বৃহস্পতিবার, ৬ জুন, ২০১৯

মেঘদূতম্ / পূর্বমেঘ

মেঘদূত


.. মেঘদূত ( কালিদাস) ..
Meghaduuta
Kalidasa’s Cloud Messenger
Puurvamegha
কশ্চিত্ কান্তাবিরহগুরুণা স্বাধিকারাত্প্রমত্তঃ
শাপেনাস্তঙ্গমিতমহিমা বর্ষভোগ্যেণ ভর্তুঃ .
যক্ষশ্চক্রে জনকতনযাস্নানপুণ্যোদকেষু
স্নিগ্ধচ্ছাযাতরুষু বসতিং রামগির্যাশ্রমেষু .. ১..
তস্মিন্নদ্রৌ কতিচিদবলাবিপ্রযুক্তঃ স কামী
নীত্বা মাসান্ কনকবলযভ্রংশরিক্তপ্রকোষ্ঠঃ .
আষাঢস্য প্র(শ)থমদিবসে মেঘমাশ্লিষ্টসানুং
বপ্রক্রীডাপরিণতগজপ্রেক্ষণীযং দদর্শ .. ২..
তস্য স্থিত্বা কথমপি পুরঃ কৌতুকাধানহেতোঃ
অন্তর্বাষ্পশ্চিরমনুচরো রাজরাজস্য দধ্যৌ .
মেঘালোকে ভবতি সুখিনোঽপ্যন্যথাবৃত্তি চেতঃ
কণ্ঠাশ্লেষপ্রণযিনি জনে কিং পুনর্দূরসংস্থে .. ৩..
প্রত্যাসন্নে নভসি দযিতাজীবিতালম্বনার্থী
জীমূতেন স্বকুশলমযীং হরযিষ্যন্ প্রবৃত্তিম্ .
স প্রত্যগ্রৈঃ কুটজকুসুমৈঃ কল্পিতার্ঘায তস্মৈ
প্রীতঃ প্রীতিপ্রমুখবচনং স্বাগতং ব্যাজহার .. ৪..
ধূমজ্যোতিঃ সলিলমরুতাং সংনিপাতঃ ক্ব মেঘঃ
সংদেশার্থাঃ ক্ব পটুকরণৈঃ প্রাণিভিঃ প্রাপণীযাঃ .
ইত্যৌত্সুক্যাদপরিগণযন্ গুহ্যকস্তং যযাচে
কামার্তা হি প্রকৃতিকৃপণাশ্চেতনাচেতনেষু .. ৫..
জাতং বংশে ভুবনবিদিতে পুষ্করাবর্তকানাং
জানামি ত্বাং প্রকৃতিপুরুষং কামরূপং মঘোনঃ .
তেনার্থিত্বং ত্বযি বিধিবশাদ্দূরবন্ধুর্গতোঽহং
যাচ্ঞা মোঘা বরমধিগুণে নাধমে লব্ধকামা .. ৬..
সংতপ্তানাং ত্বমসি শরণং তত্ পযোদ প্রিযাযাঃ
সংদেশং মে হর ধনপতিক্রোধবিশ্লেষিতস্য .
গন্তব্যা তে বসতিরলকা নাম যক্ষেশ্বরাণাং
বাহ্যোদ্যানস্থিতহরশিরশ্চন্দ্রিকাধৌতহর্ম্যা ৭..
ত্বামারূঢং পবনপদবীমুদ্গৃহীতালকান্তাঃ
প্রেক্ষিষ্যন্তে পথিকবনিতাঃ প্রত্যযাদাশ্বসন্ত্যঃ .
কঃ সংনদ্ধে বিরহবিধুরাং ত্বয্যুপেক্ষেত জাযাং
ন স্যাদন্যোঽপ্যহমিব জনো যঃ পরাধীনবৃত্তিঃ .. ৮..
মন্দং মন্দং নুদতি পবনশ্চানুকূলো যথা ত্বাং
বামশ্চাযং নদতি মধুরং চাতকস্তে সগন্ধঃ .
গর্ভাধানক্ষণপরিচযান্নূনমাবদ্ধমালাঃ
সেবিষ্যন্তে নযনসুভগং খে ভবন্তং বলাকাঃ .. ৯..
তাং চাবশ্যং দিবসগণনাতত্পরামেকপত্নীং
অব্যাপন্নামবিহতগতির্দ্রক্ষ্যসি ভ্রাতৃজাযাম্ .
আশাবন্ধঃ কুসুমসদৃশং প্রাযশো হ্যঙ্গনানাং
সদ্যঃপাতি প্রণযি হৃদযং বিপ্রযোগে রুণদ্ধি .. ১০..
কর্তুং যচ্চ প্রভবতি মহীমুচ্ছিলিন্ধ্রামবন্ধ্যাং
তচ্ছ্রুত্ব অ তে শ্রবণসুভগং গর্জিতং মানসোত্কাঃ .
আ কৈলাসাদ্বিসকিসলযচ্ছেদপাথেযবন্তঃ
সংপত্স্যন্তে নভসি ভবতো রাজহংসাঃ সহাযাঃ .. ১১..
আপৃচ্ছস্ব প্রিযসখমমুং তুঙ্গমালিঙ্গ্য শৈলং
বন্দ্যৈঃ পুংসাং রঘুপতিপদৈরঙ্কিতং মেখলাসু .
কালে কালে ভবতি ভবতো যস্য সংযোগমেত্য
স্নেহব্যক্তিশ্চিরবিরহজং মুঞ্চতো বাষ্পমুষ্ণম্ .. ১২..
মার্গং তাবচ্ছৃণু কথযতস্ত্বত্প্রযাণানুরূপং
সংদেশং মে তদনু জলদ শ্রোষ্যসি শ্রোত্রপেযম্ .
খিন্নঃ খিন্নঃ শিখরিষু পদং ন্যস্য গন্তাসি যত্র
ক্ষীনঃ ক্ষীণঃ পরিলঘু পযঃ স্রোতসং চোপভুজ্য .. ১৩..
অদ্রেঃ শৃঙ্গং হরতি পবনঃ কিং স্বিদিত্যুন্মুখীভির্
দ্র্ষ্টোত্সাহচ্চকিতচকিতং মুগ্ধসিদ্ধাঙ্গনাভিঃ .
স্থানাদস্মাত্ সরসনিচুলাদুত্পতোদঙ্মুখঃ খং
দিঙ্নাগানাং পথি পরিহরন্ স্থূলহস্তাবলেপান্ .. ১৪..
রত্নচ্ছাযাব্যতিকর ইব প্রেক্ষ্যমেতত্ পুরস্তাদ্
বল্মীকাগ্রাত্ প্রভবতি ধনুষ্খণ্ডমাখণ্ডলস্য .
যেন শ্যামং বপুরতিতরাং কান্তিমাপত্স্যতে তে
বর্হেণেব স্ফুরিতরুচিনা গোপবেশস্য বিষ্ণোঃ .. ১৫..
ত্বয্যাযত্তং কৃষিফলমিতি ভ্রূবিলাসানভিজ্ঞৈঃ
প্রীতিস্নিগ্ধৈর্জনপদবধূলোচনৈঃ পীযমানঃ .
সদ্যঃসীরোত্কষণসুরভি ক্ষেত্রমারুহ্য মালং
কিংচিত্পশ্চাদ্ব্রজ লঘুগতির্ভূয এবোত্তরেণ .. ১৬..
ত্বামাসারপ্রশমিতবনোপপ্লবং সাধু মূর্ধ্না
বক্ষ্যত্যধ্বশ্রমপরিগতং সানুমানাম্রকূটঃ .
ন ক্ষুদ্রোঽপি প্রথমসুকৃতাপেক্ষযা সংশ্রযায
প্রাপ্তে মিত্রে ভবতি বিমুখঃ কিং পুনর্যস্তথোচ্চৈঃ .. ১৭..
ছন্নোপান্তঃ পরিণতফলদ্যোতিভিঃ কাননাম্রৈঃ
ত্বয্যারূঢে শিখরমচলঃ স্নিগ্ধবেণীসবর্ণে .
নূনং যাস্যত্যমরমিথুনপ্রেক্ষণীযমবস্থাং
মধ্যে শ্যামঃ স্তন ইব ভুবঃ শেষবিস্তারপাণ্ডুঃ .. ১৮..
স্থিত্বা তস্মিন্ বনচরবধূভুক্তকুঞ্জে মুহূর্তং
তোযোত্সর্গদ্রুততরগতিস্তত্পরং বর্ত্ম তীর্ণঃ .
রেবাং দ্রক্ষ্যস্যুপলবিষমে বিন্ধ্যপাদে বিশীর্ণাং
ভক্তিচ্ছেদৈরিব বিরচিতাং ভূতিমঙ্গে গজস্য .. ১৯..
তস্যাস্তিক্তৈর্বনগজমদৈর্বাসিতং বান্তবৃষ্টিঃ
জম্বূকুঞ্জপ্রতিহতরযং তোযমাদায গচ্ছেঃ .
অন্তঃসারং ঘন তুলযিতুং নানিলঃ শক্ষ্যতি ত্বাং
রিক্তঃ সর্বো ভবতি হি লঘুঃ পূর্ণতা গৌরবায .. ২০..
নীপং দৃষ্ট্বা হরিতকপিশং কেষরৈরর্ধরূঢৈঃ
আবির্ভূতপ্রথমমুকুলাঃ কন্দলীশ্চানুকচ্ছম্ .
জগ্ধ্বারণ্যেষ্বধিকসুরভিং গন্ধমাঘ্রায চোর্ব্যাঃ
সারঙ্গাস্তে জললবমুচঃ সূচযিষ্যন্তি মার্গম্ .. ২১..
উত্পশ্যামি দ্রুতমপি সখে মত্প্রিযার্থং যিযাসোঃ
কালক্ষেপং ককুভসুরভৌ পর্বতে পর্বতে তে .
শুক্লাপাঙ্গৈঃ সজলনযনৈঃ স্বাগতীকৃত্য কেকাঃ
প্রত্যুদ্যাতঃ কথমপি ভবান্ গন্তুমাশু ব্যবস্যেত্ .. ২২..
পাণ্ডুচ্ছাযোপবনবৃতযঃ কেতকৈঃ সূচিভিন্নৈঃ
নীডারম্ভৈর্গৃহবলিভুজামাকুলগ্রামচৈত্যাঃ .
ত্বয্যাসন্নে পরিণতফলশ্যামজম্বূবনান্তাঃ
সংপত্স্যন্তে কতিপযদিনস্থাযিহংসা দশার্ণাঃ .. ২৩..
তেষং দিক্ষু প্রথিতবিদিশালক্ষণাং রাজধানীং
গত্বা সদ্যঃ ফলমবিকলং কামুকত্বস্য লব্ধা .
তীরোপান্তস্তনিতসুভগং পাস্যসি স্বাদু যস্মাত্
সভ্রূভঙ্গং মুখমিব পযো বেত্রবত্যাশ্চলোর্মি .. ২৪..
নীচৈরাখ্যং গিরিমধিবসেস্তত্র বিশ্রামহেতোঃ
ত্বত্সংপর্কাত্ পুলকিতমিব প্রৌঢপুষ্পৈঃ কদম্বৈঃ .
যঃ পণ্যস্ত্রীরতিপরিমলোদ্গারিভির্নাগরাণাং
উদ্দামানি প্রথযতি শিলাবেশ্মভির্যৌবনানি .. ২৫..
বিশ্রান্তঃ সন্ ব্রজ বননদীতীরজাতানি সিঞ্চন্ন
উদ্যানানাং নবজলকণৈর্যূথিকাজালকানি .
গণ্ডস্বেদাপনযনরুজাক্লান্তকর্ণোত্পলানাং
ছাযাদানাত্ ক্ষণপরিচিতঃ পুষ্পলাবীমুখানাম্ .. ২৬..
বক্রঃ পন্থা যদপি ভবতঃ প্রস্থিতস্যোত্তরাশাং
সৌধোত্সঙ্গপ্রণযবিমুখো মা স্ম ভূরুজ্জযিন্যাঃ .
বিদ্যুদ্দামস্ফুরিতচকিতৈস্তত্র পৌরাঙ্গনানাং
লোলাপাঙ্গৈর্যদি ন রমসে লোচনৈর্বঞ্চিতোঽসি .. ২৭..
বীচিক্ষোভস্তনিতবিহগশ্রেণিকাঞ্চীগুণাযাঃ
সংসর্পন্ত্যাঃ স্খলিতসুভগং দর্শিতাবর্তনাভেঃ .
নির্বিন্ধ্যাযাঃ পথি ভব রসাভ্যন্তরঃ সন্নিপত্য
স্ত্রীণামাদ্যং প্রণযবচনং বিভ্রমো হি প্রিযেষু .. ২৮..
বেণীভূতপ্রতনুসলিলাসাবতীতস্য সিন্ধুঃ
পাণ্ডুচ্ছাযা তটরুহতরুভ্রংশিভির্জীর্ণপর্ণৈঃ .
সৌভাগ্যং তে সুভগ বিরহাবস্থযা ব্যঞ্জযন্তী
কার্শ্যং যেন ত্যজতি বিধিনা স ত্বযৈবোপপাদ্যঃ .. ২৯..
প্রাপ্যাবন্তীনুদযনকথাকোবিদগ্রামবৃদ্ধান্
পূর্বোদ্দিষ্টামনুসর পুরীং শ্রীবিশালাং বিশালাম্ .
স্বল্পীভূতে সুচরিতফলে স্বর্গিণাং গাং গতানাং
শেষৈঃ পুণ্যৈর্হৃতমিব দিবঃ কান্তিমত্ খণ্ডমেকম্ .. ৩০..
দীর্ঘীকুর্বন্ পটু মদকলং কূজিতং সারসানাং
প্রত্যূষেষু স্ফুটিতকমলামোদমৈত্রীকষাযঃ .
যত্র স্ত্রীণাং হরতি সুরতগ্লানিমঙ্গানুকূলঃ
শিপ্রাবাতঃ প্রিযতম ইব প্রার্থনাচাটুকারঃ .. ৩১..
জালোদ্গীর্ণৈরুপচিতবপুঃ কেশসংস্কারধূপৈঃ
বন্ধুপ্রীত্যা ভবনশিখিভির্দত্তনৃত্ত্যোপহারঃ .
হর্ম্যেষ্বস্যাঃ কুসুমসুরভিষ্বধ্বখেদং নযেথা
লক্ষ্মীং পশ্যংল্ললিতবনিতাপাদরাগাঙ্কিতেষু .. ৩২..
(নীত্বা রাত্রিং ললিতবনিতাপাদরাগাঙ্কিতেষু .. ৩২..)
ভর্তুঃ কণ্ঠচ্ছবিরিতি গণৈঃ সাদরং বীক্ষ্যমাণঃ
পুণ্যং যাযাস্ত্রিভুবনগুরোর্ধাম চণ্ডীশ্বরস্য .
ধূতোদ্যানং কুবলযরজোগন্ধিভির্গন্ধবত্যাঃ
তোযক্রীডানিরতযুবতিস্নানতিক্তৈর্মরুদ্ভিঃ .. ৩৩..
অপ্যন্যস্মিঞ্ জলধর মহাকালমাসাদ্য কালে
স্থাতব্যং তে নযনবিষযং যাবদত্যেতি ভানুঃ .
কুর্বন্ সংধ্যাবলিপটহতাং শূলিনঃ শ্লাঘনীযাং
আমন্দ্রাণাং ফলমবিকলং লপ্স্যসে গর্জিতানাম্ .. ৩৪..
পাদন্যাসৈঃ ক্বণিতরশনাস্তত্র লীলাবধূতৈ
রত্নচ্ছাযাখচিতবলিভিশ্চামরৈঃ ক্লান্তহস্তাঃ .
বেশ্যাস্ত্বত্তো নখপদসুখান্ প্রাপ্য বর্ষাগ্রবিন্দূন্
আমোক্ষ্যন্তে ত্বযি মধুকরশ্রেণিদীর্ঘান্ কটাক্ষান্ .. ৩৫..
পশ্চাদুচ্চৈর্ভুজতরুবনং মণ্ডলেনাভিলীনঃ
সাংধ্যং তেজঃ প্রতিনবজপাপুষ্পরক্তং দধানঃ .
নৃত্যারম্ভে হর পশুপতেরার্দ্রনাগাজিনেচ্ছাং
শান্তোদ্বেগস্তিমিতনযনং দৃষ্টভক্তির্ভবান্যা .. ৩৬..
গচ্ছন্তীনাং রমণবসতিং যোষিতাং তত্র নক্তং
রুদ্ধালোকে নরপতিপথে সূচিভেদ্যৈস্তমোভিঃ .
সৌদামিন্যা কনকনিকষস্নিগ্ধযা দর্শযোর্বীং
তোযোত্সর্গস্তনিতমুখরো মা স্ম ভূর্বিক্লবাস্তাঃ .. ৩৭..
তাং কস্যাং চিদ্ ভবনবলভৌ সুপ্তপারাবতাযাং
নীত্বা রাত্রিং চিরবিলসনাত্ খিন্নবিদ্যুত্কলত্রঃ .
দৃষ্টে সূর্যে পুনরপি ভবান্ বাহযেদধ্বশেষং
মন্দাযন্তে ন খলু সুঃঋদামভ্যুপেতার্থকৃত্যাঃ .. ৩৮..
তস্মিন্ কালে নযনসলিলং যোষিতাং খণ্ডিতানাং
শান্তিং নেযং প্রণযিভিরতো বর্ত্ম ভানোস্ত্যজাশু .
প্রালেযাস্রং কমলবদনাত্ সোঽপি হর্তুং নলিন্যাঃ
প্রত্যাবৃত্তস্ত্বযি কররুধি স্যাদনল্পাভ্যসূযঃ .. ৩৯..
গম্ভীরাযাঃ পযসি সরিতশ্চেতসীব প্রসন্নে
ছাযাত্মাপি প্রকৃতিসুভগো লপ্স্যতে তে প্রবেশম্ .
তস্মাত্ তস্যাঃ কুমুদবিশদান্যর্হসি ত্বং ন ধৈর্যান্
মোঘীকর্তুং চটুলশফরোদ্বর্তনপ্রেক্ষিতানি .. ৪০..
তস্যাঃ কিং চিত্ করধৃতমিব প্রাপ্তবানীরশাখং
নীত্বা নীলং সলিলবসনং মুক্তরোধোনিতম্বম্ .
প্রস্থানং তে কথমপি সখে লম্বমানস্য ভাবি
জ্ঞাতাস্বাদো বিবৃতজঘনাং কো বিহাতুং সমর্থঃ .. ৪১..
ত্বন্নিষ্যন্দোচ্ছ্বসিতবসুধাগন্ধসংপর্করম্যঃ
স্রোতোরন্ধ্রধ্বনিতসুভগং দন্তিভিঃ পীযমানঃ .
নীচৈর্বাস্যত্যুপজিগমিষোর্দেবপূর্বং গিরিং তে
শীতো বাযুঃ পরিণমযিতা কাননোদুম্বরাণাম্ .. ৪২..
তত্র স্কন্দং নিযতবসতিং পুষ্পমেঘীকৃতাত্মা
পুষ্পাসারৈঃ স্নপযতু ভবান্ ব্যোমগঙ্গাজলার্দ্রৈঃ .
রক্ষাহেতোর্নবশশিভৃতা বাসবীনাং চমূনাং
অত্যাদিত্যং হুতবহমুখে সংভ্র্তং তদ্ ধি তেজঃ .. ৪৩..
জ্যোতির্লেখাবলযি গলিতং যস্য বর্হং ভবানী
পুত্রপ্রেম্ণা কুবলযপদপ্রাপি কর্ণে করোতি .
ধৌতাপাঙ্গং হরশশিরুচা পাবকেস্তং মযূরং
পশ্চাদদ্রিগ্রহণগুরুভির্গর্জিতৈর্নর্তযেথাঃ .. ৪৪..
আরাধ্যৈনং শরবণভবং দেবমুল্লঙ্ঘিতাধ্বা
সিদ্ধদ্বন্দ্বৈর্জলকণভযাদ্বীণিভির্মুক্তমার্গঃ .
ব্যালম্বেথাঃ সুরভিতনযালম্ভজাং মানযিষ্যন্
স্রোতোমূর্ত্যা ভুবি পরিণতাং রন্তিদেবস্য কীর্তিম্ .. ৪৫..
ত্বয্যাদাতুং জলমবনতে শার্ঙ্গিণো বর্ণচৌরে
তস্যাঃ সিন্ধোঃ পৃথুমপি তনুং দূরভাবাত্ প্রবাহম্ .
প্রেক্ষিষ্যন্তে গগনগতযো নূনমাবর্জ্য দৃষ্টীঃ
একং মুক্তাগুণমিব ভুবঃ স্থূলমধ্যেন্দ্রনীলম্ .. ৪৬..
তামুত্তীর্য ব্রজ পরিচিতভ্রূলতাবিভ্রমাণাং
পক্ষ্মোত্ক্ষেপাদুপরিবিলসত্কৃষ্ণশরপ্রভাণাম্ .
কুন্দক্ষেপানুগমধুকরশ্রীমুষামাত্মবিম্বং
পাত্রীকুর্বন্ দশপুরবধূনেত্রকৌতূহলানাম্ .. ৪৭..
ব্রহ্মাবর্তং জনপদমধশ্ছাযযা গাহমানঃ
ক্ষেত্রং ক্ষত্রপ্রধনপিশুনং কৌরবং তদ্ ভজেথাঃ .
রাজন্যানাং শিতশরশতৈর্যত্র গাণ্ডীবধন্বা
ধারাপাতৈস্ত্বমিব কমলান্যভ্যবর্ষন্মুখানি .. ৪৮..
হিত্বা হালামভিমতরসাং রেবতীলোচনাঙ্কাং
বন্ধুপ্রীত্যা সমরবিমুখো লাঙ্গলী যাঃ সিষেবে .
কৃত্বা তাসামভিগমমপাং সৌম্য সারস্বতীনাং
অন্তঃশুদ্ধস্ত্বমপি ভবিতা বর্ণমাত্রেণ কৃষ্ণঃ .. ৪৯..
তস্মাদ্ গচ্ছেরনুকনখলং শৈলরাজাবতীর্ণাং
জহ্নোঃ কন্যাং সগরতনযস্বর্গসোপানপঙ্ক্তিম্ .
গৌরীবক্ত্রভ্রুকুটিরচনাং যা বিহস্যেব ফেনৈঃ
শংভোঃ কেশগ্রহণমকরোদিন্দুলগ্নোর্মিহস্তা .. ৫০..
তস্যাঃ পাতুং সুরগজ ইব ব্যোম্নি পূর্বার্ধলম্বী
ত্বং চেদচ্ছস্ফটিকবিশদং তর্কযেস্তির্যগম্ভঃ .
সংসর্পন্ত্যা সপদি ভবতঃ স্রোতসি ছাযযাসৌ
স্যাদস্থানোপগতযমুনাসঙ্গমেবাভিরামা .. ৫১..
আসীনানাং সুরভিতশিলং নাভিগন্ধৈর্মৃগাণাং
তস্যা এব প্রভবমচলং প্রাপ্য গৌরং তুষারৈঃ .
বক্ষ্যস্যধ্বশ্রমবিনযনে তস্য শৃঙ্গে নিষণ্ণঃ
শোভাং শুভ্রত্রিনযনবৃষোত্খাতপঙ্কোপমেযাম্ .. ৫২..
তং চেদ্ বাযৌ সরতি সরলস্কন্ধসঙ্ঘট্টজন্মা
বাধেতোল্কাক্ষপিতচমরীবালভারো দবাগ্নিঃ .
অর্হস্যেনং শমযিতুমলং বারিধারাসহস্রৈঃ
আপন্নার্তিপ্রশমনফলাঃ সংপদো হ্যুত্তমানাম্ .. ৫৩..
(যে ত্বাং মুক্তধ্বনিমসহনাঃ কাযভঙ্গায তস্মিন্
দর্পোত্সেকাদুপরি শরভা লঙ্ঘযিষ্যন্ত্যলঙ্ঘ্যম্ .)
যে সংরম্ভোত্পতনরভসাঃ স্বাঙ্গভঙ্গায তস্মিন্
মুক্তাধ্বান সপদি শরভা লঙ্ঘযেযুর্ভবন্তম্ .
তান্ কুর্বীথাস্তুমুলকরকাবৃষ্টিহাসাবকীর্ণান্
কে বা ন স্যুঃ পরিভবপদং নিষ্ফলারম্ভযত্নাঃ .. ৫৪..
তত্র ব্যক্তং দৃষদি চরণন্যাসমর্ধেন্দুমৌলেঃ
শশ্বত্ সিদ্ধৈরুপহৃতবলিং ভক্তিনম্রঃ পরীযাঃ .
যস্মিন্ দৃষ্টে করণবিগমাদূর্ধ্বমুদ্ধূতপাপাঃ
সংকল্পন্তে স্থিরগণপদপ্রাপ্তযে শ্রদ্দধানাঃ .. ৫৫..
শব্দাযন্তে মধুরমনিলৈঃ কীচকাঃ পূর্যমাণাঃ
সংসক্তাভিস্ত্রিপুরবিজযো গীযতে কিংনরীভিঃ .
নির্হ্রাদী তে মুরজ ইব চেত্ কন্দরেষু ধ্বনিঃ স্যাত্
সঙ্গীতার্থো ননু পশুপতেস্তত্র ভাবী সমগ্রঃ .. ৫৬..
প্রালেযাদ্রেরুপতটমতিক্রম্য তাংস্তান্ বিশেষান্
হংসদ্বারং ভৃগুপতিযশোবর্ত্ম যত্ ক্রৌঞ্চরন্ধ্রম্ .
তেনোদীচীং দিশমনুসরেস্তির্যগাযামশোভী
শ্যামঃ পাদো বলিনিযমনাভ্যুদ্যতস্যেব বিষ্ণোঃ .. ৫৭..
গত্বা চোর্ধ্বং দশমুখভুজোচ্ছ্বাসিতপ্রস্থসংধেঃ
কৈলাসস্য ত্রিদশবনিতাদর্পণস্যাতিথিঃ স্যাঃ .
শৃঙ্গোচ্ছ্রাযৈঃ কুমুদবিশদৈর্যো বিতত্য স্থিতঃ খং
রাশীভূতঃ প্রতিদিনমিব ত্র্যম্বকস্যাট্টহাসঃ .. ৫৮..
উত্পশ্যামি ত্বযি তটগতে স্নিগ্ধভিন্নাঞ্জনাভে
সদ্যঃকৃত্তদ্বিরদদশনচ্ছেদগৌরস্য তস্য .
শোভামদ্রেঃ স্তিমিতনযনপ্রেক্ষণীযাং ভবিত্রীং
অংসন্যস্তে সতি হলভৃতো মেচকে বাসসীব .. ৫৯..
হিত্বা তস্মিন্ভুজগবলযং শংভুনা দত্তহস্তা
ক্রীডাশৈলে যদি চ বিচরেত্ পাদচারেণ গৌরী .
ভঙ্গীভক্ত্যা বিরচিতবপুঃ স্তম্ভিতান্তর্জলৌঘঃ
সোপানত্বং কুরু মণিতটারোহণায়াগ্রয়ায়ী  । ৬০। 
তত্রাবশ্যং বলয়কুলিশোদ্ধট্টনোগ্দীর্ণতোয়ং
নেষ্যন্তি ত্বাং সুরযুবতয়ো যন্ত্রধারাগৃহত্বম্ .
তাভ্যো মোক্ষস্তব যদি সখে ঘর্মলব্ধস্য ন স্যাত্
ক্রীডালোলাঃ শ্রবণপরুষৈর্গর্জিতৈর্ভায়য়েস্তাঃ । ৬১।
হেমাম্ভোজপ্রসবি সলিলং মানসস্যাদদানঃ
কুর্বন্ কামাত্ ক্ষণমুখপটপ্রীতিমৈরাবতস্য .
ধুন্বন্কল্পদ্রুমকিসলয়ান্যংশুকানীব বাতৈঃ
নানাচেষ্টৈর্জলদ ললিতৈর্নির্বিশেস্তং নগেন্দ্রম্  । ৬২। 
(ধুন্বন্ বাতৈঃ সজলপৃষতৈঃ কল্পবৃক্ষাংশুকানি
চ্ছায়াভিন্নঃ স্ফটিকবিশদং নির্বিশেঃ পর্বতং তম্  । ৬২। 
তষ্যোত্সঙ্গে প্রণয়িন ইব স্রস্তগঙ্গাদুকূলাং
ন ত্বং দৃষ্ট্বা ন পুনরলকাং জ্ঞাস্যসে কামচারিন্ .
য়া বঃ কালে বহতি সলিলোদ্গারমুচ্চৈর্বিমানা
মুক্তাজালগ্রথিতমলকং কামিনীবাভ্রবৃন্দম্ । ৬৩। 

শুক্রবার, ১৭ মে, ২০১৯

Dharmapuja

ধর্মপুজো
                                       
                            ধর্মরাজ পুজো বা ধরম পুজা বুদ্ধপূর্ণীমার তিথিতে অনুষ্ঠিত হয়।  ধর্মঠাকুর সাধারণত গ্রামের শেষে একটা বটগাছের ( ক্ষেত্রবিশেষে অন্য কোন গাছের তলায় ) একটি সিঁদুর-মাখানো নির্দিষ্ট আকারবিহীন প্রস্তরখণ্ডে ধর্মঠাকুরের পূজা করা হয়। প্রধানত বাউড়ি, বাগদি, হাড়ি, ডোম ইত্যাদি বর্ণের মানুষেরা ধর্মঠাকুরের পূজা করে থাকে।ধর্মঠাকুর বিভিন্ন চর্মরোগ বিশেষ করে কুষ্ঠব্যাধি নিরাময় করেন, ভক্তকে সন্তানের বরদান করেন বলে মনে করা হয়।
আকার :-
ধর্মঠাকুর হলেন  নিরঞ্জন অর্থাৎ শূন্যতার প্রতীক ।  সূর্যের  মতো তিনিও সাদা এবং তার বাহন ঘোড়ায় টানা রথ বা ঘোড়া । এজন্য রাঢ়বঙ্গের বিভিন্ন অঞ্চলে ধর্মঠাকুরের পূজার সময় মাটির ঘোড়া  দেওয়ার প্রথাও প্রচলিত আছে। ধর্মঠাকুরের বাহন সাদা ঘোড়া এবং সাদা ফুল তাঁর প্রিয়। তাঁর আসল প্রতীক পাদুকা বা খড়ম।
আসলে  ধর্মঠাকুর  হলেন  বুদ্ধ, সূর্য, শিব এবং বিষ্ণুর মিলিত দেবতা । অধ্যাপক শ্রীসুকুমার সেন ধর্মঠাকুর কে মিশ্রিত দেবতা হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী তাঁর ” ডিসকভারী অফ লিভিং বুদ্ধিজম অফ বেংগল” নিবন্ধে ধর্মঠাকুরকে বৌদ্ধ দেবতা আখ্যায়িত করেছেন।  “তারকেশ্বরের শিবতত্ত্ব”  পুঁথিতে আছেঃ

” বহু দেব বহু মঠ না হয় কথন।
 নীচ জাতি গৃহে দেখ ধর্ম সনাতন
বৌদ্ধধর্ম বৌদ্ধ চর্চা করিতে নির্মুল।
এতাদৃশ অনুষ্ঠান করে সাধুকুল “
অর্থাৎ বৌদ্ধধর্ম নির্মূল করে তার স্থলে ধর্মঠাকুরের উদ্ভব হয়।
ধর্মঠাকুরের মূর্তি বা প্রতীক বিভিন্ন প্রকারের হয়ে থাকে–যেমন
১। ঘট,  শিলা, মুণ্ডমূর্তী, পোড়ামাটির ঘোড়া, ঘটপ্রতীক
২। রাজবেশধারী মূর্তি।
৩। পৌরাণিক দেবতার অনুরুপ
৪। মহাদেবের অনুরূপ (জটা ও ত্রিশুল ছাড়া )
৫। সাধারণ শিলাখন্ড প্রতীক যা ধর্মশীলা নামে পরিচিত
৬। ধ্যানী বুদ্ধের মতো।


পুজা :-
বহু জায়গায় ধর্মঠাকুরের নিত্যপুজা অনুষ্ঠিত হয়। সাধারণত তিন প্রকারে অনুষ্ঠিত হয়: নিত্য, বারমতি এবং বাৎসরিক। এই নিত্যপুজা সাধারণত অনারম্বড় হয়।
বুদ্ধপূর্ণীমার দিন   পূজায়  পাঁঠা, হাঁস ও পায়রা এমনকি শূকর বলি দেওয়ার রীতি আছে।
পূজায় যারা ব্রতধারন করে বেত হাতে সন্নাসীবেশ ধারন করে তাদের ভক্ত বলে। ভক্তরা  প্রচুর পরিমানে মাদক সেবন করে, জ্বলন্ত অঙ্গারের উপর নৃত্য করে ও সারা শরীরে বানবিদ্ধ করে। ধর্মঠাকুরের পূজায় কোন জাতিভেদ নেই তাই বহুস্থানে তাঁর পূজায়  হাঁড়ি, ডোম, বাগ্দী প্রভৃতি জাতির লোক পৌরহিত্য করে । তবে বর্তমানে ধীরে ধীরে সেই স্থান ব্রাহ্মণ পুরোহিতরা দখল করছেন। পূজার সময় অনেক ভক্তের ভর হয়। মনে করা হয় যে ধর্মঠাকুর তার শরীরে অবস্থান করে আদেশ দান করেন। পূজা শেষে পুরোহিত বিগ্রহের উপর ফুল রাখেন, ঢাক ঢোল বেজে উঠে, বিগ্রহ থেকে ফুল সহজে পড়ে গেলে মঙ্গল মনে করা হয়। একে ফুলপড়া বলে।
অনেকে অভীষ্ট কামনায় মন্দিরের গাছে ঢিল ও মাটির ঘোড়া ঝুলিয়ে দেন। এই পূজায় পদ্ম ফুলের বিশেষ প্রয়োজন হয়।
ধর্মমঙ্গল:-
                                         ধর্মঠাকুরের পূজার প্রাধান্য কাল পঞ্চদশ শতাব্দী থেকে অষ্টাদশ শতক পর্যন্ত। এই সময়কালে বহু ধর্মমঙ্গলের কবিদের রচনা পাওয়া গিয়েছে, মুদ্রিতও হয়েছে। মনে করা হয় রামাই পন্ডিত ছিলেন ধর্মঠাকুরের এর প্রথম পুরোহিত ও প্রচারক । রামাই পন্ডিতের 'শূণ্যপুরাণ' ধর্মমঙ্গলের আদিরুপ। রামাই পন্ডিতের কাল সম্পর্কে মতভেদ আছে। তিনি আনুমানিক  ১০০০ খ্রীষ্টাব্দে  হতে  ১৫০০ খ্রীষ্টাব্দের মধ্যে বিদ্যমান ছিলেন।
কিন্তু ধর্মমঙ্গল ধারার  প্রথম কবি হলেন ময়ূরভট্ট। তাঁর রচিত 'হাকন্দপূরান' বেশ খ্যাতি অর্জন করেছিল । এরপর আসে পরবর্তী কবি খেলারাম চক্রবর্তীর ধর্মমঙ্গল। এছাড়াও শ্যাম পণ্ডিত, ধর্মদাস , সীতারাম দাস, রামদাস আদক, মাণিকরাম গাঙ্গুলি ও যদুনাথ পণ্ডিত উল্লেখযোগ্য।

মঙ্গলবার, ৭ মে, ২০১৯

Akshay tritiya

                      অক্ষয় তৃতীয়া

অক্ষয় তৃতীয়া হল চান্দ্র বৈশাখ মাসের শুক্লপক্ষের তৃতীয়া তিথি। অক্ষয় তৃতীয়া বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ তিথি। অক্ষয় শব্দের অর্থ হল যা ক্ষয়প্রাপ্ত হয় না। বৈদিক বিশ্বাসানুসারে এই পবিত্র তিথিতে কোন শুভকার্য সম্পন্ন হলে তা অনন্তকাল অক্ষয় হয়ে থাকে।
যদি ভালো কাজ করা হয় তার জন্যে আমাদের লাভ হয় অক্ষয় পূণ্য। আর যদি খারাপ কাজ করা হয় তবে লাভ হয় অক্ষয় পাপ। তাই এদিন খুব সাবধানে প্রতিটি কাজ করা উচিত। খেয়াল রাখতে হয় ভুলেও যেন কোনো খারাপ কাজ না হয়ে যায়। কখনো যেন কটু কথা না বেরোয় মুখ থেকে। কোনো কারণে যেন কারো ক্ষতি না করে ফেলি বা কারো মনে আঘাত দিয়ে না ফেলি। তাই এদিন যথাসম্ভব মৌন জরুরী। আর এদিন পূজা,জপ,ধ্যান,দান,অপরের মনে আনন্দ দেয়ার মত কাজ করা উচিত। যেহেতু এই তৃতীয়ার সব কাজ অক্ষয় থাকে তাই প্রতিটি পদক্ষেপ ফেলতে হয় সতর্কভাবে।
এবারের অক্ষয়তৃতীয়া সবার ভালো কাটুক – এই কামনায় করি।
এদিন যে,সকল তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা ঘটেছিল।
১) এদিনই বিষ্ণুর ষষ্ঠ অবতার পরশুরাম জন্ম নেন পৃথিবীতে।
২) এদিনই রাজা ভগীরথ গঙ্গা দেবীকে মর্ত্যে নিয়ে এসেছিলেন।
৩) এদিনই গণপতি গনেশ বেদব্যাসের মুখনিঃসৃত বাণী শুনে মহাভারত রচনা শুরু করেন।
৪) এদিনই দেবী অন্নপূর্ণার আবির্ভাব ঘটে।
৫) এদিনই সত্যযুগ শেষ হয়ে ত্রেতাযুগের সূচনা হয়।
৬) এদিনই কুবেরের তপস্যায় তুষ্ট হয়ে মহাদেব তাঁকে অতুল ঐশ্বর্য প্রদান করেন। এদিনই কুবেরের লক্ষ্মী লাভ হয়েছিল বলে এদিন বৈভব-লক্ষ্মীর পূজা করা হয়।
৭) এদিনই ভক্তরাজ সুদামা শ্রী কৃষ্ণের সাথে দ্বারকায় গিয়ে দেখা করেন এবং তাঁর থেকে সামান্য চালভাজা নিয়ে শ্রী কৃষ্ণ তাঁর সকল দুঃখ মোচন করেন।
৮) এদিনই দুঃশাসন দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণ করতে যান এবং ভগবান তার সখীকে রক্ষা করেন শ্রীকৃষ্ণ।
শরনাগতের পরিত্রাতা রূপে এদিন শ্রী কৃষ্ণা দ্রৌপদীকে রক্ষা করেন।
৯) এদিন থেকেই পুরীধামে জগন্নাথদেবের রথযাত্রা উপলক্ষ্যে রথ নির্মাণ শুরু হয়।
১০) কেদার বদরী গঙ্গোত্রী যমুনত্রীর যে মন্দির ছয়মাস বন্ধ থাকে এইদিনেই তার দ্বার উদঘাটন হয়। দ্বার খুললেই দেখা যায় সেই অক্ষয়দীপ যা ছয়মাস আগে জ্বালিয়ে আসা হয়েছিল।
১১) এদিনই সত্যযুগের শেষ হয়ে প্রতি কল্পে ত্রেতা যুগ শুরু হয়।
অক্ষয় তৃতীয়া সম্পর্কে একটি পুরানিক গল্প দেয়া হল :
ধর্মরাজ যুধিষ্ঠির একবার মহামুনি শতানিককে অক্ষয় তৃতীয়া তিথির মাহাত্ম্য কীর্তন করতে বললেন ।
শতানিক বললেন পুরাকালে খুব ক্রোধসর্বস্ব , নিষ্ঠুর এক ব্রাহ্মণ ছিলেন । ধর্মকর্মে তার বিন্দুমাত্র আগ্রহ ছিল,না । একদিন এক দরিদ্র ক্ষুধার্ত ব্রাহ্মণ তার নিকট অন্ন এবং জল ভিক্ষা চাইলেন । রণচন্ডী হয়ে ব্রাহ্মণ কর্কশ স্বরে তাঁর দুয়ার থেকে ভিখারীকে দূর দূর করে তাড়িয়ে দিলেন আর বললেন যে অন্যত্র ভিক্ষার চেষ্টা করতে ।
ক্ষুধা-পিপাসায় কাতর ভিখারী চলে যেতে উদ্যত হল ।
ব্রাহ্মণ পত্নী সুশীলা অতিথির অবমাননা দেখতে না পেরে দ্রুত স্বামীর নিকট উপস্থিত হয়ে ভরদুপুরে অতিথি সত্কার না হলে সংসারের অমঙ্গল হবে এবং গৃহের ধন সমৃদ্ধি লোপ পাবে … একথা জানালেন ।
স্বামীর দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে ভিখারীকে তিনি ডাক দিলেন এবং ভিখারীর অন্যত্র যাবার প্রয়োজন নেই সে কথা জানালেন । সুশীলা ত্রস্তপদে তার জন্য অন্নজল আনবার ব্যবস্থা করলেন । কিছুপরেই তিনি অতিথি ভিক্ষুকের সামনে সুশীতল জল এবং অন্ন-ব্যঞ্জন নিয়ে হাজির হলেন । ভিখারী বামুন অতীব সন্তুষ্ট হলেন এবং সে যাত্রায় সুশীলাকে আশীর্বাদ করে সেই অন্নজল দানকে অক্ষয় দান বলে অভিহিত করে চলে গেলেন ।
বহুবছর পর সেই উগ্রচন্ড ব্রাহ্মণের অন্তিমকাল উপস্থিত হল । যমদূতেরা এসে তার শিয়রে হাজির । ব্রাহ্মণের দেহপিঞ্জর ছেড়ে তার প্রাণবায়ু বের হ’ল বলে । তার শেষের সেই ভয়ঙ্কর সময় উপস্থিত । ক্ষুধা ও তৃষ্ণায় তার কন্ঠ ও তালু শুকিয়ে গেল । তার ওপর যমদূতেদের কঠোর অত্যাচার । ব্রাহ্মণ তাদের কাছে দুফোঁটা জল চাইল এবং তাকে সে যাত্রায় উদ্ধার করতে বলল ।
যমদূতেরা তখন একহাত নিল ব্রাহ্মণের ওপর ।
তারা বলল ” মনে নেই ? তুমি তোমার গৃহ থেকে অতিথি ভিখারীকে নির্জ্জলা বিদেয় করেছিলে ?”
বলতে বলতে তারা ব্রাহ্মণকে টানতে টানতে ধর্মরাজের কাছে নিয়ে গেল ।
ধর্মরাজ ব্রাহ্মণের দিকে তাকিয়ে বললেন ” এঁকে কেন আমার কাছে এনেছ্? ইনি মহা পুণ্যবান ব্যক্তি ।বৈশাখমাসের শুক্লা তৃতীয়া তিথিতে এনার পত্নী তৃষ্ণার্ত অতিথিকে অন্নজল দান করেছেন । এই দানঅক্ষয় দান ।
সেই পুণ্যে ইনি পুণ্যাত্মা । আর সেই পুণ্যফলে এনার নরক গমন হবেনা । ব্রাহ্মণকে তোমরা জল দাও । শীঘ্রই ইনি স্বর্গে গমন করবেন !👏

রবিবার, ২৪ মার্চ, ২০১৯

Choitra sankranti / charak puja

    চৈত্র সংক্রান্তি বা চড়ক

             বাংলা পঞ্জিকা অনুসারে চৈত্র মাসের শেষ দিন অর্থাৎ চৈত্র সংক্রান্তিতে পালিত হয় চড়ক উৎসব । জনশ্রতি অনুসারে ১৪৮৫ খ্রিষ্টাব্দে সুন্দরানন্দ ঠাকুর নামের এক রাজা এই পূজা প্রথম শুরু করেন।
রীতিনীতি :-

‘‘চৈত্র মাস্যথ মাঘেবা যোহর্চ্চয়েৎ শঙ্করব্রতী।
করোতি নর্ত্তনং ভক্ত্যা বেত্রবানি দিবাশিনম্।।
 মাসং বাপ্যর্দ্ধমাসং বা দশ সপ্তদিনানি বা।
 দিনমানং যুগং সোহপি শিবলোক মহীয়তে।।’’ ( ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ, প্রকৃতি খণ্ড  )
                      অর্থাৎ, চৈত্রমাসে বা  মাঘ মাসে একমাস বা পনেরো দিন বা দশ দিন বা সাত দিন অথবা এক  দিন হাতে বেতের লাঠি নিয়ে শিবব্রতী হয়ে নৃত্যাদি করলে সেই ব্যক্তি  শিবলোক প্রাপ্ত হয়।
পূজোর আগের দিন চড়ক গাছটিকে ধুয়ে-মুছে পরিষ্কার করা হয়। এতে জলভরা একটি পাত্রে শিবের প্রতীক শিবলিঙ্গ বা সিঁদুরমথিত শিবের পাটা বা বুড়ো শিব কে রাখা হয়।
গাজন উৎসবের তিনটি অংশ— সন্ন্যাস, নীলব্রত এবং চড়ক।  চৈত্র সংক্রান্তির সাত দিন বা তিন দিন আগে থেকে কঠোর নিয়ম পালন করা হয় যাকে সন্ন্যাস পালন করা হয় বলে। গেরুয়া বা সাদা বস্ত্র ধারণ করে হবিষ্যি গ্রহণ করা আবশ্যিক।
সন্ন্যাস নেওয়া / চড়ক ঘোরা:- 
পূজোর উৎসবে বহু প্রকারের দৈহিক যন্ত্রণা ধর্মের অঙ্গ বলে বিবেচিত হয়। চড়কগাছে ভক্ত্যা বা সন্ন্যাসীকে লোহার হুড়কা দিয়ে চাকার সঙ্গে বেঁধে দ্রুতবেগে ঘোরানো হয়। যারা শরীরে বড়শি বিঁধিয়ে শূন্যে ঘোরেন তাদের ‘হাজরা’  বলা হয়। তার পিঠে, হাতে, পায়ে, জিহ্বায় এবং শরীরের অন্যান্য অঙ্গে বাণ শলাকা বিদ্ধ করা হয়। কখনো কখনো জ্বলন্ত লোহার শলাকা তার গায়ে ফুঁড়ে দেয়া হয়। ১৮৬৩ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ সরকার আইন করে এ নিয়ম বন্ধ করলেও কিছু কিছু স্থানে এখনো দেখা যায়।
ফুল-খেলা :— লম্বা গর্ত। এক ফুট গভীর, সাত-আট লম্বা গর্তে জ্বলন্ত কাঠকয়লার আংরা বিছিয়ে দেওয়া হয়। এবং তার ওপর দিয়ে ভক্ত সন্ন্যাসীরা হেঁটে যান। বীরভূম জেলার মল্লারপুরের মল্লেশ্বর শিব মন্দিরের ফুল খেলা বিখ্যাত।
হাকুণ্ড: — জ্বলন্ত অঙ্গারের ওপর হাঁটা, কুমিরের পূজা, বাণফোঁড়া , কাঁটা আর ছুঁড়ির ওপর লাফানো,  শিবের বিয়ে, অগ্নিনৃত্য, চড়কগাছে দোলা এবং দানো-বারনো বা হাজরা পূজা করা ইত্যাদি হল চড়ক পুজোর বিশেষ রীতিনীতি। লম্বা সার দিয়ে সন্ন্যাসীরা বসে। তাদের জিভে ফোঁড়া লম্বা শলাকা। রক্ত-লালা ঝরছে। প্রত্যেক জনের সামনে গর্তে জ্বলন্ত কাঠকয়লার আগুন। তার সামনে হাঁড়ির মধ্যে জাগ-পিদিম, সামনে পিছনে এয়োস্ত্রী। সন্ন্যাসীর কোলে ওই অবস্থায় শিশুপুত্র বসে।

শুক্রবার, ১৫ মার্চ, ২০১৯

Ghetu puja / Ghantakarna puja

                               ঘেঁটু


ঘেঁটু বা  ঘন্টাকর্ণ হলেন  চর্ম রোগের দেবতা।  ফাল্গুন মাসের শেষ দিনে এই পূজা হয়। ঘেঁটু  ঠাকুর হলেন সূর্য ও ধর্মঠাকুরের লৌকিক রূপ।
আবার জৈন মতে ইনি ৫২ বীরের অন্যতম। পূর্বে বাংলায় জৈনধর্মের প্রতিপত্তি ছিল  । সম্ভবত  ব্রাহ্মণ্যধর্মের পুনঃপ্রতিষ্ঠার সাথে সাথে ইনি কৌলিন্য হারান ।
কারণ, সূর্য ও ধর্মঠাকুর দুজনই কুষ্ঠ ও নানারকম চর্মরোগ থেকে মুক্তি দেন। চর্মদেবতা ঘেঁটুর নাম ও আচরণে মত  মূর্তিটিও অদ্ভুত। আধভাঙা ব্যবহৃত মাটির হাড়ি উল্টো করে রাখা হয়, এটি আসন। এর ওপরে একদলা গোবর দিয়ে করা হয় ঘাঁটু দেবতার মুখ। চোখ তৈরি করা হয় দুটি কড়ি দিয়ে। কপালের অংশে দেয়া হয় সিঁদুরের তিলক। হাড়ির ওপরে রাখা হয় দুর্বা ঘাস ও ভাঁট ( ঘেঁটু ) ফুল। কোনো কোনো এলাকায় ঘাঁটুর পোশাক হিসেবে হাড়িতে জড়িয়ে দেয়া হয় হলুদ ছাপানো কাপড়। আর ভাঙাহাড়ির ভেতর জ্বালানো হয় মোমবাতি।
ঘেঁটু ঠাকুরের গল্প :-
ঘেঁটু দেবকুমার থাকা অবস্থায় বড়সড়  অপরাধ করে বসেন। এর জন্য বিষ্ণু তাকে অভিশাপ দেন। এই অভিশাপের ফলে তাকে  জন্ম নিতে হয় পিশাচ কুলে। রাগে ফুলে থাকতেন। কোনোভাবেই যেন বিষ্ণু নাম কানে না আসে সেজন্য দুই কানে ঘণ্টা ঝুলিয়ে রাখার কারণে নাম হয় ঘণ্টাকর্ণ। কোনো মন্দিরে ঘেঁটু ঠাকুরের  পূজা হয় না। পূজা হয় জলাশয়ের  পাশে রাস্তার মোড়ে।
ভাঁট বা ঘেঁটু  ফুল :-
এর বৈজ্ঞানিক নাম: Clerodendrum infortunatum L. ।  এই গাছের রস তিতো। দীর্ঘমেয়াদী  জ্বর, গেটেবাত,  আমাশয় ও পেট ব্যথায় ভাঁটের কচি ডগার রস কয়েক দিন সকালে খেলে রোগ ভালো হয়ে যায়। ভাঁটপাতার রস কৃমিনাশক। এর পাতা অ্যাজমা, টিউমার, সাপের কামড় ও চর্ম রোগে ব্যবহার হয়। মূলের নির্যাস দাঁতের ক্ষয়রোগ, পেটব্যথা, ও হিস্টিরিয়ার উপশম করে। যে কোনো চর্মরোগে ভাঁটপাতার রস ৩-৪ দিন লাগালে আশ্চর্যজনক ফল পাওয়া যায়। উকুন হলে ভাঁট পাতার রস লাগিয়ে ১ ঘণ্টা পর ধুয়ে ফেলবেন। উকুন থাকবে না। ম্যালেরিয়াতেও এর ব্যবহার দেখা যায়।
রীতিনীতি :-
এই দিনে গ্রাম বাংলার ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা কলার পাতা দিয়ে পালকি তৈরী করে পালকির ভিতরে প্রদীপ জালিয়ে এবং পালকিটিকে ঘেঁটু ফুল দিয়ে সাজিয়ে ঘেঁটু ঠাকুরের পুজো করেন।

ঘেঁটু গান :-
ছেলে মেয়েরা ঘেঁটু গান গেয়ে পাড়ায় পাড়ায় চাল ডাল টাকা আদায় করে বেড়ায়।
১।।  শোন শোন সর্বজন ঘাঁটুর জন্ম বিবরণ।
পিশাচ কুলে জন্মিলেন শাস্ত্রে লিখন।
বিষ্ণুনাম কোনমতে করবে না শ্রবণ
তাই দুই কানে দুই ঘন্টা করেছে বন্ধন।
২।।  ঘেঁটু যায় ঘেঁটু যায় গৃহস্থের বাড়ি
এক কাঠা চাল দাও কুমড়োর বড়ি
যে দেবে থালা থালা তার হবে কোঠা-বালা
যে দেবে মুঠো মুঠো তার হবে হাত ঠুটো
যে দেবে এক পলা তেল তার হবে সোনার দেল।
৩।।  আলোর মালা চাল-ডাল দাও
নয় খোসপচড়া লও।
যে দেবে ধামা ধামা
তারে ঘাঁটু দেবে জরির জামা
যে দেবে শুধু বকুনি।
ঘাঁটু দেবে তাকে খোস-চুলকানি।