌ চ কপোলৌ ॥
পঞ্চদশী কণ্ঠং পাতু মধ্যদেশং পাতু মাহেশ্বরী
ষোডশী সদা পাতু নভো গৃহো চ পাদয়ো ।
অঙ্গপ্রত্যঙ্গং সততং পাতু ব্রহ্মচারিণী ॥

তৃতীয়া - চন্দ্রঘন্টা
শিব ও পার্বতীর বিবাহ নির্বিঘ্ন করতে দেবী  চন্দ্রঘন্টা রূপ ধারণ করেন। অষ্টভূজা দেবী শার্দূলের পিঠে চেপে চন্দ্রের মতো স্বরূপ নিয়ে বিশাল শ্বেতঘন্টা বাজাতে বাজাতে ভূত পিশাচ রাক্ষসদের অপসারণ করেন। মতান্তরে এই ঘন্টা মহিষাসুর বধের জন্য দেবরাজ ইন্দ্রের প্রদত্ত ঘন্টা যার মধ্যে গজরাজ ঐরাবতের মহাশক্তি নিহিত ছিল। 
 চন্দ্রঘন্টা কেতুগ্রহকে নিয়ন্ত্রণ করেন। তিনি কন্যা ও মিথুনের নিয়ন্ত্রক।  গরুর দুধ দিয়ে পুজো করলে  চন্দ্রঘন্টা প্রসন্ন হন এবং  শত্রুনাশ করেন। 

পিণ্ডজপ্রবরারূঢা চন্দ্রকোপাস্ত্রকৈর্যুতা ।
প্রসাদং তনুতাং মহ্যং চন্দ্রঘণ্টেতি বিশ্রুতা ॥

ধ্যানং -
বন্দে বাঞ্ছিতলাভায় চন্দ্রার্ধকৃতশেখরাম্ ।
সিংহারূঢাং দশভুজাঞ্চন্দ্রঘণ্টাং য়শস্বনীম্ ॥
কঞ্জনাভাং মণিপুরস্থিতাং তৃতীয়দুর্গাং ত্রিনেত্রাম্ ।
খড্গগদাত্রিশূলচাপধরাং পদ্মকমণ্ডলুমালাবরাভয়করাম্ ।
পটাম্বরপরিধানাং মৃদুহাস্যাং নানালঙ্কারভূষিতাম্ ।
মঞ্জীর-হার-কেয়ূর-কিঙ্কিণীরত্নকুণ্ডলমণ্ডিতাম্ ॥
প্রফুল্লবন্দনাং বিম্বাধারাং কান্তঙ্কপোলাং তুঙ্গকুচাম্ ।
কমনীয়াং লাবণ্যাং ক্ষীণকটিং নিতম্বনীম্ ॥

স্ত্রোত্রঃ-
আপদুদ্ধারিণী ত্বং হি আদ্যাশক্তিঃ শুভা পরা ।
অণিমাদিসিদ্ধিদাত্রি চন্দ্রঘণ্টে প্রণমাম্যহম্ ॥
চন্দ্রমুখী ইষ্টদাত্রী ইষ্টমন্ত্রস্বরূপণী ।
ধনদাত্র্যানন্দদাত্রী চন্দ্রঘণ্টে প্রণমাম্যহম্ ॥
নানারূপধারিণী ইচ্ছাময়ী ঐশ্বর্যদায়নী ।
সৌভাগ্যারোগ্যদায়নী চন্দ্রঘণ্টে প্রণমাম্যহম্ ॥

কবচঃ-
রহস্যং শৃণু বক্ষ্যামি শৈবেশি কমলাননে ।
শ্রীচন্দ্রঘণ্টাকবচং সর্বসিদ্ধিপ্রদায়কম্ ॥
বিনা ন্যাসং বিনা বিনিয়োগং বিনা শাপোদ্ধারং বিনা হোমম্ ।
স্নানং শৌচাদিকং নাস্তি শ্রদ্ধামাত্রেণ সিদ্ধিদম্ ॥
কুশিষ্যায় কুটিলায় বঞ্চকায় নিন্দাকায় চ ।
ন দাতব্যং ন দাতব্যং ন দাতব্যঙ্কদাচন ॥

চতুর্থী - কুষ্মাণ্ডা
কু শব্দের অর্থ কুৎসিত আর উষ্মা শব্দের অর্থ তাপ। অন্ড এখানে উদর। মহাদেব যেমন সমুদ্র মন্থনের সময় সমস্ত গরল নিজের কণ্ঠে ধরে জগৎ সংসারকে রক্ষা করেছিলেন তেমনি দেবী কুষ্মান্ডা যত শোক তাপ যন্ত্রণা সমস্তকিছু নিজের মধ্যে ধারণ করে ভক্তকে রক্ষা করেন। 

দেবী কুষ্মান্ডা চন্দ্রকে নিয়ন্ত্রণ করেন। । তিনি  ধনু রাশিকে  নিয়ন্ত্রণ করেন। কুষ্মাণ্ডা নির্ণয় শক্তি দেন ও সব প্রকার বাসনা নাশ করেন। মালপোয়া ভোগ দিলে তিনি প্রসন্ন হন। 

সুরাসম্পূর্ণকলশং রুধিরাপ্লুতমেব চ ।
দধানা হস্তপদ্মাভ্যাং কূষ্মাণ্ডা শুভদাঽস্তু মে ॥

ধ্যানং -
বন্দে বাঞ্ছিতকামর্থং চন্দ্রার্ধকৃতশেখরাম্ ।
সিংহারূঢামষ্টভুজাং কুষ্মাণ্ডাং চ য়শস্বিনীম্ ॥
ভাস্বরাং ভানুনিভামনাহতস্থিতাং চতুর্থদুর্গাং ত্রিনেত্রাম্ ।
কমণ্ডলুচাপবাণপদ্মসুধাকলশচক্রগদাজপবটীধরাম্ ॥
পটাম্বরপরিধানাং কমনীয়াং মৃদুহাস্যা নানালঙ্কারভূষিতাম্ ।
মঞ্জীরহারকেয়ূরকিঙ্কিণীরত্নকুণ্ডলমণ্ডিতাম্ ।
প্রফুল্লবদনাং  চারুচিবুকাং কান্তকপোলাং তুঙ্গকুচাম্ ।
কোলাঙ্গীং স্মেরমুখীং ক্ষীণকটিং নিম্ননাভিং নিতম্বনীম্ ॥


স্ত্রোত্রঃ-
দুর্গতিনাশিনী ত্বং হি দারিদ্র্যাদিবিনাশিনী ।
জয়দা ধনদা কূষ্মাণ্ডে প্রণমাম্যহম্ ॥
জগন্মাতা জগত্কর্ত্রি জগদাধাররূপিণী ।
চরাচরেশ্বরী কূষ্মাণ্ডে প্রণমাম্যহম্ ॥
ত্রৈলোক্যসুন্দরী ত্বং হি দুঃখশোকনিবারিণী ।
পরমানন্দময়ী কূষ্মাণ্ডে প্রণমাম্যহম্।। 
-------------------------------
সুরাসম্পূর্ণকলশং রুধিরাপ্লুতমেব চ ।
দধানা হস্তপদ্মাভ্যাং কূষ্মাণ্ডা শুভদাঽস্তু মে ॥
বন্দে বাঞ্ছিত কামার্থে চন্দ্রার্ধকৃতশেখরাম্।
সিংহরূঢ়া অষ্টভূজা কুষ্মান্ডাং যশস্বিনীম্।।

ওঁ হ্রীম্ শ্রী কুষ্মান্ডা দুর্গায়ৈ নমঃ।।

কবচং -
হসরৈ মে শিরঃ পাতু কূষ্মাণ্ডা ভবনাশিনী ।
হসলকরী নেত্রঽথ, হসরৌশ্চ ললাটকম্ ॥
কৌমারী পাতু সর্বগাত্রে বারাহী উত্তরে তথা ।
পূর্বে পাতু বৈষ্ণবী ইন্দ্রাণী দক্ষিণে মম ।
দিগ্দিক্ষু  সর্বত্রৈব কূম্বীজং সর্বদাঽবতু ॥

পঞ্চমী - স্কন্দমাতা
দেব সেনাপতি কার্তিকেয়র অপর নাম স্কন্দ। দেবী পার্বতী স্কন্দের মাতা বলে তিনি স্কন্দমাতা বলে প্রসিদ্ধ। ইনি কার্তিকেয়কে কোলে করে অবস্থান করেন। 
স্কন্দমাতা মঙ্গলগ্রহকে  নিয়ন্ত্রণ করেন।  স্কন্দমাতা  কুম্ভ রাশিকে  নিয়ন্ত্রণ করেন। ইনি মর্তমান কলা দ্বারা পুজো করলে তুষ্ট হন এবং বুদ্ধি বিকাশ ঘটান ও সন্তান দেন। 

সিংহাসনগতা নিত্যং পদ্মাশ্রিতকরদ্বয়া ।
শুভদাস্তু সদা দেবী স্কন্দমাতা য়শস্বিনী ॥

ধ্যানম্ -
বন্দে বাঞ্ছিতকামার্থে চন্দ্রার্ধকৃতশেখরাম্ ।
সিংহারূঢা চতুর্ভুজা স্কন্ধমাতা য়শস্বনী ॥
ধবলবর্ণা বিশুদ্ধচক্রস্থিতা পঞ্চমদুর্গা ত্রিনেত্রা ।
অভয়পদ্ময়ুগ্মকরাং দক্ষিণ ঊরুপুত্রধরাং ভজেঽম্ ॥
পটাম্বরপরিধানা মৃদুহাস্যা নানালঙ্কারভূষিতাম্ ।
মঞ্জীরহারকেয়ূরকিঙ্কিণীরত্নকুণ্ডলধারিণীম্ ॥
প্রভুল্লবদনাং পল্লবাধরাং কান্তকপোলাং পীনপয়োধরাম্ ।
কমনীয়াং লাবণ্যাং চারূত্রিবলীং নিতম্বনীম্ ॥

স্তোত্রম্ -
নমামি স্কন্দমাতরং স্কন্ধধারিণীম্ ।
সমগ্রতত্ত্বসাগরামপারপারগহরাম্ ॥
শশিপ্রভাং সমুজ্জ্বলাং স্ফুরচ্ছশাঙ্কশেখরাম্ ।
ললাটরত্নভাস্করাং জগত্প্রদীপ্তভাস্করাম্ ॥
মহেন্দ্রকশ্যপার্চিতাং সনত্কুমারসংস্তুতাম্ ।
সুরাসুরেন্দ্রবন্দিতাং য়থার্থনির্মলাদ্ভুতাম্ ॥
অতর্ক্যরোচিরূবিজাং বিকার দোষবর্জিতাম্ ।
মুমুক্ষুভির্বিচিন্তিতাং বিশেষতত্ত্বমূচিতাম্ ॥
নানালঙ্কারভূষিতাং মৃগেন্দ্রবাহনাগ্রতাম্ ।
সুশুদ্ধতত্ত্বতোষণাং ত্রিবেদমারভাষণাম্ ॥ ??মার
সুধার্মিকৌপকারিণীং সুরেন্দ্রবৈরিঘাতিনীম্ ।
শুভাং সুপুষ্পমালিনীং সুবর্ণকল্পশাখিনীম্ ॥
তমোঽন্ধকারয়ামিনীং শিবস্বভাবকামিনীম্ ।
সহস্ত্রসূর্যরাজিকাং ধনঞ্জয়োগ্রকারিকাম্ ॥
সুশুদ্ধকালকন্দলাং সুভৃঙ্গকৃন্দমঞ্জুলাম্ ।
প্রজায়িনীং প্রজাবতীং নমামি মাতরং সতীম্ ॥
স্বকর্মধারণে গতিং হরিং প্রয়চ্ছ পার্বতীম্ । ??প্রয়চ্ছ
অনন্তশক্তিকান্তিদাং য়শোঽথ ভুক্তিমুক্তিদাম্ ॥
পুনঃপুনর্জগদ্ধিতাং নমাম্যহং সুরার্চিতাম্ ।
জয়েশ্বরি ত্রিলাচনে প্রসীদ দেবি পাহি মাম্ ॥

কবচম্ -
ঐং বীজালিকা দেবী পদয়ুগ্মধরা পরা ।
হৃদয়ং পাতু সা দেবী কার্তিকেয়য়ুতা সতী ॥
শ্রীং হ্রীং হুং ঐং দেবী পূর্বস্যাং পাতু সর্বদা ।
সর্বাঙ্গ মেং সদা পাতু স্কন্দমাতা পুত্রপ্রদা ॥
বাণবাণামৃতে হুং ফট্ বীজসসমন্বিতা ।
উত্তরস্যাং তথাগ্নে চ বারূণে নৈৠতেঽবতু ॥
ইন্দ্রাণী ভৈরবী চৈবাসিতাঙ্গী চ সংহারিণী ।
সর্বদা পাতু মাং দেবী চান্যান্যাসু হি দিক্ষু বৈ ॥

ষষ্ঠী - কাত্যায়ণী 
দেবগণের অসীম তেজে মহর্ষি কাত্যায়ণের আশ্রমে আবির্ভূত হন দেবী আদ্যাশক্তি। কাত্যায়ণের কন্যা বলে কাত্যায়ণী বলে খ্যাত হন।  ইনি বৃন্দাবনে শ্রীরাধা, ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ও অন্যান্য গোপগোপীদের দ্বারা পূজিতা হন।  ব্রজের গোপবালারা এই কাত্যায়নীর কাছে প্রার্থণা করেছিলেন নন্দের নন্দন শ্রীকৃষ্ণকে পতিরূপে পাওয়ার জন্য। 

কাত্যায়নী  বুধগ্রহকে   নিয়ন্ত্রণ করেন। তিনি মকর রাশির নিয়ন্ত্রক।  মধু দিয়ে পুজো করলে দেবী প্রসন্ন হন ও  ভক্তদের আকর্ষণ শক্তি ও সৌন্দর্য প্রদান করেন। 

চন্দ্রহাসোজ্জ্বলকরা শার্দূলবরবাহনা ।
কাত্যায়নী চ শুভদা দেবী দানবঘাতিনী ॥

ধ্যানম্ -
বন্দে বাঞ্ছিতমনোরথার্থায় চন্দ্রার্ধকৃতশেখরাম্ ।
সিংহারূঢাং চতুর্ভুজাং কাত্যায়নীং য়শস্বনীম্ ॥
স্বর্ণবর্ণামাজ্ঞাচক্রস্থিতাং ষষ্ঠদুর্গাং ত্রিনেত্রাম্ ।
বরাভীতকরাং সগপদধরাং কাত্যায়নসুতাং ভজামি ॥
পটাম্বরপরিধানাং স্মেরমুখীং নানালঙ্কারভূষিতাম্ ।
মঞ্জীরহারকেয়ুরকিঙ্কিণীরত্নকুণ্ডলমণ্ডিতাম্ ॥
প্রসন্নবদনাং পল্লবাধরাং কান্তকপোলাং তুঙ্গকুচাম্ ।
কমনীয়াং লাবণ্যাং ত্রিবলীবিভূষিতনিম্ননাভিম্ ॥

স্তোত্রম্ -
কাঞ্চনাভাং বরাভয়পদ্মধরাং মুকুটোজ্জ্বলাং ।
স্মেরমুখীং শিবপত্নীং কাত্যায়নসুতে নমোঽস্তুতে ॥
পটাম্বরপরিধানাং নানালঙ্কারভূষিতাং ।
সিংহাস্থিতাং পদ্মহস্তাং কাত্যায়নসুতে নমোঽস্তুতে ॥
পরমানন্দময়ী দেবি পরব্রহ্ম পরমাত্মা ।
পরমশক্তি,পরমভক্তি, কাত্যায়নসুতে নমোঽস্তুতে ॥
বিশ্বকর্ত্রীং,বিশ্বভর্ত্রীং,বিশ্বহর্ত্রীং,বিশ্বপ্রীতাম্ ।
বিশ্বচিত্তাং,বিশ্বাতীতাং কাত্যায়নসুতে নমোঽস্তুতে ॥
কাং বীজা, কাং জপানন্দা কাং বীজজপতোষিতা ।
কাং কাং বীজজপাসক্তাং কাং কাং সন্তুতা ॥ ??  কাং বীজজপসংস্তুতাম্
কাঙ্কারহর্ষিণীং কাং কাং ধনদাং ধনমানসাম্ ।
কাং বীজজপকারিণীং কাং বীজতপমানসাম্ ॥
কাং কারিণীং কাং সূত্রপূজিতাং কাং বীজধারিণীম্ ।
কাং কীং কূং কৈং কৌং কঃ ঠঃ ছঃ স্বাহারূপণী ॥

কবচম্ -
কাত্যায়নী মুখং পাতু কাং কাং স্বাহাস্বরূপণী ।
ললাটং বিজয়া পাতু মালিনী নিত্যসুন্দরী ॥
কল্যাণী হৃদয়ং পাতু জয়া চ ভগমালিনী ॥

সপ্তমী - কালরাত্রি 
গর্দভবাহনা এই দেবী চতুর্ভূজা। বর, অভয়মুদ্রা, লোহার কাঁটা ও খড়্গ রয়েছে তার হাতে। রাত্রির মতো ঘন কালো রং বলে দেবীর নাম কালরাত্রি।  ঋগ্বেদের রাত্রিসুক্তে পরমাত্মাই রাত্রিদেবী। মহাপ্রলয়কালে এই রাত্রিরূপিণী মাতার কোলেই বিলয় হয় বিশ্বের।অনন্ত মহাকাশে নৃত্যরত কালভৈরবের দেহ থেকেই আবির্ভূতা ইনি দেবী যোগনিদ্রা মহাকালিকা বা কালরাত্রি নামে আখ্যাত । 

কালরাত্রি শনিগ্রহ এবং সিংহ রাশিকে   নিয়ন্ত্রণ করেন।  আখের গুড় দিয়ে পুজো করলে দেবী প্রসন্না হন । কালরাত্রি সব গ্রহের বাধা নাশ করেন। 

একবেণীজপাকর্ণপুরাননা খরাস্থিতা ।
লম্বোষ্ঠীকর্ণিকাকর্ণীতৈলাভ্যঙ্গশরীরিণী ॥
বামপাদোল্লসল্লোহলতাকণ্টকভূষণা ।
বর্ধনামূর্ধজা কৃষ্ণা কালরাত্রির্ভয়ঙ্করী ॥

ধ্যানম্ -
করালবদনাং ঘোরাং মুক্তকেশীং চতুর্ভুজাম্ ।
কালরাত্রিং করালীং চ বিদ্যুন্মালাবিভূষিতাম্ ॥
দিব্যলৌহবজ্রখড্গবামাধোর্ধ্বকরাম্বুজাম্ ।
অভয়ং বরদাং চৈব দক্ষিণোর্ধ্বাধঃ পাণিকাম্ ॥
মহামেঘপ্রভাং শ্যামাং তথা চ গর্দভারূঢাম্ ।
ঘোরদংষ্ট্রাকারালাস্যাং পীনোন্নতপয়োধরাম্ ॥
সুখপ্রসন্নবদনাং স্মেরাননসরোরুহাম্ ।
এবং সঞ্চিয়ন্তয়েত্কালরাত্রিং সর্বকামসমৃদ্ধিদাম্ ॥

স্তোত্রম্ -
হ্রীং কালরাত্রিঃ শ্রীং করালী চ ক্লীং কল্যাণী কলাবতী ।
কালমাতা কলিদর্পঘ্নী কপদীংশকৃপন্বিতা ॥
কামবীজজপানন্দা কামবীজস্বরূপিণী ।
কুমতিঘ্নী কুলীনাঽঽর্তিনশিনী কুলকামিনী ॥
ক্লীং হ্রীং শ্রীং মন্ত্রবর্ণেন কালকণ্টকঘাতিনী ।
কৃপাময়ী কৃপাধারা কৃপাপারা কৃপাগমা ॥

কবচম্ -
ওঁ ক্লীং মে হৃদয়ং পাতু পাদৌ শ্রীং কালরাত্রিঃ ।
ললাটং সততং পাতু দুষ্টগ্রহনিবারিণী ॥
রসনাং পাতু কৌমারী ভৈরবী চক্ষুষী মম ।
কটৌ পৃষ্ঠে মহেশানী কর্ণৌ শঙ্করভামিনী ।
বর্জিতানি তু স্থানানি য়ানি চ কবচেন হি ।
তানি সর্বাণি মে দেবী সততং পাতু স্তম্ভিনী ॥

মহা অষ্টমী - মহাগৌরী
জুঁই ফুলের মতো শ্বেত শুভ্র রং বলে দেবী মহাগৌরী। তিনি সন্তানবৎসলা, শিবসোহাগিনী, বিদ্যুদ্বর্ণা প্রসন্না । চতুর্ভূজা দেবী দুইহাতে ত্রিশূল, ডমরু ও অভয়মুদ্রা। দেবী বৃষবাহিনী ও শিবস্বরূপা। দেহের তিনি গুরুচক্র। 

মহাগৌরী বৃহস্পতি গ্রহ এবং বৃষ রাশিকে নিয়ন্ত্রণ করেন। মহাগৌরী ছোলা,হালুয়া ও শ্রী ফল (নারিকেল) দ্বারা পুজোয় তুষ্ট হন ।  মহাগৌরী অসত্য বিনাশ করেন। 

শ্বেতে বৃষে সমারূঢা শ্বেতাম্বরধরা শুচিঃ ।
মহাগৌরী শুভং দদ্যান্মহাদেবপ্রমোদদা ॥

ওঁ নমো ভগবতি মহাগৌরি বৃষারূঢে শ্রীং হ্রীং ক্লীং হুং ফট্ স্বাহা ।

ধ্যান-
বন্দে বাঞ্ছিতকামার্থং চন্দ্রার্ধকৃতশেখরাম্ ।
সিংহারূঢাং চতুর্ভুজাং মহাগৌরীং য়শস্বীনীম্ ॥
পুর্ণেন্দুনিভাং গৌরীং সোমবক্রস্থিআতাং অষ্টমদুর্গাং ত্রিনেত্রাম্ ।
বরাভীতিকরাং ত্রিশূলডমরূধরাং মহাগৌরীং ভজেঽহম্ ॥
পটাম্বরপরিধানাং মৃদুহাস্যাং নানালঙ্কারভূষিতাম্ ।
মঞ্জীরহারকেয়ূরকিঙ্কিণীরত্নকুণ্ডলমণ্ডিতাম্ ॥
প্রফুল্লবদনাং পল্লবাধরাং কান্তকপোলাং ত্রৈলোক্যমোহনীম্ ।
কমনীয়াং লাবণ্যাং মৃণালাং চন্দনগন্ধলিপ্তাম্ ॥

স্তোত্রম্ -
সর্বসঙ্কটহন্ত্রী ত্বং ধনৈশ্বর্যপ্রদায়নী ।
জ্ঞানদা চতুর্বেদময়ী মহাগৌরীং প্রণমাম্যহম্ ॥
সুখশান্তিদাত্রীং, ধনধান্যপ্রদায়নীম্ ।
ডমরূবাদনপ্রিয়াং মহাগৌরীং প্রণমাম্যহম্ ॥
ত্রৈলোক্যমঙ্গলা ত্বং হি তাপত্রয়বিনাশিনীং প্রণমাম্যহম্ ।
বরদা চৈতন্যময়ী মহাগৌরীং প্রণমাম্যহম্ ॥

কবচম্ -
ওঙ্কারঃ পাতু শীর্ষে মাং, হ্রীং বীজং মাং হৃদয়ে ।
ক্লীং বীজং সদা পাতু নভো গৃহো চ পাদয়োঃ ॥
ললাটকর্ণৌ হূং বীজং পাতু মহাগৌরী মাং নেত্রঘ্রাণৌ ।
কপোলচিবুকৌ ফট্ পাতু স্বাহা মাং সর্ববদনৌ ॥
সিদ্ধগন্ধর্বয়ক্ষাদ্যৈরসুরৈরমরৈরপি ।
সেব্যমানা সদা ভূয়াত্ সিদ্ধিদা সিদ্ধিদায়িনী ॥

মহা নবমী - সিদ্ধিদাত্রী 
দেবী সিদ্ধিদাত্রী অণিমা, লঘিমা, মহিমা, গরিমা, প্রাপ্তি, প্রকাম্য, ঈশিত্ব ও বশিত্ব, - এই আট প্রকার সিদ্ধি প্রদান করেন। দেবী অপরূপ লাবণ্যময়ী চতুর্ভুজা, ত্রিনয়নী, প্রাতঃসূর্যের মত রঞ্জিত। নয়দিন পুজোর শেষে দেবী সিদ্ধিদাত্রী সমস্ত সিদ্ধি প্রদান করেন। 

 সিদ্ধিদাত্রী শুক্রগ্রহ এবং কর্কট ও মীন রাশিকে নিয়ন্ত্রণ করেন।   চালের পায়েস ও কালো তিল দিয়ে পুজো করলে দেবী প্রসন্না হন । দেবী সিদ্ধিদাত্রী অকাল মৃত্যু থেকে রক্ষা করেন। 

ধ্যানম্ -
বন্দে বাঞ্ছিতমনোরথার্থং চন্দ্রার্ধকৃতশেখরাম্ ।
কমলস্থিতাং চতুর্ভুজাং সিদ্ধিদাং য়শস্বনীম্ ॥
স্বর্ণবর্ণনির্বাণচক্রস্থিতাং নবমদুর্গাং ত্রিনেত্রাম্ ।
শঙ্খচক্রগদা পদ্মধরাং সিদ্ধিদাত্রীং ভজেঽহম্ ॥
পটাম্বরপরিধানাং সুহাস্যাং নানালঙ্কারভূষিতাম্ ।
মঞ্জীরহারকেয়ূরকিঙ্কিণীরত্নকুণ্ডলমণ্ডিতাম্ ॥
প্রফুল্লবদনাং পল্লবাধরাং কান্তকপোলাং পীনপয়োধরাম্ ।
কমনীয়াং লাবণ্যাং ক্ষীণকটিং নিম্ননাভিং নিতম্বনীম্ ॥

স্তোত্রম্ -
কঞ্জনাভাং শঙ্খচক্রগদাধরাং মুকুটোজ্জ্বলাম্ ।
স্মেরমুখি শিবপত্নি সিদ্ধিদাত্রি নমোঽস্তু তে ॥
পটাম্বরপরিধানাং নানালঙ্কারভূষিতাম্ ।
নলিনস্থিতা নলিনাক্ষী সিদ্ধিদাত্রী নমোঽস্তু তে ॥
পরমানন্দময়ী দেবী পরব্রহ্ম পরমাত্মা ।
পরমশক্তি পরমভক্তি সিদ্ধিদাত্রী নমোঽস্তু তে ॥
বিশ্বকর্ত্রী বিশ্বভর্ত্রী বিশ্বহর্ত্রী বিশ্বপ্রীতা ।
বিশ্বার্চিতা বিশ্বাতীতা সিদ্ধিদাত্রী নমোঽস্তু তে ॥
ভুক্তিমুক্তিকারণী ভক্তকষ্টনিবারিণী ।
ভবসাগরতারিণী সিদ্ধিদাত্রী নমোঽস্তু তে ॥
ধর্মার্থকামপ্রদায়িনী মহামোহবিনাশিনী ।
মোক্ষদায়িনী সিদ্ধিদাত্রী ঋদ্ধিদাত্রী নমোঽস্তু তে ॥

কবচম্ -
ওঙ্কারঃ পাতু শীর্ষে মাং, ঐং বীজং মাং হৃদয়ে ।
হ্রীং বীজং সদা পাতু নভো গৃহো চ পাদয়োঃ ॥
ললাটকর্ণৌ শ্রীং বীজং পাতু ক্লীং বীজং মাং নেত্রঘ্রাণৌ ।
কপোলচিবুকৌ হসৌঃ পাতু জগত্প্রসূত্যৈ মাং সর্ববদনে ॥

সন্ধিপুজো 
অষ্টমী তিথির শেষ দুই দন্ড আর নবমী তিথির প্রথম দুই দন্ড এই আটচল্লিশ মিনিট ব্যাপি সন্ধিকাল। এসময় দেবী চামুন্ডার পুজো হয়। এই সময় বলি প্রশস্ত। 
বিজয়া দশমী
দীর্ঘ নয়দিন ব্যাপি মাতৃ আরাধনার পর আসে দশমীর সকাল। মা ফিরে যান কৈলাশে। আমরা প্রতীক্ষা করি আরেকটা বছরের। বলি - "পুনরাগমনায় চ। মা আবার ফিরে এসো।"
কথিত আছে চতুর্বিংশতি ত্রেতাযুগে ভগবান শ্রীরাম  বিজয়াদশমীর
অপরাজিতা পুজো :-
দেবীর দর্পনে  বিসর্জনের পর অপরাজিতা পুজো করা হয়। একটা অপরাজিতার লতা নিয়ে তাকে দেবী জ্ঞানে পুজো করা হয়। পূর্বে রাজারা এই অপরাজিতার লতা হাতে বেঁধে যুদ্ধে বের হতেন। এই লতা অপরাজয়ের প্রতীক। 

রবিবার, ৩১ জুলাই, ২০২২

Dakshina Kalika stotra


ওঁ কৃশোদরি মহাচণ্ডী মুক্তকেশিং বলীপ্রিয়ে।
কুলাচারপ্রসন্নাস্যে নমস্তে শঙ্করপ্রিয়ে।।

ঘোরদংষ্ট্রে কোটোরাক্ষি কিটিশব্দ প্রসাধিনী।
ঘুরঘোররাবাস্ফারে নমস্তে চিতাবাসিনী।।

বন্ধুকপুষ্পসঙ্কাশে ত্রিপুরে ভয়নাশিনী।
ভাগ্যোদয়সমুৎপন্নে নমস্তে বরবন্দিনী।।

জয় দেবি জগদ্ধাত্রী ত্রিপুরাদ্যে ত্রিদেবতে।
ভক্তেভ্যো বরদে দেবি মহষঘ্নি নমোহস্তুতে।।

ঘোরবিঘ্নবিনাশায় কুলাচারসমৃদ্ধয়ে।
নমমি বরদে দেবি মুণ্ডমালা বিভূষনে।।

রক্তধারাসমাকীর্ণে করকাঞ্চীবিভূষিতে।
সর্ব্ববিঘ্নহরে কালী নমস্তে ভৈরবপ্রিয়ে।।

নমস্তে দক্ষিণামূর্ত্তে কালী ত্রিপুরভৈরবী।
ভিন্নাঞ্জনচয়প্রক্ষে প্রবীণশবসংস্থিতে।।

গলচ্ছ্রোণিতধারাভিঃ স্মেরাননসরোরুহে।
পীনোন্নতকুচদ্বন্দ্বো নমস্তে ঘোরদক্ষিণে।।

আরক্তমুখশান্তাভির্নেত্রালিভির্বিরাজিতে।
শবদ্বয় কৃতোত্তংসে নমস্তে মদবিহ্বলে।।

পঞ্চাশন্মুণ্ডঘটিতমালা লোহিত লোহিতে।
নানামণিবিশোভাঢ্যে নমস্তে ব্রহ্মসেবিতে।।

শবাস্থিকৃতকেয়ুর, শঙ্খ-কঙ্কন-মণ্ডিতে।
শববক্ষঃ সমারুঢ়ে নমস্তে বিষ্ণুপূজিতে।।

শবমাংস কৃতগ্রাসে অট্টহাসে মুহুর্মুহু।
মুখশীঘ্রস্মিতামোদে নমস্তে শিববন্দিতে।।

খড়্গমুণ্ডধরে বামে সব্যে (অ) ভয়বরপ্রদে।
দন্তুরে চ মহারৌদ্রে নমস্তে চণ্ডনাদিতে।।

ত্বং গতিঃ পরমা দেবি ত্বং মাতা পরমেশ্বরী।
ত্রাহি মাং করুণাসাদ্রে নমস্তে চণ্ডনায়িকে।।

নমস্তে কালিকে দেবি নমস্তে ভক্তবৎসলে।
মুর্খতাং হর মে দেবি প্রতিভা জয়দায়িনী।।

গদ্যপদ্যময়ীং বাণীং তর্কব্যাকরণাদিকম্।
অনধীতগতাং বিদ্যাং দেহি দক্ষিণকালিকে।।

জয়ং দেহি সভামধ্যে ধনং দেহি ধনাগমে।
দেহি মে চিরজীবিত্বং কালিকে রক্ষ দক্ষিণে।।

রাজ্যং দেহি যশো দেহি পুত্রান্ দারান্ ধনং তথা।
দেহান্তে দেহি মে মুক্তিং জগন্মাতঃ প্রসীদ মে।।

ওঁ মঙ্গলা ভৈরবী দুর্গা কালিকা ত্রিদশেশ্বরী।
উমা হৈমবতীকন্যা কল্যাণী ভৈরবেশ্বরী।।

কালী ব্রাহ্মী চ মাহেশী কৌমারী বৈষ্ণবী তথা।
বারাহী বাসলী চণ্ডী ত্বাং জগুর্ম্মুনয়ঃ সদা।।

উগ্রতারেতি তারেতি শিবত্যেকজটেতি চ।
লোকোত্তরেতি কালেতি গীয়তে কৃতিভিঃ সদা।।

যথা কালী তথা তারা তথা ছিন্না চ কুল্লকা।
একমূর্ত্তিশ্চতুর্ভেদ দেবি ত্বং কালিকা পুরা।।

একত্রিবিধা দেবী কোটিধানন্তরূপিনী।
অঙ্গাঙ্গিকৈর্নামভেদৈঃ কালিকেতি প্রগীয়তে।।

শম্ভুঃ পঞ্চমুখেনৈব গুণান্ বক্তুং ন তে ক্ষমঃ।
চাপল্যৈর্যৎ কৃতং স্তোত্রং ক্ষমস্ব বরদা ভব।।

প্রাণান্ রক্ষ যশো রক্ষ পুত্রান্ দারান্ ধনং তথা।
সর্ব্বকালে সর্ব্বদেশে পাহি মাং দক্ষিণকালিকে।।

যঃ সংপূজ্য পঠেৎ স্তোত্রং দিবা বা রাত্রিসন্ধ্যায়োঃ।
ধনং ধান্যং তথা পুত্রং লভতে নাত্র সংশয়।।

শ্রীমন্মহাকালবিরচিত শ্রীমদ্দক্ষিণকালিকাস্তোত্রং সম্পূর্ণম্।।

রবিবার, ১৭ জুলাই, ২০২২

বিল্ববৃক্ষ

বিল্ববৃক্ষ মাহাত্ম্যঃ

বেলগাছ হিন্দুধর্মে একটি পবিত্র বৃক্ষ। এর বিজ্ঞানসম্মত নাম Aegle marmelos। 

বিল্ববৃক্ষ শিবস্বরূপ। এর তিনটি পাতার মাঝেরটি শিবস্বরূপ, বামপত্র ব্রহ্মাস্বরূপ ও ডানপত্র বিষ্ণুস্বরূপ। বেলপাতার সামনের অংশকে অমুর্যাম বলে। বেলের তিনটি পাতা সৃষ্টি-স্থিতি-লয় বা  ব্রহ্মা-বিষ্ণু-মহেশ্বর বা সত্ত্ব-রজ-তম কে নির্দেশ করে। 

ঋগ্বেদের শ্রী সূক্তে বেলের উপকারীতার কথা বলা আছে। নেপালে বিয়ের আগে যে অনুষ্ঠান করে তাকে বেল-বিবাহ বলে। বাড়ির উত্তর-পূর্ব দিকে বেলগাছ লাগানো শুভ। এতে সম্পদ প্রাপ্তি হয়। দক্ষিনদিকে দূর্ঘটনা বা বাধামুক্তি, পশ্চিমে সন্তানভাগ্য, পূর্বে সম্পদ ও শান্তি আসে। 

বেলফলের অপর নাম শ্রীফল। কথিত আছে মহালক্ষ্মীর স্তন হতে বেলের সৃষ্টি বলে এই ফলের নাম শ্রীফল। 


বিল্ববৃক্ষের ধ্যানঃ

ওঁ চতুর্ভুজং বিল্ববৃক্ষং রজতাভং বৃষস্থিতম্।

নানালঙ্কার সংযুক্তং জটামণ্ডলধারিণম্।।

বরাভয়করং দেবং খড়্গখট্বাঙ্গ ধারিণম্।

ব্যাঘ্রচর্মাম্বরধরং শশিমৌলি ত্রিলোচনম্।।

ওঁ বিল্ববৃক্ষায় নমঃ

🔱🔱🔱🔱🔱🔱🔱🔱🔱🔱🔱🔱🔱

প্রণাম মন্ত্রঃ

ওঁ মহাদেবপ্রিয়করো বাসুদেব প্রিয়ঃ সদা।

উমাপ্রীতিকরো বৃক্ষো বিল্বরূপ নমোহস্তু তে।।

বিল্ববৃক্ষ যেখানে থাকে সেই স্থান বারাণসীপুরী। আর এই বৃক্ষ এতটাই পবিত্র যে এর ছায়া মাড়ালে আয়ু নাশ হয় ও পাদস্পর্শে শ্রী নাশ হয়।

বেলগাছের উপকারীতা :-

* বেলফল সরষের তেলের মিশ্রণে যদি কোনও ব্যথায় মালিশ করা হয় তবে খুব উপকার পাওয়া যায়।

* বেল ফলের গুঁড়ো দুধের সাঙ্গে পান করলে রক্তাল্পতার থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

* বেলফল চিনির সঙ্গে সেবন করলে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়।

* হাই ব্লাড সুগার রোগে নিয়মিত বেল ফল খেলে এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

* বেলফল ঠাণ্ডা জলে ভিজিয়ে মিছরি সহকারে পান করলে লিভারের সমস্যা দূর হয়।

* বেলের গুঁড়ো যদি ক্ষত স্থানে লাগানো হয় তাহলে খুব তাড়াতাড়ি উপশম হয়।

  

বৃহস্পতিবার, ৫ মে, ২০২২

শাম্ব সদাশিব

বুধবার, ২ ফেব্রুয়ারী, ২০২২

সরস্বতী মহাভাগে

 সরস্বতী মহাভাগে
মূল পাতা ) : ছবি- রাজা রবি বর্মা 
          সময় বড় বেগবান, সে স্থির থাকতে চায় না মোটেই। আর যত সময় এগিয়ে চলে ততই মানুষের দক্ষতাগত বিকাশের সাথে সাথে বৌদ্ধিক বিকাশ আসতে থাকে কমে। এ যেন ভাষার বিকৃতি। একটা শব্দ ধীরে ধীরে তৎসম তদ্ভবের মাধ্যমে হারায় তার আসল উচ্চারণ ও অর্থ।  ঠিক তেমনি শাস্ত্র আর ধারনাতে লাগে লৌকিক গালগল্পের ধুলো। 

দীর্ঘদিন ধরেই একটি প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয় বারম্বার, যে বিদ্যার দেবী মা সরস্বতী কে ? সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মা কি তার স্বামী না পিতা ? ব্রহ্মা কি নিজ কন্যাকে বিবাহ করেছিলেন ?
প্রথমেই বলি, এইসব আজগুবি প্রশ্নের আবির্ভাব ঘটেছে পুরাণের মতো কিছু গ্রন্থের প্রক্ষেপন আর হিন্দুধর্মের প্রতি বিদ্বেষযুক্ত কিছু নরাধমের কারনে। আসুন এই প্রশ্নগুলোর সঠিক উত্তর খুঁজি।
আমাদের সবার আগে জানতে হবে সরস্বতী কে, আর ব্রহ্মাই বা কে। ব্রহ্মা হলেন হিন্দু ত্রিদেবের অন্যতম। আর এই ত্রিদেব হলেন নির্গুণ নিরাকার ব্রহ্মের স্বগুণ সাকার রূপ। সুতরাং ব্রহ্মা কোনও মানব বা দেবতা নন যে তার উপর মানবিক বা দৈবিক গুণ বা নিয়ম আরোপিত হবে। 

এবার আসি তার সৃষ্টির কথায়। ব্রহ্মা তার প্রতি কল্পের সৃষ্টিতে সবকিছু সৃজন করেন এবং পরার্ধকল্পে সৃষ্টি ধ্বংস করে ঘুমোতে যান। এক কল্পে একাত্তর মন্বন্তর ও এক মন্বন্তরে একহাজার মহাযুগ। মোট ৪৩,২০,০০০ বছরে এক মহাযুগ। 
আর ব্রহ্মার সৃষ্টির জন্য স্ত্রীর প্রয়োজন হয় না। তার ইচ্ছামাত্রেই সৃষ্টি হয়। তার দশ হাজার মানসপুত্র ইচ্ছামাত্রেই সৃষ্টি হয়েছে। যারা এই কল্পের আদি পুরুষ। 

ঠিক এই কারণেই ব্রহ্মার মূর্তি প্রচলিত নয়। কারন স্রষ্টাকে নিরাকার দেখানোর রীতি প্রাচীন। তিনি সর্বময়। 

এবার আসি দেবী সরস্বতীর কথায়। 
দেবী সরস্বতী হলেন আদিদেবী। আদিশক্তি। কেনোও নারী নন। আমাদের হিন্দু দর্শন মতে সৃষ্টির মূল তত্ত্ব দুটি। প্রকৃতি ও পুরুষ। প্রকৃতি আর পুরুষের মাঝে মায়ারূপ আঁঠাই জগতকে ভৌতিক রূপ দান করেছে। ক্ষিতী, অপ, তেজ, মরূৎ ও ব্যোম হল এই প্রকৃতি-পুরুষের সম্মিলিত রূপ। আর প্রকৃতি অর্থাৎ শক্তিকে আমরা নারীরূপে কল্পনা করি। তাই দেবী সরস্বতীর নারীরূপ।

পরবর্তিতে এই দেবী সরস্বতী হতেই অন্যান্য দেবীর উৎপত্তি। পুস্পাঞ্জলি মন্ত্রেও তাই দেবীকে ভদ্রকালী বলা হয়েছে। 

নমঃভদ্রকাল্যৈ নমো নিত্যং সরস্বত্যৈ নমো নমঃ।
মা কালীর গলায় পঞ্চাশটি নরমুণ্ড আসলে পঞ্চাশটি বর্ণের প্রতীক। মা তো বাগেশ্বরী। তাই ঋকমন্ত্রে মাকে বাক রূপে ঘোষণা করা হয়েছে। অপরদিকে তান্ত্রিক দেবী তারা তো আসলে নীলসরস্বতী। নিরুক্তকার যাস্ক আবার দেবী সরস্বতীকে নদী বলে উল্লেখ করেছেন। যা সরস্বতী সভ্যতার ভিত্তি। ‘তত্র সরস্বতী ইতি এতস্য নদীবদ্বেতাবচ্চ নিগমা ভবন্তি।’ স্কন্দপুরাণের প্রভাসখণ্ডেও যাস্কের মতের সমর্থন দেখা যায়। আবার মোহদুষ্ট শুম্ভকে অদ্বৈত জ্ঞান দান করেছিলেন। 'একৈবাহং জগত্যত্র দ্বিতীয়াকা মমাপরা'।

দেবী সরস্বতী কিন্তু আবার যে সে নদী নন।  দেহের মধ্যে প্রবহমান গঙ্গা যমুনা ও সরস্বতীর অন্যতমা। অর্থাৎ তিনিই জ্ঞানরূপিনী সুমুম্না। 

একজন প্রশ্ন তুলেছেন পুষ্পাঞ্জলি মন্ত্রে 'কুচযুগশোভিত মুক্তাহারে' শব্দবন্ধ নিয়ে। মহাকবি কালীদাসের এই সরস্বতী স্তবের ভুল কপিপেষ্ট হয়েছে এখানে। কুচ নয় শব্দটি কুর্চ হবে। কুর্চ মানে মধ্যমা ও অঙ্গুষ্ঠের অগ্রভাগের স্পর্শস্থল। সরস্বতীর ছবি লক্ষ্য করুন ঠিক মধ্যমা ও অঙ্গুষ্ঠের স্পর্শস্থলেই মুক্তোর হার আছে। জপমালা। 
সুতরাং এটা পরিস্কার যে স্রষ্টা সত্ত্বার নারীরূপই হলেন দেবী সরস্বতী । তিনি না কারোর স্ত্রী না কারোর কন্যা। 

আবার প্রাচীন কালে রাজাকে বলা হত প্রজাপতি আর সভা ও সমিতিকে তার কন্যা বলা হত। অর্থাৎ রূপক। তাই কোথাও কন্যা বা স্ত্রী বলা হলেও তা রূপকার্থে হতে পারে। ( ঋগ্বেদ ১০/৬১/৭) 
শতপথ ব্রাহ্মণে দেবী সরস্বতীকে বাক বাণী ( 7/5/1/31), জিহ্বা ( 7/9/1/14), বাণী রশ্মি পৃথিবী ইন্দ্রিয় (2/5/1/11) বলা হয়েছে। তাই আবার প্রমাণিত যে দেবী সরস্বতী কারোর কন্যা বা স্ত্রী নন। 

দেবী সরস্বতীর সাথে ব্রহ্মা ও মনুর যৌনতা নিয়ে গল্প ফেঁদেছেন এক দেববিদ্বেষী। তিনি জানেনই না যে একমাত্র ব্রহ্মচারীরই অধিকার সরস্বতী মন্দিরে প্রবেশ করার। সুতরাং এসব গালগল্পের কোনও মান্যতা নেই। হ্যাঁ, কিছু নকল পুরাণে প্রক্ষিপ্ত শ্লোক দিয়ে এসব প্রমাণ করার চেষ্টাও হয়েছে যার কোনও অথেনটিকেশন নেই। মনে রাখবেন পুরাণে বহুবার উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে প্রক্ষেপন হয়েছে। তাই কিছু বলার আগে রেফারেন্স সহ দেবেন যেটা অনুসন্ধান করে বোঝা যাবে যে আপনি ঠিক না ভুল পথে চলেছেন। 

তবে রূপকার্থে ধরলে দেহস্থ সুমুম্না রূপিনী সরস্বতী মিলিত হয়েছেন ব্রহ্মরূপ সহস্রার সঙ্গে। আর যোগী তার ব্রহ্মবস্তুকে সুমুম্না সরস্বতী পথে সহস্রায় স্থাপন করলেই এই জন্ম জন্মান্তরের চক্র হতে মুক্তি ঘটে। তাই স্ত্রী বলা অন্যায় নয়। অপরদিকে সহস্রার হতেই সুমুম্না সরস্বতীর শুরু বলে কন্যা রূপকও অর্থহীন নয়। 

লক্ষ কোটি বছরেরও আগে-
ছিল যবে সব নিরাকার, মহাশূন্য মহাঅন্তহীন, 
সেথা কোন বৈষম্যের বশে পলকেরও ভগ্নাংশ সময়ে
ভীষণ প্রণবনাদে হল বিস্ফোরণ। 
সেই সে প্রণব হল তোমার প্রথম প্রকাশ, 
আদিপরাশক্তি শব্দব্রহ্ম বাগ-বাগীশ্বরী।
তোমার বীণার সুরে সৃষ্টি হয় গ্রহ নিহারিকা, 
তোমার বীণার সুরে সুপারনোভা ঘটে বারবার, 
জন্ম-মৃত্যু-জীবনের সুরের লহরী।
গায়ত্রীর চব্বিশ চরণে প্রাতঃ-সন্ধ্যা-মধ্যাহ্নে তোমার গমন, 
সবিতা তুমি প্রসবিছ জগৎ সংসার। 
হে বরদে ! তোমারর কুর্চমূলে যে মুকুতা হার
সে হারে জপিছ সদা সময়ের কাষ্ঠা-দন্ড-পল, 
গণিছ সৃষ্টি-স্থিতি ভীষণ সংহার। 
কি সাধ্য আমার দেবী গাহি তব মহিমা অপার, 
জগৎসার মাঝে ধূলিকণা আমি। 
নিন্দুকের কিবা সাধ্য ধরে তব দোষ, 
সমুদ্রের জলকণা সমুদ্রেরে করি পরিহাস 
নিজেরেই পরিহাসে জানি। 
শ্রী তুমি, তুমি বাণী, তুমি মাগো গুণের আকর, 
শ্বেতকমলের পরে মরালবাহিনী, 
তব নাম মুখরিত হোক সামগানে, 
ঋকমন্ত্রে ঘোষিত  হোক তোমার কাহিনী।

সবশেষে বলি মা সরস্বতী জ্ঞানের দেবী । তার আশীর্বাদের আলোকে মনের মলিনতা দূর হয়ে যাক।