আমার কালি
কালি বলতে তোমরা কি বোঝ জানি না, আমি বুঝি ছোট্ট ন্যাংটা মেয়ে
ঘুরে বেড়ায় আমার আশে পাশে ;- শাসন বারন কোনকিছুই মানে না।
ফাগুন মাসে কুল পেড়ে খায় বোশেখ মাসে লবণ মেখে আম
বার করে জিভ চাটে আমের আঁটি ; কালো বলে কালিই তো তার নাম।
যখন আমি আপনমনে লিখি পিছন হতে ছোট্ট দুটি হাত জড়িয়ে ধরে এসে;
'ছাড় নারে মা, এখন কত কাজ ;' - - বলি আমি তখন মুচকি হেসে।
খেলতে গিয়ে পাড়ার দুষ্ট ছেলে যখন তাকে দেয় কখনো গালি
মেয়ে আমার কেঁদে এসে পড়ে, কালো বরন হয় যে আরো কালি।
ধুলোমাখা কালোকেশে জট বেঁধে যায়, খুলে পড়ে যত্নে বাঁধা বেণী
আর যেই যা বলুক তারে সে তো আমার এই দু'চোখের মণি।
চলতে গিয়ে হোঁচট খেয়ে ঠোঁটদুখানি রক্তে ভিজে ওঠে
মেয়ের আমার তবুও মুখে হাসি, - - কালোয় যেন হাজার আলো ফোটে।
রুক্ষকেশে গুঁজে জবার কলি মেয়ে আমার কালি।
তাই তো তার দেখতে মুখের হাসি সমস্ত সুখ অক্লেশে দিই বলি।
এ কালি আজ সবার ঘরে ঘরে, হয়তো আছে অবহেলায় পড়ে ;
এই কালি-ই লক্ষ্মী দশভূজা, তবে কেন অবহেলার সাজা ?
বদলেছে যুগ, - - এ যুগ আমার কালির
তার আলোতেই উঠবে জ্বলে প্রদীপ দীপাবলীর।।
- সুব্রত মজুমদার
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন