শুক্রবার, ১৯ অক্টোবর, ২০১৮

বিজয়া


শুভ বিজয়া 

যাসনে মা উমা যাসনে মা, উমা দন্ডদুয়েক থাক মা ঘরে,
তুই গেলে গো মা হরমনোরমা মন যে গো মা কেমন করে।
বছরের পর এলি উমা ঘর সঙ্গেতে শঙ্কর আনিলি ক্যানে !
সে পাগল ভোলা লয়ে ভূতচেলা ঘুরুক এবেলা শ্মশানে শ্মশানে।
কে বলে পার্বতী তোর পিতা মূঢ়মতি, - সে কি জানে কত হৃদয় বিদারে?
হইয়ে পাষান বিদরে পরাণ সঁপেছি পরাণ পাগলের করে;-
যদি যাস উমা পরাণপ্রতীমা কি পরাণ লয়ে থাকিব ঘরে?
নয়নের জলে পাষান বিগলে তবু কি গো টলে পাগলের হিয়া
সুব্রত বলে দেখ দ্বার খুলে সে পাগল ভোলা দুয়ারে বসিয়া।
আমার লেখা বিজয়ার গান। প্রথা ভেঙে এই গানে পিতৃহৃদয়ের যে ব্যাথা তা তুলে ধরা হয়েছে। এখানে মেনকা নন পাষান গিরিই উমার বিচ্ছেদ ভাবনায় কাতর। ) 

মঙ্গলবার, ১৬ অক্টোবর, ২০১৮

Durga dhyaan - দুর্গাধ্যান

শ্রী শ্রী দুর্গা ধ্যান 

জটাজুট সমাযুক্তাং অর্ধেন্দু কৃতশেখরাম্।
লোচনত্রয় সংযুক্তাং পূর্ণেন্দু সদৃশাননাম্।।২।।
অতসীপুষ্প বর্ণাভাং সুপ্রতিষ্ঠাং সুলোচনাম্।
নবযৌবন সম্পন্নাং সর্ব্বাভরণ ভূষিতাম্।।৪।।

সূচারু দশনাং তদ্বৎ পীনোন্নত পয়োধরাম্।
ত্রিভঙ্গস্থান সংস্থানাং মহিসাসুরমর্দীনিম্।।৬।।
মৃণালায়াত সংস্পর্শ দশবাহু সমন্বিতাম্।
ত্রিশুলং দক্ষিণে ধ্যেয়ং খর্গং-চক্রং ক্রমাদধঃ।।৮।।

তীক্ষ্ণবাণং তথা শক্তিং দক্ষিণেষু বিচিন্তয়েৎ।
খেটকং পূর্ণচাপঞ্চ পাশমঙ্কুশমেব চ।।১০।।
ঘণ্টাং বা পরশুং বাপি বামতঃ সন্নিবেশয়েৎ।
অধস্থান মহিষং তদ্বৎবিশিরক্ষং প্রদর্শয়েৎ।।১২।।

শিরোচ্ছেদোদ্ভবং তদ্বৎ দানবং খর্গপাণিনম্।
হৃদি শুলেন নির্ভিন্নং নির্যদন্ত্র বিভূষিতম্।।১৪।।
রক্তারক্তী কৃতাঙ্গঞ্চ রক্তবিস্ফুরিতেক্ষণম্।
বেষ্টিতং নাগপাশেন ভ্রূকুটি ভীষণাননাম্।।১৬।।

সপাশ বামহস্তেন ধৃতকেশঞ্চ দুর্গয়া।
বমদ্রুধির বক্ত্রঞ্চ দেব্যা সিংহং প্রদর্শয়েৎ।।১৮।।
দেব্যাস্তু দক্ষিণাং পাদং সমং সিংহোপরিস্থিতম্।
কিঞ্চিৎ ঊর্ধ্বং তথা বামঅঙ্গুষ্ঠং মহিষোপরি।।২০।।
স্তুয়মানঞ্চ তদ্রূপ মমরৈঃ সন্নিবেশয়েৎ।
প্রসন্নবদনাং দেবীং সর্ব্বকাম ফলপ্রদাং।।২২।।

উগ্রচন্ডা প্রচন্ডা চ চন্ডোগ্রা চন্ডনায়িকা।
চন্ডা চন্ডবতী চৈব চন্ডরূপাতিচন্ডিকা।।২৪।।
অষ্টাভি শক্তিভিরষ্টাভিঃ সততং পরিবেষ্টিতাম্।
চিন্তয়েৎ জগতাং ধাত্রিং ধর্মকামার্থ মোক্ষদাম্।।২৬।।

ব্যাখ্যা

দেবীর মাথায় জটা, সাথে অর্ধচন্দ্রের মত কপাল। পূর্ণিমার চাঁদের মত মুখ তাঁর ও গায়ের রঙ অতসীফুলের মতো। তিনি সদ্য যৌবনপ্রাপ্ত এবং তাঁর সর্বাঙ্গ বিভিন্ন অলঙ্কার দ্বারা ভূষিত। ।২-৪।

তাঁর দাঁত সুন্দর এবং ধারালো, স্তন সম্পূর্ণ। তিন ভাঁজে দাঁড়িয়ে তিনি দৈত্যনিধন করছেন। দশহাতভর্তি অস্ত্র তাঁর যা দেখতে শাখা-প্রশাখা সমন্বিত পদ্ম গাছের মতো। ডানদিকের উপরের হাতে অবস্থান করে ত্রিশুল, তারপর ক্রমান্বয়েখর্গ এবং চক্র। ।৬-৮।

দেবীর দক্ষিণের সর্বনিম্ন দুই হাতের অস্ত্র ধারালো তীর এবং বর্শা। দেবীর ধ্যানে বর্ণিত হয় তাঁর বাঁ হস্ত। সেদিকে সবচেয়ে নিচের হাতে থাকে চামড়ার ঢাল ও তার উপরের হাতে ধনুক। সেগুলির উপরের হাতে থাকে সর্প, অঙ্কুশ এবং কুঠার (ক্রমান্বয়ে উপরের দিকে)। দেবীর পায়ের কাছে দৈত্যরাজের মাথার স্থান। ।১০-১২।

মহিষের কাটা মাথা থেকে মহিসাসুরের দেহ অর্ধেক উত্থাপিত, হাতে তাঁর খর্গ এবং হৃদয়ে দেবীর ত্রিশূল দ্বারা বিদ্ধ। তাঁর পেট থেকে নাড়িভূঁড়ি নির্গত হয়েছে। শরীর রক্তলিপ্ত। দেবীর হাতে ধরা সাপ দ্বারা অসুরের দেহ বেষ্টিত। তবে উত্থিত ভ্রূ তে দৈত্যের রূপও ভয়ঙ্কর। ।১৪-১৬।

দেবী তাঁর বাম হাত দিয়ে দৈত্যরাজের চুল টেনে রেখেছেন। দেবীর ডান পা বাহন সিংহের উপরে এবং বাঁ পা কিঞ্চিৎ উর্ধে মহিষের উপরে অবস্থান করে। প্রবল যুদ্ধরত অবস্থাতেও দেবী তাঁর শান্তিপূর্ণ মুখাবয়ব ও আশীর্বাদী রূপ বজায় রেখেছেন এবং সমস্ত দেবতা দেবীর এই রূপের স্তুতি করেন। ।১৮-২২।
                             
দেবীর উপরোক্ত রূপ দেবতাদের আট শক্তি উগ্রচন্ডা, প্রচন্ডা, চন্ডোগ্রা, চন্ডনায়িকা, চন্ডা, চন্ডবতী, চন্ডরূপ ও অতিচন্ডিকা দ্বারা পরিবেষ্টিত। গৃহকর্তার মানব জীবনের সমস্ত ইচ্ছা পূর্ণ করেন এই দেবী। তাই ধর্ম, অর্থ, কাম ও মোক্ষ লাভের জন্য জগন্মাতৃকা দেবী দুর্গার ধ্যানই মানবজাতির হওয়া উচিত। ।২৪-২৬।
নবদুর্গা 
ওঁ প্রথমং শৈলপুত্রী দ্বিতীয়ম ব্রহ্মচারিনী , তৃতীয় চন্দ্রঘনটে , কুস্মানডেতি চতুরথাকম , পঞ্চমম স্কন্দমাতেতি ,ষষ্ঠম কাত্যায়নী তথা , সপ্তমম কালরাত্রিতি মহাগৌরী , তিচাস্তমাম , নবমাম সিদ্ধিদ্ধাত্রিতি নবদুর্গা প্রকীতিতা ।


বুধবার, ১০ অক্টোবর, ২০১৮

গান্ধারীর শতপুত্রের নাম

সূচিপত্র
                    একনজরে দেখে নেওয়া যাক গান্ধারী ও ধৃতরাষ্ট্রের ১০০ পুত্রের নাম:
১. দুর্যোধন, ২. যুযুত্‍সু, ৩. দুঃশাসন, ৪. দুঃসহ, ৫. দুঃশল, ৬. দুর্মুখ, ৭. বিবিংশতি, ৮. বিকর্ণ, ৯. জলসন্ধ, ১০.সুলোচন, ১১. বিন্দ, ১২. অনুবিদ, ১৩. দুর্ধর্ষ, ১৪. সুবাহু, ১৫. দুষ্প্রধর্ষণ, ১৬. দুমর্শণ, ১৭. দুর্মুখ ১৮. দুস্কর্ণ, ১৯. কর্ণ, ২০. চিত্র, ২১. উপচিত্র, ২২. চিত্রাক্ষ, ২৩. চারুচিত্র, ২৪. অঙ্গদ, ২৫. দুর্মদ, ২৬. দুস্পহরশ, ২৭. বিবিত্‍সু, ২৮. বিকট ২৯. মম, ৩০. ঊর্ণনাভ, ৩১. পদ্মনাভ, ৩২. নন্দ, ৩৩. উপনন্দ, ৩৪. সেনাপতি, ৩৫. সুষেণ, ৩৬. কুন্দদর, ৩৭. মহোদর, ৩৮. চিত্রবাহু, ৩৯. চিত্রবর্মা, ৪০. সুবর্মা, ৪১. দুরোবিরোচন, ৪২. অয়োবাহু, ৪৩. মহাবাহু, ৪৪. চিত্রচাপ, ৪৫. সুকুন্ডল, ৪৬. ভীমবেগ, ৪৭. ভীমবল, ৪৮. বলাকা, ৪৯. ভাবাবক্রম, ৫০. উগায়ুধ ৫১. ভীমশ্বর, ৫২. কনকায়ু, ৫৩. দৃরায়ুধ, ৫৪. দৃঢ়বর্মা, ৫৫. দৃঢ়ক্ষেত্র, ৫৬. সোমকীর্তি, ৫৭. অনুদর, ৫৮. জরাসন্ধ, ৫৯. ধৃঢ়সন্ধ, ৬০. সত্যসন্ধ, ৬১. সহস্রবাক, ৬২. উগ্রসবা, ৬৩. উগ্রসেন, ৬৪. ক্ষেমমূর্তি, ৬৫. অপরাজিত, ৬৬. পন্ডিততস্ক, ৬৭. বিশাললক্ষ, ৬৮. দুরাধন, ৬৯. দৃঢ়হস্ত, ৭০. সুহস্ত, ৭১. বাতবেগ, ৭২. সুবরচা, ৭৩. আদিত্যকেতু, ৭৪. বহবাশী, ৭৫. নাগদত্ত, ৭৬. অনুযায়ী, ৭৭. নিসঙ্গী, ৭৮. কবচী, ৭৯. দণ্ডি, ৮০. দণ্ডধার ৮১. ধনুরগ্রহ, ৮২. উগ্র, ৮৩.ভীমরথ, ৮৪. বীর, ৮৫. বীরবাহু, ৮৬. অলুলোপ, ৮৭. অভয়, ৮৮. রৌদ্রকর্মা, ৮৯. দৃঢ়রথ, ৯০. চয়, ৯১. অনাধৃশ্য, ৯২. কুন্দভেদী, ৯৩. বিবারী, ৯৪. দীর্ঘলোচন, ৯৫. দীর্ঘবাহু, ৯৬. মহাবাহু, ৯৭. বুঢরু, ৯৮. কনকাঙ্গদ, ৯৯. কুন্ডজ, ১০০. চিত্রক।

মঙ্গলবার, ৯ অক্টোবর, ২০১৮

অকাল বোধন

অকাল বোধন


“মৃগকর্কটসংক্রান্তিঃ দ্বে তূদগ্দক্ষিণায়নে।
বিষুবতী তুলামেষে গোলমধ্যে তথাপরাঃ ॥”

অর্থাৎ সুর্য ধনুরাশি ত্যাগ করে মকর রাশিতে সঞ্চার হওয়াকে উত্তরায়ণসংক্রান্তি, মিথুনরাশি হতে কর্কটরাশিতে সঞ্চার হওয়াকে দক্ষিণায়ন সংক্রান্তি, কন্যারাশি হতে তুলারাশিতে সঞ্চার হওয়াকে জলবিষুবসংক্রান্তি আর মীনরাশি হতে মেষরাশিতে সঞ্চার হওয়াকে মহাবিষুব সংক্রান্তি বলা হয়ে থাকে।  
                                                               উত্তরায়ণে দেবতারা জেগে থাকেন, - তখন তাদের দিন। দক্ষিণায়ণে রাত্রিকাল। শরৎ কালে দক্ষিণায়ণ, এসময় তাই দেবপুজায় দেবতাদের জাগাতে হয়। এই জাগানোই হল বোধন।  এজন্য বাসন্তী পূজায় বোধন করতে হয় না। মাঘ থেকে আষাঢ় ছ’মাস উত্তরায়ণ; এ সময় দেবতারা জাগ্রত। শরৎ ঋতু দক্ষিণায়নে পড়ে, তখন দেবী নিদ্রিতা, এজন্য শারদীয়া দুর্গাপূজায় দেবীর জাগরণের জন্য বোধন করতে হয়। অকাল বোধন মানে অকালে জাগরণ।হিন্দু পঞ্জিকা অনুসারে, আশ্বিন মাসের কৃষ্ণপক্ষের নবমী তিথি অথবা শুক্লপক্ষের ষষ্ঠী তিথিতে হিন্দু দেবী দুর্গার পূজারম্ভের প্রাক্কালে এই অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়।
                    ওঁ ঐং রাবণস্য বধার্থায় রামস্যানুগ্রহায় চ।
              অকালে ব্রহ্মণা বোধো দেব্যস্তয়ি কৃতঃ পুরা।।
                  অহমপাশ্বিনে ষষ্ঠ্যাং সায়াহ্নে বোধয়মি বৈ।
অর্থাৎ, রাবণকে নাশ করার জন্য শ্রীরামচন্দ্রকে অনুগ্রহ করার জন্য অকালে দেবীকে জাগরিত করা হয়েছিল।  কালিকা পুরাণ অনুসারে ব্রহ্মরাত্রিতে দেবীর বোধন করেছিলেন শ্রীরামচন্দ ।
                  চণ্ডীপাঠ করি রাম করিল উৎসব।
                   গীত নাট করে জয় দেয় কপি সব।।
                    সায়াহ্নকালেতে রাম করিল বোধন।
                     আমন্ত্রণ অভয়ার বিল্বাধিবাসন।। …
                    আচারেতে আরতি করিলা অধিবাস।
                    বান্ধিলা পত্রিকা নব বৃক্ষের বিলাস।।

ভগবান শ্রীরামচন্দ্র ১০৮ পদ্ম দ্বারা দেবীপূজার সঙ্কল্প করেন। হনুমান পদ্মগুলি সংগ্রহ করে আনেন । দেবী ভক্তের ভক্তি পরীক্ষা করার জন্য ছলনা করলেন। তিনি একটি পদ্ম লুকিয়ে রাখলেন। পূজার সময় একটি পদ্মের অভাব হওয়ায় শ্রীরামচন্দ্র বিপদে পড়লেন। পূজা পূর্ণাঙ্গ না হলে দেবী অসন্তুষ্ট হবেন, সঙ্কল্পও সিদ্ধ হবে না। শ্রীরামচন্দ্র পদ্মলোচন নামে অভিহিত। সেজন্য তিনি নিজের একটি চক্ষুু উৎপাটিত করে তা মায়ের শ্রীচরণে অঞ্জলি দেবেন- এরূপ সঙ্কল্প করলেন। তিনি ধনুর্বাণ হস্তে চক্ষু উৎপাটন করবার উপক্রম করতেই দেবী আবির্ভূত হয়ে তাঁকে অভীষ্ট বর প্রদান করলেন।

আদ্যাশক্তি যদিও স্বরূপত : নামরূপাতীতা, তথাপি তিনিই মায়ারূপ মহিমাদ্বারা সমস্ত বস্তুরূপে সম্ভূতা হন। শাস্ত্রে রয়েছে- ত্বমেব সূক্ষ্মা স্থূলা ত্বং ব্যক্তাব্যক্তস্বরূপিণী। নিরাকারাপি সাকারা কস্ত¡াং বেদিতুমর্হতি ॥ অর্থাৎ, তুমিই আদ্যাশক্তি ভগবতী সূক্ষ্মা ও স্থূলা, ব্যক্ত ও অব্যক্ত স্বরূপিণী, নিরাকারা হয়েও সাকারা, তোমাকে কে জানতে পারে? কল্পনাময়ীর সঙ্কল্পশক্তি অমোঘ। কেননা কল্পনাময়ী চিন্ময়ী। সঙ্কল্প মাত্রই ইনি অনন্তকোটি বিশ্ব প্রসব করে থাকেন। অবাধ সৃষ্টি করাই তাঁর স্বভাব। সর্বজীবের জননী তিনি।

শ্রী শ্রী চন্ডী অনুসারে , দুর্গম নামক অসুরকে বধ করে দেবী দুর্গা নামে খ্যাত হন । দুর্গমাসুর  জীবকে দুর্গতি প্রদান করত । সংসার পথে এ অসুরের নাম স্বার্থান্ধতা। আধ্যাত্মিক পথে এ অসুরের নাম অবিদ্যা। দুর্গম স্বার্থান্ধতায় পতিত হয়ে জীব অশেষ দুর্গতি ভোগ করে। লোককল্যাণ বুদ্ধি জাগ্রত করে মা দুর্গা রক্ষা করেন।আবার সনাতন ধর্মশাস্ত্রে ‘দুর্গা’ নামটির ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে ‘দ’ অক্ষর দৈত্যনাশক, ‘উ-কার’ বিঘ্ননাশক, ‘রেফ’ রোগনাশক, ‘গ’ অক্ষর পাপনাশক ও অ-কার ভয়-শত্রুনাশক। অর্থাৎ দৈত্য, বিঘ্ন, রোগ, পাপ ও ভয়-শত্রুর হাত থেকে যিনি রক্ষা করেন তিনিই দুর্গা। বিপদনাশিনী দেবীমাতা দুর্গা। দুর্গা শব্দের অপরার্থ  দুর্জ্ঞেয়া। মায়ের তত্ত্ব দুরধিগম্য;--  আমাদের জ্ঞানবুদ্ধির সামর্থ্য নেই তাঁকে জানা। তিনি কৃপা করে জানালে তবে জানতে পারি। সকল বস্তুতে যিনি মাতৃরূপে বিরাজিতা তিনিই বিশ্বজননী মা দুর্গা। 
আবার এই অকাল বোধনের সাথে জড়িত শরৎবিষুব। বৈদিক যুগে এক সময় শরৎকালে বছর শুরু হতো।আর নতুন বছরের শুরুতে অনুষ্ঠিত হতো রুদ্রযজ্ঞ  । তৈত্তিরীয় ব্রাহ্মণে শরৎকেই অম্বিকা বলা হয়েছে। রুদ্রের বোন অম্বিকা। অম্বিকার সাহায্যে রুদ্র ধ্বংস করেন। তার সাহায্যে যাকে ধ্বংস করেন, তুষ্ট হয়ে তিনিই তাকে শান্ত করেন।তাই আচার্য মহীধর লিখেছেন, যিনি রুদ্র নামক নিষ্ঠুর দেবতা, তার বিরোধীকে হত্যা করতে ইচ্ছে করেন এবং অম্বিকার সাহায্যে সে ইচ্ছা পূরণ করেন।
শরৎকালে নানা রোগে দেশে মড়ক দেখা দিত। নতুন বছরের শুরুতে সবাই রুদ্রযজ্ঞের অনুষ্ঠান করতেন সব জীবের শান্তি কামনায়। তারা বিশ্বাস করতেন, অম্বিকাই শরৎরূপ ধারণ করে রুদ্রের ধ্বংস কাজে রোগ সৃষ্টির দ্বারা সাহায্য করে থাকেন। তাই রুদ্রযজ্ঞে রুদ্রের সঙ্গে অম্বিকাকেও খুশি করার আয়োজন করা হতো। এই অনুষ্ঠানই পরবর্তীতে দুর্গাপূজার রূপ নেয়। সংক্ষেপে দুর্গাপুজো সম্পর্কে বলা হয় - 

বোধয়েদ্বিল্বশাখায়াং ষষ্ঠ্যাং দেবীং ফলেষু চ।
সপ্তম্যাং বিল্বশাখাং তামাহৃত্য প্রতিপূজয়েৎ ॥
পুনঃ পূজাং তথাষ্ঠম্যাং বিশেষেণ সমাচরেৎ।
জাগরঞ্চ স্বয়ং কুর্য্যাদ্বলিদানং তথা নিশি ৷।
প্রভূতবলিদানন্ত নবম্যাং বিধিবচ্চরেৎ
ধ্যায়েদ্দশভুজাং দেবীং দুর্গা মন্ত্রেণ পূজয়েৎ।
বিসর্জ্জনং দশম্যান্ত কুর্য্যাদ্বৈ শারদোৎসবৈঃ ॥
                                 - কালিকা পুরাণম
অর্থাৎ  শারদ আশ্বিন মাসের মুখ্যচান্দ্র ষষ্ঠী তিথিতে দেবীকে ফলযুক্ত বিল্বশাখায় বোধন করতে হবে। সপ্তমী তিথিতে সেই বিল্বশাখা আহরন পুর্বক তাতে দেবীর পুজা করতে হবে। অষ্টমী তিথিতে বিশেষভাবে দেবীর পুজা করে ও রাত্রি জাগরণ পুর্বক বলিদান সহকারে দেবীর পুজা করতে হবে। নবমী তিথিতে দশভুজা দুর্গার ধ্যান সহকারে, বিবিধ উপচারে পুজা, বলিদান পুর্বক দেবীর নবমী পুজা বিহিত হোম সম্পন্ন করতে হবে।  দশমী তিথিতে শারদোৎসব বিহিত দেবীর বিসর্জ্জন করতে হবে।



সোমবার, ৮ অক্টোবর, ২০১৮

Loonar dynasty - চন্দ্রবংশ

চন্দ্রবংশ
সূর্যবংশ<=এই পাতায়)
পুরাণ অনুসারে চন্দ্র বংশের বিবর্তন :-
ব্রহ্মা
=> ঋষি অত্রি। ইনার স্ত্রী অনসূয়া।
=> চন্দ্র
=> বুধ +ইলা ( নারী রুপ )
=> পুরুরবা => আয়ু, শ্রুতায়ু, সত্যায়ু, রয়, বিজয়, জয় ।
 আয়ু +  ইন্দুমতী
=> নহুষ,    ক্ষত্র, রজি, রভ,  অনেন ।
রজির 500 পুত্র।
রভ => রভস => গম্ভীর => অক্রীয় => ব্রহ্মভিট ।
অনেন => শুদ্ধ => শুচি => চিত্রক => সন্তরজস ।
ক্ষত্রবৃদ্ধ=> সুহোত্র => কস্য, কুশ, গ্রৎসমদ। কস্য => কাশী => রাষ্ট্র
=> দীর্ঘতমা => ধন্বন্তরি (আয়ুর্বেদাচার্য্য )
=> কেতুমান => ভীমরথ => দিবোদাস => দ্যুমত (প্রতর্দন/শত্রুজিত/রতিধ্বজ )
=> অলর্ক (66000 বছর ) ও অন্যান্য => সন্ততি => সুনিথা => নিকেতনা
=> ধর্মকেতু => সত্যকেতু => ধৃষ্টকেতু => সুকুমার => বীতিহোত্র
=> ভর্গ => ভর্গভূমি ।
কুশের => প্রতি => সঞ্জয় => জয় => হর্নবল => সহদেব => হীন
=> জয়সেন => সুকৃতি => জয়।
গ্রৎসমদার পুত্র সুনক
=> সুনকের পুত্র সৌনক ঋষি।
1. নহুষ 
=> যাতি, যযাতি, সংযাতি আয়াতি, বিয়াতি ও কৃতি।
   যযাতি + শুক্র কন্যা দেবযানী ও শর্মিষ্ঠা
=> যদু, তূর্বসু, দ্রহু, অনু,। যদু ও তূর্বসু শুক্র কন্যা দেবযানীর পুত্র।
এবং দ্রহু, অনু ও পুরু দৈত্যরাজ বৃষপর্বার কন্যা শর্মিষ্ঠার পুত্র।
তূর্বসুর ছয়পুরুষ (যবন বংশ ) ও দ্রুহুর নয় পুরুষ যারা( ত্বিপ্র বংশ ) ।
অনুর পুত্র স্ববর্ণ, চক্ষু ও প্রেন্সু। এরা ম্লেচ্ছ বংশ সৃষ্টি করে।
স্ববর্ণের চারপুরুষ পর মহামানা।
=> মহামানার পুত্র ঊষিনর ও তীক্ষু
তীক্ষুর একুশ পুরুষ।
ঊষিনরের শিবি ও আরো তিন পুত্র
=> শিবির চার পুত্র।
=================================
যদু বংশ
 যদুর চার পুত্র, - - সহস্রজিৎ, ক্রোষ্ট , নল ও রীপু।
সহস্রাজিত =>সত্যজিৎ => মহাভয়, রেণুহয় ও হৈহয়।
হৈহয় => ধর্ম  => নেত্র  => কুন্তী  => সোহানজী
 => মাহীস্মত  => দ্রুমদ ও ধানুকা
ধানুকা  => কার্ত্তাবীর্য , কৃতগ্নী, কৃত বর্মন, কৃতুযাস।
 =>কার্ত্তাবীর্য => কার্ত্তাবীর্য অর্জুন
=>  জয়ধ্বজ, শূরসেন, বৃষভ, মধু, ঊর্জিতা ও 995 জন পুত্র।
জয়ধ্বজের  => তালজঙ্ঘ  => বীতিহোত্র ও 99 পুত্র (এরা তালজঙ্ঘ ) ।
 মধুর পুত্র বৃষ্ণী।
ক্রোষ্টের  => বৃজিনাবৎ  => স্বহিতা  =>বিষাদগু  =>চিত্ররথ
 => শশবিন্দু  ( শশবিন্দুর দশহাজার স্ত্রী)  ও দশকোটি সন্তান।
=> পৃধুশ্রবা  => ধর্ম  => রুচক   =>জমখা  =>  বিদর্ভ
=> বিদর্ভের তিন পুত্র, কুশ, ক্রথ ও রোমপাদ
 => ভদ্রু  => কৃত  => ঊশিকা  => চেদি
=>  দমঘোষ  => শিশুপাল, ইনাকে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বধ করেন।
ক্রথের উনিশ পুরুষ পর সত্ত্বত।
=> সত্ত্বতের সাত পুত্র । ভজমান, বৃষ্ণী, দেবব্রত, ভজি, দিব্য, অন্ধক ও মহাভোজ।
ভজমানের => নিমলোচি, কিঙ্কনা, ধৃষ্টি, সত্যজিৎ, সহস্রজিৎ ও আয়ুজিৎ ।
দেবব্রতের পুত্র বভ্রূ।
মহাভোজ হতে ভোজ বংশের উৎপত্তি।
================
অন্ধক বংশ
অন্ধক
 => কুকুর ভজমান, শুচি ও কম্বলবরীষ ।
=>কুকুর  => বাহনী  => বিলোমান  => কপোট-রোমান
 => অনু  => অন্ধক  => দুন্দুভি  => অবিদ্যতা  => পুনর্বসু
=> আহুক ও আহুকি।
=> আহুকের দুই পুত্র। দেবক ও উগ্রসেন।
 দেবকের চার পুত্র ও ছয় কণ্যা। দেবব্রত , উপদেব, সুদেব , দেববর্ধন, ধৃতিদেবা,
শান্তিদেবা, উপদেবা, শ্রীদেবা, সহদেবা ও দেবকী।
উগ্রসেনের আট পুত্র, পাঁচ কণ্যা ও কংস। কংস, সুনাম, ন্যাগ্রোধ,
কঙ্ক, শঙ্কু, সুহু, ধৃষ্টি তুষ্টিমত ও রাষ্ট্রপাল । পাঁচ কন্যা বসুদেবের স্ত্রী।
================================
বৃষ্ণী বংশ
বৃষ্ণী
=> সুমিত্র ও যুধাজিৎ।
যুধাজিৎ => নিঘ্ন, সিনি ও অনামিত্র।
নিঘ্নের দুই পুত্র। সত্রাজিৎ ও প্রসেন।
অনামিত্র  => সিনয় 2 ও বৃষ্ণী।
 সিনি 2 =>সাত্যক => যুযুধন্য => জয়  =>কুনি  =>যুগন্ধর।
বৃষ্ণীর  => সাফল্যক ও চিত্ররথ।
সাফল্যক  => অক্রূর ও অন্য বারো পুত্র ও এক কণ্যা সুচারু।
অক্রূরের => উপদেব ও দেবব্রত ।
চিত্ররথের   => পৃথু, বিদূরথ ও অন্যান্যরা।
বিদূরথ =>শূর => ভোজমৎ => দুই পুরুষ পর হৃদিক।
হৃদিকের তিন পুত্র। দেবমিধ, শতধনু ও কৃতবর্মা।
দেবমিধের পুত্র শূরসেন।
=> শূরসেনের বসুদেব, কুন্তী, ছয়টি কণ্যা, নয় পুত্র ।
বসুদেবের কৃষ্ণ, বলরাম, শুভদ্রা ও অন্যান্যরা।
কুন্তীর কর্ণ ও পাণ্ডবগন।
=======================
কৃষ্ণ
রুক্মিনী ( ভীস্মক কন্যা) => নয় পুত্র ও এক কন্যা। প্রদ্যুম্ন, সুচারু, হস্ব, চকভদ্র, সদস্ব,
                 চারুগুপ্ত, চারুক,কন্যা চারুহাসি।
সত্যভামা ( যাদব, শত্রাজিৎ কন্যা ) => সাত পুত্র । ভানু, ভীমরথ, খাদ, রোহিত, দীপ্তিমান,
                তমবন্ধ, জলন্ধম।
সূর্য্যা ( সূর্য কন্যা) =>
মন্ত্রবৃন্দা (মন্ত্রবৃন্দ কন্যা ) => তিন পুত্র। সুমিত্র, চারুমিত্র, মিত্রবৃন্দ।
সত্যা (সত্যজিৎ কন্যা ) =>
লক্ষ্মণা (রাজা মন্দ্রের কন্যা ) =>
জাম্বুবতী (জাম্বুবান কন্যা ) => পুত্র শাম্ব ।
ভদ্রা (রাজা ভদ্রসেন কন্যা ) =>
==========================
পুরু বংশ
পুরু (স্ত্রী কৌশল্যা ) => জনমেনজয় (স্ত্রী অনন্তা ) => প্রাচীনবৎ(স্ত্রী অস্মকী ) => প্রবির
=> মনস্য => চারুবেদা => সুধন্বা => ভোগ্য
=> সন্যাতি => অহন্যাতি => রুদেউস্ব
=> ঋতেয়ু, কাকস্য, স্থনদিলেয়ু, কৃতেয়ু, জলেয়ু, বন্যেয়ু,
          ব্রতেয়ু, সন্নিটেয়ু,ধর্মেয়ু, শতেয়ু।
ঋতেয়ু => রন্তিনভ => সুমতি, ধ্রুব, অপরিরথ।
অপরিরথ => কান্ব => মেধাতিথী => প্রস কান্ব ও অন্য ব্রাহ্মণগন।
সুমতি => রেভি => দুষ্মন্ত (স্ত্রী শকুন্তলা ) => ভরত
        => ভরদ্বাজ => মেতু => ভরত (2) => সহস্ত্র => হস্তি (হস্তিনাপুর নগরের প্রতিষ্ঠাতা )
        => যান => অক্ষয় => বিলক্ষ => সম্ভ => বিশ্বামিত্র
       => দেবরাত => ইনকা => অকসন => সমরন => কুরু (কুরু বংশ )।
       => বরক => শতগীর => জনু => সরাট => সরাভূম =>জাতুসোন
       => ওয়াদিকা => অন্য-ভয়ো => দলীপ  => প্রতীপ
      => দেবাপী(কুষ্ঠ হয়) , বহ্লীক(বহ্লীকের রাজা ) , শান্তনু
       শান্তনু => দেবব্রত (ভীস্ম ), চিত্রবীর্য্য, বিচিত্রবীর্য্য
বিচিত্রবীর্য্য => পাণ্ডু, ধৃতরাষ্ট্র, বিদূর ।
ধৃতরাষ্ট্র => শত পুত্র ও এক কন্যা দুঃশলা।
  পাণ্ডু      =>  যুধিষ্ঠির, ভীম, অর্জুন (কুন্তী হতে )
                     নকল ও সহদেব (মাদ্রী হতে )   ।
ঋক্ষ => সম্বরন (স্ত্রী সূর্য কন্যা তপতী ) => কুরু => পরিক্ষী, সুধন্ব, জন্হু, নিষধ ।
সুধন্ব => সুহোত্র => চ্যাবন => কৃতি => উপরিচর বসু
=> বৃহদ্রথ, কুশিম্ব, প্রতিগ্র, মাত্য, চেদীপ্য ও অন্যান্য ।
বৃহদ্রথ =>কুশাগ্র, জরাসন্ধ ।
জরাসন্ধ => সহদেব => সোমাপি => শ্রুতশ্রবা ।
কুশাগ্র => ঋষভ => সত্যহিতা => পুষ্পবৎ => জহু
জন্হু => সুরথ => বিদূরথ => সার্বভৌম => জয়সেন
=> রাধিক => আয়ুত্যু => অক্রোধন্ব => দেবতিথি
=> ঋক্ষ => দিলীপ => প্রতীপ => দেবাপী(প্রবজ্যা নেন ) , শান্তনু, বহ্লীক।
বহ্লীক => সোমদত্ত => ভূরিশ্রবা => সল