শুক্রবার, ২৩ আগস্ট, ২০১৯

জন্মাষ্টমী



                          জন্মাষ্টমী

             ভগবান বিষ্ণুর অষ্টম অবতার ( জয়দেব অনুসারে ) ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মদিন জন্মাষ্টমী হিসাবে পালিত হয়। একে কৃষ্ণাষ্টমী, গোকুলাষ্টমী, অষ্টমী রোহিণী, শ্রীকৃষ্ণজয়ন্তী ইত্যাদি নামেও ডাকা হয় । হিন্দু পঞ্জিকা মতে, সৌর ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে যখন রোহিণী নক্ষত্রে জন্মাষ্টমী পালিত হয়।
শ্রীকৃষ্ণের অষ্টোত্তর শতনাম ( পড়তে ক্লিক করুন)
শ্রীকৃষ্ণের বংশাবলী
ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ক্ষত্রিয়ের যাদববংশে  ( বর্তমানে অবলুপ্ত ) গার্গ্য গোত্রে জন্মগ্রহণকরেন। তার পিতা ছিলেন বাসুদেব ও মাতা দেবকি।
         দ্বাপর এর শেষে অত্যাচারী রাজা কংসের প্রাদূর্ভাব ঘটে। কংস তার বোন দেবকীর সাথে যাদববংশেরই বসুদেবের সাথে বিবাহ দেন। বিবাহের পর দৈববাণী হয় যে বাসুদেব ও দেবকীর অষ্টম গর্ভের সন্তান কংসকে বধ করবেন। কংস তখন বাসুদেব ও দেবকীকে কারারুদ্ধ করেন। কারাগারেই দেবকীর  সন্তানদের একে একে হত্যা করেন কংস। সপ্তম  গর্ভের  সন্তানকে রোহিনীর গর্ভে স্থানান্তরিত করা হয়। জন্মনেন বলরাম। আর অষ্টম গর্ভে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্ম হয়।
         সে রাত্রে নারায়ণী মায়ায় কারাপ্রহরীরা সবাই অচেতন হয়ে যান, খুলে যায় কারাগৃহের তালা। বাসুদেব সদ্যোজাত কৃষ্ণকে নিয়ে চলে আসেন ব্রজে নন্দগৃহে। সেখানে শ্রীকৃষ্ণকে যশোদার কাছে রেখে নন্দ-যশোদার কণ্যারূপী মহামায়াকে নিয়ে আসেন মথুরায়। এই দিনটিই জন্মাষ্টমী নামে খ্যাত। পরের দিন ব্রজে শ্রীকৃষ্ণের আগমনে যে উৎসব হয় তা নন্দোৎসব নামে খ্যাত।
বাল্যাবস্থায় পুতনা, অকাসুর,বকাসুর, অঘাসুর প্রমুখ অসুরকে বধ করেন। গোচারণকালে কালিদহে বসবাসকারী দুষ্ট কালীয়নাগকে দমন করেন।
রাধা চরিত্রটির উল্লেখ কোনও প্রামাণ্য গ্রন্থে পাওয়া যায় না তাই রাধা নিয়ে সংশয় আছে। অন্যদিকে এগারো বছর কয়েক মাস বয়সে বৃন্দাবন ত্যাগ করেন। তাই এত অল্প বয়সে কৃষ্ণ রাধার প্রেমও সংশয়ের জন্ম দেয়।

         মাত্র বারো বছর  বয়সে কংসের আদেশে অক্রূর বৃন্দাবনে আসেন ধনুর্যজ্ঞে শ্রীকৃষ্ণকে আমন্ত্রণ জানাতে। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অক্রূরের সাথে  মথুরায় গমন করেন। সেখানে কংস ও চাণুরকে বধ করে কুব্জাকে রাণী করে মথুরার রাজা হন। পরে শূরসেন মথুরার রাজা হন ও ভগবান শ্রীকৃষ্ণ সন্দীপন মুনির কাছ যান শিক্ষালাভের জন্য।
তার প্রধান মহিষী তিনজন। রুক্মিনী, সত্যভামা ও জাম্ববতী। প্রদ্যুম্ন, শাম্ব সহ একাধিক পুত্র ও চারুমতি কণ্যা ছিল।

জরাসন্ধের আক্রমণের ভয়ে তিনি মথুরা ত্যাগ করে দ্বারকায় রাজ্যের সূচনা করেন। যুদ্ধে তিনি অর্জুনের রথের সারথি হন। এসময় অর্জুনকে দেওয়া তার উপদেশ শ্রীমদ্ভাগবত গীতা নামে খ্যাত।
গান্ধারীর শাপে ও শ্রীকৃষ্ণের পুত্রগণের অরাজকতায় যদুবংশ ধ্বংস হয়। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ জরা ব্যাধের তীরে দেহত্যাগ করেন।
অর্জুন শ্রীকৃষ্ণের পার্থিব দেহকে উদ্ধার করেন ও রামেশ্বরমে অগ্নিকার্য্য সম্পন্ন করেন। ণাভিটিকে সমুদ্রের জলে বিসর্জিত করেন। এরপর শ্রীকৃষ্ণের নাতি বজ্রণাভকে নিয়ে যান হস্তিনাপুরে। হস্তিনাপুরের রাজা হন বজ্রণাভ। বর্তমানে মথুরায় শ্রীকৃষ্ণের জন্মমন্দিরটি প্রথম নির্মাণ করান রাজা বজ্রণাভ।