দেবসেনাপতি কার্তিক দক্ষিণ ভারতে প্রসিদ্ধ । তামিল বিশ্বাস অনুসারে, মুরুগান হলেন তামিলনাড়ুর রক্ষক। এছাড়াও সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কা, মালয়েশিয়া এবং মরিশাসে যেখানে তামিল জাতিগোষ্ঠী প্রভাব রয়েছে সেখানে মুরুগান খুব জনপ্রিয়।
কার্তিক পূজার মন্ত্র :-ও
ওঁ কার্ত্তিকেয়ং মহাভাগং ময়ুরোপরিসংস্থিতম্।
তপ্তকাঞ্চনবর্ণাভং শক্তিহস্তং বরপ্রদম্।।
দ্বিভুজং শক্রহন্তারং নানালঙ্কারভূষিতম্।
প্রসন্নবদনং দেবং কুমারং পুত্রদায়কম্।।
ওঁ কার্ত্তিকের মহাভাগ দৈত্যদর্পনিসূদন।
প্রণোতোহং মহাবাহো নমস্তে শিখিবাহন।
রুদ্রপুত্র নমস্ত্তভ্যং শক্তিহস্ত বরপ্রদ।
ষান্মাতুর মহাভাগ তারকান্তকর প্রভো।
মহাতপস্বী ভগবান্ পিতুর্মাতুঃ প্রিয় সদা।
দেবানাং যজ্ঞরক্ষার্থং জাতস্ত্বং গিরিশিখরে।
শৈলাত্মজায়াং ভবতে তুভ্যং নিত্যং নমো নমঃ।
প্রণাম মন্ত্র:-
ওঁ কার্ত্তিকের মহাভাগ দৈত্যদর্পনিসূদন। প্রণোতোহং মহাবাহো নমস্তে শিখিবাহন। রুদ্রপুত্র নমস্ত্তভ্যং শক্তিহস্ত বরপ্রদ।
বর্ণনা:-
পৌরাণিক বর্ননা অনুসারে দেবসেনাপতি কার্তিকেয়র গাত্র হলুদবর্ণের। তার ছয়টি মাথা, তাই তিনি ষড়ানন বলে খ্যাত । পাঁচটি ইন্দ্রিয় অর্থাৎ চোখ, কান, নাক, জিভ ও ত্বক ছাড়াও একাগ্র মন দিয়ে তিনি যুদ্ধ করেন বলেই তিনি ষড়ানন । তার বাহন ময়ূর। সৌন্দর্য এবং শৌর্য এই দুটি বৈশিষ্ট্যই ময়ূরের মধ্যে বিদ্যমান। তাঁর হাতে থাকে বর্শা-তীর-ধনুক। তিনি চিরকুমার । তবে কিছু কিছু পৌরাণিক বর্ণনাতে তাঁর বিবাহের উল্লেখও পাওয়া গেছে। কারো মতে মানব জীবনের ষড়রিপু- কাম(কামনা), ক্রোধ (রাগ), লোভ(লালসা),মদ(অহং), মোহ (আবেগ), মাত্সর্য্য (ঈর্ষা)কে সংবরণ করে দেব সেনাপতি কার্তিক যুদ্ধক্ষেত্রে সদা সজাগ থাকেন।
লোকাচার:-
মা ষষ্ঠী কার্তিকেয়র স্ত্রী। কথিত আছে তারকাসুরের হাত হতে মা ষষ্ঠীই শিশু কার্তিকেয়কে রক্ষা করেন। এজন্যই মা ষষ্ঠী শিশুদের রক্ষাকর্ত্রী বলে মানা হয় ৷ আর কথিত আছে কার্তিক ঠাকুরের কৃপা পেলে পুত্রলাভ এবং ধনলাভ হয়। সেজন্য সদ্য বিয়ে হয়েছে অথবা বিয়ের এক বছর হয়ে গেছে কিন্তুু এখনও সন্তান আসেনি এমন দম্পতির বাড়ির সামনে কার্তিক ঠাকুরের মূর্তি ফেলা একটি জনপ্রিয় লোকাচারের মধ্যে পড়ে ।
বর্ধমানের কাটোয়ার কার্তিক পুজো এত বিখ্যাত তাই এখানে এক পুজোর সঙ্গে অন্য পুজোর প্রতিদ্বন্দ্বিতা চলে। একে কার্তিক লড়াই বলা হয় । কার্তিকেয়কে নিয়ে এই বাংলায় প্রচলিত আছে বহু ছড়া। এদের মধ্যে পরিচিত একটি হল –
“কার্তিক ঠাকুর হ্যাংলা, একবার আসেন মায়ের সাথে, একবার আসেন একলা।”
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন