শুক্রবার, ৩ নভেম্বর, ২০২৩

ভবপ্রীতান্দ ওঝা

'ও সেরেং দিদি লো তোর ঘরে চোর সামানছে....' 

কি চেনা চেনা লাগছে ? হ্যাঁ বন্ধু, মানভূমের এই ঝুমুর গান বাংলা বিখ্যাত। আর এই ঝুমুর গানের অন্যতম পথিকৃৎ ভবপ্রীতানন্দ ওঝা। বৈদ্যনাথ ধামের নবম সর্দার পান্ডা ভবপ্রীতান্দ ওঝা বাংলা, মৈথিলী ও ব্রজবুলি সাহিত্যের অন্যতম পথিকৃৎ।
কিন্তু দুঃখের কথা হল ভবপ্রীতানন্দ ওঝাকে মৈথিলীরা মনে রাখলেও বাঙালি ভুলে গেছে অবহেলে। অথচ বাংলা লোকগানে তার অবদান অপরিসীম।
ভবপ্রীতানন্দ ওঝা ১৮৮৬ সালে দেওঘরের কাছে কুন্ডা গ্রামে ত্রিপুরানন্দ ওঝার জৈষ্ঠ্যপুত্র রূপে জন্মগ্রহণ করেন। জীবনের একদম শেষের দিকে কাশীপুরনরেশ জ্যোতিপ্রসাদ সিংদেও এর আশ্রয়ে বাস করতে শুরু করেন।
কৃতজ্ঞত কবি লেখেন - 
'মহামানবের প্রবল প্রতাপান্বিত, সদ্‌গুণাশয়, শরণাগতবৎসল, পরম উদারহৃদয় পঞ্চকোটাধীশ্বর দর্শনে করুণার্দ্রচিত্ত হইয়া, আমার গ্রাসাচ্ছাদনের জন্য ত্রিশ টাকা মাসিক বৃত্তিদান করিয়া, আমার অরণ্যবাস নিবারণপূর্বক বৈদ্যনাথ ধামে দুই হাজার টাকার পোক্তা দালান খরিদ করিয়া বসবাসের জন্য আমায় দান করিয়াছেন। শ্রীশ্রীমান্‌ মহারাজ বাহাদুর আমার প্রতি এই রূপ কৃপা প্রকাশ না করিলে, অদ্যবধি আমার জীবনরক্ষায় সংশয় ঘটিত, অতএব শ্রীশ্রীমহারাজ বাহাদুর আমার ভয়ত্রাতা এবং অন্নদাতা পিতাস্বরূপ।'

 অপুত্রক ভবপ্রীতানন্দ ওঝা শিরোমণি হাজরাকে দত্তক নেন। এই শিরোমণি হাজরাই ভবপ্রীতান্দের লেখা নিয়ে 'ঝুমুর রসমঞ্জরী' প্রকাশ করেন।
 ১৯৭০ সালের মার্চ মাসে ভবপ্রীতানন্দ ওঝা পরলোকগমন করলে বৈদ্যনাথ ধামের সর্দার পান্ডার উত্তরাধিকার নিয়ে আইনি জটিলতা শুরু হয়। দীর্ঘ ৪৬ বছর পর ২০১৬ তে দশম সর্দার পান্ডার অভিষেক হয়।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন