শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী, ২০২০

Kailash parbat



    মহাতীর্থ কৈলাস

কৈলাস পর্বত হিন্দু, শিখ বৌদ্ধ, বন ও জৈনদের কাছে অতি পবিত্র একটা স্থান। হিন্দুদের ধর্মবিশ্বাস অনুসারে এটি ভগবান শিব ও দেবী পার্টিবতীর লীলাভূমি। জৈন্যদের মতে তাদের প্রথম তীর্থঙ্কর ঋষভদেব এই কৈলাসেই শান্তির খোঁজ পেয়েছিলেন। একে তারা অষ্টাপদও বলে থাকেন। বৌদ্ধমত অনুসারে কৈলাসের অধীশ্বর হলেন ডোমচেক বা চক্রসম্ভর ।

সংস্কৃত, বাংলা সহ সমস্ত ভারতীয় ভাষাতে এই পর্বতকে কৈলাস পর্বত  বলা হয়। ইংরেজীতে এই পর্বতকে বলা হয় Mount Kailasa । 6638 মিটার (21778 ফুট ) উঁচু এই পর্বত শৃঙ্গটিকে তিব্বতি ভাষায় གངས་རིན་པོ་ཆེ (গ্যাং রিম্পোচে), চিনা ভাষায় 冈仁波齐峰 বা =岡仁波齊峰 বলা হয়। এটি বর্তমানে চিনের স্বয়ংশাসিত অঞ্চল তিব্বতের অংশ। 
পুরাণ অনুযায়ী কৈলাস পর্বতের চারটি পাশ স্ফটিক, চুনি, সোনা এবং লাপিস লাজুলি দ্বারা গঠিত। 
লোকবিশ্বাস অনুসারে একমাত্র মিলারেপা ছাড়া কেউই কৈলাস শৃঙ্গে  চড়তে  পারেনি। যে এই পাহাড়ে ওঠার চেষ্টা করেছে, তাঁরই মৃত্যু হয়েছে। আর এটা নিয়ে অনেক কথাও প্রচলিত আছে। এটাও শোনা যায় যে, ১৯ এবং ২০ শতাব্দীতে কিছু পর্বতআরোহী এই পাহাড়ে চড়ার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু তাঁরা সবাই উধাও হয়ে গেছেন। চীন সরকার কৈলাস পর্বতে চড়া  নিষিদ্ধ করেছে। 
ক্তার কয়েক বছর আগে কৈলাস মান সরোবরের যাত্রা করেছিলেন। উনি এই যাত্রার পর দাবি করেছিলেন যে, কৈলাস পর্বতে বাস্তবেই একটি প্রাচীন পিরামিড আছে, আর সেই পিরামিড ছোট ছোট পিরামিড দিয়ে ঘেরা। এর সুত্র গিজা এবং মেক্সিকোর Teotihuacan পিরামিডের সাথে যুক্ত। পর্বতমালা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৬ হাজার ৭১৮ মিটার উঁচুতে কৈলাস প


রাশিয়ার নেত্ররোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ এর্নেস্ট মুলদাশেভকে (Ernst Muldashev )  সাইবেরিয়ার একদল পর্বতারোহীরা বলেছিলেন যে, কিছু পর্বতআরোহী কৈলাস পর্বতের একটি নির্দিষ্ট জায়গায় পৌঁছেছিল। আর তাঁর একবছর পর বৃদ্ধাবস্থার জন্য তাঁদের মৃত্যু হয়। 1999 সালে ডাঃ মুলদাশেভ একটি টিম নিয়ে তিব্বতে যান। ওনার টিমে  ভুবিজ্ঞানী, ঐতিহাসিক হতে শুরু করে প্যারানর্মাল অ্যাক্টিভিটি বিশেষজ্ঞরাও ছিলেন। পবিত্র কৈলাসের আশেপাশে অনেক মাস ধরে সময় কাটিয়ে 'Where do we come from' নামে একটি বই লেখেন।  সেখানে তিনি কৈলাস পর্বতের যাত্রার বিবরণ দেন। 
 বিখ্যাত রাশিয়ার চিত্রকার নিকোলায় রেরিখ এর বিশ্বাস অনুযায়ী, কৈলাসের আসেপাশে শাম্বালা নামের একটি রহস্যময়ি রাজ্য আছে। এই বক্তব্যকে ডাঃ মুলদাশেভ সমর্থন করেন। তিনি বলেন, বাস্তবে কৈলাস পর্বতে একটি মানব নির্মিত  সুপ্রাচীন  পিরামিড আছে।  উনি দাবি করেছিলেন যে, একটি বড় পিরামিডকে অনেক ছোট ছোট পিরামিড ঘিরে আছে আর সেখানে অলৌকিক ঘটনা ঘটে।
কৈলাস পাহাড়ের আর তাঁর আশেপাশের পরিবেশের উপর গবেষণা করা বৈজ্ঞানিক নিকোলাই রোমনভ আর ওনার টিম তিব্বতের মন্দিরের ধর্মগুরুদের সাথে সাক্ষাৎ করেন।  
সেখান থেকে ফেরার পর এর্নেস্ট মুলদাশিফ লেখেন, ‘রাতের নিশ্তব্দতায় পাহাড়ের ভিতর থেকে একটি আজব ফিসফিস এর শব্দ আসে। এক রাতে আমি আর আমার দুই সহযোগী পাথর পড়ার আওয়াজ পেয়েছি। আর এই আওয়াজ কৈলাস পর্বতের পেটের ভিতর থেকে আসছিল। আমারা ভেবেছিলাম যে, পিরামিডের ভিতরে অন্য কোন মানুষ আছে।”
উনি আরও লিখেছিলেন, ‘তিব্বতি গ্রন্থে লেখা আছে যে শাম্বালা একটি আধ্মাতিক দেশ, এটা কৈলাস পর্বতের উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত। বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোন দিয়ে এই বিষয়ে চর্চা করা আমার পক্ষে কঠিন। তবে আমি পরিস্কার ভাবে বলতে পারি, কৈলাস পর্বতের এলাকা সোজাসুজি পৃথিবীর জীবনের সাথে জড়িত। যখন আমরা তপস্যিদের রাজ্য তথা পিরামিড আর পাথরের দর্পণকে মিলিয়ে একটি যোজনাবদ্ধ নকশা বানাই, তখন আমরা সেটা দেখে হয়রান হয়ে যাই! কারণ সেই নকশা ডিএনএ এর অণুর স্থানিক সংরচনার নকশা ছিল।”



বৃহস্পতিবার, ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২০

বেদে সালোকসংশ্লেষের সপক্ষে প্রমাণ

বেদে সালোকসংশ্লেষ


ইহ ব্রবীতু য ঈমঙ্গ বেদাস্য বামস্য নিহিতং পদং বেঃ।
শীর্ষ্ণ ক্ষীরং দুহ্রতে গাবো অস্যবব্রিং বসানা উদকং পদাপুঃ।।  (ঋগ্বেদ মণ্ডল ১, সূক্ত১৬৪, মন্ত্র ৭)

অনুবাদ-হে মিত্র, যিনি  সর্বজ্ঞানী পরমাত্মা তিনিই বলতে পারেনএই রহস্য । পবিত্র আলোক যখন গাছের উপর পড়ে আর গাছ যখন তার পা দিয়ে(মূল) মাটি থেকে জল গ্রহন করে এবং এর মাধ্যমেই আমাদের উপর খাদ্য ও জীবন বর্ষিত হয়!


এই মন্ত্র হতে সালোকসংশ্লেষের দিকটি উঠে আসে।  আমরা  জানি উদ্ভিদ তার ক্লোরোপ্লাস্টের থাইলাকয়েডে অবস্থিত ক্লোরফিল দানাসমূহ সূর্যালোক থেকে ফোটনকণার আকারে শক্তি গ্রহন করে  মূলের সাহায্যে  জল ও খনিজলবণের মিশ্রণ গ্রহন করে। এরপর খাদ্য তৈরি করে ফোটনকণারুপী সৌরশক্তিকে সেই খাদ্যে আবদ্ধ করে।   প্রানীকুল সেই খাদ্য খেয়ে জীবনধারন করতে সক্ষম হয়। অপরদিকে এই মন্ত্রটিও বলছে যে উদ্ভিদ সূর্যালোক এবং মূলের সাহায্যে জল গ্রহন করে এবং এর মাধ্যমেই আমাদের উপর খাদ্য ও জীবন বর্ষিত হয়।



অপর একটি মন্ত্র যেখানে সালোকসংশ্লেষনের ইঙ্গিত পাওয়া যায়-

"... ত্বয়া মর্তাসঃ স্বদন্ত আসুতিং ত্বং গর্ভো বীরুধাং জনিষে শুচিঃ।।"
(ঋগ্বেদ ২.১.১৪)
অর্থাত্  হে অগ্নি(আলোকশক্তিরুপে) তুমি বৃক্ষসমূহের গর্ভরুপ শক্তি হয়ে প্রানীগনকে অন্নাদির আস্বাদ প্রাপ্ত কর।"




অর্থাত্ আলো উদ্ভিদের গর্ভে শক্তিরুপে খাদ্য উত্পন্ন করে প্রানীগনের খাদ্যের চাহিদা মেটায়!
বৈদিক এই মহাসত্যের বানী ছড়িয়ে দিন সকলের মাঝে।