শনিবার, ১২ জানুয়ারী, ২০১৯

Vivekananda bengali poem


 বিবেকানন্দ 

অনেক যুগ আগে সমাজের প্রপঞ্চ আর বিদেশীর শাসনযন্ত্রে যখন শৃঙ্খলিত দেশ
তখন এসেছিলে তুমি, - জাগিয়েছিলে ঘুমন্ত স্বদেশকে। তুমি ছিলে অগ্নিযুগের অগ্নিপুরুষ। 
হে বীর সন্নাসী বিবেকানন্দ তোমায় প্রনাম। 

তুমি এসেছিলে হে মহামানব লয়ে জীবনের সার
তোমার দীপ্ত চাহনিতে ছিল দেশের অহঙ্কার।
বেদের মন্ত্র ভুলেছিনু সবে তুমি পড়িয়েছ মনে
তাই আজ সবে উঠে দাঁড়িয়েছি, প্রাপ্য নিয়েছি গুনে।
তুমি বলেছিলে হাঁড়ি মুচি ডোম ব্রাহ্মণ চণ্ডাল
ভাই সব মোর; - আমরা সবাই দিয়েছিনু গালাগাল।
তুমি হেঁসেছিলে, তখন বুঝিনি তোমার কথার মানে ;
আজকে বুঝেছি যখন আমরা জীর্ণ বিভেদ বাণে।
এ দীর্ণ দেশে হে মহামানব তোমারেই প্রয়োজন
তব আদর্শে এ ভারত হোক যৌবন উপবন,
- বার্ধক্যের হোক বারাণসী, শৈশব শিশুশয্যা।
তব আদর্শে মুছেছি আমরা কাপুরুষতার লজ্জ্বা।
হীন লোভ আর কূটিলাবর্তে লাঞ্ছিত দেশবাসী
তব বাণী আজ পারে গো ফেরাতে দূর্ভাগাদের হাঁসি।
বীর সন্নাসী লহ গো প্রনাম, কর গো আশীর্বাদ
এ ভারত যেন পায় পুনরায় নব জীবনের স্বাদ।

মঙ্গলবার, ১ জানুয়ারী, ২০১৯

Bengali Brahmin

বাঙালি ব্রাহ্মণ
(দেখুন - সূচিপত্র
আনুমানিক 328 খ্রীষ্টপূর্বাব্দে রাজা বসুমিত্র শুঙ্গ দক্ষিণ ভারত হতে কৌণ্ডিন্য, উপমন্যূ, বাৎস্য,শাণ্ডিল্য, গর্গ, হারীত,গৌতম, ভরদ্বাজ, কাশ্যপ,সাবর্ণ, ও পরাশর গোত্রের ব্রাহ্মণ আনেন যারা ঋগ্বেদের অশ্বলায়ন শাখাভূক্ত ছিলেন। রাঢ়ের সপ্তশতি ব্রাহ্মণরা ছিলেন সাতটি গোত্রের যথা শৌণক, গৌতম, কৌণ্ডিন্য, পরাশর, বশিষ্ঠ, হারীত, কৌৎস্য । আর বারেন্দ্র সপ্তশতি ব্রাহ্মণেরা পাঁচ গোত্রের।
ব্রাহ্মণদের বংশপঞ্জীকে বলা হয় কুলজী বা কুলপঞ্জীকা। তথ্য অনুযায়ী রাজা আদিশূর কান্যকূব্জের রাজাকে কিছু বেদজ্ঞ ব্রাহ্মণ বাংলায় পাঠানোর অনুরোধ করেন। কান্যকূব্জের রাজা তা মেনে নেননি। তখন রাজা আদিশূর ষাঁড়ে আরোহীত সাতশত ব্রাহ্মণকে একাজের জন্যে কান্যকূব্জ পাঠান। কান্যকূব্জরাজ বাধ্য হয়ে পাঁচ জন ব্রাহ্মণকে বাংলায় পাঠান রাজা আদিশূরের পুত্রেষ্ঠি যজ্ঞের জন্য। যজ্ঞ হয়েছিল ইংলিশবাজার হতে সাত কিমি দূরে ধূমদীঘি বা হোমদীঘি গ্রামে। যজ্ঞের সময় প্রচুর ধোঁয়া উঠেছিল বলে এমন নাম। কনৌজের রাজা ছিলেন রাজা আদিশূর বা জয়ন্তর শ্বশুর “চন্দ্রদেব”। আর পূর্বাদ্ধ কোলাঞ্চের রাজা ছিলেন “চন্দ্রদেবের” ভাই “বীরসিংহ”। এই বীরসিংহের রাজ্য কোলাঞ্চ থেকে ৫ জন ব্রাহ্মণ সস্ত্রীক এসেছিলেন বাংলায় । এইব্রাহ্মণরা হলেন কুলীন ব্রাহ্মণ ও ষাঁড়ে চড়ে যাওয়া সাতশত ব্রাহ্মণ সপ্তশতী ব্রাহ্মণ নামে পরিচিত হন।
আদিশূরের অস্তিত্বের ঐতিহাসিক প্রমাণাভাব থাকলেও পাঁচজন ব্রাহ্মণের নাম জানতে পারি। তারা হলেন - রাঢ়মতে
ভট্টনারায়ণ ( শাণ্ডিল্য ) ,দক্ষ (কাশ্যপ) , শ্রীহর্ষ (ভরদ্বাজ) , বেদগর্ভ (সাবর্ণ) ও ছান্দোড় (বাৎসব) ।
 বারেন্দ্র মতে
ক্ষিতিশ ( শাণ্ডিল্য), তিথিমেধা/ মেধাতিথি (ভরদ্বাজ), বীতরাগভয়ক্রোধঃ ( কাশ্যপ), সুধানিধি ( বাৎসব ), সৌভরি ( সাবর্ণ ) । অন্যমতে নারায়ণ, সুষেন, ধরাধর, গৌতম ও পরাশর ।
সেই সময় ব্রাহ্মণদের সেলাই করা কাপড় পরা ,  চামড়ার জুতো পরা , পান খাওয়া , অশ্ব বা অশ্বেতর পশুর উপর চড়া । এবার, আদিশূর চরমুখে খবর পেলেন যে, পাঁচজন ব্রাহ্মণ যাঁরা আসছেন, তাঁরা ফতুয়ার মত জামা পরে, ঘোড়ার ওপর চড়ে, পান চিবোতে চিবোতে আসছেন। আদিশূরের মনটা খারাপ হয়ে গেল। তিনি ভাবলেন, এ কাদের আমি আনলাম? এরা তো ব্রাহ্মণ্যধর্মের কিছুই মানে না! তাই মন্ত্রীদের নির্দ্দেশ দিলেন যে, পাঁচজন ব্রাহ্মণ এলে, তাঁদের অতিথি শালায় যেন রাখা হয়। রাজা সময়মত তাঁদের সাথে দেখা করবেন।
ব্রাহ্মণরা রাজবাড়ীর দুয়ারে এসে এই খবরটা পেলেন। রাজাকে আশীর্বাদ করার জন্য তাঁদের হাতের মুঠিতে জল ছিল। রাজা সেই সময় দেখা করবেন না দেখে তাঁরা আশীর্বাদ করার জন্য জল ফেলে দিলেন। জল গিয়ে পড়ল এক শুকনো গাছের ওপর। সঙ্গে সঙ্গে সেই শুকনো গাছ জীবিত হয়ে উঠল। এই চমৎকার ঘটনার কথা শুনে আদিশূর সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের সাথে দেখা করলেন।
আহার ও ব্যবহার :-
কাশ্মীরী পন্ডিত ও মৈথিলি ব্রাহ্মমণদের মতোই বাঙালি ব্রাহ্মণরা আমিষভোজী। মনু, যিনি হিন্দুদের আইনের সর্বোচ্চ গ্রন্থ মনুসংহিতার রচিয়তা, তার মতে ব্রাহ্মণদের যজ্ঞে পশু ও পক্ষী বলি ও মাংসভক্ষন অবশ্য কর্তব্য। এই কাজ পূর্বে অগস্ত্য করেছিলেন। 2  
বৃহদদ্ধর্ম পুরাণ অনুসারে রোহিত বা রুইমাছ, শফরী বা পুঁটিমাছ, শকুলা বা শোলমাছ ইত্যাদি সাদা ও আঁশযুক্ত মাছ ব্রাহ্মণদের ভক্ষ্য। যে সমস্ত মাছ গর্ত বা কাদায় ঢুকে থাকে, যাদের মাথা সাপের মতো ও কুৎসিত সেই সমস্ত মাছ ব্রাহ্মণদের অভক্ষ্য। শামুক, কাঁকড়া, বক, হাঁস, মুরগি, চটকা, উট, গরু হিন্দুমাত্রেই অভক্ষ্য । যদিও বর্তমানে শামুক, কাঁকড়া, হাঁস, মুরগি এগুলি হিন্দুদের মধ্যে নিষিদ্ধ নয়। স্মার্তকার জীমূতবাহন ইলিশমাছের তেলের প্রশংসা করেছেন।
আবার যাজ্ঞবল্ক্য সংহিতার আছে, - 
মৎস্যচ্ মৎস্যেষ্বপি হি সিংহতুণ্ডক রোহিতাঃ।
তথা পাঠীন রাজীবস শল্কাশ্চ দ্বিজাতিভিঃ।। 
                     - যাজ্ঞবল্ক্য সংহিতা ১/১৭৭-১৭৮

অর্থাৎ, সিংহের মুখের মতো মুখ যে সকল মাছের  যেমন - রোহিত বা রুই মাছ, পাঠীন অর্থাৎ বোয়াল মাছ, রাজীব অর্থাৎ যে মাছের গায়ে ডোরাকাটা দাগ আছে এবং শল্কযুক্ত মাছ দ্বিজগণের ভক্ষ্য।।

প্রাণাত্যয়ে তথা শ্রাদ্ধে প্রোক্ষিতং দ্বিজকাম্যয়া।
দেবান্ পিতৃন সমভ্যর্চ্চ্য খাদক মাংসং ন দোষভাজ্।।
                               - যাজ্ঞবল্ক্য সংহিতা১/১৭৯

অর্থাৎ, শ্রাদ্ধে নিমন্ত্রিত হয়ে,প্রোক্ষিত ( যজ্ঞাদি পশুর হুতা মাংস,) এবং ব্রাহ্মণ, দেব বা পিতৃগণ কে অর্পণ করে  অবশিষ্ট মাংস ভোজন করলে তাতে দোষ হয় না।

মদ্যপান :-
ব্রাহ্মণদের মদ্যপান কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। অসুরেরা বৃহস্পতি পুত্র কচকে পুড়িয়ে মদের সাথে মিশিয়ে শুক্রাচার্য্যকে পান করতে দেন। শুক্রাচার্য্য এই ঘটনায় মর্মাহত হয়ে মদ্যকে শাপ দেন।
        যো ব্রাহ্মণো অদ্য প্রভৃতীহ কশ্চিন্মোহাত্সুরাং পাস্যতি মন্দবুদ্ধিঃ।
অপেতধর্মো ব্রহ্মহা চৈব স্বাদস্মিঁল্লোকে গর্হিতঃ স্যাত্পরে চ ।।
         অর্থাৎ, যে ব্রাহ্মণ আজ হতে সুরাপান করবে সেই মন্দবুদ্ধির সব ধর্ম নাশ হবে ও সে ব্রহ্ম হত্যার পাপে পাতকী হবে।
বাঙালি ব্রাহ্মণদের গোত্র ও বেদ
১। ঋগ্বেদ ( অশ্বলায়ন শাখা ) = ভার্গব, সঙ্কৃত, গর্গ (চন্দ্র), ভৃগু, শৌণক ।
২। সামবেদ ( কৈথুম শাখা ) = কশ্যপ , কাশ্যপ, বাৎস্য, শাণ্ডিল্য, ধনঞ্জয় ।
৩। যজুর্বেদ ( শুক্লযজুর্বেদ বা বাজস্বেণী র মাধ্যানন্দিন শাখা ) = ভরদ্বাজ, আঙ্গিরস, গৌতম, উপমন্যূ ।
৪। অথর্ববেদ ( পিপহ্লাদ শাখা 1) = কৌশিক, ঘৃতকৌশিক, মৌদ্গল্য, গালব, বশিষ্ঠ ।
৫। বাকিরা যজুর্বেদের অন্তর্ভুক্ত।
প্রাচীন তাম্রশাসন হতে জানা যায় যে অধিকাংশ দান প্রদান করা হত সামবেদ ও যজুর্বেদ ব্রাহ্মণদের। নিচে ব্রাহ্মণ ও সংশ্লিষ্ট বেদ ও তৎসংশ্লিষ্ট উপাধি দেওয়া হল।
ঋগ্বেদ = গাঙ্গুলি
সামবেদ = চ্যাটার্জি, মৈত্র, ঘোষাল, স্যান্যাল, ব্যানার্জি, লাহিড়ী, বাগচী।
যজুর্বেদ =  মুখার্জি।

রাজা আদিশূর পঞ্চব্রাহ্মণের গোত্র, সন্তান, পদবী ও বসবাস করার জন্য যে জায়গাগুলোর  বিবরন নীচে দেওয়া হল :-
এদের প্রত্যেক সন্তানকে রাজা বসবাসের জন্য গ্রাম দান করেছিলেন। এই সন্তানরা পরষ্পর অমুকগ্রামীন বা অমুকগাঁই হিসেবে পরিচিত হন। পরে এটাই “পদবী” বলে পরিচিত হয়।এর পরে কর্ম ও জীবিকা অনুসারে “উপাধি”র প্রচলন হয়।
ক্ষিতিশ /ভট্টনারায়ণ -
পিতা-অজ্ঞাত । জমিদারী- পঞ্চকোট, মানভূম (এখনকার পুরুলিয়া)।  তীর্থাবাস এবং চতুষ্পাঠী স্থাপন করেন: কালীঘাটে।
 পুত্র ১৬জন (অমুকগ্রামীন বা অমুকগাঁই হিসেবে),গোত্র:- শাণ্ডিল্য।
বন্দ্য/বাড়ুরী(বন্দোপাধ্যায়),কুসুম,দীর্ঘাঙ্গী,ঘোষলী, বটব্যাল, পারিহা, কুলকুলি, কুশারী,কুলভি,সেয়ক, গড়গড়ি, আকাশ, কেশরী,লাহিড়ী, বাগচী,  মাষচটক, বসুয়ারী,করাল।

বীতরাগ/দক্ষ - 
পিতা- রত্নাকর। জমিদারী- কামকোটি, বীরভূম। নিজে তীর্থাবাস এবং চতুষ্পাঠী স্থাপন করেন: ভতিপুর, মালদহ।
পুত্র ১৬জন (অমুকগ্রামীন বা অমুকগাঁই হিসেবে),গোত্র:-কাশ্যপ।
চট্ট(চট্টোপাধ্যায়),চট্টরাজচ, মৈত্র,  অম্বুলি, তৈলবাটী, পলসায়ী, পীতমুণ্ডি, পোড়ারী,হড়, গূঢ়, ভুরিষ্ঠাল, পালধি, পাকড়াসী, পূষলী, মূলগ্রামী, কোয়ারী, সিমলাই/সিমলায়ী, ভট্ট।

সুধানিধি/ছান্দোড় -
পিতা-উষাপতি । জমিদারী- হরিকোটি, মেদিনীপুর। নিজে তীর্থাবাস এবং চতুষ্পাঠী স্থাপন করেন: ত্রিবেণী।
পুত্র ৮জন (অমুকগ্রামীন বা অমুকগাঁই হিসেবে),গোত্র:-বাৎসব।
কাঞ্জিলাল, মহিন্তা, পতিতুণ্ড/পইতুণ্ডি, পিপলাই, ঘোষাল, বাপুলি, কাজ্ঞারী,শিমলাল/শিমলাই।

তিথিমেধা/ মেধাতিথি//শ্রীহর্ষ - 
পিতা- দিণ্ডি । জমিদারী- কঙ্কগ্রাম, বাঁকুড়া। নিজে তীর্থাবাস এবং চতুষ্পাঠী স্থাপন করেন:অগ্রদ্বীপ, বাঁকুড়া।
পুত্র ৪জন (অমুকগ্রামীন বা অমুকগাঁই হিসেবে),গোত্র:-ভরদ্বাজ।
মুখুটি(মুখোপাধ্যায়), ডিংসাই, সাহরী, রাই।

সৌভরি/বেদগর্ভ -
পিতা- শ্রীমান প্রিয়ঙ্কর । জমিদারী- বটগ্রাম, বর্ধমান। নিজে তীর্থাবাস এবং চতুষ্পাঠী স্থাপন করেন: গুপ্তিপাড়া, হুগলী।
পুত্র ১২জন (অমুকগ্রামীন বা অমুকগাঁই হিসেবে),গোত্র:- সাবর্ণ।
গংগুরী(গঙ্গোপাধ্যায়),সান্যাল,  পুংসিক, নন্দিগ্রামী, ঘন্টেশ্বরী, দায়ী, নায়েরী, পারিহাল, বালিয়া, সিদ্ধল,কুন্দগ্রামী,সিয়ারী,সাটেশ্বরী ।
কিছু বিখ্যাত বাঙালি ব্রাহ্মণ :
ধর্ম :-
আচার্য্য ভদ্রবাহু , শ্রীজ্ঞান অতীস দীপঙ্কর ( বৌদ্ধ ),অদ্বৈত আচার্য, শ্রীবাস ঠাকুর, শ্রীরুপ গোস্বামী, সনাতন গোস্বামী, শ্রীজীব গোস্বামী, শ্রী চৈতন্য দেব, নিত্যানন্দ মহাপ্রভূ, রাজা রামমোহন রায়, কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশ, শ্রীরামকৃষ্ণ পরম হংস দেব, সারদা দেবী, বামাখ্যাপা, বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামী, বাবা লোকনাথ,দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর,শিবনাথ শাস্ত্রি, লাহিড়ী মহাশয়, নিগমানন্দ , অনুকূল ঠাকুর,
জ্ঞান বিজ্ঞান :-
শ্রীধর ( গণিতজ্ঞ ), রঘুনাথ শিরোমণি ( ন্যায়াচার্য্য ), রামতনু লাহিড়ী, কিশোরীমোহন গাঙ্গুলি, ঈশ্বরচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়, হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় (সাংবাদিক  ),
লেখক ও কবি :-
জয়দেব গোস্বামী, দ্বিজ চন্ডী দাস,রায়গুণাকর ভারতচন্দ্র রায়, মুকুন্দরাম চক্রবর্তী, ঘনরাম চক্রবর্তী, কৃত্তিবাস ওঝা, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, আবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর, ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায়, তারাশঙ্কর বন্দোপাধ্যায়, বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়, জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর, নীহাররঞ্জন রায়, লিলা মজুমদার, ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায়,শক্তিপদ রাজগুরু, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, সুকান্ত ভট্টাচার্য্য,মাণিক বন্দ্যোপাধ্যায়, শরদীন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়, শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, শিবরাম চক্রবর্তী, মহাশ্বেতা দেবী, শক্তি চট্টোপাধ্যায়, নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, সুভাষ মুখোপাধ্যায়, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, সুচিত্রা ভট্টাচার্য, কুমুদরঞ্জন মল্লিক, স্বপ্নময় চক্রবর্তী, কালিদাস রায়, প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়,
অভিনেতা :-
উত্তমকুমার, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, মাধবী চট্টোপাধ্যায়,প্রদীপ কুমার, তরুণ কুমার, পাহাড়ী সান্যাল, প্রসেনজিৎ, চিরঞ্জীৎ, অভিষেক চট্টোপাধ্যায়, সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়, দেব, ভিক্টর ব্যানার্জি,
গায়ক :-
হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়, শ্রীকান্ত আচার্য্য, কিশোর কুমার, শ্রেয়া ঘোষাল, অনুপ ঘোষাল, অজয় চক্রবর্তী, সতীনাথ মুখোপাধ্যায়, দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়, কুমার শানু, অভিজিৎ ভট্টাচার্য, বাপী লাহিড়ী, মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়,
রাজনীতি :-
জৈন আচার্য্য ভদ্রবাহুর মতে রাজা চন্দ্রগুপ্ত বাঙালি পৌণ্ড্র ব্রাহ্মণ ছিলেন।
ঊমেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় ( সভাপতি, ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস ), প্রণব মুখোপাধ্যায়, (রাষ্ট্রপতি), বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ( মুখ্যমন্ত্রী, পশ্চিমবঙ্গ ), মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ( মুখ্যমন্ত্রী, পশ্চিমবঙ্গ ), শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় (প্রতিষ্ঠাতা, বিজেপি ), সুব্রত মুখোপাধ্যায় (TMC ), মুকুল রায় (বিজেপি  ), শোভন চট্টোপাধ্যায় (প্রাক্তন মহানাগরীক, কলকাতা ), বিকাশ ভট্টাচার্য (প্রাক্তন মহানাগরীক, কলকাতা ), সুরন্দ্রনাথ ব্যানার্জি ( ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস ),
খেলোয়াড় :-
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ( ক্রিকেটার) , দিব্যেন্দু বড়ুয়া (দাবা ),

=========================
পাদটীকা:-
1. আগে থাকলেও বর্তমানে বাংলায় ঋগ্বৈদিক ব্রাহ্মণ নেই। 
2. মনুসংহিতা (5:22) ও (5:23)। 


রবিবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৮

Shiva stotram by UMAR-BIN-E-HASNAN



নবী হযরত মহম্মদ এর কাকা 'উমর-বিন-এ-হাসনাম' কৃত শিব স্তুতি ।

আরব অঞ্চলে যে সনাতন ধর্মের অস্তিত্ব ছিল তা I প্রমাণে আজ আর কষ্ট করতে হয় না। মক্কার কাবাতে রাজা বিক্রমাদিত্যের উৎকীর্ণ ফলক ছিল। শিব ভক্ত রাজা বিক্রমাদিত্যের ফলক স্বভাবতই শিবলিঙ্গের কাছই উৎকীর্ণ হবে। এখন এমন একটি কবিতা আপনাদের শোনাবো যেটি ভগবান শিবের উদ্দেশ্য রচিত। আর রচিয়তা স্বয়ং নবী হযরত মহম্মদ এর কাক 'উমর-বিন-এ-হাসনাম'। ইনি ছিলেন সেই সময়কার আরবের একজন বিখ্যাত কবি। আর তিনি ছিলেন 'কোরায়েশ' বংশীয় ও 'কাবা' র একজন পুরোহিত।

শিবস্তুতি :

কাফায়োমাল ফিকরা মিন উলুমিন তাব আসাইরু
কালউয়ান আমাতাউল হাওয়া ওয়াজ তাজাখরু
উই তাজাখাঈরোবা উডান  কালালওয়াদে-এ লিবোওয়া
ওয়ালুকায়ইয়ানাই যাতাল্লি, হ্যায় ইয়উমা তাব আসাইরু
ওয়া আবালোলহা আযাবু আরমীমান' মহাদেব'
মনোজেইল ইলামুদ্দিন মিনহুম ওয়া সাইয়াত্তারু
ওয়া সাহাবী কাই-আম ফিমা-কামিল মিনডে ইয়ায়ুমান
ওয়া ইয়াকুলুম ন লাতাবাহান ফৈনাক তওজ্জারু
মাসসায়ারাই আখলাকান হাসনান কুল্লাহুম
নাজুমুম আজা-আট সুম্মাগাবুল হিন্দু।

বাংলা তর্জমা ( তর্জমা : সুব্রত মজুমদার) :-

 যেলোক কাটায় তাহার জীবন পাপের পঙ্কতলে
ব্যাভিচার আর নাস্তিককতায় জীবন যে জন পালে
করে আফসোস যদি সে ফিরিয়া আসে
নীতিবান সে বাঁচে কোন আশ্বাসে ?
যদি সেই জন হয়ে একমন পূজে শ্রী মহাদেবে
বিমলচিত্ত সেইজন লভে আত্মীয় সম্পদে।
হে শিব মোর লও এ জীবন তবু দিনেকের তরে
পাঠিয়ো 'হিন্দে' যেথা বেদবান তপের সাগরে ফিরে।
সেথায় তীর্থে বেদবান সনে সখ্যে ও সংলাপে
হব সমৃদ্ধ, ভরিবে হৃদয় তপে ।

শুক্রবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৮

Srimoti sanbad - poem

শ্রীমতী সংবাদ
সুব্রত মজুমদার 

[[ একদিন নির্জন আরব সাগরের তীরে চঞ্চল কৃষ্ণ পদচারণা করছেন। হঠাৎ শুনতে পেলেন এক পরিচিত স্বর। কে  ? এ কি.. শ্রীমতী ! রাধা প্রশ্নবাণে জর্জরিত করে তুললেন কৃষ্ণকে। ঘটনা সম্পূর্ণ কাল্পনিক। স্থান, কাল ও ব্যক্তি বা ধর্মীয় ঘটনার সাথে এর কোন সম্পর্ক নেই। থাকলে তা নেহাত কাকতালীয়। ]
ভালো আছো জানি প্রীয় অন্যকারো সাথে, অন্য কারো হাত রেখে হাতে ;
মোদের বিরহ ব্যাথা তোমাকে কাঁদায়, - - হয়তো কোন নিঃসঙ্গ নিশীথে।
আমি কাঁদি নাকো। কেন জানো ? আমার হৃদয়জুড়ে আছো তুমি হে দ্বারকাধীশ ;
তব স্মৃতি হিয়া জুড়ে তাই, - বিরহ বেদন মাঝে সুখের হরিষ।
ভয় করে, তোমার পরশ যদি হৃৎপিণ্ডের বদ্ধ কোষ্ঠ হতে আবেগ আকারে
ঝরে পড়ে নয়নের অশ্রুধারা হয়ে ! বল বন্ধু তখন কি করে
বেঁচে রবে কলঙ্কিনী  ? জানি প্রীয় জানি জানি উত্তরের বৃথাই প্রত্যাশা।
কি করে জানবে তুমি জননীর স্নেহ আর দয়ীতার মৌন ভালোবাসা ?
তুমিও কি সুখে আছ  - - রাজছত্র ঢাকেনাই মোহনচূড়া তব  ? যে অঙ্গুলি
বাজাতো বাঁশরী, - উছলিত যমুনার ধারা, ফিরিত গৃহে গাভীবৎসগুলি;--
সে অঙুলে সুদর্শনচক্র ধরো আজ। যে আঙুল ধরেছিল গিরিগোবর্ধন
রেখেছিল গোপগণে নিশ্চিন্ত আশ্রয়ে, সে আঙুল নেয় আজ প্রাণ।
যে গোপবালক যমুনার স্বাদুজল পান করে নিবারিত তৃষা
সে আজ হেমদণ্ড ধরে সমুদ্রের খরজলে হারিয়েছে দিশা।
বৃষ্ণীরাজ ! ভুলে যাই মাঝে মাঝে কোনো দিন আপন ছিলে তুমি,
তোমার বাঁশির তাণে চঞ্চলিত হৃদয় আমার। প্রেমহীন রূক্ষ মরুভূমি
যেথা নাই সামান্য আর্দ্র্যতা, আছে শুধু ন্যায়-নীতি-কূটনীতির জঘন্য প্রলাপ,
সে হৃদয় নিয়ে কেন বাঁচো ? কেনো জগন্নাথ, এত ঘোর পাপ  ?
যে রথের তুমিই সারথি সে রথের হতে ভীমবাণ ছিন্ন করে নিরীহ বৃষ্ণীরে ?
ভালো থেকো প্রীয়তম, নির্জন তরঙ্গময় সমুদ্রের বেলাভূমি পরে
এ সাক্ষাৎ মুছে যাবে ইতিহাস হতে। দ্বৈপায়ণ ব্যাস কৃপণতা বশে
এই জীর্ণ পাতা ভরাবেনা কালির আঁচরে। হয়তো কোন দেশে
হয়তো কোন কালে আবার তোমার হব। তোমার অপেক্ষায়...
বিদায় প্রিয়.... বিদায়....।

বুধবার, ২১ নভেম্বর, ২০১৮

Guru bandana




(  শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবের শিষ্য শ্রী দেবেন্দ্রনাথ মজুমদার শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ দেবের উদ্দেশ্যে গানটি লেখেন।
ছন্দ - #তোটক
মাত্রা ৪|৪ |৪ ) 
রবি নন্দন বন্ধন খন্ডন হে।
শরনাগত কিঙ্কর ভীত মনে।
গুরুদেব দয়া কর দীন জনে।।
হৃদি কন্দর তামস ভাস্কর হে।
তুমি বিষ্ণু প্রজাপতি শঙ্কর হে।
পরব্রহ্ম পরাৎপর বেদ ভণে।
গুরুদেব দয়া কর দীনজনে।।
মন বারণ শাসন অঙ্কুশ হে।
নরত্রান তরে হরি চাক্ষুষ হে।
গুণগান পরায়ণ দেবগণে।
গুরুদেব দয়া কর দীন জনে।।
কুলকুণ্ডলিনী ঘুম ভঞ্জক হে।
হৃদিগ্রন্থি বিদারণ কারক হে
মম মানস চঞ্চল রাত্রি দিনে।।
গুরুদেব দয়া কর দীন জনে।।
রিপুসূদন মঙ্গলনায়ক হে।
সুখ শান্তি বরাভয় দায়ক হে।
ত্রয় তাপ হরে তব নাম গুনে।
গুরুদেব দয়া কর দীন জনে।।
অভিমান প্রভাব বিনাশক হে।
গতিহীন জনে তুমি রক্ষক হে।
চিত শঙ্কিত বঞ্চিত ভক্তি ধনে।
গুরুদেব দয়া কর দীন জনে।।
তব নাম সদা শুভ সাধক হে।
পতিতাধাম মানব পাবক হে।
মহিমা তব গোচর শুদ্ধমনে।
গুরুদেব দয়া কর দীন জনে।।
জয় সদ্গুরু ঈশ্বর প্রাপক হে।
ভব রোগ বিকার বিনাশক হে।
মন যেন রহে তব শ্রীচরণে।
গুরুদেব দয়া কর দীন জনে।।